বেঙ্গালুরুর শিরোপা উৎসবে পদদলিত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আঠারো বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আইপিএল ট্রফি ঘরে তুলেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)। পাঞ্জাব কিংসকে ৬ রানে হারিয়ে অবশেষে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করেন বিরাট কোহলির দল। তবে এই আনন্দ উচ্ছ্বাস এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পরিণত হয়—যা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে অন্তত ১১ জনের।
বুধবার (৪ জুন) চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে আরসিবি দল ফিরলে বেঙ্গালুরুর রাজপথে ভক্তদের ঢল নামে। ট্রফি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কর্ণাটক বিধান সৌধ থেকে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম পর্যন্ত একটি বিজয় র্যালির পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ট্রাফিক সমস্যার কথা বলে পুলিশ মিছিলের অনুমতি বাতিল করে এবং আয়োজনটি স্টেডিয়ামের ভেতরে স্থানান্তরিত করা হয়—যার প্রবেশাধিকার ছিল সীমিত।
এই সিদ্ধান্ত জানাজানি হতেই হাজার হাজার মানুষ স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় জমাতে থাকে। অতিরিক্ত ভিড়, অব্যবস্থাপনা এবং প্রবেশের জন্য ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে ঘটে পদদলনের মর্মান্তিক ঘটনা। এনডিটিভির দাবি অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ১১ জন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও কিশোরী। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন, যাদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
টাইমস অব ইন্ডিয়া ও রয়টার্স জানিয়েছে, শুরুতে ৭ জনের মৃত্যুর খবর মিললেও পরে সংখ্যাটি বাড়তে থাকে। আগের রাতেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় আরসিবির জয় উদযাপন ঘিরে বিশৃঙ্খলা দেখা যায়, এবং পুলিশকে কঠোরভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবাকুমার এক বিবৃতিতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, "আমি অতিরিক্ত জনসমাগমের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। আবেগতাড়িত এই তরুণ ভিড়ে বলপ্রয়োগ সম্ভব ছিল না।"
তিনি জানান, প্রায় ৫ হাজার নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল, তবে সেটি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ছিল না।
বিসিসিআই ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লা বলেন, "এ ধরনের উদযাপনে সবারই দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত। সরকার আগে থেকেই অনুমান করেছিল বিপদ হতে পারে, কিন্তু এমন ভয়াবহতা প্রত্যাশিত ছিল না।"
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বি ওয়াই বিজয়েন্দ্র এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন। তার অভিযোগ, "সরকার পুরো আয়োজনটি তাড়াহুড়ো করে করেছে। কোনো প্রস্তুতি ছিল না। পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি সেবা—সব কিছুতেই ঘাটতি ছিল। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।"
