
‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ বাঙালির দিক নির্দেশনামূলক গ্রন্থ
১৫ মে ২০২৩, ০২:১০ পিএম | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:২০ এএম

‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ সাম্প্রতিক সময়ে এমন আশাবাদী পথ দেখানো গ্রন্থ আমরা আর দেখিনি। সেইদিক দিয়ে মো. সাহাবুদ্দিন বাঙালির আলোকবর্তিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তার বর্ণাঢ্য জীবন, ব্যাপক অভিজ্ঞতা, কাছ থেকে দেখা রাজনীতি উঠে এসেছে এই গ্রন্থে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে যৌবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়েছেন। এখনো তার ধ্যানজ্ঞান বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কতজন আদর্শচ্যুত, লক্ষ্যচ্যুত হয়েছেন কিন্তু তিনি অবিচল থেকেছেন, হাজারো প্রতিকূলতার মধ্যে। তার চরিত্রের দৃঢ়তা দেখা যায় যখন পদ্মাসেতু নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তখন তিনি দৃঢ়তা দেখিয়ে প্রমাণ করেছেন কোনো দুর্নীতি হয়নি। যার ফলে পদ্মার বুকে এখন বাংলাদেশের গর্ব পদ্মা সেতু।
‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ গ্রন্থে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন যেমন পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা, রেমিটেন্স, গড় আয়ুবৃদ্ধিসহ অনেক সূচকে আমাদের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেছেন। একই সাথে স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে অনেক ক্ষেত্রে ভারত-পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, পাতাল রেল নানা স্বপ্নের কথা বলেছেন। মাত্র এক যুগের ব্যবধানে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার কথা বলেছেন। এসডিজি বাস্তবায়ন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, চট্টগ্রামের কর্ণফুলি টানেল ও ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ আগামীর উন্নত বাংলাদেশের বর্ণনা দিয়েছেন একজন দক্ষ অর্থনীতিবিদের মতো। নারীর অধিকার, সুশাসন নিশ্চিতকরণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার কথা বলেছেন। স্বাধীনতার ৫১ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে তা উল্লেখ করেন মো. সাহাবুদ্দিন তার গ্রন্থে।
দাবায়ে রাখতে পারবানা কলামে প্রবন্ধকার কবি নির্মলেন্দুগুনের কবিতা দিয়ে শুরু করে ৭ মার্চ এর ভাষণের পূর্বাপর উল্লেখ করেছেন। অস্ত্র বিহীন, যুদ্ধজ্ঞান বিহীন একটি সহজ সরল জাতির মনে স্বাধীনতা নামক ক্ষুধা জাগিয়ে তোলার নাম ৭ মার্চ বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। এর আগে ৭ মার্চ নিয়ে এত সুন্দর ব্যাখ্যা আর কেউ দেয়নি। জাতির পিতার যোগ্য রাজনৈতিক কর্মী মো. সাহাবুদ্দিন এভাবে ৭ মার্চকে ব্যাখ্যা করে নতুন প্রজন্মের কাছে আলোর দিশারী হয়ে উঠেছেন। আওয়ামী লীগের সাতকাহন প্রবন্ধে আওয়ামী লীগ গঠনের ইতিহাস চমৎকারভাবে উল্লেখ করেছেন। এদেশের সকল উন্নয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। ১৯৬৬ সালের ৮ এপ্রিল পাবনায় বঙ্গবন্ধুর সাথে প্রথম দেখার স্মৃতি উল্লেখ করে প্রবন্ধকার বলেছেন— বঙ্গবন্ধু আদর করে ‘তুই’ সম্বোধন করে বেশকিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। শেষে বললেন ‘মাঠে আয়।’ বঙ্গবন্ধুর মাঠে আয় আহ্বানে কী যেন লুকিয়ে ছিল। সেই থেকে রাজনীতির মাঠে নেমে পড়লেন মো. সাহাবুদ্দিন। হয়ে উঠলেন স্লোগানদাতা। এরপর বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হয়ে উঠলেন। বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেন ধ্যানজ্ঞান, অনুপ্রেরণা, জীবনের অংশ— যা এখনো বহমান রক্তে। লেখক বলেছেন— জীবন চলায় ফুয়েল। যে ফুয়েল আজও আমাকে শক্তি জোগায়। এখানে প্রবন্ধকার ফুয়েল বলতে বঙ্গবন্ধুকে বোঝাতে চেয়েছেন। এ ফুয়েল শক্তি দেয় এ কারণে যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আজও বাংলাদেশসহ বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ ধারণ করে।
১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাবনার নগরবাড়িতে ‘মুজিব বাধ’ উদ্বোধন করতে এসে মো. সাহাবুদ্দিনের বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে ডায়াসে বঙ্গবন্ধু তার হাত ধরে ফেললেন। বুকে জড়িয়ে ধরলেন। কপালে চুমু দিয়ে বললেন ‘তুই তো ভালো বলিস।’ বঙ্গবন্ধু তাকে সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে উঠালেন। প্রথমবারের মতো হেলিকপ্টারে ওঠে ঢাকায় গেলেন প্রবন্ধকার। সেদিনই যেন মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গবন্ধুর দোয়া ও ভালোবাসা পেয়ে হেলিকপ্টার নয় যেন আকাশে উঠেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দোয়া ও ভালোবাসা পেয়ে সেদিন সৃষ্টিকর্তা তার কপালে লিখেছিলেন রাজভাগ্য। যার প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পাই বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী তাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করার মধ্য দিয়ে। বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য, আদরের চুপ্পু আজ বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্টপতি। পাবনা তথা বাংলাদেশের গর্ব, অহংকার। তার মত যোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে পেয়ে বাংলাদেশ ধন্য।
বঙ্গবন্ধুকে যেমন দেখেছি প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখার স্মৃতি উল্লেখ করেছেন প্রবন্ধকার। কীভাবে বাকশালের নেতা হলেন, তা উল্লেখ করেছেন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর পাবনায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা উঠে এসেছে। এরপর গ্রেপ্তার হন মো. সাহাবুদ্দিন। গ্রেপ্তারের পরে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর পরিবারের আর্থিক ও মানসিক বিপর্যস্ত অবস্থা দেখে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন। কষ্টের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, যাদের হাতে জেলখানায় নির্যাতিত হয়েছেন, যারা বঙ্গবন্ধুর নাম বিকৃত করে উচ্চারণ করত— পরে তারা জাতির বড় বড় দায়িত্ব পালন করেছেন।
‘বঙ্গবন্ধু ইাতহাসের অমর মহানায়ক’ প্রবন্ধের একাংশে বলা হয়েছে ১৯৭১ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ৫২তম জন্মদিনে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনার সবচাইতে বড় ও পবিত্র কামনা কী? উত্তরে বলেছিলেন, ‘জনগণের সার্বিক মুক্তি।’ এই এক কথাতেই বঙ্গবন্ধুকে চেনা যায়— তিনি কতটা বাঙালিকে হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন। ৫২তম জম্মদিনের এই ঘটনার কথা বইতে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চেতনা কর্ম আমাদের মাঝে তথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরে পবিত্র দায়িত্ব পালন করেছেন মো. সাহাবুদ্দিন।
বঙ্গবন্ধু নয়মাস পাকিস্তানের কারাগারে আটক থাকার পরে যখন মুক্তি পান, তখন ১৯৭২ সালের ৯ জানুয়ারি ইত্তেফাকের সংবাদ শিরোনাম ছিল ‘তোমরা কি সবাই বেঁচে আছো’: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই হলেন জাতির পিতা, জীবনের একটি দিনও যিনি দেশের মানুষকে ছাড়া ভাবেননি। এ জন্য ‘বঙ্গবন্ধু-স্বাধীনতা-বাংলাদেশ’ বাঙালির অভিধানে এ তিনটি শব্দই সমার্থক। প্রবন্ধকার উল্লেখ করেছেন বঙ্গবন্ধু মানেই বাঙালি জাতীয়তাবাদের মূলধারা, তিনি আছেন সর্বত্র।
‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড: তদন্ত কমিশন গঠনে বাধা কোথায়’ প্রবন্ধ থেকে জানা যায় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার পরিজনকে হত্যার ঘটনায় প্রথম অনুসন্ধান কমিশন গঠিত হয় ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যে। কিন্তু সেই কমিশনকে তৎকালীন সরকার কাজ করতে দেয়নি। একই প্রবন্ধে জানা যায় কীভাবে তৎকালীন সরকার এয়ার ফোর্সের সদস্যদের বিনাদোষে ফাঁসি দিত।
‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে আমাদের দিন বদল’ প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন সংগ্রাম, আদর্শ, দেশ প্রেম প্রবন্ধকার যেন শিল্পীর নিঁখুত হাতের ছোয়ায় সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। একই সাথে ওঠে এসেছে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর বাঙালির স্বপ্ন এক হয়ে কীভাবে আন্দোলন সংগ্রাম একত্রে মিলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ হয়ে ওঠার ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলছেন তারই কন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের সাহসী সিদ্ধান্ত, আওয়ামী লীগের কাউন্সিল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার ইতিহাস সুন্দরভাবে ফুটে তুলেছেন প্রবন্ধকার। সেদিন শেখ হাসিনাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য ঢাকা মহানগরের চিত্র সুন্দরভাবে উঠে এসেছে। এরই মাধ্যমে প্রমাণিত হয় শেখ হাসিনা কতটা জনপ্রিয় বাঙালির কাছে। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ও ১৯৮১ সালের ১৭ মে দুটোই বাঙালির ইতিহাসে অন্যতম দিন। প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উভয়ের অবস্থান ছিল এক ও অভিন্ন। আর তা হলো ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রায় মাধ্যমে জনগনের ভাগোন্নয়ন।’ বঙ্গবন্ধু কন্যা সেদিন দেশে ফিরেছিলেন বলেই আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে।
বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতেই উন্নয়নের বাংলাদেশ র্শীষক প্রবন্ধে প্রবন্ধকার ১৯৯৬-২০০১ এবং ২০০৯ থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়ন তুলে ধরেছেন। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মানুষের জীবনযাত্রার মান, দেশের উন্নয়ন একজন অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদের মতো করে উল্লেখ করেছেন।
এ কথা ধ্রুবসত্য পদ্মা সেতুর কারণে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে অনন্য উচ্চতার পৌঁছে গেছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। প্রবন্ধকার এর পুরো কৃতিত্ব দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। করোনাকালে শেখ হাসিনার যুগোপযোগি ও কার্যকর সিদ্ধান্তের কারণে আমরা কীভাবে রক্ষা পেয়েছি তা জানতে পেরেছি এই প্রবন্ধের মাধ্যমে। একই প্রবন্ধে দেশের বর্তমান স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন বিশ্ব পর্যায়ের তা ওঠে এসেছে।
২০২৪ সালে শেখ হাসিনা কেন জরুরি, প্রবন্ধটির পাঠ অতি জরুরি আমাদের জন্য। ২০০৭ সালের ৭ মে শেখ হাসিনা দেশে না ফিরলে ইতিহাস অন্যরকম হতো। আগামীর বাংলাদেশের উন্নয়ন ও দেশের স্থিতিশীলতার জন্য শেখ হাসিনাকে বাঙালির দরকার। গ্রন্থের শেষের দিকে প্রবন্ধকার যিনি বর্তমানে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি তিনি নানা রঙের দিনগুলি, বাদশা ভাই চির অম্লান, কাছ থেকে দেখা জননেতা মোহাম্মদ নাসিমের জীবনী তুলে ধরেছেন। যা আমাদের জন্য অবশ্য পাঠ। আমরা নতুন করে অনেক কিছু জানতে পারব। এ ছাড়া কূটনৈতিক শোভনীয়তা ও গণমাধ্যম, বিভীষণ ও কাউয়াদের সামাল দিন, সাবাশ বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয় সমান গুরুত্বপূর্ণ আমাদের পাঠের জন্য। একজন নিয়মিত লেখক, পেশাজীবী প্রবন্ধকারের মত নিঁখুত শিল্পীর মত কলমের আঁচড়ে এতো সুন্দর করে সুখপাঠ্য করে তুলেছেন ‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ গ্রন্থটি। আমরা পেলাম একজন বিশিষ্ট প্রবন্ধকার, লেখককে যে যিনি দেশের সার্বক্ষণিক প্রয়োজনে দিকনির্দেশনা দেবেন। মহামান্য আমাদের আলোর পথ দেখিয়েছেন এই গ্রন্থের মাধ্যমে।
শেষে সাজ্জাদ কাদিরের কীর্তিমানের গল্পকথা, বাংলাদেশ টেলিভিশনে ১২ জুন ২০২২ সালের সাক্ষৎকারে তিনি বলেছেন, আমার জীবনে কোনো অপ্রাপ্তি নেই— পড়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির অজানা অনেক তথ্য জানতে পারি। নতুন করে মানবিক, রাজনৈতিক, দূত্যিময় এক মহামানবের পূর্ণাঙ্গ জীবন আলেখ্য দেখতে পাই। তার কর্মময় জীবন, বিচিত্র অভিজ্ঞতা, রাজনীতি, সরকারি চাকরি, সরকারি বিভিন্ন সেবা দেওয়ার ইতিহাস জানার পর আমরা নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারি। বিশেষ করে নতুন প্রজম্মের জন্য বইটি অবশ্য পাঠ্য হওয়া উচিত।
২০২২ সালের ১৯ আগস্ট ড. এম আব্দুল আলীমের সাক্ষাৎকারে পাবনার বিখ্যাত ভূট্রা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ বিশদভাবে ফুটে ওঠেছে। পরিশিষ্ট-২ মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুঃ সংগ্রাম, চিন্তা ও রাজনৈতিক আদর্শ ড. এম আব্দুল আলীমের লেখায় মহামান্যকে নতুন করে তার সংগ্রাম, চিন্তা ও রাজনৈতিক আদর্শকে আমরা জানতে পারি। এক বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সঞ্জিত অভিজ্ঞতায় যিনি প্রোজ্জল, স্বাধীকার সংগ্রাম থেকে একাত্তরের রণাঙ্গন, বিচারালয় থেকে দুর্নীতি কমিশিন, ছাত্র রাজনীতির মাঠ থেকে কেন্দ্রীয় রাজনীতির প্রাঙ্গণ সর্বত্রই কর্মনিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা আর দেশে প্রেমের পরাকাষ্ঠায় যিনি অনন্য। সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে আপসহীন এক মানুষের জীবন আলেখ্য নিয়েই এই গ্রন্থ যার পাতায় পাতায় ইতিহাস, ইতিহাসের মানুষ আর উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলা অপার সম্ভাবনাময় এক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
বইটি পড়ে আমি অভিভূত। আশাকরি মহামান্য শত ব্যস্ততার মাঝেও এমন বই জাতিকে আরও উপহার দেবেন। তার লেখা জাতিকে যেমন দিক নির্দেশনা দেবে, তেমনি নতুন প্রজম্মকে দেখাবে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন, দেবে ভবিষ্যতে পথচলার নির্দেশনা। বইটির পাতায় পাতায় একজন আশাবাদী মানুষের দেশ নিয়ে আশাবাদী সব ভাবনা স্থান পেয়েছে। ফলে এর নামকরণ ‘এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ’ যথাযথ হয়েছে। আমি বইটির বহুল প্রচার কামনা করি।
মো. ফারুক হোসেন চৌধুরী: উপ-পরিচালক, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
আরএ/

সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগে হাতাহাতিতে আহত ৬ অভিনয়শিল্পী হাসপাতালে
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১২ পিএম | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৪২ পিএম

মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে চলমান সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগে খেলতে নেমে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতির অভিযোগ উঠেছে। সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় ৬ জন শিল্পী আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে নিজেদের শেষ ম্যাচে খেলতে নেমেছিল মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ ও দীপঙ্কর দীপনের টিম। খেলা চলাকালীন মাঠের বাইরে থাকা দুই দলের সতীর্থদের মধ্যে উত্তেজনা ছাড়িয়ে পড়ে, যা মাঠে খেলোয়াড়দের মধ্যে হাতাহাতিতে রূপ নেয়।
তবে ম্যাচ শেষে রাত সাড়ে ১১টার পর আবারও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের খেলোয়াড়রা। সেখানে নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজ ও অভিনেতা শরিফুল রাজ গায়ে হাত তোলেন বলে অভিযোগ করেছেন নায়িকা রাজ রিপা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
দীপনের দলের খেলোয়াড়দের একজন অভিনেতা মনির হোসেন শিমুল অভিযোগ করে বলেন, তারা বাইরে থেকে সন্ত্রাসী এনে আমাদের ওপর আক্রমণ শুরু করে। এটা কোন ধরনের সিসিএল খেলা? এখানে তো ক্রিকেট খেলছে না তারা। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে।
একই দলের আরেক খেলোয়াড় চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী বলেন, রাজ ভাইয়ের টিম থেকে আমাদের দলের ওপর আক্রমণ শুরু করে। তারা বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসেছে। আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে একজনকে তুলে নিয়ে মারধর করতে শুরু করে। এর মধ্যে মৌসুমী হামিদ আহত হন।
ঘটনার বিষয়ে দীপঙ্কর দীপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অফিসিয়ালি বক্তব্য দেব। এখানে গোপন করার কিছু নেই। আমি মনে করি, ঢালাওভাবে শিল্পী সমাজের ওপর এর দায় চাপানো খুবই ভুল হবে। আমরা সবাই ব্যাপারটা নিয়ে খুবই মর্মাহত। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, শিল্পী নাম ধরে কিছু অশিল্পী মানুষ আমাদের মধ্যে ঢুকে গেছে, যারা আসলে পুরো অরাজকতা তৈরি করেছিল।
তবে এ ঘটনার পরপরই দল নিয়ে মাঠ থেকে বেড়িয়ে যান মোস্তফা কামাল রাজ। ফলে তার কোনো মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই সেলিব্রেটি ক্রিকেট লিগে (সিসিএল) মোট আটটি দলে ভাগ হয়ে লড়ছেন শোবিজের তারকারাসহ কলাকুশলীরা। প্রতি দলে নারী-পুরুষ তারকারা অংশ নিচ্ছেন। এসব দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গিয়াসউদ্দিন সেলিম, সালাহউদ্দিন লাভলু, শিহাব শাহীন, চয়নিকা চৌধুরী, দীপংকর দীপন, সকাল আহমেদ, মোস্তফা কামাল রাজ ও রায়হান রাফী।

জাতীয় স্কুল ফুটবলে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১০ পিএম | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৪২ পিএম

'যদি লক্ষ্য থাকে অটুট বিশ্বাস হৃদয়ে,হবেই হবে দেখা দেখা হবে বিজয়ে'-গানটির এ লাইন আবারো প্রমান করলো মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ফুটবল দলের প্রতিটি খেলোয়াড়। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিটি ম্যাচে একের পর এক দুর্দান্ত জয় দিয়ে অবশেষে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফুটবল বিভাগে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলো মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়।
আজ (রোজ শনিবার) সকাল ৯ ঘটিকায় সিলেটের আবুল মাল আব্দুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে অঘোষিত ফাইনাল খেলায় চাপা অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিপক্ষ ছিল
গোলাপ অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন পটুয়াখালী সরকারি জুবলী উচ্চ বিদ্যালয়। এ ম্যাচে পটুয়াখালী সরকারি জুবলী উচ্চ বিদ্যালয়কে ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে পরাজিত করে মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়। একটি করে গোল করে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিমন, শাওন ও শাকিল।
৫০তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফুটবল বিভাগে জাতীয় পর্যায়ের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয় লীগ ভিত্তিক। টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে আগে থেকেই লীগ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ছিল মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়। স্কুল পর্যায়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য আজকের ম্যাচে কমপক্ষে ড্র বা ১ পয়েন্ট দরকার ছিল।
অঘোষিত ফাইনাল খেলায় শুরু থেকেই প্রতিপক্ষ দলের উপর একের পর এক আক্রমণে কুপোকাত করে দেয় মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলোয়াড়েরা। এর ফলও তারা পায় ম্যাচের মাত্র ৩৬ মিনিট। গৌরব কর্মকার লিমনের অসাধারণ গোলে প্রথমার্ধে ১-০ গোলের লিড পায় মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে আরো আক্রমণের ধার আরো বাড়িয়ে দেয় মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় খেলোয়াড়েরা। এবার জ্বলে ওঠে গত ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা স্ট্রাইকার শাওন। দুর্দান্ত এক গোল করে শাওন। ম্যাচের ঠিক শেষ দিকে আর একটি গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করে শাকিল। আর সেই সাথে ৫০তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ফুটবল বিভাগে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ঘোষিত হয়।
ম্যাচে শেষের বাঁশি বাজার সাথে সাথেই মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলোয়াড় ও শিক্ষকরা আবেগে আপ্পলুত হয়ে পরে।
মহিমাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটা তাদের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন আর সেই সাথে সকলের সাপোর্ট ও ভালোবাসার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের এমপি আব্দুস সাত্তার মারা গেছেন
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:২৯ এএম | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৩ পিএম

সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার ভোররাত ৩টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আব্দুস সাত্তার ভূঞার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার। তিনি বলেন, বাবা দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগসহ বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে এক সপ্তাহ আগে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। শনিবার রাত ৩টা ২ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
উকিল আব্দুল সাত্তার ভূঞা ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ ভূঞা ও রহিমা খাতুনের সংসারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি পদে ছিলেন দীর্ঘদিন। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাও ছিলেন।