বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৭ ভাদ্র ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

৭ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ গোপন করেছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক!

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। ছবি: সংগৃহীত

বেনামে ঋণ দিয়ে ৭ হাজার ৯২৪ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের পাহাড় গড়েছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল)। দীর্ঘ দিন সেই তথ্য গোপন রেখেছে ব্যাংকটি, আর এ কাজে সহায়তায় করেছে খুদ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ব্যাংকটি প্রভিশন ঘাটতির ফলে লভ্যাংশও ঘোষণা করতে পারছে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন রিপোর্টে দেখা যায়, ২০২৩ এর ডিসেম্বর শেষে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। অথচ ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে রিপোর্টে দেখিয়েছে মাত্র ১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা।

এছাড়া পরিদর্শন টিম ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে (এসআইবিএল) প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ পেয়েছে ৮ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার পরামর্শে প্রতিবেদনে দেখাতে হয়েছে মাত্র ৬৪ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি গোপন করেছে ৮ হাজার ৬৩ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দলটি চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরেজমিনে ব্যাংকটির প্রধান পাঁচটি শাখা, ১০টি শাখার অফ-সাইট ভিত্তিতে পর্যালোচনা ও ঢাকার বাইরের সাতটি শাখায় পরিদর্শন করে আর্থিক প্রতিবেদনের এসব অসঙ্গতি চিহ্নিত করে।

পরিদর্শন টিমে থাকা এক কর্মকর্তা বলেন, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ওপর পরিদর্শন করে ৮ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম– মাত্র ৬৪ কোটি দেখিয়ে রিপোর্ট করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, 'এমন অনিয়মের বিষয়ে আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক, পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালক পর্যন্ত রাজি ছিলেন না। তবে আমাদের সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজিং মহাপরিচালক চাপ দিয়ে এমন রিপোর্ট দিতে বাধ্য করেন।'

তিনি আরও বলেন, 'কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ সেই কর্মকর্তা আমাদের পরিদর্শন টিমকে বলেন এমন করে রিপোর্ট দিতে হবে– যাতে ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড (লভ্যাংশ) দেয়ার সুযোগ থাকে।'

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন রিপোর্টে দেখা যায়, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণের মধ্যে শ্রেণিকরণযোগ্য পরিমাণ হচ্ছে ৯ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। এর বিপরীতে প্রভিশন রাখার প্রয়োজন ৭ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। যদিও ব্যাংকের হিসেবে রক্ষিত প্রভিশন দেখানো হয়েছে ১ হাজার ৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ পরিদর্শন টিমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘাটতি রয়েছে ৬ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা।

পরিদর্শন টিম, আদালত কর্তৃক স্থগিতাদেশ প্রাপ্ত বিনিয়োগের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের দরকার ছিল আরো ১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকার। যদিও ব্যাংকটি দেখিয়েছে মাত্র ৪০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ এখানে প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা।

এ ছাড়া অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) হতে বিনিয়োগ, অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে রক্ষিতব্য প্রভিশন ছিল ১৫৪ কোটি টাকা। যদিও ব্যাংকটি তার রিপোর্টে এই দেখিয়েছে যে, এই দুটি খাতে তাদের প্রভিশনের প্রয়োজন ছিল মাত্র ২০ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন টিম ব্যাংকটির বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ ও প্রভিশন ঘাটতির তথ্য পেলেও– রিপোর্টে দেখানো হয়েছে খুবই কম।

বাংলাদেশ ব্যাংক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রকৃত তথ্য গোপন করে— পরবর্তীতে যেভাবে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে দেখা যায় ব্যাংকটির মোট প্রভিশন সংরক্ষণ প্রয়োজন ছিল ১ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। আর ব্যাংকটি সংরক্ষণ করতে পেরেছে ১ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৬৪ কোটি টাকা প্রভিশন ঘাটতি দেখানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকের অর্থিক সুনাম রক্ষার্থে, এলসি মার্জিন ব্যয় কমাতে, বিশ্বব্যাপী অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি, আমদানির জন্য পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা না থাকায়– ব্যাংকখাত সংকটময় সময় অতিবাহিত করছে। এ ছাড়া ব্যাংকিং ক্যাটাগরি অক্ষুণ্ণ রাখা– অন্তর্জাতিকভাবে রেটিংয়ের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই ব্যাংকটির সুনাম ও ভবিষ্যতে মজবুত আর্থিক ভিত্তি তৈরির জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন রিপোর্টে বলা হয়, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৯ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। এই খেলাপি ঋণের মধ্যে ৩০ শতাংশ আগামী জুনের মধ্যে, ৩০ শতাংশ আগস্টের মধ্যে ও অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ ডিসেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিন মাস পর পর করা ক্লাসিফায়েড লোন অ্যান্ড প্রভিশনিং রিপোর্টে দেখা গেছে, ২০২৩ এর ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির মোট ঋণ ৩৫ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। এরমধ্যে খেলাপি ঋণ দেখিয়েছে ১ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। যদিও এ প্রতিবেদনে তাদের কোনো পরিমাণ প্রভিশন ঘাটতি দেখানো হয়নি।

Header Ad

রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক

ফাইল ছবি

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হককে সাত দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার একটি আদালত এ আদেশ দেন।

কোটা আন্দোলনের সময় রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গত ৩ সেপ্টেম্বর শহীদুল হককে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরেরদিন সকালে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পান শহীদুল হক। তিনি ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি অবসরে যান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-১ (পালং-জাজিরা) আসনে নৌকা প্রতীকে লড়তে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন শহীদুল হক। পরে অবশ্য দলীয় মনোনয়ন পাননি তিনি।

টেন্ডার ছাড়াই ওরাকলকে ২০৭ কোটি টাকার কাজ দেন পলক

ছবি: সংগৃহীত

কোনো রকম দরপত্র আহ্বান না করেই ২০২১ সালে জাতীয় ডাটা সেন্টারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ওরাকলকে ২০৭ কোটি টাকার বিনিময়ে ক্লাউড সেবার দায়িত্ব দিয়েছিল সরকার।অভিযোগ উঠেছে, এতে সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের হস্তক্ষেপ করে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়েছিলেন।

দৈনিক একটি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২০৭ কোটি টাকার বিনিময়ে তিন বছর ক্লাউড সেবা দেওয়ার কথা ওরাকলের। তবে রহস্যজনক কারণে চুক্তি স্বাক্ষরের আড়াই বছর পর ক্লাউড সেবা চালু করে ওরাকল।

ওই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এর বিনিময়ে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়েছিলেন পলক। তারচেয়ে প্রভাবশালী একটি পক্ষও সেই টাকার ভাগ পেয়েছিল। পুরো প্রক্রিয়ার পরিকল্পনাকারী ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) তৎকালীন পরিচালক তারিক এম বরকতউল্লাহ। পলকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ইকরামুল হক এই লেনদেনের সহযোগী ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০ সালের দিকে সরকারি সংস্থাগুলোর উপাত্ত সংরক্ষণে সরকারের একটি কেন্দ্রীয় ক্লাউড সেবা ব্যবস্থার প্রয়োজন দেখা দেয়। এর আগে সংস্থাগুলো নিজেদের মতো অর্থ খরচ করে ক্লাউড সেবা নিত। সেই সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ কেন্দ্রীয়ভাবে ক্লাউড ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা নেয়। প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল ক্লাউড ব্যবস্থা তৈরি করে সরকারি সংস্থাগুলোকে ভাড়ায় দিয়ে অর্থ উপার্জন এবং বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়। এমন একটি ক্লাউড সেবার প্রস্তাব সে সময় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) অধীন জাতীয় ডাটা সেন্টারকে (এনডিসি) দেয় ওরাকল। তবে বিসিসির তৎকালীন পরিচালক তারিক এম বরকতউল্লাহ সেই প্রস্তাব ঘুরিয়ে দেন বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) দিকে।

সূত্র বলছে, পলককে প্রভাবিত করে ডাটা সেন্টারে ওরাকলের ক্লাউড ব্যবস্থা স্থাপনের মূল ‘মাস্টারমাইন্ড’ এই তারিক বরকতউল্লাহ। প্রস্তাবের সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটির সদস্যরা এই ক্লাউড সেবার বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন। শুধু তারিক বরকতউল্লাহ ওই কমিটির প্রতিবেদনে এককভাবে ভেটো দেন।

পরবর্তী সময়ে পলকের সরাসরি হস্তক্ষেপে ওরাকলের সঙ্গে বিডিসিসিএল ‘ডেডিকেটেড রিজিওনাল ক্লাউড’ স্থাপনে চুক্তিবদ্ধ হয়। এই ক্লাউড থেকে তিন বছরের সেবা নিতে মোট ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরে যথাক্রমে ৩০, ৬০ এবং ৯০ লাখ ডলার পরিশোধ করার কথা বিডিসিসিএলের। বিদ্যুৎ খাতের কুইক রেন্টালের সঙ্গে তুলনা করলে ওরাকলের সঙ্গে বিডিসিসিএলের এই অসম চুক্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

অনুসন্ধান বলছে, কোনোরকম প্রতিযোগিতামূলক অথবা আন্তর্জাতিক টেন্ডার ছাড়াই ‘ডিরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড (ডিপিএম)’-এ ওরাকলকে কাজটি দিয়েছেন পলক। তবে ৪৯ কোটি টাকা মূল্যের বেশি দরপত্র একনেকে পাস করিয়ে নেওয়ার নিয়মও ওরাকলের ক্ষেত্রে কৌশলে এড়িয়েছেন পলক। প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিডিসিসিএলের সরাসরি ক্রয়ক্ষমতার সুযোগ নিয়েছেন তিনি। এজন্যই এনডিসির বদলে বিডিসিসিএলের মাধ্যমে ক্লাউড স্থাপনের পক্ষপাতী ছিলেন তারিক বরকতউল্লাহ। তবুও বিডিসিসিএলের পরিচালনা পর্ষদের অন্তত তিন সদস্য এই প্রস্তাবের মৌখিক বিরোধিতা করেছিলেন বলে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।

একটি সূত্রের ভাষ্য, ক্লাউড হয়তো প্রয়োজন ছিল; কিন্তু এমন সেবা দেয় সেরকম আরও প্রতিষ্ঠান ছিল। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা যেত।

সেই সময়কার পর্ষদের আরেক সদস্য বলেন, প্রতিমন্ত্রী পলক বোর্ডসভায় উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করছিলেন যে, ওরাকলের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে দেরি হচ্ছিল কেন। কয়েকজন মৌখিকভাবে ওরাকল ক্লাউডের বিরোধিতা করি। সবশেষে ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর ওরাকলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষর করে বিডিসিসিএল। চুক্তি স্বাক্ষরকালে অন্যদের মধ্যে তারিক বরকতউল্লাহও ছিলেন। অবশ্য গত মে মাসে অর্থাৎ চুক্তি স্বাক্ষরের প্রায় আড়াই বছর পর এই ক্লাউড চালু করে ওরাকল। গত ৬ মে সালমান এফ রহমানের উপস্থিতিতে পাঁচতারকা হোটেলে বেশ জাঁকজমকভাবে এর উদ্বোধন হয়।

চুক্তি স্বাক্ষর আর কার্যক্রম শুরুর মাঝের সময় নিয়ে পাওয়া যায় আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। চুক্তির পর থেকেই ওরাকলের সিঙ্গাপুর ক্লাউডে উপাত্ত সংরক্ষণ শুরু করে বিডিসিসিএল। এক বছরের সেবার জন্য ওরাকলকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এই লেনদেনের ৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা ৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকার (ডলারের দাম ১১৫ টাকা হিসেবে) একটি অর্ডার ডকুমেন্ট রয়েছে কালবেলার কাছে।

সেখানে দেখা যায়, ভিন্ন কোনো টেন্ডার বা চুক্তি না করে, পূর্বের চুক্তি মূলেই ওরাকল সিঙ্গাপুর থেকে সেবা নেওয়ার নামে ওই অর্থ পরিশোধ করা হয়। উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, পলক যখন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল ডাটা সিঙ্গাপুরে রাখছিলেন, তখনই ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন, ২০২২’ নামে একটি আইনের খসড়াও করছিল তার অধীন আইসিটি বিভাগ। সেই খসড়ার অন্যতম বিষয় ছিল বাংলাদেশের ডিজিটাল উপাত্ত বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যেই সংরক্ষণ করা। অর্থাৎ একদিকে তথ্য স্থানীয়করণের আইন তৈরি আর অন্যদিকে নিজেই তথ্য দেশের বাইরে পাঠাচ্ছিলেন পলক।

এসব কর্মকাণ্ডের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ওরাকলের বাংলাদেশে ক্লাউড স্থাপন শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী। সিঙ্গাপুর থেকে উপাত্ত দেশে ফিরিয়ে আনলেই উপাত্ত সুরক্ষা আইন পাস করতেন তিনি। তবে ওরাকলের যন্ত্রাংশ আমদানিবিষয়ক জটিলতায় বিষয়টি দীর্ঘায়িত হয়।

এই যন্ত্র আমদানিতেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন পলক। ওরাকলের ক্লাউড বসবে গাজীপুরের হাইটেক পার্কে অবস্থিত বিডিসিসিএল ডাটা সেন্টারে। নিয়ম অনুযায়ী, হাইটেক পার্কের বিনিয়োগকারীরা বিনাশুল্কে যন্ত্রাংশ আমদানি করতে পারে। পলকের পরামর্শে ওরাকল কাস্টমসকে ফাঁকি দিয়ে বিনাশুল্কে ক্লাউড যন্ত্রাংশ খালাসের চেষ্টা করে। তবে বিষয়টি ধরা পড়ায় কাস্টমস যন্ত্রাংশগুলোর খালাস আটকে দেয়। এ ঘটনার কারণেই রাজস্ব বোর্ডের তখনকার চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয় পলকের।

পরে মোটা অঙ্কের রাজস্ব দিয়েই যন্ত্রাংশ খালাস করে ওরাকল। এজন্য পলক নিজের কমিশনে কিছুটা ছাড় দিয়েছিলেন বলেও বিডিসিসিএলে প্রচলিত রয়েছে। আর পলকের পক্ষে এসব লেনদেন দেখভাল করতেন তার এক সময়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ইকরামুল হক। বিশ্বস্ততার পুরস্কারস্বরূপ, ১৬ হাজার টাকার বেতন স্কেলের ইকরামকে সরাসরি ৫০ হাজার টাকা বেতন স্কেলে বিডিসিসিএলের ব্যবস্থাপক (লজিস্টিকস) পদে বসান পলক। উদ্দেশ্য ছিল আস্থাভাজন ইকরামের মাধ্যমে বিডিসিসিএল আর ওরাকলের মধ্যকার লেনদেন থেকে শেয়ার বুঝে নিতে নিজের লোককে বসানো।

এ বিষয়ে ওরাকলের বক্তব্য জানতে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান রুবাবা দৌলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনসংযোগের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এ সময় তিনি জনসংযোগ শাখার সংশ্লিষ্টদের মোবাইল নম্বর ও ইমেইল ঠিকানা পাঠাবেন বললেও পরে আর সাড়া দেননি।

সেন্টমার্টিনে যাত্রীবাহী ট্রলারে মিয়ানমার থেকে গুলি

ছবি: সংগৃহীত

সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফের পথে নাফ নদীর নাইক্ষ্যদীয়া মোহনার ঘোলার চরে ফের যাত্রীবাহী ট্রলারে লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহত হয়নি। ট্রলারটির মালিক আব্দুর রশিদ বলে জানা গেছে।

ওই ট্রলারের থাকা যাত্রী নাছির উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার সকালে ‘সেন্টমার্টিন থেকে অসুস্থ মাকে নিয়ে টেকনাফ আসছিলাম। মাঝপথে শাহপরীর দ্বীপের ঘোলার চরের কাছাকাছি পৌঁছালে হঠাৎ মিয়ানমার থেকে গুলি গুলিবর্ষণ করা হয়। এ সময় ট্রলারে থাকা ৫০-৬০ যাত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ট্রলারে গুলি করার বিষয়টি শুনেছি। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে’।

তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নাকি বিদ্রোহী আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, এর আগেও মিয়ানমারের দিকে থেকে দফায় দফায় টেকনাফ সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী নৌযানে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। ফলে অনেক দিন এই রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকে।

সর্বশেষ সংবাদ

রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক
টেন্ডার ছাড়াই ওরাকলকে ২০৭ কোটি টাকার কাজ দেন পলক
সেন্টমার্টিনে যাত্রীবাহী ট্রলারে মিয়ানমার থেকে গুলি
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫৩৪ জন
প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে গেছেন শেখ হাসিনা: ড. ইউনূস
৩ বছরে ৫৫০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন তিতাসের সাবেক এমডি হারুন!
চট্টগ্রামে নতুন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম
সালমান এফ রহমান ও এস আলমের শেয়ার কারসাজি তদন্তে কমিটি গঠন
আইডিয়ালের সাইনবোর্ড খুলে নিয়ে গেল ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা
পাওনা ৮০ কোটি ডলার চেয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিলেন গৌতম আদানি
ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা
জেনে নিন ফেসবুক পোস্টের রিচ কমার কারণ ও তা বাড়ানোর কৌশল
মণিপুরে কারফিউ জারি, ৫ দিনের জন্য মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ
২৫ জন ডিসির সবাই ছিল ছাত্রলীগের: রিজভী
শিবলী রুবাইয়াত ও তার সহযোগী ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে গণঅভ্যুত্থানের দ্বারপ্রান্তে মণিপুর
৩২,৬৬৬ মণ্ডপে হবে দুর্গাপূজা, নামাজের সময় বন্ধ থাকবে বাদ্যযন্ত্র: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দুর্গাপূজায় স্বেচ্ছাসেবক হতে চায় মাদ্রাসা ছাত্ররা: ধর্ম উপদেষ্টা
সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে জামায়াত