ধর্ম নিয়ে মিথ্যা, অপু বিশ্বাসকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বললেন জয়

ছবি: সংগৃহীত
২০০৮ সালে শাকিব খানকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। সেই সময় ক্যারিয়ার এবং সন্তানের কথা চিন্তা করে দুইজনের বিয়ের কথা গোপন রেখেছিলেন। এরপর ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল সন্তান আব্রাহাম খান জয়কে নিয়ে একটি গণমাধ্যমের লাইভে এসে তাদের বিয়ে এবং সন্তানের কথা জানান অপু।
বিয়ের পর সংবাদ প্রকাশের পর অভিনেত্রী ধর্ম নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তখন অভিনেত্রী জানিয়েছিলনে শাকিবের সঙ্গে বিয়ের পর তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তবে সম্প্রতি অভিনেত্রীর একটি পুরনো সাক্ষাৎকার নতুন করে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার ঝড় তুলেছে। যেখানে অভিনেত্রীকে বলতে শোনা যায়, তিনি ধর্মান্তর হওয়ার বিষয়ে আগে মিথ্যা বলেছেন। তিনি কখনও হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম হননি। শুধুমাত্র ক্যারিয়ার এবং সন্তানের কথা চিন্তা ধর্মের বিষয়ও বিয়ের মতো গোপন রেখেছেন।
যে সাক্ষাৎকারে অপু বিশ্বাস এ কথা বলেছিলেন, তার সঞ্চালনায় ছিলেন দেশের আলোচিত অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়। ধর্মান্তরের বিষয়টি ফের আলোচনায় আসলে অভিনেতা জয় একটি পোস্টে জানিয়েছেন ধর্ম নিয়ে মিথ্যা বলায় ক্ষমা চাওয়া উচিত।
অভিনেতা লিখেছেন, ‘প্রিয় অপু বিশ্বাস। ধর্ম নিয়ে মিথ্যা কথা বলা যায় না । ধর্ম নিয়ে মিথ্যে মানে তুমি একবার বিশ্বাস করছ আল্লাহকে। আরেকবার বলছ বিশ্বাস কর না। মুসলমান ভাই বোনেরা তোমার এই মিথ্যাতে কষ্ট পেয়েছেন। একইভাবে তোমার ধর্মের মানুষও তাতে বিব্রত হয়েছেন। ক্যারিয়ার, স্বামী, সন্তান সব কিছুকে ব্যালেন্স করতে গিয়ে তুমি যে মিথ্যের আশ্রয়টি নিয়েছ তা তোমাকে আশ্রয়হীন বানিয়ে দিয়েছে।
এখানেই শেষ না তিনি আরও লিখেছেন, ‘তোমার নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত। ক্ষমা চাওয়া এবং ক্ষমা করে দেওয়া এই দুটোই অনেক বড় মহত্বের কাজ। তুমি মহৎ হও অন্যরাও তোমার সাথে মহত্ত্বের পরিচয় দেবে।’
ধর্মের বিষয়ে ওই সাক্ষাৎকারে অপু বিশ্বাস বলেন, “সত্যি কথা বলতে বিয়ের পরও আমি পুরনো ধর্ম নিয়েই ছিলাম। ক্যামেরার সামনে অনেক মিথ্যা বলেছি। কিছু কিছু জিনিসের কারণে। প্রথম দিকে নিজের ক্যারিয়ার জন্য মিথ্যা বলেছিলাম। তাছাড়া ওই সময় শাকিব আমার স্বামী ছিল। তাকে সাপোর্ট করাটা আমার দায়িত্ব ছিল। আমরা অনেক প্রোগ্রামে বা শুটিংয়ে একজন অন্যজনকে প্রশ্ন করতাম কবে বিয়ে করছ। সেও আমাকে উল্টো প্রশ্ন করত আমার বিয়ে কবে হচ্ছে। অনুষ্ঠান শেষে রাতে বাড়ি ফিরে রান্না করে খাওয়াচ্ছি। আমরা তখন রানিং স্বামী-স্ত্রী।’
এখানেই শেষ না তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলেকে নিয়ে যখন লাইভে আসলাম তখন সবাই জানতে পারল আমি বিবাহিত। সবাই মনে করত আমি যেহেতু একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী ছেলেকে বিয়ে করেছি আমিও মুসলমান হয়েছি। কিন্তু আমি বিয়ের পর থেকেই হিন্দু। কারণ হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়ার জন্য প্রক্রিয়াধীন কাজগুলো হয় তার একটাও তারা (শাকিবের পরিবার) করেননি। বিয়ের সময় মুসলিম ধর্মে এসে এখন হিন্দু ধর্মে ফিরে গিয়েছি বিষয়টা তা না।’
মাঝে একটা সময় ধর্ম নিয়ে দর্শকদের মিথ্যা বলেছেন- অনুষ্ঠান উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে অভিনেত্রীর সরল উত্তর, ‘আমার ছেলের জন্য মিথ্যা বলেছি। সেই সময় যেহেতু আমার বাচ্চা হয়ে গেছে। আর শাকিবকে বিয়ে করেছি সে মুসলিম। সেই জায়গায় থেকে ভেবেছি সংসার ঠিকঠাক থাকুক। যেমনটা বিয়েকে আড়াল করেছিলাম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বিয়ের কথা প্রকাশ করেছি।’
সবশেষে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘দিনশেষে আমি ভুলে গিয়েছিলাম আমি যদি মারা যায় তখন আমার কাছের ভাই-বন্ধুরা আছেন। আমার যে অনুরাগী বা দর্শকরা আছেন তারা আমাকে কী করবে? মাটি দেবে নাকি আগুনে পুড়াবে? মানুষ তো তখন দ্বিধায় পড়ে যাবে। শাকিব খানের সঙ্গে তো আমার সম্পর্ক নেই। তাহলে সত্য তো বলতে হবে।’
