ঈদের দিনেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা, ঝরল ৪২ প্রাণ

ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র ঈদুল আজহার দিনও শান্তি ফিরল না গাজা উপত্যকায়। ধর্মীয় এই আনন্দের দিনেও ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বিমান হামলায় রক্তাক্ত হলো ফিলিস্তিন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সারাদিনে চালানো এসব হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৪২ জন, যাদের মধ্যে একজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনুস, গাজা সিটি, উত্তর গাজা ও দেইর আল বালাহ–এই চারটি এলাকায় ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর গোলাবর্ষণে নিহতদের মরদেহ পৌঁছেছে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মরদেহ চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গাজার বাসিন্দা ও আলজাজিরার স্থানীয় প্রতিনিধি তারেক আবু আজুম ঈদের দিনে বোমা বর্ষণের এ বাস্তবতাকে ব্যাখ্যা করে বলেন, “পৃথিবীর মুসলিমরা যেখানে ঈদ উদযাপন করছে, গাজার ঈদ মানেই কান্না, ক্ষতি আর মৃত্যু। প্রতি ঈদ আমাদের মনে করিয়ে দেয়—আমরা কী হারিয়েছি।”
এই হামলায় নিহত সাংবাদিককে যুক্ত করে গাজায় চলমান সংঘাতে গত দেড় বছরে নিহত সংবাদকর্মীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৬ জনে, জানিয়েছে গাজার মিডিয়া অফিস।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস সংঘাত এখনো থামেনি। হামাসের আকস্মিক হামলার পর প্রতিশোধ নিতে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬৭৭ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষ।
এছাড়া মার্চ থেকে গাজায় কার্যত অবরোধ জারি রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। খাদ্য, পানি, ওষুধ—সবকিছুতেই রয়েছে চরম সংকট। আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো বারবার হুঁশিয়ারি দিলেও তা উপেক্ষিত।
যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যেখানে এর প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন, সেখানে হামাস এখনও তা অনুমোদন দেয়নি। এরইমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, হামাসের হাতে থাকা ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনও ৩৫ জন জীবিত থাকতে পারেন—যাদের উদ্ধারে অভিযান চলবে বলেই ঘোষণা এসেছে।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন গাজায় সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে এলেও নেতানিয়াহুর সাফ ঘোষণা—হামাস পুরোপুরি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান থামবে না।
