দেশের ছয় জেলার ওপর দিয়ে দুপুরের মধ্যে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কুমিল্লা, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের চার বিভাগে আগামী তিন দিন ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সংস্থাটি জানায়, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে দেশের বাকি চার বিভাগের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে একটি ঘটনা আর কেবল একটি অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকে না। সাম্প্রতিক সময়ে এমনই এক আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে একটি মরু প্রাণী—সান্ডা। এটি নিয়ে তৈরি হয়েছে মিম, রম্যকথা ও নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট। এরই ধারাবাহিকতায় অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে: সান্ডা কি খাওয়া হালাল, নাকি হারাম? ইসলাম কী বলে এ বিষয়ে? চলুন জেনেই এসব প্রশ্নের উত্তর।
সান্ডা কী?
সান্ডা মূলত একটি মরুভূমিতে বসবাসকারী প্রাণী। দেখতে অনেকটা গিরগিটির মতো হলেও আকারে বড় এবং শরীর পোক্ত। আরবি ভাষায় একে "দাব্ব (ضبّ)" বলা হয়। মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন মরু অঞ্চলে এই প্রাণীটি দেখা যায়। অনেক এলাকায় সান্ডাকে শক্তিবর্ধক বা যৌনউত্তেজক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর তেলও বিক্রি হয় আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য।
সান্ডা। ছবি: সংগৃহীত
ইসলামে সান্ডা খাওয়া হালাল নাকি হারাম?
ইসলামী শরিয়তের বিধান নির্ধারিত হয় মূলত কুরআন, হাদীস ও ফিকহবিদদের ব্যাখ্যার আলোকে। সান্ডা নিয়ে কুরআনে সরাসরি কিছু বলা না থাকলেও হাদীসে রয়েছে একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা।
রাসূল (সা.) এর জীবনের একটি ঘটনা:
সহিহ বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত, একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে সান্ডা পরিবেশন করা হয়। তিনি তা খাননি। সাহাবারা জানতে চাইলেন- "ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি একে অপছন্দ করেন, নাকি এটি হারাম?" তিনি বললেন, "এটি আমার কওমের খাদ্য নয়, তাই আমি খাই না।" (সহিহ বুখারি: ৫৫৩৭, সহিহ মুসলিম: ১৯৪৪)। এরপর সাহাবাগণ তার সামনেই তা খেয়ে নেন, এবং তিনি এতে কোনো নিষেধ দেননি।
চার মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গি:
হানাফি- মাকরূহ তাহরিমি (না খাওয়াই ভালো), শাফেয়ি- হালাল, মালিকি- হালাল, হাম্বলি- হালাল। হানাফি মাযহাব অনুসারে, এটি একটি অরুচিকর প্রাণী হওয়ায় না খাওয়াই শ্রেয়। অন্য তিনটি মাযহাবের মতে, যেহেতু রাসূল (সা.) নিষেধ করেননি, বরং সাহাবারা খেয়েছেন, তাই এটি সম্পূর্ণ হালাল ও বৈধ।
সান্ডা তেল ও চিকিৎসা:
সান্ডা তেল অনেক আয়ুর্বেদিক ও প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে যৌনস্বাস্থ্য বৃদ্ধির উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণার ঘাটতি রয়েছে। বাজারে যেসব তেল পাওয়া যায়, তার বিশুদ্ধতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত নয়।
তাহলে ইসলামে সান্ডা খাওয়া জায়েজ?
সংক্ষিপ্তভাবে বলা যায়- কুরআনে সরাসরি নিষেধ নেই। রাসূল (সা.) নিজে খাননি, তবে খেতে নিষেধও করেননি। সাহাবীরা তার সামনেই খেয়েছেন। অধিকাংশ ফিকহ বিশারদ এটিকে হালাল মনে করেন। হানাফি মতে অপছন্দনীয় হলেও হারাম নয়। তবে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকলে কিংবা সন্দেহজনক উপায়ে প্রস্তুতকৃত তেল বা খাবার এড়িয়ে চলাই উত্তম।
দেশের সব বিভাগেই আগামী পাঁচ দিন বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এ সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে প্রকাশিত ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে তাপমাত্রা সামান্য কমবে বা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
এদিকে তাপপ্রবাহ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলার পাশাপাশি খুলনা ও বরিশাল বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা কিছু এলাকায় প্রশমিত হতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতও হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়—১৫৬ মিলিমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী পাঁচ দিনে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি গোপন সংগঠন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাম্য হত্যার বিচার, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ এবং উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আয়োজিত ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
রাকিব বলেন, “সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলে আসছে। আমরা বারবার জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।” তিনি সাম্যকে সাহসী ছাত্রনেতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সাম্য অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দ্রুত বিচার চাই।”
ছাত্রদল সভাপতি আরও বলেন, “সাম্য হত্যাকে ঘিরে যে গোপন সংগঠন মিথ্যাচার ও প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের আন্দোলনে একমাত্র ছাত্রদলই মাঠে আছে-অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের কোনো ভূমিকাই নেই।”
এদিকে সাম্য হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা অর্ধদিবস স্থগিত রাখা হয়। শোকপ্রকাশ ও বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীদের নানা কর্মসূচি চলেছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কালীমন্দির গেটসংলগ্ন এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। পরে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
সাম্য ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার ফখরুল আলমের বাড়ি।