শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

অভিমানী মুক্তিযোদ্ধা

অনেকক্ষন যাবৎ হাঁটছি। কোনো রিকশা পাচ্ছি না। হাঁটতে ভালই লাগে আমার কাছে, বিশেষ করে এ জায়গাটাতে। রাস্তার দু’পাশে প্রচুর গাছপালা, অনেকটা ঝোপঝাড়ের ন্যায়। বেশ কিছু তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। শান্তশিষ্ট, নির্জন, নিরিবিলি পরিবেশ। সন্ধ্যা নামতেই যেন ভূতুরে অন্ধকার জেঁকে বসে। রাইনাদি গ্রাম পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শিমুলতলী বাজারে এসে উপস্থিত। আজ এ এলাকাতে কী রিকশা ধর্মঘট চলছে নাকি ? মনে মনে ভাবছি। সারাটা রাস্তা জুড়ে খালি রিকশা তো নাই-ই, যাত্রীসহ কোনো রিকশা ও চোখে পড়লনা ।


বেড়ানোর সূত্রে মাঝে মাঝে এ এলাকায় আসা হয়। খুব বেশি একটা পরিচিত এলাকা না। বাজারেও কোনো রিকশা নেই। হাঁটতে আর ভালো লাগছে না তাই রিকশার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি। বেলা বড়জোড় এগারোটা। বয়স্ক এক রিকশা ওয়ালা যাত্রীবিহীন রিকশা নিয়ে এ দিকেই আসছে।
“চাচা, যাবেন ?” জিজ্ঞেস করলাম। “যামু, তবে এক কাপ চা খাইয়া লই”। উত্তর দিলেন রিকশা চালক। “আচ্ছা, চলেন তাহলে আমিও খাই এক কাপ”।
এক চালা টিনের মাচাটাকে বাঁশ দিয়ে উঁচু করে রাখা দোকানের সামনে দুইটা কাঠের বেঞ্চি। দোকানে কোনো খরিদ্দার নাই। এই সময়ে বাজারের চায়ের দোকানে দু’চার জন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বাজারটা নাকি নতুন পত্তন পাওয়া আর এ শিমুলতলী বাজারটা ও নিতান্তই ছোটখাট। আড়াআড়ি দু’ বেঞ্চে দু’জন বসলাম।
“চাচা, চায়ের আগে বিস্কুট বা কেক কিছু একটা খান”।“ না-না, আপনে খাইলে কিছু খান। আমি শুধু এক কাপ চা-ই খামু”। “আচ্ছা, ঠিক আছে। দুধ চা নাকি রং চা ?”

“চাচার অভিব্যক্তিতে বুঝা গেল, তিনি অপরিচিত ব্যক্তির আপ্যায়নে এক কাপ চা বিনা পয়সায় খেতে সম্মত না। অবশেষে আমার পীড়াপীড়িতে রাজি হলেন। দু’ জনেই রং চা নিলাম। জিজ্ঞেস করলাম- “চাচার নাম ?” “রমিজ আলী”। “বাড়ী ?” “টোডার বাগ”। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। “চাচার বয়স কত হবে আনুমানিক ?” চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিতে দিতে প্রশ্ন করলাম। “এই- কত- আর সত্তুর অইব হয়তো।” উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললেন রমিজ চাচা। “কই যাইবেন ?” বিল দিয়ে বললাম- “আপনার ইচ্ছা। ইলমদী বা তিলচন্দী। যেখানে আপনি রাজি হন”। “রিশকা যহন চালাই, যেনে কন হেনে-ই যামু”। রিকশার পেডেলে চাপ লাগালেন।

“কিছু মনে না করলে একটা প্রশ্ন করতাম, চাচা।” কী পরশন করবেন এই বুড়া বয়সেও ক্যান রিশকা চালাই- এইডাই তো ?” কথার মধ্যে কেমন যেন ক্ষোভ, ঘৃনা, অভিমান, লজ্জা জড়িয়ে আছে। আমি কৌতুহলী হয়ে উঠলাম। আজকালের অটো রিকশার জমানায় ও পায়ে চালানো রিকশা, তদুপরি বয়স্ক চালক। ফলে রিকশার গতি ও মন্থর। আমার হাতে অফুরন্ত সময়, আমি ও মনে মনে চাইছি আরো ধীরে চলুক রিকশা টা। লোকটার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাচ্ছে আমার। “উত্তরটা দিলেন না যে চাচা ?”

পিছন ফিরে এক ঝলক তাকালেন। মনে হলো চোখ দুটো যেন ঝাপসা। অস্ফুট স্বরে বললেন, “কপালের দোষ, বাজান।” “আপনার ছেলে সন্তান নাই ?” “হ” আছে- দুই পোলা এক মাইয়া। মাইয়া বিয়া দিয়া দিছি। পোলারা বিয়া শাদী কইরা নায় নাতি লইয়া যের যের সংসারে ব্যস্ত - আমগোরে দেহোনের সময় কই ? আমরা বুড়াবুড়ি ভালই আছি- মাশাল্লা। দোয়া কইরেন। পোলারা আর কী করব, দেশই কী কিছু করলনা”। তিলচন্দির রাস্তা পার হয়ে ইলমদীর রাস্তায় এসে পড়েছি। মনে সন্দেহ বাজল, উনি কী মুক্তিযোদ্ধা ?

“চাচা, কী মুক্তিযোদ্ধা ?” “এই কতা জিগাইয়া আর শরম দিয়েন না।” আমি অবাক স্বরে বললাম, এটা কেমন কথা বললেন চাচা, মুক্তিযোদ্ধা হওয়া তো গৌরবের কথা, সম্মানের বিষয়- এটা লজ্জার ব্যাপার হবে কেন ? “ততক্ষনে ইলমদী চলে এসেছি।” নামেন, আমার ভাড়া দেন।” কন্ঠস্বরটা বেশ কর্কষ মনে হলো। “চাচা কী আমার উপর রাগ করেছেন ?” “না-না, আফনে আমার কী হন যে আপনার উপর আমি রাগ করমু। আমার সময় নষ্ট কইরেন না। ভাড়া দিয়া নাইমা যান।” “আমি সামনের শান্তির বাজার যামু, চলেন।” “ভাড়া কত দিবেন ?” জিজ্ঞেস করলেন। “আপনি যা চান ?” নরম হয়ে আসে চাচা স্বর। আস্তে আস্তে রিকশার প্যাডেল চাপতে থাকেন। “মুক্তিযোদ্ধাদের তো সরকার অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। আপনি পাচ্ছেন না ?” “মুক্তিযোদ্ধাদের লিষ্টে আমার নাম নাই।”
“কেন- কেন ?” “কেওরে ধন্না দইরা মুক্তিযোদ্ধার লিষ্টে নাম উঠানোর লাইগ্যা তো যুদ্ধ করি নাই। যুদ্ধ করছি দেশের লাইগ্যা, দেশের মানুষের লাইগ্যা।”

“চাচা, সামনের বটতলায় রিকশাটা থামাইয়া চলেন আরো এক কাপ চা খাইয়া নিই।” বুঝার বাকি রইল না- কঠিন এক মানুষ। সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা, খাঁটি দেশ প্রেমিক। চা খাওয়া উপলক্ষ্যে অনেকক্ষন কথা হলো। অনেক অজানা কথা, আবেগের কথা, ভাললাগার কথা, ভালোবাসার কথা, যুদ্ধকালীন নির্মম অনেক স্মৃতির কথা, নির্দয় পাকিস্থানীদের কথা, নির্ঘুম অনেক রাতের কথা, অনাহারে কিংবা অর্ধাহারে দিনানিপাতের কথা, স্বজনদের ছেড়ে দূরে থাকার কথা, এমন অনেক কথা যে কথা কখনো কাউকেই বলা হয়নি। যুদ্ধ পরবর্তী অবহেলার কথা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম না উঠার কথা। এমন-ই অসংখ্য আলাপ। “জীবন বাজী রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করলেন। বিনিময়ে কিছুই পেলেন না। কষ্ট হয় না আপনার ?” জিজ্ঞেস করলাম, “না---হ’, নিশ্বাস ফেলে সহজ উত্তর। আবার চলা শুরু। এ বয়সে ও এত কষ্ট করছেন অথচ দেখার কেউ নেই। কাউকে বলছেন ও না কিছু। ভিতরে আমার কান্না চেপে রাখতে কষ্ট হচ্ছে।

বিড়বিড় করে বলছেন-“পোলাগো কাছেই কিছু আশা করি না আর দেশের কাছে কী আশা করমু।” দাসিরদিয়া ব্রিজ পার হওয়ার পরে বেশ নিরিবিলি একটা জায়গা। রাস্তার দু’পাশে বেশ গাছপালা। অনেক দূর পর্যন্ত কোনো গ্রাম নেই। রাস্তার ডানে বামে দু দিকেই সবুজ ফসলি মাঠ। বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত, বিশাল প্রান্তর। স্বাধীন দেশের মুক্ত প্রানের ছোঁয়ায় যেন গ্রাম বাংলার প্রকৃত রূপ। এ অপরূপ, মুক্ত স্বাধীন দেশটাকে আমার দেখার অসাধারণ সৌভাগ্য তো হয়েছে এ সাধারণ রিকশা চালক রমিজ আলীর জন্য। স্যালুট, তোমাকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী মুক্তিযোদ্ধা। বললাম- “চাচা, রিকশাটা থামান।” “কেন- বাজান ?” চাচা রিকশা থামালেন, “চাচা, কষ্ট করে রিকশা থেকে একটু নেমে আসবেন ?” আমি রিকশা থেকে নেমে বললাম। রিকশা থেকে নামলেন রিকশা চালক রমিজ আলী। “আমি আপনার পা ছুঁয়ে একটু সালাম করতে চাই।” পায়ে হাত লাগানোর আগেই জোড়ে বুকে জড়িয়ে নিলেন মুক্তিযোদ্ধা রমিজ আলী আর হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলেন। চলতি পথে কোনো রিকশা বা অন্য কোন গাড়ীর যাত্রীর অথবা কোনো মেঠো পথচারীর চোখে এ দৃশ্য পড়ল কিনা জানি না তবে তার কান্নার দৃশ্য আমার চোখে এখনো সতেজ।

খুচরা দু’তিন শ’ টাকা বাদ দিলে পকেটে মাত্র এক হাজার টাকার একটা নোট। ভাড়া দিতে সাহসে কুলাচ্ছেনা। এক হাজার টাকার নোটটা হাতের মধ্যে গুঁজে দিয়ে বললাম- “চাচা, মাফ করবেন। আমার যদি এখন পাঁচ হাজার, দশ হাজার বা পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয়ার সামর্থ্য থাকতো আমি তা-ই দিতাম। আপনার সন্তান মনে করে টাকাটা রাখবেন।” কিছুতেই রাজি হলেন না, চাচা। অগত্যা নির্ধারিত ভাড়া মিটিয়ে হাঁটা ধরলাম। চাচা বললেন-“হাঁইটা যাইতে কষ্ট অইব না, আপনের।” তার চাইতে কতগুন কষ্ট করেছেন আপনি আমাদের জন্য। মনে মনে বললাম- এ রিকশায় চড়ে আমি আর মহান মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করতে পারিনা। অন্তত পক্ষে বাকী রাস্তা টুকু পাঁয়ে হেঁটে তার প্রায়শ্চিত্ত করি। আমি রিকশা থেকে নেমে গেলে ও রিকশা হয়তো খালি থাকবে না। কোন না কোন যাত্রী এ রিকশায় চড়বেই। কিন্তু সবাই তো আর আমার মত এ প্রচার বিমুখ অভিমানী মুক্তিযোদ্ধার মনের গভীরের কথা জানবে না। কিছু দুর এগিয়ে পিছন ফিরে তাকাই। আবার চোখে চোখ পড়ে যায়। দেখি সে চোখে যেন বর্ষার বৃষ্টি ভর করে আছে।

ডিএসএস/

Header Ad
Header Ad

মালয়েশিয়ায় অবৈধ প্রবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা, দিয়েছে দেশে ফেরার সুযোগ

ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের জন্য এক বছরের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। ‘সেলফ ভলান্টারি রিটার্ন’ বা স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন কর্মসূচির আওতায় কোনো ধরনের জেল বা বিচারের মুখোমুখি না হয়েই নিজ নিজ দেশে ফেরার সুযোগ পাবেন তারা।

শুক্রবার (১৬ মে) দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।

এই কর্মসূচির মেয়াদ শুরু হবে চলতি বছরের ১৯ মে থেকে এবং তা চলবে আগামী বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। অভিবাসীদের অপরাধের ধরন অনুযায়ী ৩০০ থেকে ৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জরিমানা দিতে হতে পারে। তবে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে, তাদের থেকে কোনো জরিমানা নেওয়া হবে না। শুধুমাত্র বিশেষ পাসের জন্য ২০ রিঙ্গিত ফি প্রদান করতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, এর আগে যারা সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে নিবন্ধন করেছিলেন কিন্তু মালয়েশিয়া ত্যাগ করেননি, তারা নতুন করে এই কর্মসূচির আওতায় পড়বেন না।

এশিয়ার ২০টি দেশের আঞ্চলিক সংগঠন 'ক্যারাম এশিয়া'র তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় প্রায় ২০ থেকে ৩০ লাখ অবৈধ অভিবাসী অবস্থান করছেন। তবে এই সংখ্যাটি সুনির্দিষ্ট নয়। বাংলাদেশের অবৈধ অভিবাসীর সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও দেশটির দূতাবাসের শ্রম বিভাগ ধারণা করছে, এই সংখ্যা কয়েক হাজার হতে পারে। তবে বাংলাদেশি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও প্রবাসী ব্যবসায়ীরা মনে করেন, দেড় থেকে দুই লাখ বাংলাদেশি অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।

বাংলাদেশ বিমানবন্দর, পুলিশ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক দশকে মালয়েশিয়া থেকে ৮০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন। এছাড়া, গত ছয় মাসে প্রায় আড়াই হাজার অভিবাসী ট্রাভেল পাসের মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন।

বাংলাদেশের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) জানায়, ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়কালে প্রায় ১০ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে গিয়েছেন। তবে নানা অনিয়ম ও সমস্যার কারণে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ রয়েছে। এই বাজারটি পুনরায় চালুর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

সম্প্রতি তিনি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আলোচনায় শ্রমবাজার পুনরায় উন্মুক্ত করা এবং অভিবাসীদের কল্যাণে একযোগে কাজ করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।

মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশিদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সময়মতো এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় দেশে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

ঈদের ছুটি সমন্বয়ে শনিবার খোলা থাকবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দাপ্তরিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি সমন্বয়ের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার (১৭ মে) এবং পরবর্তী শনিবার (২৪ মে) দেশের সব ব্যাংক, বিমা কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। ফলে সাপ্তাহিক ছুটি থাকা সত্ত্বেও এদিনগুলোতে চলবে স্বাভাবিক দাপ্তরিক, আর্থিক ও শিক্ষা কার্যক্রম।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ঈদ উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ দীর্ঘ ছুটির ভারসাম্য রক্ষায় সরকার ৬ মে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ১৭ ও ২৪ মে, দুটি শনিবার অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্ধারিত শনিবারগুলোতে খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে এসব দিনে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখাগুলোতে স্বাভাবিকভাবে জমা-উত্তোলন, চেক নিষ্পত্তি, অনলাইন লেনদেনসহ সব কার্যক্রম চলবে। একইসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র জানিয়েছে, শেয়ারবাজারে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত লেনদেন চলবে।

অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত—১৭ ও ২৪ মে খোলা থাকবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন এড়াতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এসব দিনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রাখার কথা জানিয়েছে।

সরকারের এ উদ্যোগের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষা কার্যক্রমে স্বাভাবিক গতি বজায় থাকবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায় : হাসনাত আব্দুল্লাহ

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

‘বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায়’- এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, “আমরা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে পেরেছি, কিন্তু তাদের অর্থব্যবস্থা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।”

শুক্রবার (১৬ মে) কুমিল্লায় ‘জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনে’ আহত, শহীদ ও বীর সন্তানদের সম্মানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

হাসনাত বলেন, “কুমিল্লার অনেক উপজেলায় সব দলের রাজনীতি আওয়ামী লীগের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। এমনকি বিএনপির রাজনীতিও চলছে তাদের টাকায়।”

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তারা জামিন পায় কিভাবে? এর পেছনে কারা ইন্ধন দিচ্ছে তা জাতির সামনে প্রকাশ করুন।”

তিনি আরও বলেন, “আপনি (আসিফ নজরুল) বলছেন, আপনাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না—তাহলে তা জাতির সামনে তুলে ধরুন। বিচার হয়নি, দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল হয়নি—এটাও আপনার ব্যর্থতা।”

এনসিপি নেতা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার যদি মনে করে খুনিদের বিচার ও আওয়ামী লীগের বিচার অপেক্ষা সংস্কার বড় বিষয়, তাহলে তারা ভুল করছে। বিচার হবে, সংস্কার হবে, তার পরেই হবে নির্বাচন।”

তিনি মানবিক করিডোর ও ১৪ দল প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানান। বলেন, “আমরা কোনো পরাশক্তির আধিপত্য চাই না। ভারতের, পিন্ডির বা মার্কিন আধিপত্য নয়, সার্বভৌমত্ব রক্ষাই আমাদের অঙ্গীকার।”

কুমিল্লা জেলা ও মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের আয়োজন করা এ সমাবেশে বিএনপি, এনসিপি, খেলাফতে মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা অংশ নেন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ফেস দ্য পিপলের সম্পাদক সাইফুর রহমান সাগর, বিএনপি নেতা আশিকুর রহমান ওয়াসিম, এনসিপি নেতা রিফাত রশিদ, নাভিদ নওরোজ শাহ, এবি পার্টির জিএম গোলাম সামদানী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আরাফ ভূঁইয়া।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মালয়েশিয়ায় অবৈধ প্রবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা, দিয়েছে দেশে ফেরার সুযোগ
ঈদের ছুটি সমন্বয়ে শনিবার খোলা থাকবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দাপ্তরিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বিএনপির রাজনীতি চলে আওয়ামী লীগের টাকায় : হাসনাত আব্দুল্লাহ
সারা দেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১ হাজার ৬৬২ জন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দাবি মেনে নিয়েছে সরকার
নেপালকে হারিয়ে সাফের ফাইনালে বাংলাদেশ
বোতল নিক্ষেপকারী শিক্ষার্থীকে বাসায় দাওয়াত দিলেন তথ্য উপদেষ্টা
এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’র আত্মপ্রকাশ
পেটে বাচ্চাসহ গরু জবাই করে বিক্রি, ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছ রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ
জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে সাত কলেজ
প্রোটিয়াদের উড়িয়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের
বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় ডিবি কার্যালয়ে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ল
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ও সাম্য হত্যার তদন্ত করে লাভ নেই: ফারুক
শাহজালালে ৭১ আরোহীসহ নিরাপদে অবতরণ করল চাকা খুলে পড়া বিমান
শ্রীনগর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক দোকান পুড়ে ছাই
উড্ডয়নের সময় খুলে পড়ল চাকা, ৭১ যাত্রী নিয়ে মাঝ আকাশে বিমান
গত ৮ মাসে ৯০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে : মির্জা আব্বাস
সাম্য হত্যার প্রতিবাদে শাহবাগ থানা ঘেরাও, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম