মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অব্যাহতি দিলেন ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১ মে) হোয়াইট হাউজ থেকে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সাময়িকভাবে এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, মাইক ওয়াল্টজকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল। ট্রাম্প পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় ওয়াল্টজের কাজের প্রশংসা করে বলেন, “তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষায় কঠোর পরিশ্রম করেছেন।” একই সঙ্গে ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ওয়াল্টজকে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত করা হবে।
সাবেক কংগ্রেসম্যান এবং সেনাবাহিনীর বিশেষ ইউনিট গ্রিন বেরেটের অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মাইক ওয়াল্টজ সম্প্রতি হোয়াইট হাউজের অভ্যন্তরে সমালোচনার মুখে পড়েন। বিশেষ করে মার্চ মাসে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের একটি ‘সিগন্যাল চ্যাট’ কেলেঙ্কারিতে তার নাম উঠে এলে তা নিয়ে প্রশাসনের ভেতরেই অসন্তোষ তৈরি হয়।
হোয়াইট হাউজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, “যখনই কোনো জটিলতা আসে, আমি রুবিওকে ডাকি। এবং সে সব ঠিক করে ফেলে।”
মার্কো রুবিও দায়িত্ব পালন করবেন যতদিন না নতুন একজন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়। এই পদটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতির প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব বহন করে এবং এর জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হয় না। এর আগে ১৯৭০-এর দশকে হেনরি কিসিঞ্জার একইসঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রয়টার্স আরও জানিয়েছে, ওয়াল্টজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যালেক্স ওয়াংকেও পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ওয়াং উত্তর কোরিয়া বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।
এদিকে, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে সম্প্রতি বড় ধরনের অদলবদল চলছে। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে অন্তত ২০ জন কর্মকর্তা বরখাস্ত হয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার পরিচালককে পদচ্যুত করা হয়েছে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ তিনজন রাজনৈতিক নিয়োগপ্রাপ্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এসব পরিবর্তনের ফলে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ভেতরে কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ প্রেসিডেন্টের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী প্ল্যাটফর্ম, যা বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় কৌশল নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।
