রবিবার, ৮ জুন ২০২৫ | ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্রবন্ধ / বাঙালি সংস্কৃতির বাড়ন্ত প্রতিপক্ষ

বাঙালির জীবনে উৎসব-পার্বণের কমতি ছিলোনা আগেও, বেশির ভাগই ছিল নানা ধর্মসম্প্রদায়ের আবাহন থেকে। ভাগ্যাহত বাঙালি জীবনের কঠিন সংগ্রামের ফাঁকে উৎসবের আয়োজন করেছে। এরপরেও ঈদ, পুজা ইত্যাদি উৎসবগুলি সার্বজনীন সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। সময়ের পালাবদলে দেশ ভাগ হয়েছে, বঙ্গের একাংশকে নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। উনিশশ’ ষাটের দশকে রাষ্ট্রযন্ত্রের রবীন্দ্র বিরোধীতার প্রতিবাদের পথ ধরে বাঙালি শেকড়ের সন্ধানে নেমেছে। ঢাকার রমনা উদ্যানের সেই সংগ্রাম ছোট থেকে বড় হয়েছে। ক্রমান্বয়ে পহেলা বৈশাখ ধর্মবর্ণ মিলে বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

প্রথম দিকে শহর-কেন্দ্রিক হলেও ক্রমান্বয়ে নববর্ষের আমেজ গ্রামগঞ্জে ছাড়িয়ে, ধনাট্যের চৌকাঠ পেরিয়ে মধ্যবিত্ত, এমন কি নিম্নবিত্তের দুয়ারে পৌছেছে। এই উপলক্ষ্যে এখন বাঙালির অবিভাজ্য সাংস্কৃতিক চেতনা অন্বেষণের গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। যে বাংলা সন মোঘল আমলের কৃষিপণ্যের খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে প্রবর্তন করা হয়েছিল, তা আজ পরিবর্তিত রূপে আবির্ভূত হয়েছে। পুরনো দিন বদলেছে; সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামো বদলেছে। অর্ধ শতাব্দিরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ নববর্ষকে কেবল নিজস্ব সংস্কৃতির অংশ করেই নেয়নি, সময়ের পড়তে তা সমাজ-সংস্কৃতিরও অঙ্গ হয়েছে। সময় ও পরিবর্তণের যা দাপট, অন্যথায় বাংলার লোকসংস্কৃতি কিংবা বাংলা ঋতুর কথা বাঙালির নতুন প্রজন্ম হয়তো ভুলেই যেত!

নানা অনুসঙ্গ এসেছে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে; যুক্ত হয়েছে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ডালি, স্বৈরশাসন ও ধর্মান্ধতার কুলষতা বিরোধী চেতনার নতুন সংযোজন এসেছে মঙ্গল শোভাযাত্রায়। এই শোভাযাত্রা, অশুভের বিনাশ কামনায়, সত্য ও সুন্দরের প্রার্থণায় শামিল হয়েছেন ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ নির্বিশেষে সব পেশার, সব শ্রেণীর মানুষ। নানা রংয়ের শাড়ি, মুখে আলপনা, বাহারি পাঞ্জাবি, ফুলের বিচিত্র শোভা, এসবের সঙ্গে তরুণদের হাতে জাতীয় পতাকা দেখে আমাদের প্রজন্মের কষ্ট ভুলিয়ে দেয়। তারুণ্যের এ প্রত্যয় মানব ধর্মের পক্ষে, অসাম্প্রদায়িকতা পক্ষে, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, অশুভের বিরুদ্ধে; এ যেন অন্ধকার থেকে আলোতে এগিয়ে যাওয়া।

রমনার বটমূলে সাহসী বাঙালিদের নেতৃত্বে নবজাগরণের যে ডঙ্কা বেজেছিল, আজ অর্ধশতাব্দিরও বেশি সময় পরে সে ডঙ্কার দোলা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মাঝ দিয়ে বাঙালির শাশ্বত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য দেশের গন্ডির বাইরে বেরিয়ে বিশ্বের দুয়ারে পৌঁছেছে। আরও আনন্দের বিষয় যে, বোমা মেরে, ধর্মান্ধতার শিকল পরিয়ে কিংবা ভয়ভীতিতে এ উৎসব বন্ধ করা যায়নি; ধর্মীয় অপব্যাখ্যার আঘাতেও ঠেকানো যায়নি।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে-এতেই কী তুষ্ট থাকবে বাঙালি? সে সুযোগ কি আছে? একবারে নেই। কারণ অসাম্প্রদায়িক জাতিসত্তার বিরোধীতা আজও আত্মসমর্পন করেনি। মুক্তিযুদ্ধ শেষে রমনার উদ্যানে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পন করেছিল কেবল পরাজিত পাকিস্তানি সৈন্যরা, তাদের এদেশীয় অনুচরেরা নয়। সময়ের ব্যবধান এবং মুক্তিযুদ্ধপন্থি প্রগতিশীলদের আত্মতুষ্টির সুযোগে পুরনো প্রতিক্রিয়াশীলরা নতুন করে সুগঠিত হয়েছে, সংস্কৃতির জগতে পরাস্থদের ব্যাপক অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ফলে নতুন আদলে ধর্মীয় উগ্রতা আবারও মানুষকে বিভাজিত করে চলেছে; আক্রান্ত হচ্ছে এক বাঙালি আরেক বাঙালির অসহিষ্ণুতায়।

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পরপরই পূর্ববঙ্গের বাঙালিরে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা জেগে ওঠে। রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ সেই চেতনাকে বেগবান করে। ক্রমান্বয়ে লোকজ সংস্কৃতির সঙ্গে নাগরিক জীবনের সেতুবন্ধ ঘটে। ১৯৭১এর সশস্ত্র-মুক্তিযুদ্ধসহ পালাক্রমিক জনসংগ্রাম সেই উপলব্ধিকে অপ্রতিরুদ্ধ করে। সাহিত্য ও শিল্পকলায় সে দ্যোতনা ছড়িয়ে পড়ে; নৃ-তাত্ত্বিক, সামাজিক ও ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য মিলে পহেলা বৈশাখ প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়। তবে অনুধাবন করা সঙ্গত যে, ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়েও বাঙালি আমাদের রাষ্ট্রীয় ভূখন্ডে একক নয়; আমাদের আছে আদীবাসী, নানা নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠি, যাদের নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি আছে, আছে বৈশাবিসহ নিজস্ব সাংস্কৃতির আবাহন। অতএব বাঙালির নববর্ষ তখনোই পূর্ণতা পাবে যখন সকলের নববর্ষকে আমরা সম্মান জানাতে শিখবো।

অনস্বীকার্য, পূর্ণ মনে হলেও বাংলাদেশে আমরা বাঙালি সংস্কৃতির খণ্ডিত অংশ ধারণ করি। বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপরা, আসাম, এমন কি ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে ৩০ কোটিরও বেশি বাঙালি পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে। পূর্ববঙ্গ-পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের জন্ম প্রাসঙ্গিকতায় আমাদের পহেলা বৈশাখ ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে নিশ্চয়ই, কিন্তু এর শ্বাশত আবেদন এপার-ওপারে সমান। দূর্ভাগ্য যে, পঞ্জিকার হেরফের ঘটিয়ে বাঙালির সর্বজনীন উৎসবটিকেও খন্ডিত করা হয়েছে! এমনকি ভাগ হয়ে গেছে রবীন্দ্র-নজরুলের জন্ম ও মৃত্যুতিথি। ভাগ হয়েছে ব্যবসায়ী মহলের হালখাতা, সন গণনা! এই বিভাজন দূর্ভাগ্যজনক।

প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা ঢাকঢোল বাজিয়ে, নৃত্যগানে মেতে পহেলা বৈশাখ গ্রহণ করি বটে, কিন্তু বাঙালির শ্বাশত সংস্কৃতি কতটা লালন করি? বাংলাভাষা,এর সন-তারিখকে কতটা সমাদর করি আমরা? এককালে বাঙালির জীবনজীবিকা বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী সম্পন্ন হতো; আজ তা নেই। এককালে বাঙালির পারিবারিক ও সামাজিক কাজকর্ম, বিবাহ, জন্ম-মৃত্যুসহ জীবনের সব প্রয়োজনে বাংলা সনতারিখ ছিল অনস্বীকার্য; আজ নেই! দূর্ভাগ্য যে, যে নবীনেরা পহেলা বৈশাখের উৎসবে মাতেন তাদের কাছেও বাংলা সনতারিখ অপ্রয়োজনীয় হয়েছে! ইংরেজির বিশ্ব আধিপত্ত অনস্বীকার্য, পরিবর্তন মেনে নিতে হবে, কিন্তু আপন ভাষা-সংস্কৃতির বিনিময়েও কি?

শুধু তাই নয়, বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বিজাতীয় আগ্রাসন আজ নতুন মাত্রা পেতে শুরু করেছে। শিক্ষাব্যবস্থায় এ আগ্রাসন বহুল দৃশ্যমান। ধর্মান্ধ এবং সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির এই পূনরাভিযান শিক্ষার্থীদের তাৎপর্যময় অংশে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। অথচ এই দুষ্ট প্রবনতাকে প্রতিরোধ করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। ভুললে চলবেনা দেশের পাঠ্যপুস্তকে রবীন্দ্রনাথ, জীবনান্দকে নির্বাসন দেওয়ার চেষ্টাও কম নেই! অতএব শিক্ষা ব্যবস্থায় এই আগ্রাসন ছোট করে দেখার অবকাশ নেই।

শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়, বহু শাখাতেই আজকাল দৃশ্যমান হচ্ছে বাঙালির সংস্কৃতি বিরোধী আগ্রাসন। সমাজের স্তরগুলিতে উগ্রবাদ ও ধর্মান্ধতা নতুন মাত্রা লাভ করার দ্বারপ্রান্তে এসেছে।

স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী গোপনে, কিছু ক্ষেত্রে প্রকাশ্যেও, তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এসবের বিপরীতে দরকার রাষ্ট্র ও সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট বা কার্যকর উদ্যোগ, যার অনপস্থিতি আতংকজনক। মোটকথা, বাঙালির সাংস্কৃতিক শক্তি ক্রমান্বয়ে বিপন্ন হচ্ছে। দেশে মাটিতে প্রভূত অর্থনৈতিক অগ্রগতির আলো জ্বাললেও ধর্মান্ধ সংস্কৃতির অন্ধকার ঠেকানো যাচ্ছে না। অথচ এ অন্ধকার রোধ করা না গেলে প্রগতির সব আলো নিভে যাবে।

লক্ষ্য করার মতো যে, রাজনৈতিক অঙ্গনে ধরাশায়ী হলেও ধর্মীয় উগ্রবাদ ও ধর্মান্ধতা নিত্য নতুন চেহারায় অগ্রসরমান। যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ উপড়ানো হয়েছে বলে অর্ধশতক আগে প্রশান্তি লাভ করা গেছে, সেই সাম্প্রদায়িকতা নানা কৌশলে আজ বিস্তৃত হচ্ছে। রাজনৈতিক ধর্মবাদীরা সাধারণ মানুষের আবেগ কাজে লাগিয়ে তৃণমূলে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ কথা বলে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। এ যেন এক নি:শব্দ গ্রাস-যা ঠেকাতে না পারলে সমূহ দুর্গতি ঠেকানো যাবে না। মনে রাখা দরকার, যে সমাজে উগ্রবাদী ও ধর্মান্ধরা মাইক্রোফোনের নিয়ন্ত্রন হাতে নিতে সক্ষম হয়, সে সমাজে ধর্মের পবিত্রতা যেমন খর্ব হয়, তেমনি তৈরি হয় উন্মাদনার অশূভ ও সম্প্রসারিত ক্ষেত্র, যার কুফল দৃশ্যমান হয় সকল ক্ষেত্রে।

শুধু এই নয়, উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো বাঙালির উদার অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতিকে আঘাত হানছে, কখনো সরাসরি। যাত্রাপালার গ্রামীণ সংস্কৃতি প্রায় বিলুপ্ত হবার পথে। লোক ঐতিহ্যের উৎসবগুলিতে প্রতিবন্ধক তৈরির অযুহাত সৃষ্টি করা হচ্ছে। ওরা বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস, আইন, সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাবারও উদাহরণ তৈরি করছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্মান্ধরা প্রশাসনের আশকারা পাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। মাঠ প্রশাসনের উদাসীনতায় সমাজে মৌলবাদ ভীতি বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। বাউলরা আজ ধর্মব্যবসায়ীদের ভয়ে তটস্থ। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও অপতৎপরতা চালানোর অভিযোগ মিলছে। বলা বাহুল্য, হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতিকে ‘বিধর্মীদের সংস্কৃতি’ বলে মিথ্যাচার করে রাজাকার-আদবদরের অনুসারীরা নিত্যনতুন উদ্যোগে সফল হতে চাইছে। সব মিলিয়ে ফুলে ফেঁপে উঠছে নি:শব্দ মৌলবাদ।

ইত্যকার অশুভ দৃষ্টান্ত নিয়ে নাগরিক সমাজের উদ্বেগের শেষ নেই। আরও উদ্বেগের বিষয় যে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরেও রাষ্ট্রকে সামাজিক অন্ধকারের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করা যায়নি। অথচ রাষ্ট্রকাঠামোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ধর্মান্ধ বা মৌলবাদী গোষ্ঠি অবস্থান পাকাপোক্ত করতে সক্ষম হলে বড় ক্ষতির কারণ হবে। অতএব বাঙালির সংস্কৃতিক সংগ্রামকে, মানবিক সংস্কৃতির ধারাকে বেগবান করতে হবে, শিক্ষাধারায় পাঠ্যসূচি থেকে ঘৃণা সঞ্চারি রচনা বাদ দিতে হবে, বিজ্ঞানভিত্তিক সমতার সমাজ গড়তে হবে।

দৃশ্যতই ধর্মান্ধ এবং রাজনৈতিক ধর্মবাদীরা রাষ্ট্রক্ষমতার অভ্যন্তরে শিকড় বিস্তার করতে ব্যস্ত, কারণ তারা মনোজাগতিক বৈকল্য চায়। সে কারণে এ প্রবণতার শিকড় উৎপাটন অত্যাবশ্যকীয় জাতীয় দায়িত্ব। কারণ এ বিপর্যয় সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। প্রার্থণা করি, বাঙালি মানুষ হোক, বাঙালির দেশপ্রেম জাগ্রত হোক, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।

 

 

 

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তান-তুরস্ক-চীনের অদৃশ্য জোটে চাপে ভারত

ছবি: সংগৃহীত

নয়াদিল্লি যখন অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক ও সামরিক পুনর্গঠনে মনোযোগ দিচ্ছে, তখন সমুদ্রপথে ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এমন এক সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বিশ্লেষকদের মতে, ২০৪০ সালের মধ্যেই ভারতকে মোকাবিলা করতে হতে পারে চীন, তুরস্ক ও পাকিস্তানঘনিষ্ঠ এক ‘কার্যত নৌ জোট’-এর।

তিনটি দেশ যদিও কোনো আনুষ্ঠানিক সামরিক চুক্তিতে আবদ্ধ নয়, তবে সামরিক, প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সহযোগিতায় তারা একে অপরের পাশে দৃঢ়ভাবে অবস্থান করছে। সাম্প্রতিক ‘অপারেশন সিদুঁর’ মহড়ার সময় এই বাস্তবতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যেখানে ভারতের সন্দেহ, পাকিস্তানের সঙ্গে নেপথ্যে তুরস্ক ও চীনও সক্রিয় ছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবিষ্যতের যেকোনো যুদ্ধেই ভারতকে একা লড়তে হতে পারে, আর প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াতে পারে বহুজাতিক সমন্বিত বাহিনী। ফলে শুধু সামরিক ভারসাম্য নয়, কূটনৈতিক কৌশলেও চাপে পড়তে পারে নয়াদিল্লি।

চীনের নৌবাহিনী ২০৪০ সালের মধ্যে ছয়টি বিমানবাহী রণতরী, শতাধিক ডুবোজাহাজ ও শতাধিক যুদ্ধজাহাজ নিয়ে সমুদ্রজয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাকিস্তানের গোয়াদার বন্দর কার্যত একটি সামরিক ঘাঁটিতে রূপান্তরিত হয়েছে। তুরস্কও আধুনিক ডুবোজাহাজ, সশস্ত্র ড্রোন ও যুদ্ধজাহাজ নির্মাণে জোর দিচ্ছে এবং এসব প্রযুক্তি পাকিস্তানের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতও নিজেদের শক্তি বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হয়েছে। ২০৪০ সালের মধ্যে তিনটি কেরিয়ার ব্যাটল গ্রুপ, ২০০টি যুদ্ধজাহাজ ও আধুনিক ডুবোজাহাজ ফ্লিট গঠনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে নয়াদিল্লি। তবে একে বাস্তবে রূপ দিতে হলে আরও দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে—মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

নয়াদিল্লির আশঙ্কা, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকলে পাকিস্তান-তুরস্ক-চীনের সম্ভাব্য জোট সমুদ্রের নিচে ভারতের কৌশলগত অবস্থান ডুবিয়ে দিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নয়: ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (৬ জুন) সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মস্কোর আচরণই নির্ধারণ করবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী অবস্থান।

ট্রাম্প জানান, রাশিয়া যদি রক্তপাত বন্ধে উদ্যোগ না নেয় এবং যুদ্ধবিরতির পথে না আসে, তবে পরিস্থিতি ভিন্নভাবে বিবেচনা করবেন তিনি।

এর আগে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত একটি বিল মার্কিন সিনেটে পাস হলেও, তা কার্যকরের জন্য প্রয়োজন প্রেসিডেন্টের অনুমোদন।

বিশ্লেষকদের মতে, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট এবং বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে খোলামেলা দ্বন্দ্বে জড়াতে চাইছেন না ট্রাম্প। এতে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক প্রভাব হ্রাস পেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

Header Ad
Header Ad

রাজধানীতে কোরবানির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে রাজধানীজুড়ে। তবে এরই মাঝে আলোচনায় এসেছে কোরবানির মাংসের বাজারদর—যেখানে ৯৫০ থেকে ১১০০ টাকা খরচে প্রস্তুত হওয়া মাংসই বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৬০০-৬৫০ টাকায়!

ঈদের নামাজ শেষে সকাল থেকেই রাজধানীর অলিগলি, গ্যারেজ ও খোলা জায়গায় পশু কোরবানি দেন নগরবাসী। দুপুরের দিকে হঠাৎ বৃষ্টিতে কোরবানির কাজে কিছুটা বিঘ্ন ঘটে। তবে বিকেল হতেই দৃশ্যপট পাল্টায়। মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড, উত্তর বাড্ডা, রামপুরা, খিলগাঁও, সূত্রাপুর, ও জুরাইন রেলগেটসহ বেশ কিছু এলাকায় গড়ে ওঠে অস্থায়ী মাংসের বাজার।

মুলত গরিব, অসহায় ও ভিক্ষুকরা বিভিন্ন বাসা থেকে যে মাংস সংগ্রহ করেন, সেটাই বিক্রি করছেন এসব স্থানে। এ সুযোগে মৌসুমি কিছু ব্যবসায়ীও যুক্ত হয়েছেন। রামপুরা বাজারের এক ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী জানান, ‘‘আসল মাংস কিনতে গেলে কেজিতে ৭৫০ টাকা লাগে। এখন কম দামে সংগ্রহ করে কাবাব বা হালিম তৈরিতে কাজে লাগাবো।’’

বিকেল চারটার দিকে রামপুরা বাজারের সামনে দেখা যায়, অনেকে পলিথিন ব্যাগে ৮-১০ কেজি করে মাংস এনে বিক্রি করছেন। এক বিক্রেতা বলেন, “রান্না করে খাওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। তাই কিছুটা বিক্রি করে সংসার চালাই।”

তবে এখানেই উঠছে প্রশ্ন—এসব মাংস কতটা নিরাপদ? বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করা, সংরক্ষণহীন পরিবেশে রাখা এবং ভ্যাপসা গরমে বিক্রি হওয়া এই মাংসের গুণগত মান নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট উদ্বেগ।

বিশেষ করে যখন এসব মাংস পরবর্তীতে রাস্তায় বিক্রি হওয়া হালিম, কাবাব বা অন্যান্য খাদ্যপণ্যে ব্যবহৃত হয়, তখন জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকির আশঙ্কা আরও বাড়ে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তান-তুরস্ক-চীনের অদৃশ্য জোটে চাপে ভারত
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নয়: ট্রাম্প
রাজধানীতে কোরবানির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়
ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ ড্রোন ও মিসাইল হামলা
আরাফাতের ময়দানে হজের সময় সন্তানের জন্ম দিলেন টোগোর নারী
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ২৬ জন, মোট মৃত্যু ২৩
রাজধানীতে কোরবানির মাংস কাটতে গিয়ে আহত ৭৭ জন
ঈদ মৌসুমে টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টির পূর্বাভাস, সতর্ক থাকতে বলছে আবহাওয়া অফিস
ঈদের দিন গাজায় ৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত
পাকিস্তানের নেতৃত্ব খুবই শক্তিশালী : ট্রাম্প
ঢাকায় দেড় ঘণ্টায় ২১ মিলিমিটার বৃষ্টি, ঈদের আনন্দে ব্যাঘাত নেই
কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
নগরজুড়ে কোরবানির পশু জবাই, পরিচ্ছন্নতায় প্রস্তুত ২০ হাজারের বেশি কর্মী
ঈদের দিন বন্ধ মেট্রোরেল, কাল থেকে ফের চলবে
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সস্ত্রীক সাক্ষাৎ
কাশ্মীর হামলায় ভারতকে সমর্থন চীন-ইরানের, পাকিস্তানের ওপর বাড়ছে কূটনৈতিক চাপ
দেশকে গণতান্ত্রিক ধারা থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে: ইশরাক হোসেন
লা লিগার সেরা রাফিনিয়া, অনূর্ধ্ব-২৩ বিভাগে ইয়ামাল
ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে জাতির জন্য ভালো হবে: মির্জা ফখরুল
ঈদের দিনেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা, ঝরল ৪২ প্রাণ