শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

মিসরের সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা সাক্কারা আসলে সাড়ে দশ বর্গ কিলোমিটারজুড়ে এক বিশাল সমাধি ক্ষেত্র। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে নীল নদের পশ্চিম তীরে গিজা থেকে দাসুর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় সে সময়ের রাজধানী মেমফিসের নাগরিকদের সমাধিস্থ করার জন্য বেছে নেয়া হয়েছিল থেকে কয়েক কিলোমিটার উত্তরে সাক্কারার মরু প্রান্তর। বছরের পর বছর ধরে সম্রাট এবং পরিবারের সদস্য ও সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ পেশাজীবী মানুষের অগণিত মৃতদেহ সমাহিত হয়ে আছে সাক্কারায়।

কায়রো কিংবা গিজা থেকে সাক্কারায় আসার জন্যে গণপরিবহন নেই। পর্যটকদের জন্য প্রাইভেট কার, ট্যাক্সি অথবা দলবেঁধে ভ্রমণের জন্য ভাড়া করা বাস মিনিবাস সহজলভ্য। অসংখ্য নামি-অনামি টুর অপারেটর বিদেশি পর্যটক পরিবহনের জন্য একপায়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের টুর গাইড সিলভিয়া এবং চালক বাসামও পেশাদার পর্যটন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত। সাক্কারায় প্রবেশের ছাড়পত্র সংগ্রহের জন্যে বাসাম যেখানে এসে দাঁড়ালো সেটি টিকিট ঘর, প্রক্ষালণ কক্ষ এবং আর্কিওলজিকাল সাইটের অফিস মিলিয়ে পাথরের তৈরি একটি কমপ্লেক্স। এই ভবনটির বিপরীতে রাস্তার ওপারে মরুভূমিতে বালির স্তুপ জমতে জমতে পাহাড় হয়ে গেছে আর সেই পাহাড়ের পায়ের কাছে তিনটি পাথরের স্তম্ভ এখনো পুরোপুরি টিকে আছে। আরো কয়েকটি ভাঙাচোরা স্তম্ভ এবং ছড়িয়ে থাকা প্রস্তখণ্ডের মধ্যেও দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি খেজুর গাছ।

কমপ্লেক্স চত্বরে গাড়ি রাখার সঙ্গে সঙ্গেই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পোশাকধারী পুলিশ এগিয়ে এসে তার খাতার পাতায় গাড়ির নম্বর লিখে সিলভিয়াকে কিছু একটা জিজ্ঞেস করলো। সিলিভিয়া উত্তর দিল বাংলাদেশ! দুবার শোনার পরে ‘ব্যাংলাদেস, ব্যাংলাদেস’ উচ্চারণ করে বড় কষ্টে তার খাতায় আমাদের দেশের নাম অন্তর্ভূক্ত করতে পেরেছে বলে মনে হলো। সম্ভবত জীবনে প্রথমবারের মতো তিনি এই দেশটির নাম শুনেছেন। আসলে তাকেও দোষ দেওয়া যায় না। গিজার গ্রেট পিরামিডের তুলনায় খুব কম পর্যটকই সাক্কারা পর্যন্ত আসে।

সাক্কারার টিকিট কাউন্টারের সামনে বিভিন্ন মূল্যমানের টিকিটের দীর্ঘ তালিকা ঝুলছে। সিলভিয়ার সঙ্গে কথা বলে আমরা আগেই ঠিক করেছিলাম পুরো এলাকা ঘুরে আসার ১৮০ ইজিপশিয়ান পাউন্ডের স্ট্যান্ডার্ড টিকিট কিনব, এ ছাড়া আমাদের বাহনের জন্য দিতে হবে মাত্র পাঁচ পাউন্ড। রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বর্তমানে সাক্কারার মূল আকর্ষণ স্টেপ মিরামিডে প্রবেশ নিষেধ! অন্য পাঁচ-ছয়টি পিরামিডের ভেতরে প্রবেশের ইচ্ছে না থাকায় ৪৪০ পাউন্ডের টিকিট কেনার প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন মূল্যের টিকিট কিনে একেকটি পিরামিডেও প্রবেশ করা যেতে পারে।

নিচে ঘন খেজুরের বন পেরিয়ে অনেক দূরে দূরে কিছু বসত বাড়ির আভাস হাতের ডান দিকে এবং বাঁয়ে বালির পাহাড় রেখে আমরা উপরে উঠতে থাকি। কিছুটা উপরে ওঠার পরে ডান দিকে নেক্রোপলিস এলাকায় ঢুকে গেলে বাঁয়ের সবুজ অদৃশ্য হয়ে যায়। দুদিকেই পাথরের দেয়াল আর মরুর বালিতে ছড়ানো প্রস্তরখণ্ডের ভেতর দিয়ে এগোতে চোখে পড়ে মিসরের এবং প্রকৃতপক্ষে বিশ্বের প্রথম পিরামিড চার হাজার সাতশ বছর আগের অসমাপ্ত নির্মাণ ‘দ্য স্টেপ পিরামিড অব জোসের’। এর নির্মাণ কাজের দায়িত্বে ছিলেন স্থপতি, প্রকৌশলী ও জ্যোতির্বিদ ইমহোটেপ।

আমাদের গাড়িটি পার্কিং এলাকায় পৌঁছালে গাড়ি থেকে নেমে সামনে এগোবার আগেই পথ আগলে দাঁড়ায় ফারাওয়ের ফেরিওয়ালা। তার মেলে ধরা স্কার্ফ, গামছা, রুমাল চাদরের সর্বত্র রামেসেস, নেফারতিতি, তুতেনখামেন, আনুবিস আর হাজার তিন চার বছর আগের দাস-দাসীদের নানা আকার আকৃতির নানা বর্ণের প্রতিকৃতি। ফেরিওয়ালার হাঁকডাক উপেক্ষা করে আমি এগোতে থাকি। কারণ তখন সামনে দেখতে পাচ্ছি গোলাপি, খয়েরি, বাদামি পাথরের তৈরি দীর্ঘ দেয়াল, যার দুপাশের খানিকটা অংশ ভেঙে না পড়লে মনে হতো এটি আধুনিক স্থাপত্যের সাম্প্রতিক কোনো নির্মাণ! সাড়ে দশ মিটার উঁচু এবং দেড় হাজার মিটারের বেশি দীর্ঘ এই দেয়াল এক সময় ঘিরে রেখেছিল পুরো এলাকা। তবে স্টেপ পিরামিডের মতো এই দেয়ালটিও নাকি অসমাপ্ত। সম্রাট জোসেরের সঙ্গে স্থপতি ইমহোটেপের নামও উৎকীর্ণ করা আছে এই দেয়ালে।

ফারাও সাম্রাজ্যের তৃতীয় রাজবংশের দ্বিতীয় সম্রাট জোসের রাজত্ব করেছেন ঊনত্রিশ বছর। এরই মধ্যে সিনাই থেকে আসোয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত করেছিলেন সাম্রাজ্য, উত্তরের মরু অঞ্চলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহ দমন করে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছেন, যার অন্যতম হলো–সে সময়ের রাজধানী মেমফিসের অদূরে এই সাক্কারা নেক্রোপলিসের স্টেপ পিরামিড এবং প্রবেশ পথের সীমানা দেয়াল সংলগ্ন মন্দির। গোলাপি গ্রানাইট পাথরে তৈরি দেয়ালের মাঝখানের অনেক উঁচু অথচ অপরিসর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে দুপাশের পাথরের তৈরি পিলারের মাঝখানের করিডোর দিয়ে এগোতে থাকি। চার হাজার সাতশ বছর আগে কী প্রক্রিয়ায় কোন যন্ত্রে এ সব বিশাল প্রস্তর খণ্ডের ভেতরে খাঁজ কেটে সঠিক মাপে সংযোজন করে নির্মিত হয়েছে এই বিশাল স্থাপনা! কঠিন শিলা খণ্ডকে সম্পূর্ণ সিলিন্ডারের আকৃতি দিয়ে তৈরি হয়েছে এর সিলিং। ভেতরের কলাম বীম এবং বেদির অনেকটাই এখনো অক্ষত থেকে গেছে। মন্দিরে প্রবেশের জন্য একটি এবং পঁচিশটি পিলার পার হয়ে পিরামিড চত্বরে প্রবেশের জন্য আরো একটি আয়তকার দরজা ছাড়াও একটি আধখোলা ছোট দরজা রয়েছে এই প্রস্তর মন্দিরে। ধারণা করা হয় ইহজগৎ থেকে সরাসরি পরজগতে পারি দেবার জন্যে খোলা রাখা হয়েছিল এই দরজা। তবে দুর্ভাগ্য অসময়োচিত মৃত্যুর কারণে অন্তিম ইচ্ছা অনুসারে নিজের পরিকল্পিত স্টেপ পিরামিডের নির্মাণ কাজ যেমন শেষ হয়নি, তেমনি সেখানে তার দেহাবশেষও রাখা সম্ভব হয়নি। অতএব পারলৌকিক জীবনে তিনি আদৌ পৌঁছাতে পেরেছিলেন কি না, সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকেই যায়।

চত্বরের ভেতরে দেয়ালের ছায়ায় বসে রানা ভাইকে যখন সিলভিয়া স্টেপ পিরামিডের আদ্যোপান্ত ইতিহাসের বিবরণ দিচ্ছে তখন আমরা দুজন সামনে এগিয়ে গেছি। দক্ষিণ সমাধি ক্ষেত্রে যাবার জন্যে সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার পরে উট চালকদের দুজন প্রথমে আমাদের উটে চড়াবার প্রস্তাব করে। বুঝিয়ে বলতে চেষ্টা করলাম এই বয়সে নড়বড়ে হাড়হাড্ডি নিয়ে উটে উঠে পুরোপুরি ভেঙে পড়তে চাই না। এরপর তারা আমাদের ছবি তুলে দেয়ার জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যতই বলি, আমরা নিজেদের ছবি নিজেরাই তুলতে পারি, তা ছাড়া সঙ্গে আমাদের বন্ধুরা আছে। শেষ পর্যন্ত তারা সম্ভবত সাক্কারার ইতিহাসের সঙ্গে সর্প দেবতার একটি সম্পর্কের গল্প বলে দেয়ালে পাথরের তৈরি একসারি সাপের দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরই মধ্যে রানা ভাই এবং সিলভিয়া এসে পড়ায় উষ্ট্র ভাতৃদ্বয়ের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে আমরা রেলিং দিয়ে ঘেরা একটি গভীর খাত অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাই।

এরপর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে কেবলই পিরামিড, অসংখ্য সমাধি, ছড়ানো ইট-পাথর, অসমাপ্ত অথবা ধ্বংসপ্রাপ্ত এক বিস্তৃত বিরাণভূমি। তবে এখানে পিরামিড বলতে গিজার সেই দৃষ্টি নন্দন বিশাল নির্মাণ নয়, অনেক ক্ষেত্রেই তা কেবলই পাথরের স্তূপ। এখানে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের পাথর, এমনকি কাদামাটির ইটও ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে উনাসের পিরামিড বা নিউ কিংডম সিমেট্রি বলে উল্লেখ থাকলেও তা সাধারণ পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না। আমরা সিঁড়ি দিয়ে নেমে এমনি একটি পিরামিডের গহ্বরে প্রবেশের চেষ্টা করি। অনেকটা নেমে যাওয়ার পর লোহার রেলিং দেয়া গেটে বাধা পেয়ে ফিরে আসতে হয়। ভেতরে দৃষ্টি দিয়ে দেখি সেখানেও কিছু নেই, কেবলই অন্ধকার।

হাতের ডানে-বাঁয়ে অগুণতি চিহ্নিত এবং তারচেয়ে বেশি নাম গোত্রহীন কবর রেখে সমাধি প্রান্তরের মঝখান দিয়ে আমাদের পথ। হলুদ নির্দেশ ফলকে মেহুর সমাধি, ইদুতের সমাধি, উনাসাঙ্খার সমাধি, নেবুতের সমাধি, নেবকাওরের সমাধি ইত্যাদি লেখা থেকে অনুমান করা যায় এ সবই সম্রাটের আত্মীয় পরিজন বা অভিজাত শ্রেণির মানুষ। আর যাদের কবরে কোনো ফলক নেই সেই লক্ষ লক্ষ মানুষ পুনরুজ্জীবনের স্বপ্ন নিয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছিল, হাজার বছর ধরে তারা এই বিস্তৃত মরুভূমিতে শুয়ে আছে। সিলভিয়া একটা গল্প বলেছে। সেই তিন থেকে সাড়ে চার বছর আগের শ্রমজীবী মানুষ, নির্মাণ শ্রমিক, সেবাদাস, সাধারণ সৈনিক, কামার, কুমার, তাঁতীসহ কর্মজীবী মানুষেরা ফারাওয়ের রাজ্যে বিনা পারিশ্রমিকে কেবল মাত্র পেটে-ভাতে কাজ করেই নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতো। কারণ তাদেরও বিশ্বাস ছিল সাক্কারা নেক্রোপলিসে সমাধিস্থ হলে ফারাওয়ের সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর পরে যে অনন্ত জীবন সেই দুঃখ-শোক-শ্রম-শংকাহীন জীবনে প্রবেশ করবে তারা। হাজার বছর আগের রাজতন্ত্র ও পুরোহিতের প্রচার এবং সাধারণ মানুষের বিশ্বাস এখনো প্রায় একই রকম থেকে গেছে।

ফিরতি পথে বাঁ দিকে একটা খাল দীর্ঘক্ষণ ধরে আমাদের পাশাপাশি চলছে। খালের দুপারে ডান বাম দুদিকেই ওয়ানওয়ে। দৃশ্যপট আগের মতোই, তবে এবারে ডান দিকে ফসলের চাষ এবং সবুজের সমারোহ দেখে মনে হয় চাষাবাদের পরিমাণ এ দিকে অনেক বেশি। হঠাৎ করেই খেজুর গাছ এবং সবুজ ফসলের ক্ষেতের মধ্যে দেখা যায় অসংখ্য বক। প্রথমে দৃষ্টি বিভ্রম বলে মনে হয়েছিল। এই মরুভূমির দেশে নীল নদের পানি ঢেলে জমিতে ফসল ফলানো সম্ভব হলেও জলাভূমির পাখি বক আসবে কোথায় থেকে! কিন্তু না, সত্যি বকেরা মাঠ জুড়ে এক পা তুলে অপেক্ষা করছে, তবে মাছের জন্য নয় নিশ্চয়ই। আমরা দুপাশে দেখতে দেখতে এগোচ্ছি। মাঝে মধ্যেই দুই একটা গাধা, আবার কোথাও গাধায় টানা গাড়িও দেখা যায়। রানা ভাই পথের দিকে খেয়াল রেখেছিলেন, কোথাও কফিশপ কিংবা চায়ের দোকান পাওয়া যায় কি না!

কায়রো তখনো পনের বিশ মিনিটের পথ। রানা ভাই বাসামকে গাড়ি থামাতে বললেন। সিলভিয়াসহ আমরা দুজন নেমে মাল্টা, পেয়ারা এবং আপেল সাজানো একটা ভ্যানের কাছে দাঁড়ালাম। ভ্যানটা আমাদের রিকশাভ্যান নয়, ঘোড়ায় টানা। পাগড়ি মাথায় ফলওয়ালা আয়েশ করে চা খাচ্ছেন আর তার ঘোড়া দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে সামনে বাধা ঝোলা থেকে ছোলা খাচ্ছে। যে ভবনের সামনে ভ্যানটা দাঁড়িয়ে আছে সেটা শুধু রঙচটা নয়, উপরটা অসমাপ্ত আর নিচের অংশ যেকোনো মুহূর্তে খসে পড়বে। আশ্চর্যের বিষয় এই রংচটা ভবনের গায়ে অন্তত গোটা তিনেক স্পিøটএসির কন্ডেন্সার ইউনিট ঝুলছে। বাইরে ধ্বসে পড়ুক, ভেতরটা ঠাণ্ডা রাখা চাই! ফলের দাম কার্ডবোর্ডে লেখাই ছিল, তারপরেও সিলভিয়া ফলওয়ালার সঙ্গে কি কথাবার্তা বললো জানি না। দুটো পলিথিন ব্যাগ ভরে আমরা পেয়ারা এবং মাল্টা কিনে গাড়িতে উঠে বসলাম।

মাআদি এলাকায় ঢুকে পড়ার পরে মনে হলো আমাদের মোবাইল ফোনের জন্য সিম কার্ড কেনা জরুরি। প্যারিসে এবং কুয়ালালামপুরে সিম কেনার অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছিল যে কোনো বিমান বন্দরেই মোবাইল ফোন চালু করার ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু কায়রোর এয়ারপোর্টে পর্যন্ত ভুয়া কোভিড টেস্টের ধাক্কায় আমরা জ্ঞানশূন্য হয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম। মাআদির বিখ্যাত নয় নম্বর সড়কে বার দুয়েক চক্কর দিয়েও কোনো সদাশয় ফোনালাপের আউটলেট পাওয়া গেল না। আমরা ক্ষ্যান্ত দিতে বললেও বাসাম নাছোড় বান্দা। শেষ পর্যন্ত সে আমাদের যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে ছাড়লো। ভেতরে ঢুকে বুঝলাম মানুষ প্রায় সব কালে সব দেশে খেতে না পেলেও কথা বলতে চায়। ভিড়ের কারণে দাঁড়াবারও জায়গা নেই। এরই মধ্যে বয়োবৃদ্ধ ডোরম্যানের কল্যাণে একটা লাল সোফার কোণায় বসে পড়ার সুযোগ পেলাম। সিমের দাম শুনে অবশ্য শিগগিরই লাফিয়ে উঠে দাঁড়াতে হলো। এক হাজার মিনিট লোকাল টকটাইম এবং এক জিবি ডেটাসহ সিমের দাম ৪২৫ ইজিপশিয়ান পাউন্ড, যা আড়াই হাজার টাকার সমান। রানা ভাই সিলভিয়াকে ইন্টারপ্রেটার হিসাবে কাজে লাগিয়ে কোন প্যাকেজ নেওয়া সুবিধাজনক তা অনেকক্ষণ ধরে বুঝতে চেষ্টা করছিলেন। আমি বাইরে এসে কায়রোর অভিজাত এলাকায় আশেপাশের বিপনী বিতান, রাস্তায় যানবাহন এবং ফুটপাথে মানুষের চলাচল দেখছিলাম। রানা ভাই তার সিমকার্ড কিনে বাইরে এলে সিলভিয়া সকালে যেখানে গাড়ি রেখে আমাদের পথ দেখাতে বেরিয়েছিল, সেই কিয়স্কের সামনে তাকে নামিয়ে দিয়ে ঘরে ফিরলাম।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহ। টানা চারদিন ধরে ৪০ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণিকুল। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার সময় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র তাপপ্রবাহে শুকিয়ে গেছে পুকুরের পানি। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হিট ওয়েভ অ্যালার্ট জারি করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। মাইকিং করে বলা হয়, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হতে।

দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের তাপে চরম গরম অনুভূত হচ্ছে। রোদে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে। রোদের তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশ। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও ভ্যান-রিকশা চালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে তাদেরকে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা।

গরম থেকে বাঁচতে পানিতে নেমেছেন শিশু-কিশোররা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আপাতত বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এখনও পর্যন্ত কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না।’

২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।

গাছের ছায়ায় বসে আরাম করছেন ক্লান্ত মানুষজন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের আশু মিয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, প্রচণ্ড গরমে মাঠে জমিতে কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। ভ্যাপসা গরমে বেশিক্ষণ মাঠে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দেওয়ার পরও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে।
কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুজন আলী বলেন, সকালে কাজের জন্য অফিসে আসতে হয়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। সড়ক থেকে গরম উঠে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। বাইরে বেশি সময় অবস্থান করা যাচ্ছে না।

উথলী গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, বারবার পানি পান করেও তৃষ্ণা মেটানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন। পরিবেশের ভারসাম্য বাজায় রাখতে গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। ৪০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে প্রতিদিন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গাতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শক্রমে চুয়াডাঙ্গাতে বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট ওয়েভ অ্যালার্ট (তীব্র তাপদাহের সতর্কতা) জারি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এই গণসংযোগ চলবে আগামী ৩ মে পর্যন্ত।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজপথের আন্দোলনে বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন কেউই আমাদের দাওয়াতের বাইরে থাকবে না। আর সর্ব প্রথম দাওয়াত হবে নিজের নফসের প্রতি। আমাদের কথা ও কাজে যেন অমিল না থাকে। যেটা মানুষকে করতে বলব, সেটা যেন আমি নিজে আগে আমল করি।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি জনশক্তির কথাবার্তা, লেনদেন, সামাজিক কাজকর্ম আল্লাহর দ্বীন বা কোরআন অনুযায়ী হতে হবে। যতই বাঁধা আসুক আমরা ইকামাতে দ্বীনের কাজ চালিয়ে যাব। মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতে হবে। জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। তাহলেই আমাদের দাওয়াত কার্যকর হবে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে অনলাইন মাধ্যম জুম, ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভ-এ ঈদপুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধনে এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. খলিলুর রহমান মাদানী, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ।

এসময় সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রমজানের প্রকৃত শিক্ষাকে আমাদের জীবনে কাজে লাগাতে হবে। যারা রমজানে তাকওয়া অর্জনের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন মূলত তাদের জন্যই ঈদের আনন্দ। আমীরে জামায়াতের ঘোষণা অনুযায়ী আজ থেকে ১৫ দিনব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ চলবে।

শহরে কৃষক লীগের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না: ওবায়দুল কাদের

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কৃষক লীগের ধানমন্ডি শাখা, বনানী শাখা, গুলশান শাখা, বারিধারা শাখা- এসবের কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। এক সময় এমনও ছিল যে, কুয়েতে, কাতারের, সৌদি আরবে, আমেরিকায় কৃষক লীগ ছিল।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কৃষক লীগকে শহরের মধ্যে আটকে না রেখে গ্রামের দিকে নিয়ে যাওয়া ভালো। আজকে সারা বিশ্বের যে সংকট। আজকে এ অবস্থায় কৃষির অর্থনীতি হচ্ছে আমাদের দেশের অর্থনীতির প্রাণ এবং এটাই প্রমাণিত হয়েছে কৃষি বাঁচলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বাঁচবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে কৃষককে বাঁচাতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনাই হয়েছে কৃষকদের হাতে। কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতি বাঁচবে। এটাকে গুরুত্ব দেওয়ার ফলে বৈশ্বিক সংকটেও কঠিন পরিস্থিতি সহজে মোকাবিলা করতে পেরেছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, যারা এ দেশকে নিয়ে বেশি কথা বলেন, কথায় কথায় সরকারের সমালোচনা করেন, যারা আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ, তারাই গণতন্ত্রের সমালোচনা করেন।

বিএনপি পথ হারা পথিকের মত দিশেহারা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ দলের ভবিষ্যৎ আছে বলে কর্মীরাও বিশ্বাস করে না। কারণ, এরা অর্থপাচার ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক।

অপশক্তিকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এই অপশক্তিকে রুখতে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, যারা কথায় কথায় সরকারের সমালোচনা করেন, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে তারাই গণতন্ত্রের সমালোচনা করে। কিন্তু শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ নিরাপদে আছে। চেতনা ও চিন্তায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করতে হবে।

কৃষি অর্থনীতির মাধ্যমে বৈশ্বিক সংকটের প্রভাব থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ সম্ভব বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

সর্বশেষ সংবাদ

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি
জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
শহরে কৃষক লীগের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না: ওবায়দুল কাদের
রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে কেনিয়ার সেনাপ্রধানসহ নিহত ১০
পালিয়ে আসা ২৮৫ সেনা সদস্যকে ২২ এপ্রিল ফেরত নেবে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে পড়ল বাস, প্রকৌশলী নিহত
১০ হাজার টাকা চেয়ে না পেয়ে বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক লুৎফুলকে শোকজ করল আওয়ামী লীগ
হামলার পর ইসরায়েলকে যে হুমকি দিল ইরান
আওয়ামী লীগ দেশকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
স্বচ্ছতার সাথে অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
তীব্র গরমের মধ্যেই ঢাকাসহ তিন বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহত
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর অস্বীকার ইরানের, তেহরানে বিমান চলাচল স্বাভাবিক