সোমবার, ২০ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

গভীর রাতে গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় আকাশী আর রবিউলের। আচমকা ঘুম ভেঙে গেলে দুজনে দুজনকে গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে। প্রথমে শব্দ বেশ দূরে হচ্ছিল। আস্তে আস্তে কাছের দিকে এগিয়ে আসে ঝাঁক ঝাঁক গুলির শব্দ। ওদের মনে হয়–পাকিস্তানি বাহিনী বোধহয় সামনের দিকে এগিয়ে এসেছে। তবে একদম বাড়ির কাছে নয়।

দুজনে কান পেতে রাখে। বাইরে কোনো পাখির ডাক নেই। রাতে ঘুমানোর আগে দুজনে বারান্দায় বসে পাখির ডাক শোনে। রাতের নীরবতায় দুজনের কাছে পাখির ডাক মধুরতম সঙ্গীত।

রবিউল বলে, ছোটবেলায় ঘুমানোর আগে মা ঘুম পাড়াতো ‘ঘুমপাড়ানি মাসী-পিসী মোদের বাড়ি এসো’ বলে। মায়ের কাছ থেকে এটুকু না শুনলে আমার ঘুম আসতো না। এখন পাখির ডাক না শুনলে ঘুম আসে না। অনেকক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করলে তারপর ঘুমিয়ে পড়ি।

এমন কথা ওর বন্ধুরা সবাই জানে। আকাশী ওর এমন আচরণে ভালোবাসায় গুটিয়ে পড়ে। নিজেরও ভালোলাগে পাখির ডাক শুনতে। গুলির শব্দে আতঙ্কিত দুজনে বিছানায় উঠে বসে।

রবিউল বলে, আমাদের গ্রামে পাকবাহিনী ঢুকেছে। নাহলে এত রাতে গুলি করবে কে?

আকাশী বলে, চলো বের হয়ে দেখি। লণ্ঠন জ্বালাবো না। অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকবো।

রবিউল সায় দেয়, হ্যাঁ, চলো। উঠোনের বাইরে যাব না।

আমিতো মনে করি বারান্দার নিচে নামব না। দুলাল ঘুমিয়ে আছে। যদি জেগে ওঠে সেজন্য।

আসমানীর ঘরে যেতে হবে ও কি করছে দেখার জন্য। মেয়েটা গর্ভবতী। বাচ্চা হওয়ার জন্য মায়ের কাছে এসেছে। আকাশীর খুব চিন্তা হয়। এই অবস্থায় যদি বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয় তবে কি করবে মেয়েকে নিয়ে? চোখে পানি আসে। ভয়ে মুষড়ে পড়ে। চোখের পানি মুছতে মুছতে চৌকি থেকে নেমে দাঁড়ায় আকাশী। বুঝতে পারে গুলির শব্দ আর এগিয়ে আসছে না।

রবিউল বলে, আজকে বোধহয় ওরা ধনিয়া গ্রাম পর্যন্ত এসেছে। কাল হয়তো আমাদের এদিকে আসবে।

–থাক, থাক এসব কথা আর চিন্তা করার দরকার নাই। চলো বাইরে যাই।

দুজনে দরজা খুলে বাইরে এসে দেখতে পায় দাউদাউ আগুন জ্বলছে চারদিকে। বিভিন্ন দিকে বাড়িঘর পুড়ছে।

–হায়, হায় কত মানুষকে যে মেরে ফেলল কে জানে? সবাই কি আগুন লাগার আগে বের হতে পেরেছে?

আকাশীর চোখ আবার পানিতে ভরে যায়। দু’হাতে চোখ মুছে বলে, যারা ঘরের আগুন টের পায়নি তারা তো পুড়ে শেষ।

রবিউল বলে, ভোরবেলা পর্যন্ত যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।

–কোথায় যাব? আকাশীর আতঙ্কিত কন্ঠস্বর থরথর করে।

–দেশের মধ্যে তো থাকতে পারব না। ওরা সবখানেই আক্রমণ করবে।

–আমরা কি ওদের ছেড়ে দিব নাকি?

–একদমই না। আমরাও ওদেরকে আক্রমণ করব। আমাদের জিততে হবে। স্বাধীনতা পেতে হবে।

–আমিও যুদ্ধ করব। আমিও অস্ত্র চালাতে শিখব।

–তুমি কি পারবে?

–পারব, পারব। পারবনা কেন? শেখালেই পারব।

–তোমাকে কে শেখাবে?

–এমন মানুষকে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আমরা তো একা না, অনেকেই যুদ্ধ করবে। আমাদের পুলিশবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে অস্ত্র চালানো শিখব।

–আমাকেও শেখাতে বলবে। তোমার কথা শুনলে ওরা একটু বেশি গুরুত্ব দেবে।

–তোমার এত কথা আমি নিজেও মানতে পারছি না।

–ঠিক আছে আর কথা বলব না।

রবিউল বলে, ভোরবেলা পর্যন্ত যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাব। আগে ভারতে গিয়ে শরণার্থী হব।

আকাশী সঙ্গে সঙ্গে সায় দেয়, আমাদের চেনা-পরিচিত অনেকেই তো ভারতে চলে গেছে। আমরা ভেবেছিলাম দেশে থেকে যুদ্ধের জন্য কাজ করব। সেনা শয়তানরা এগিয়ে আসতে থাকবে। চলো আমরা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাই।

–দুলালকে জাগাবে না। ওকে ঘাড়ে তুলে নাও।

–আসমানীকে কি করবে? মেয়েটার সন্তান প্রসবের দিন ঘনিয়েছে। ওর জন্য আমার বেশি চিন্তা হচ্ছে।

–আমারও। আকাশী আবার কেঁদে ফেলে। তারপর বলে, আজকে ঘরে থাকি আমরা। জিনিসপত্র গুছিয়ে কাল সকালে বের হব। দেখি মারুফ আর আসমানী কি বলে। এই অবস্থায় আসমানী কি হাঁটতে পারবে?

–পারবে বলে তো মনে হয় না। মারুফকে বলে দেখি ও কোনো ব্যবস্থা করতে পারে কিনা।

–তাহলে এখন আর ওদেরকে ঘুম থেকে উঠাই না।

–হ্যাঁ, থাক। ওরা যখন উঠে উঠবে। আমরাও শুয়ে পড়ি।

দুজনে শুয়ে পড়ে। রাত্রি শেষ হয়ে আসছে। তবে ভোর হয়নি। দুজনের কারোই ঘুম আসে না। ওদের ভাবনায় ভেসে ওঠে যুদ্ধের ছবি। নিজেরা এখনো দেখেনি, কিন্তু অনবরত শুনতে পায় দেশের যুদ্ধের খবর। দেশজুড়ে সবার বুকের ভেতর রণধ্বনি। স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ-যুদ্ধ ধ্বনির তালে তালে বেজে ওঠে ডঙ্কা। বুকের ভেতর স্রোতের মতো বয়ে যায় শব্দরাজি।

পুড়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি-বাস্তুভিটা, ভিটার ওপর জমে থাকছে ছাই। শহীদ হচ্ছে শত শত মানুষ। পুলিশ-ইপিআর বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। নিরীহ সাধারণ মানুষ কিছু করতে পারছেনা। তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে ভারতে। ওরা শুনতে পায় ওখানে গিয়ে অনেক যুবক ছেলে যুদ্ধ করার জন্য ট্রেনিং নেয়। মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ফিরে আসে দেশে। গড়ে উঠছে মুক্তিবাহিনী। মুক্তিবাহিনীর তোপের মুখে অনেক সময় পাকবাহিনীর ক্যাম্প উড়ে যায়। এইসব সাহসী ছেলেদের মাঝে নিজেদের শক্তি আবিষ্কার করে রবিউল-আকাশী। ওরা শরণার্থী হলে মারুফও যোদ্ধা হতে পারবে। আসমানী কীভাবে যাবে এই ভাবনায় নির্ঘুম রাত কেটে যায় দুজনের। টের পায়না যে বাইরে বেলা বেশ বেড়েছে।

আকাশী দরজা খুলে বের হলে দেখতে পায় মারুফ আর আসমানী বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।

–কি রে কি করছিস?

–তোমার জন্য দাঁড়িয়ে আছি মা।

মারুফ এগিয়ে এসে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। বলে, আম্মা আমাদের চলে যাওয়ার সময় হয়েছে। কাল রাতে গোলাগুলির শব্দ শুনেছি।

–কি করবে বাবা?

–আমি আজকেই একটা গরুর গাড়ি ঠিক করব। বর্ডার পর্যন্ত গরুর গাড়িতে যাব। ওখানে গিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেব। বেনাপোল থেকে হেঁটে যশোর রোডে উঠব আমরা। ওখানে কয়েকদিন থেকে তারপর কোথায় যাব ঠিক করব।

–ঠিক আছে বাবা, তুমি যা বল তাই হবে। আমি রান্নাঘরে যাই তোমার জন্য পান্তাভাতের ব্যবস্থা করি। ডিম ভাজি করব। তোমরা হাতমুখ ধুয়ে আস।
আসমানী হাসতে হাসতে বলে, ভোরের বাতাসে আমার হাতমুখ ধোওয়া হয়ে গেছে।

–মাগো যাও পানি দিয়ে ধুয়ে আস। ভোরের বাতাস তো ঠান্ডা বাতাস হওয়ার কথা না।

–হ্যাঁ, মা আজকের বাতাস গরম ছিল। তুমি কি করে বুঝলে?

–সারারাত পাকিস্তানি শয়তানরা ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে।

–বুঝেছি। আমরা হাতমুখ ধুয়ে আসছি।

দুজনে উঠোনে নেমে যায়। আকাশী রান্নাঘরে আসে। থালায় পান্তা বেড়ে ডিম ভাজি করে। আলুভাজি গরম করে বাটিতে গোছায়। দুজনের জন্য মাদুর বিছিয়ে দেয় রান্নাঘরে। গ্লাসে পানি ঢালে কলসি থেকে। তখন দুজনে রান্নাঘরে ঢোকে। মাদুরে বসে মারুফ বলে, আম্মা আমি ভাত খেয়েই গরুর গাড়ি দেখতে যাব। আপনারা ঘর গুছিয়ে ফেলবেন।

আসমানী চেঁচিয়ে ওঠে, ঘর গুছিয়ে কি হবে। ঘর তো লুটপাট করবে, তারপরে পোড়াবে।

–না গো মা, ও বলেছে আমরা যাওয়ার সময় কী নেব, তা গুছিয়ে নিতে। আমি তো সারাদিনের জন্য খাবার গোছাব। চাল, ডালও নেব। শরণার্থী শিবিরে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কেউ কি খাবার দেবে আমাদেরকে, সেজন্য সঙ্গে কিছু রাখতে হবে।

–আচ্ছা মা, আমি কাপড় গোছাব।
তখন রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়ায় রবিউল।

–বাবা, এতক্ষণে তোমার ঘুম ভাঙলো।

–না গো মা, অর্ধেক রাতের পর থেকে আমরা জেগে ছিলাম। আমি অনেক আগেই উঠেছি। কাপড়চোপড় গুছিয়ে নিয়েছি। আমরা আজকেই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব। তোরাও তৈরি হয়ে নে।

–আব্বা আমি একটি গরুর গাড়ি খুঁজতে যাচ্ছি।

–হ্যাঁ, যাও বাবা। না পেলে তাড়াতাড়ি চলে এসো। আমরা হেঁটেই রওনা দেব।

–আচ্ছা আব্বা, আমি দেরি করবনা। তাড়াতাড়ি আসব।

বেরিয়ে যায় মারুফ। আসমানী নিজের ঘরে যায়। গর্ভবতী অবস্থায় কীভাবে হাঁটবে বুঝতে পারেনা। ঘরে ঢুকে নানা কাপড় বেঁধে একটি পোটলা বানায়। রবিউল রান্নাঘরে পান্তভাত খেতে বসে। গপগপিয়ে খেতে খেতে বলে, তাড়াতাড়ি কাজ শেষ কর। বেরিয়ে যাব আমরা।

–মেয়েটাকে নিয়ে আমি চিন্তায় আছি।

–সাহস রাখ মনে। এত চিন্তার দরকার নাই।

আকাশী চুপ করে যায়। ভাবে, রবিউলতো ঠিক বলেছে। রাস্তায় যা কিছু ঘটবে তা সাহসের সঙ্গে সামলাতে হবে।

রবিউল ভাত খেয়ে উঠে চলে যায়। আকাশী রান্নাঘর থেকে যা নেবার তা গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে আসে। দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। আসমানীও নিজের প্রস্তুতি শেষ করেছে। কিছুক্ষণ পরে ফিরে আসে মারুফ। বলে, গরুর গাড়ি পাওয়া যাচ্ছেনা। চলেন আমরা হেঁটে রওনা করি। রাস্তায় দেখলাম অনেক লোকজন যাচ্ছে। একজন আমাকে ডেকে বলল, ঘরে বসে পুড়ে মরার চেয়ে অথবা গুলি খেয়ে মরার চেয়ে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে শরণার্থী হওয়া ভালো। ওখানে গিয়ে যুদ্ধ করার প্রস্তুতিও নিতে পারব। এজন্য আমি আর গরুর গাড়ির অপেক্ষায় না থেকে চলে এসেছি।

রবিউল সঙ্গে সঙ্গে সায় দেয়, হ্যাঁ ভালো করেছ। চলো আমরা যাত্রা শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে চারদিকে খোঁজ-খবর রাখব যাতে কোথাও গরুর গাড়ি পাওয়া যায়।

আসমানী মৃদুস্বরে বলে, মাগো আমি কি হাঁটতে পারব? আমারতো এই মাসেই প্রসব হওয়ার কথা।

–মা রে, আমি তো জানি। তারপরও শরণার্থী ক্যাম্পে পৌঁছে গেলে তোর ব্যথা উঠলে একটা কিছু করতে পারব। মন খারাপ করবিনা। ওদের কিছু বলবিনা।

–আচ্ছা মা, চলো। যা হবার হবে। সামাল দিতে পারাটাই হবে জরুরি কাজ। পরক্ষণে নিজে নিজে ভাবে, বাচ্চাটা বের হওয়ার সময় হলে সামাল দেয়ার সাধ্য ওর থাকবেনা। তখন কি পথের মধ্যে আর ভাবতে পারেনা আসমানী। সবার সঙ্গে হাঁটতে শুরু করে।

মারুফ বলে, বেনাপোল পার হলে ভারত। সেখান থেকে শুরু হয়েছে যশোর রোড। অনেকের কাছে শুনেছি যশোর রোডে শরণার্থীদের জন্য ক্যাম্প করা হয়েছে। ওখানে গেলেই আমরা ঠাঁই পাব মা। তখন আসমানীকে নিয়ে আপনি ক্যাম্পে থাকবেন। আমি আর আব্বা খাবার খুঁজব।

–আচ্ছা বাবা। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে। চলো আগে।

(চলবে)

এসএ/

Header Ad

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইকালে আটক পুলিশের এসআই

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে এক প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আমিনুল ইসলাম নামে পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টরকে (এসআই) ধাওয়া দিয়ে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। একই সময়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সাথে থাকা এক পুলিশের সোর্স শহীদুল ইসলাম জাহেদকেও আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (১৮ মে) বিকেলে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার থেকে তাদের আটক করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার বাসিন্দা আবদুল খালেক জানান, তার ছোট ভাইয়ের পাঠানো ১৬ ভরি ওজনের ৮টি বালা নিয়ে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে নিয়ে ফিরছিলেন তিনি। দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে নগরীর টাইগারপাস এলাকায় তাকে পুলিশ পরিচয়ে বাস থেকে নামায় দুই যুবক। পরে তাকে সিএনজিতে উঠিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরিয়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে উঠে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে নামিয়ে দেয়া হয়। এসময় চিৎকার শুরু করেন ভুক্তভোগী। ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া সাধারণ মানুষেরা দুই ছিনতাইকারীকে ধাওয়া দিয়ে আটক করে।

এসময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিল পাঁচলাইশ থানা পুলিশের একটি টহল দল। টহল দল দুই ছিনতাইকারীর মধ্যে একজন খুলশী থানার এস আই আমিনুল ইসলাম বলে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে।

নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ শিশুর

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১৯ মে) দুপুরে জেলার পোরশা ও মহাদেবপুর উপজেলায় পৃথক সময়ে এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতরা হলো- পোরশা উপজেলার নিতপুর মনোহরপুর গ্রামের রুবেল ইসলামের ছেলে লালচাঁন ইসলাম (৭) এবং মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরুক বড়াইল গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে সিফাত হোসেন (১২)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- রোববার দুপুরে রুবেল ইসলাম তার ছেলে লালচাঁনকে সাথে নিয়ে পোরশা উপজেলার কপালী মোড় পোশাকসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্যে আসেন। এসময় রাস্তা পারাপারের সময় মাসুদ বিড়ি বহনকারি একটি অটোরিশার লালচাঁনকে ধাক্কা দেয়। এতে লালচাঁন গুরুত্বর আহত হয়ে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে যায়। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পোরশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিয়ার রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে অটোরিকশার চালক আবুল কালামকে আটকসহ অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
অপরদিকে, রোববার বিকেল ৫টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের রানীপুকুর মাদ্রাসার অদূরে বাস চাপায় সিফাত হোসেন নামে শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ফয়সাল হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। নিহত সিফাত হোসেন মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরুক বড়াইল গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে এবং রানিপুকুর ক্বেরাতুল কুরআন ক্বওমী মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের ছাত্র।

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন দূর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে’র মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

রোববার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।

ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, এ মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছিলেন ইশরাক। সেই সময় শেষ হতে চলায় গত ২৩ এপ্রিল তিনি জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন।

ইশরাক হোসেন পল্টন থানাসহ ১২টি মামলায় স্থায়ী জামিন আবেদন করেন। আদালত ১১ মামলায় জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডের ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

আদেশের প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক বলেন, হাই কোর্টথেকে জামিনে থাকলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও বেশিরভাগ মামলাতেই আদালত জামিন দিয়ে দেন। কিন্তু একটায় আটকানো হল আমাকে। এটা উদ্দেশ্যমূলক। সরকার তো গোটা দেশটাকেই কারাগার বানিয়ে ফেলেছে।

গত ২৯ অক্টোবর মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা করেন। মামলায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘উপদেষ্টা’ পরিচয় দিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা মিঞা জাহিদুল ইসলাম আরেফীর পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

সে সময় বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা ও গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিএনপিকর্মীরা। তাতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। এক পর্যায়ে বিকাল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।

এজাহারে বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে আসামি জাহিদুল ইসলাম আরেফী, চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মী কিছুসংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হন। মে সময় আরেফী নিজেকে বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশকরেছেন বলে তিনি বক্তব্য দেন।

এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, মামলার ২ নম্বর আসামি হাসান সারওয়ার্দী এবং ৩ নম্বর আসামি ইশরাক হোসেন আরেফীকে ‘মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা’ করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে ‘উসকানি’ দেন।

সর্বশেষ সংবাদ

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইকালে আটক পুলিশের এসআই
নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ শিশুর
বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল, ফেঁসে যাচ্ছেন এএসআই
দুর্ঘটনার কবলে ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার
১৭ মন্ত্রী-এমপির স্বজন চেয়ারম্যান প্রার্থী: টিআইবি
দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলে ৩ উপজেলায় নির্বাচন, আইন-শৃংখলা রক্ষায় জেলা পুলিশের ব্রিফিং
মিশা-ডিপজল দুজনেই মূর্খ: নিপুণ
পুকুর খননের মাটির ভেতর থেকে মিলল কষ্টি পাথরের লক্ষ্মী-নারায়ন মূর্তি
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য
কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন দিল অটোরিকশাচালকরা
‘পৃথিবী থেকে বিদায়,ভালো থাকো সবাই, সব শেষ আমার’ লিখে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে যুবকের আত্নহত্যা
মেট্রোরেলের উত্তরা-টঙ্গী রুটে হবে পাঁচ স্টেশন
টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারালো রাজমিস্ত্রী
পৃথিবীতে ধেয়ে আসতে পারে আরও ভয়ানক সৌরঝড়
পাকিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত
স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঈদের আগেই মসলার বাজার গরম, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অযুহাত ব্যবসায়ীদের
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা কংগ্রেসের ভোটব্যাংক : অমিত শাহ