শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

মিসরের সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা সাক্কারা আসলে সাড়ে দশ বর্গ কিলোমিটারজুড়ে এক বিশাল সমাধি ক্ষেত্র। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে নীল নদের পশ্চিম তীরে গিজা থেকে দাসুর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় সে সময়ের রাজধানী মেমফিসের নাগরিকদের সমাধিস্থ করার জন্য বেছে নেয়া হয়েছিল থেকে কয়েক কিলোমিটার উত্তরে সাক্কারার মরু প্রান্তর। বছরের পর বছর ধরে সম্রাট এবং পরিবারের সদস্য ও সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ পেশাজীবী মানুষের অগণিত মৃতদেহ সমাহিত হয়ে আছে সাক্কারায়।

কায়রো কিংবা গিজা থেকে সাক্কারায় আসার জন্যে গণপরিবহন নেই। পর্যটকদের জন্য প্রাইভেট কার, ট্যাক্সি অথবা দলবেঁধে ভ্রমণের জন্য ভাড়া করা বাস মিনিবাস সহজলভ্য। অসংখ্য নামি-অনামি টুর অপারেটর বিদেশি পর্যটক পরিবহনের জন্য একপায়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের টুর গাইড সিলভিয়া এবং চালক বাসামও পেশাদার পর্যটন ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত। সাক্কারায় প্রবেশের ছাড়পত্র সংগ্রহের জন্যে বাসাম যেখানে এসে দাঁড়ালো সেটি টিকিট ঘর, প্রক্ষালণ কক্ষ এবং আর্কিওলজিকাল সাইটের অফিস মিলিয়ে পাথরের তৈরি একটি কমপ্লেক্স। এই ভবনটির বিপরীতে রাস্তার ওপারে মরুভূমিতে বালির স্তুপ জমতে জমতে পাহাড় হয়ে গেছে আর সেই পাহাড়ের পায়ের কাছে তিনটি পাথরের স্তম্ভ এখনো পুরোপুরি টিকে আছে। আরো কয়েকটি ভাঙাচোরা স্তম্ভ এবং ছড়িয়ে থাকা প্রস্তখণ্ডের মধ্যেও দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি খেজুর গাছ।

কমপ্লেক্স চত্বরে গাড়ি রাখার সঙ্গে সঙ্গেই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পোশাকধারী পুলিশ এগিয়ে এসে তার খাতার পাতায় গাড়ির নম্বর লিখে সিলভিয়াকে কিছু একটা জিজ্ঞেস করলো। সিলিভিয়া উত্তর দিল বাংলাদেশ! দুবার শোনার পরে ‘ব্যাংলাদেস, ব্যাংলাদেস’ উচ্চারণ করে বড় কষ্টে তার খাতায় আমাদের দেশের নাম অন্তর্ভূক্ত করতে পেরেছে বলে মনে হলো। সম্ভবত জীবনে প্রথমবারের মতো তিনি এই দেশটির নাম শুনেছেন। আসলে তাকেও দোষ দেওয়া যায় না। গিজার গ্রেট পিরামিডের তুলনায় খুব কম পর্যটকই সাক্কারা পর্যন্ত আসে।

সাক্কারার টিকিট কাউন্টারের সামনে বিভিন্ন মূল্যমানের টিকিটের দীর্ঘ তালিকা ঝুলছে। সিলভিয়ার সঙ্গে কথা বলে আমরা আগেই ঠিক করেছিলাম পুরো এলাকা ঘুরে আসার ১৮০ ইজিপশিয়ান পাউন্ডের স্ট্যান্ডার্ড টিকিট কিনব, এ ছাড়া আমাদের বাহনের জন্য দিতে হবে মাত্র পাঁচ পাউন্ড। রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বর্তমানে সাক্কারার মূল আকর্ষণ স্টেপ মিরামিডে প্রবেশ নিষেধ! অন্য পাঁচ-ছয়টি পিরামিডের ভেতরে প্রবেশের ইচ্ছে না থাকায় ৪৪০ পাউন্ডের টিকিট কেনার প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন মূল্যের টিকিট কিনে একেকটি পিরামিডেও প্রবেশ করা যেতে পারে।

নিচে ঘন খেজুরের বন পেরিয়ে অনেক দূরে দূরে কিছু বসত বাড়ির আভাস হাতের ডান দিকে এবং বাঁয়ে বালির পাহাড় রেখে আমরা উপরে উঠতে থাকি। কিছুটা উপরে ওঠার পরে ডান দিকে নেক্রোপলিস এলাকায় ঢুকে গেলে বাঁয়ের সবুজ অদৃশ্য হয়ে যায়। দুদিকেই পাথরের দেয়াল আর মরুর বালিতে ছড়ানো প্রস্তরখণ্ডের ভেতর দিয়ে এগোতে চোখে পড়ে মিসরের এবং প্রকৃতপক্ষে বিশ্বের প্রথম পিরামিড চার হাজার সাতশ বছর আগের অসমাপ্ত নির্মাণ ‘দ্য স্টেপ পিরামিড অব জোসের’। এর নির্মাণ কাজের দায়িত্বে ছিলেন স্থপতি, প্রকৌশলী ও জ্যোতির্বিদ ইমহোটেপ।

আমাদের গাড়িটি পার্কিং এলাকায় পৌঁছালে গাড়ি থেকে নেমে সামনে এগোবার আগেই পথ আগলে দাঁড়ায় ফারাওয়ের ফেরিওয়ালা। তার মেলে ধরা স্কার্ফ, গামছা, রুমাল চাদরের সর্বত্র রামেসেস, নেফারতিতি, তুতেনখামেন, আনুবিস আর হাজার তিন চার বছর আগের দাস-দাসীদের নানা আকার আকৃতির নানা বর্ণের প্রতিকৃতি। ফেরিওয়ালার হাঁকডাক উপেক্ষা করে আমি এগোতে থাকি। কারণ তখন সামনে দেখতে পাচ্ছি গোলাপি, খয়েরি, বাদামি পাথরের তৈরি দীর্ঘ দেয়াল, যার দুপাশের খানিকটা অংশ ভেঙে না পড়লে মনে হতো এটি আধুনিক স্থাপত্যের সাম্প্রতিক কোনো নির্মাণ! সাড়ে দশ মিটার উঁচু এবং দেড় হাজার মিটারের বেশি দীর্ঘ এই দেয়াল এক সময় ঘিরে রেখেছিল পুরো এলাকা। তবে স্টেপ পিরামিডের মতো এই দেয়ালটিও নাকি অসমাপ্ত। সম্রাট জোসেরের সঙ্গে স্থপতি ইমহোটেপের নামও উৎকীর্ণ করা আছে এই দেয়ালে।

ফারাও সাম্রাজ্যের তৃতীয় রাজবংশের দ্বিতীয় সম্রাট জোসের রাজত্ব করেছেন ঊনত্রিশ বছর। এরই মধ্যে সিনাই থেকে আসোয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত করেছিলেন সাম্রাজ্য, উত্তরের মরু অঞ্চলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহ দমন করে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছেন, যার অন্যতম হলো–সে সময়ের রাজধানী মেমফিসের অদূরে এই সাক্কারা নেক্রোপলিসের স্টেপ পিরামিড এবং প্রবেশ পথের সীমানা দেয়াল সংলগ্ন মন্দির। গোলাপি গ্রানাইট পাথরে তৈরি দেয়ালের মাঝখানের অনেক উঁচু অথচ অপরিসর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে দুপাশের পাথরের তৈরি পিলারের মাঝখানের করিডোর দিয়ে এগোতে থাকি। চার হাজার সাতশ বছর আগে কী প্রক্রিয়ায় কোন যন্ত্রে এ সব বিশাল প্রস্তর খণ্ডের ভেতরে খাঁজ কেটে সঠিক মাপে সংযোজন করে নির্মিত হয়েছে এই বিশাল স্থাপনা! কঠিন শিলা খণ্ডকে সম্পূর্ণ সিলিন্ডারের আকৃতি দিয়ে তৈরি হয়েছে এর সিলিং। ভেতরের কলাম বীম এবং বেদির অনেকটাই এখনো অক্ষত থেকে গেছে। মন্দিরে প্রবেশের জন্য একটি এবং পঁচিশটি পিলার পার হয়ে পিরামিড চত্বরে প্রবেশের জন্য আরো একটি আয়তকার দরজা ছাড়াও একটি আধখোলা ছোট দরজা রয়েছে এই প্রস্তর মন্দিরে। ধারণা করা হয় ইহজগৎ থেকে সরাসরি পরজগতে পারি দেবার জন্যে খোলা রাখা হয়েছিল এই দরজা। তবে দুর্ভাগ্য অসময়োচিত মৃত্যুর কারণে অন্তিম ইচ্ছা অনুসারে নিজের পরিকল্পিত স্টেপ পিরামিডের নির্মাণ কাজ যেমন শেষ হয়নি, তেমনি সেখানে তার দেহাবশেষও রাখা সম্ভব হয়নি। অতএব পারলৌকিক জীবনে তিনি আদৌ পৌঁছাতে পেরেছিলেন কি না, সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকেই যায়।

চত্বরের ভেতরে দেয়ালের ছায়ায় বসে রানা ভাইকে যখন সিলভিয়া স্টেপ পিরামিডের আদ্যোপান্ত ইতিহাসের বিবরণ দিচ্ছে তখন আমরা দুজন সামনে এগিয়ে গেছি। দক্ষিণ সমাধি ক্ষেত্রে যাবার জন্যে সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার পরে উট চালকদের দুজন প্রথমে আমাদের উটে চড়াবার প্রস্তাব করে। বুঝিয়ে বলতে চেষ্টা করলাম এই বয়সে নড়বড়ে হাড়হাড্ডি নিয়ে উটে উঠে পুরোপুরি ভেঙে পড়তে চাই না। এরপর তারা আমাদের ছবি তুলে দেয়ার জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যতই বলি, আমরা নিজেদের ছবি নিজেরাই তুলতে পারি, তা ছাড়া সঙ্গে আমাদের বন্ধুরা আছে। শেষ পর্যন্ত তারা সম্ভবত সাক্কারার ইতিহাসের সঙ্গে সর্প দেবতার একটি সম্পর্কের গল্প বলে দেয়ালে পাথরের তৈরি একসারি সাপের দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরই মধ্যে রানা ভাই এবং সিলভিয়া এসে পড়ায় উষ্ট্র ভাতৃদ্বয়ের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে আমরা রেলিং দিয়ে ঘেরা একটি গভীর খাত অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাই।

এরপর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে কেবলই পিরামিড, অসংখ্য সমাধি, ছড়ানো ইট-পাথর, অসমাপ্ত অথবা ধ্বংসপ্রাপ্ত এক বিস্তৃত বিরাণভূমি। তবে এখানে পিরামিড বলতে গিজার সেই দৃষ্টি নন্দন বিশাল নির্মাণ নয়, অনেক ক্ষেত্রেই তা কেবলই পাথরের স্তূপ। এখানে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের পাথর, এমনকি কাদামাটির ইটও ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে উনাসের পিরামিড বা নিউ কিংডম সিমেট্রি বলে উল্লেখ থাকলেও তা সাধারণ পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না। আমরা সিঁড়ি দিয়ে নেমে এমনি একটি পিরামিডের গহ্বরে প্রবেশের চেষ্টা করি। অনেকটা নেমে যাওয়ার পর লোহার রেলিং দেয়া গেটে বাধা পেয়ে ফিরে আসতে হয়। ভেতরে দৃষ্টি দিয়ে দেখি সেখানেও কিছু নেই, কেবলই অন্ধকার।

হাতের ডানে-বাঁয়ে অগুণতি চিহ্নিত এবং তারচেয়ে বেশি নাম গোত্রহীন কবর রেখে সমাধি প্রান্তরের মঝখান দিয়ে আমাদের পথ। হলুদ নির্দেশ ফলকে মেহুর সমাধি, ইদুতের সমাধি, উনাসাঙ্খার সমাধি, নেবুতের সমাধি, নেবকাওরের সমাধি ইত্যাদি লেখা থেকে অনুমান করা যায় এ সবই সম্রাটের আত্মীয় পরিজন বা অভিজাত শ্রেণির মানুষ। আর যাদের কবরে কোনো ফলক নেই সেই লক্ষ লক্ষ মানুষ পুনরুজ্জীবনের স্বপ্ন নিয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছিল, হাজার বছর ধরে তারা এই বিস্তৃত মরুভূমিতে শুয়ে আছে। সিলভিয়া একটা গল্প বলেছে। সেই তিন থেকে সাড়ে চার বছর আগের শ্রমজীবী মানুষ, নির্মাণ শ্রমিক, সেবাদাস, সাধারণ সৈনিক, কামার, কুমার, তাঁতীসহ কর্মজীবী মানুষেরা ফারাওয়ের রাজ্যে বিনা পারিশ্রমিকে কেবল মাত্র পেটে-ভাতে কাজ করেই নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতো। কারণ তাদেরও বিশ্বাস ছিল সাক্কারা নেক্রোপলিসে সমাধিস্থ হলে ফারাওয়ের সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর পরে যে অনন্ত জীবন সেই দুঃখ-শোক-শ্রম-শংকাহীন জীবনে প্রবেশ করবে তারা। হাজার বছর আগের রাজতন্ত্র ও পুরোহিতের প্রচার এবং সাধারণ মানুষের বিশ্বাস এখনো প্রায় একই রকম থেকে গেছে।

ফিরতি পথে বাঁ দিকে একটা খাল দীর্ঘক্ষণ ধরে আমাদের পাশাপাশি চলছে। খালের দুপারে ডান বাম দুদিকেই ওয়ানওয়ে। দৃশ্যপট আগের মতোই, তবে এবারে ডান দিকে ফসলের চাষ এবং সবুজের সমারোহ দেখে মনে হয় চাষাবাদের পরিমাণ এ দিকে অনেক বেশি। হঠাৎ করেই খেজুর গাছ এবং সবুজ ফসলের ক্ষেতের মধ্যে দেখা যায় অসংখ্য বক। প্রথমে দৃষ্টি বিভ্রম বলে মনে হয়েছিল। এই মরুভূমির দেশে নীল নদের পানি ঢেলে জমিতে ফসল ফলানো সম্ভব হলেও জলাভূমির পাখি বক আসবে কোথায় থেকে! কিন্তু না, সত্যি বকেরা মাঠ জুড়ে এক পা তুলে অপেক্ষা করছে, তবে মাছের জন্য নয় নিশ্চয়ই। আমরা দুপাশে দেখতে দেখতে এগোচ্ছি। মাঝে মধ্যেই দুই একটা গাধা, আবার কোথাও গাধায় টানা গাড়িও দেখা যায়। রানা ভাই পথের দিকে খেয়াল রেখেছিলেন, কোথাও কফিশপ কিংবা চায়ের দোকান পাওয়া যায় কি না!

কায়রো তখনো পনের বিশ মিনিটের পথ। রানা ভাই বাসামকে গাড়ি থামাতে বললেন। সিলভিয়াসহ আমরা দুজন নেমে মাল্টা, পেয়ারা এবং আপেল সাজানো একটা ভ্যানের কাছে দাঁড়ালাম। ভ্যানটা আমাদের রিকশাভ্যান নয়, ঘোড়ায় টানা। পাগড়ি মাথায় ফলওয়ালা আয়েশ করে চা খাচ্ছেন আর তার ঘোড়া দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে সামনে বাধা ঝোলা থেকে ছোলা খাচ্ছে। যে ভবনের সামনে ভ্যানটা দাঁড়িয়ে আছে সেটা শুধু রঙচটা নয়, উপরটা অসমাপ্ত আর নিচের অংশ যেকোনো মুহূর্তে খসে পড়বে। আশ্চর্যের বিষয় এই রংচটা ভবনের গায়ে অন্তত গোটা তিনেক স্পিøটএসির কন্ডেন্সার ইউনিট ঝুলছে। বাইরে ধ্বসে পড়ুক, ভেতরটা ঠাণ্ডা রাখা চাই! ফলের দাম কার্ডবোর্ডে লেখাই ছিল, তারপরেও সিলভিয়া ফলওয়ালার সঙ্গে কি কথাবার্তা বললো জানি না। দুটো পলিথিন ব্যাগ ভরে আমরা পেয়ারা এবং মাল্টা কিনে গাড়িতে উঠে বসলাম।

মাআদি এলাকায় ঢুকে পড়ার পরে মনে হলো আমাদের মোবাইল ফোনের জন্য সিম কার্ড কেনা জরুরি। প্যারিসে এবং কুয়ালালামপুরে সিম কেনার অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছিল যে কোনো বিমান বন্দরেই মোবাইল ফোন চালু করার ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু কায়রোর এয়ারপোর্টে পর্যন্ত ভুয়া কোভিড টেস্টের ধাক্কায় আমরা জ্ঞানশূন্য হয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম। মাআদির বিখ্যাত নয় নম্বর সড়কে বার দুয়েক চক্কর দিয়েও কোনো সদাশয় ফোনালাপের আউটলেট পাওয়া গেল না। আমরা ক্ষ্যান্ত দিতে বললেও বাসাম নাছোড় বান্দা। শেষ পর্যন্ত সে আমাদের যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে ছাড়লো। ভেতরে ঢুকে বুঝলাম মানুষ প্রায় সব কালে সব দেশে খেতে না পেলেও কথা বলতে চায়। ভিড়ের কারণে দাঁড়াবারও জায়গা নেই। এরই মধ্যে বয়োবৃদ্ধ ডোরম্যানের কল্যাণে একটা লাল সোফার কোণায় বসে পড়ার সুযোগ পেলাম। সিমের দাম শুনে অবশ্য শিগগিরই লাফিয়ে উঠে দাঁড়াতে হলো। এক হাজার মিনিট লোকাল টকটাইম এবং এক জিবি ডেটাসহ সিমের দাম ৪২৫ ইজিপশিয়ান পাউন্ড, যা আড়াই হাজার টাকার সমান। রানা ভাই সিলভিয়াকে ইন্টারপ্রেটার হিসাবে কাজে লাগিয়ে কোন প্যাকেজ নেওয়া সুবিধাজনক তা অনেকক্ষণ ধরে বুঝতে চেষ্টা করছিলেন। আমি বাইরে এসে কায়রোর অভিজাত এলাকায় আশেপাশের বিপনী বিতান, রাস্তায় যানবাহন এবং ফুটপাথে মানুষের চলাচল দেখছিলাম। রানা ভাই তার সিমকার্ড কিনে বাইরে এলে সিলভিয়া সকালে যেখানে গাড়ি রেখে আমাদের পথ দেখাতে বেরিয়েছিল, সেই কিয়স্কের সামনে তাকে নামিয়ে দিয়ে ঘরে ফিরলাম।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

যুগ্ম সচিব মর্যাদার ৩ জনকে বদলি

ছবি: সংগৃহীত

যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার তিন কর্মকর্তাকে বদলি করে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্মসচিব), বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, বরিশাল এর যুগ্মসচিব মো: আহসান হাবীবকে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট (এনআইএলজি) এর পরিচালক পদে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্মসচিব জসিম উদ্দিন হায়দারকে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে পদায়ন করা হয়েছে।

 

এছাড়া কৃষি মন্ত্রণালযয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ সাঈদ-উর-রহমানকে বাংলাদেশ টেলিভিশন এর উপমহাপরিচালক করা হয়েছে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

টিকেট নিয়ে সেনা সদস্য-টিটিই'র বাকবিতন্ডায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে ভাংচুর, আহত ৫

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টিকেট নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য ও রেলওয়ের টিটিই'র মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে টিটিই, গার্ড ও এক সেনা সদস্যসহ পাঁচ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া এই ঘটনায় ট্রেনের কর্তব্যরত গার্ড রুমের দরজা, জানালা ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে সেনা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। আর ঘটনার পর প্রায় ১ ঘন্টা ৫০ মিনিট বিলম্বে ট্রেনটি সান্তাহার জংশন স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়।

আর এতেই দূর্ভোগে পড়ে প্রায় দুই হাজার যাত্রী। অনেক যাত্রীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা যায়। আবার প্রায় দুই শত যাত্রীকে দেখা যায় তারা ট্রেন ছাড়ার জন্য বিক্ষোভ করতে করতে স্টেশন মাস্টারের রুমের দিকে এগিয়ে যায়।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকাল ৫ টার দিকে বগুড়ার সান্তাহার জংশন রেলওয়ে স্টেশনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে এঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেন বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৪টায় ফুলবাড়ি স্টেশনে পৌঁছে। এ সময় ওই ট্রেনের শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) 'গ' বগিতে থাকা সেনা সদস্য আল আমিন সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে ছুটিতে নিজ বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠে। সেই ট্রেনে আরও ১০-১২ জন সেনা সদস্য ছিল। ওই ট্রেনের দায়িত্বরত টিটিই রাসেল হোসেন টিকেট চাইলে দেখাতে ব্যর্থ হয়। এরপর টিটিই'র চাহিদামতো টিকেট বাবদ ৭ শত টাকা দিয়ে দেয় সেনা সদস্য। টাকার বিনিময়ে টিকেট চাইলে টিকিট দিতে অস্বীকৃতি জানান সেই টিটিই। আর এতেই সেখানে এক পর্যায়ে ওই টিটিইর সাথে তাদের বাকবিতন্ডা বাঁধে। ওই ট্রেনের অ্যাটেনডেন্ট আব্দুল মালেক, গার্ড আব্দুস সাত্তার বিষয়টি সমাধানের জন্য এগিয়ে আসেন।

এরপর ট্রেনটি সান্তাহার স্টেশনে পৌঁছলে ওই ট্রেনের বিভিন্ন বগিতে যাত্রা করা ১০-১২ সেনা সদস্য একত্রিত হয়ে ওই ট্রেনের গার্ড, টিটিই ও অ্যাটেনডেন্টসহ ৪-৫ জনকে কিল, ঘুষি ও চেয়ার দিয়ে মারপিট করে আহত করেন। পাশাপাশি ট্রেনের দরজা, জানালা ভাংচুর করেন।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

এ ঘটনায় এক সেনা সদস্যও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

খবর পেয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশ, আদমদীঘি থানা পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের উদ্ধার করে। আহত টিটি ও গার্ডকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ও বেশ কিছু সেনা সদস্যকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।

এ বিষয় নিয়ে পুলিশ বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে একাধিক সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সহকারী পুলিশ সুপার, রেলওয়ে পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে আসার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শী এক ট্রেন যাত্রী বলেন, টিটিই জানতোনা সে সেনাবাহিনীর সদস্য। টিকেট না থাকায় তার কাছে টিকেট চায় কর্তব্যরত টিটি। তখন সে সেনাবাহিনীর পরিচয় দিয়ে বলে আমার কাছে টিকেট নেই। টিটিই তার কাছে সাত শত টাকা চাইলে টিকেটের মূল্য বাবদ সেনাবাহিনীর ওই সদস্য টিটিকে টাকা দিয়ে দেয়। এরপর টিকেট চাইলে টিকেট দিতে গড়ি মসি করে টিটিই। মূলত টিকেট না দেওয়ায় শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। তিনি একটু ক্ষোভ নিয়েই বললেন, প্রায় সকল ট্রেনেই কিছু দূর্নীতিবাজ টিটিই থাকে।

যাত্রীরা ক্ষোভ নিয়ে বলেন, সরকারি লোকদের গন্ডগোলের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছি আমাদের মতো প্রায় দুই হাজার সাধারণ যাত্রীরা। এই ঘটনার পর প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে এই সান্তাহার স্টেশনে। কখন যে এর সমাধান হবে কিছুই বলতে পারছি না। তবে এর দ্রুত সমাধান চাই আমরা যাত্রী সাধারণেরা।

এরিপোর্ট লেখা রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সান্তাহার রেলওয়ে থানায় সেনাবাহিনীর ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।

সারা দেশে আরও ২ দিন হিট অ্যালার্ট জারি

নিজস্ব ছবি : ঢাকা প্রকাশ

তীব্র গরমে সারা দেশে আরও ২ দিনের জন্য সতর্কতামূলক হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। এ নিয়ে সপ্তমবার হিট অ্যালার্ট দিয়েছে সংস্থাটি।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য এই হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চলসহ খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এর আগে রবিবার (২৮ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে ‘হিট অ্যালার্ট’ বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার সময় আরও ৭২ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছিল।

সর্বশেষ সংবাদ

যুগ্ম সচিব মর্যাদার ৩ জনকে বদলি
টিকেট নিয়ে সেনা সদস্য-টিটিই'র বাকবিতন্ডায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে ভাংচুর, আহত ৫
সারা দেশে আরও ২ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
জমি নিয়ে বিরোধ: স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
কক্সবাজারে হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগিরই নির্মাণ শুরু : সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গাইবান্ধায় ট্রাকের ধাক্কায় পাওয়ার টিলার চালক নিহত
আরেক দফা কমলো স্বর্ণের দাম
জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেই আ.লীগ ক্ষমতায় এসেছে : সেতুমন্ত্রী
মে মাসে আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
জায়েদ খানের উপস্থাপনায় মঞ্চ মাতাবেন জেমস
আইপিএল থেকে কত টাকা পাচ্ছেন মুস্তাফিজ?
পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে ৯৯৯-এ ফোন দিলেন স্বামী
গণমাধ্যমের যে কোনো সমালোচনাকে সরকার স্বাগত জানায়: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
কংগ্রেসকে পাকিস্তানের ‘মুরিদ’ বললেন নরেন্দ্র মোদি
দেশে নির্মাণ হচ্ছে স্বর্ণ কারখানা
টাঙ্গাইলে প্রতীক পেয়েই প্রার্থীদের প্রচারণা
ওমরাহ পালন করতে সস্ত্রীক ঢাকা ছাড়লেন মির্জা ফখরুল
সরকারি খাদ্য গুদামে হয়রানির অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: খাদ্যমন্ত্রী
মিল্টন সমাদ্দার ৩ দিনের রিমান্ডে
রোনালদোর পর সিকান্দার রাজাও সংবাদ সম্মেলনে কোমল পানীয়র বোতল সরালেন