ফুলে ও স্বাধীনতায় কোনো বিরোধ নেই, বিরোধ নেই কীটে ও কুসুমে; ফুল ফোটে প্রাকৃতিক জননময়তায়, কীট তাকে জন্মাবধি চুষে চুষে খায়। স্বাধীনতার স্বাভাবিকতায় জন্ম যদি দুজনেরই, কীটেরও আঁতুড়ঘর সব ফুলের উদরেই।
স্বয়ম্ভূ জন্মের কীট যবে সন্তানের স্নেহে মাতৃরূপী কুসুমের স্তন্য পান করে, মা-কুসুম তাকে পরম আদরে বুকে ধরে।
মানুষ যদি ফুলের বহিরাগত, কীট কিন্তু ফুলের ভেতরাগত; তবে দুজনেই জাতককে জানায় আজন্ম স্বাগত।
ফুল নিজে কোনো পাপ করে না, কিন্তু তাকে নিজের প্রয়োজনেই উপড়ে আনে মানুষপাপী; কীট নিজের অস্তিত্বের প্রয়োজনে তাকে পান করে, তাই সে নয় অনুতাপী।
কেবল আমরা, চতুর মানুষেরাই ফুলকে বৃন্তচ্যুত করি, ভোগ করি; স্বেচ্ছাচারী মানুষ স্বাধীনতার বড়াই করতে করতে দুজনের গলাতেই ছুরি ধরি।
মানুষ, যে স্বাধীনতা তোমার, তারও একটা সীমা দরকার; নিজের ভোগের জন্য ফুল ও কীট দুটোকেই খুন করতে হবে এমন যুক্তি মানবে না কোনো গণতান্ত্রিক প্রাণিসরকার।
প্রাণতন্ত্র থেকে প্রাণিতন্ত্রের যে অর্থ, তাতে ভোগী মানুষের ভোগতন্ত্র অনর্থ।
প্রাণি মাত্রেই যদি প্রাণকে করে ধারণ, বিতরণ হয় সর্বপ্রাণের, হয় না কোনো প্রাণহরণ; সেই সর্বপ্রাণ অবশ্যই স্বাধীন; তার স্বাধীনতা অবশ্যই সকারণ।
ফুল, কীট বা প্রাণি জন্মস্বাধীন; মানুষ, তুমিও নও কারো পরাধীন।
ঢেঁড়শ গাছের পাতায় সবুজ রঙের ছোট ছোট পোকা। এই পোকা ঢেঁড়শে আক্রমণ করে ফলন নষ্ট করছে। শুধু তাই নয়, আক্রমণের কারণে ঢেঁড়শ বড় না হয়ে ঢেঁড়শ বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন এমন অজ্ঞাত পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের ঢেঁড়শ চাষি কৃষকরা। ফলে চাষিদের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। এমন পরিস্থিতিতে চাষাবাদের খরচ তোলাই তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢেঁড়শে পোকার আক্রমণে ভুক্তভোগী উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া পূর্বপাড়া গ্রামের ঢেঁড়শ চাষি মো. আব্দুল বাছেদ। তিনি তার প্রায় ২৫ শতাংশ জমিতে গত বছরের মতো এবারও উন্নত জাতের কমল নামে হাইব্রিড ঢেঁড়শ চাষ করেছেন। তার মতে- ফলন ভালো হয়েছে এবং ঢেঁড়শ ধরেছে প্রচুর পরিমাণ। কিন্তু অজ্ঞাত পোকার আক্রমণে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে।
কৃষক আব্দুল বাছেদ বলেন- একদিন পরপর ৬০ থেকে ৬৫ কেজি ঢেঁড়শ তোলা যেতো। কিন্তু পোকার আক্রমণে বর্তমানে ১ মণ ঢেঁড়শ উঠে না। তারমধ্যে ৫ থেকে ৭ কেজি ঢেঁড়শ ফেলে দিতে হচ্ছে। অপরদিকে ঢেঁড়শের গায়ে প্রচুর পরিমাণে দাগ হচ্ছে। এতে করে পাইকারি ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নেন। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেও পোকা দমনে কার্যকর কোনো সুফল পাচ্ছি না।
একই গ্রামের ঢেঁড়শ চাষি রহিম মিয়া মীর বক্স আলী বলেন, বাড়ির আঙিনায় ১০/১২ শতাংশ জমিতে ৩ হাজার ১’শ টাকা কেজি দরে উন্নত জাতের হাইব্রিড ঢেঁড়শের বীজ কিনে চাষ করেছি। গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঢেঁড়শ আসলেও পোকার আক্রমণে ঢেঁড়শগুলো পরিপক্ব হচ্ছে না। বড় হওয়ার আগেই পোকার আক্রমণে ঢেঁড়শ বাঁকা হয়ে যায়। এতে করে অনেক ঢেঁড়শ নষ্ট হয়। এবার খরচের টাকাও উঠবে না।
সরেজমিনে উপজেলার কয়েড়া, নিকরাইল, নলুয়া, সিরাজকান্দি, বরকতপুর, বিলচাপড়া, রুহুলী ও চর নিকলা গ্রামের বিভিন্ন ঢেঁড়শ ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়- তীব্র দাবদাহে ও খরায় ঢেঁড়শ ক্ষেতের মাটি সাদা হয়ে গেছে। সবুজ রঙের পোকাগুলো ঢেঁড়শ ছিদ্র করে ফেলছে। তাছাড়া গাছ থেকে ঢেঁড়শের ফুলসহ ঝড়ে যাচ্ছে অসংখ্য ঢেঁড়শ। এছাড়া বাঁকাও হয়ে যাচ্ছে। এগুলো তুলে ফেলা দিচ্ছেন কৃষকরা।
এদিকে কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা অভিযোগ করে বলেন, কৃষি অফিস থেকে মাঠ পর্যায়ে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাছাড়া হাট-বাজারে সারের দোকানগুলোতে গেলে দোকানিরা পোকা দমনের যে-সব কীটনাশক দেয় সেগুলো দিয়ে পোকা দমন হচ্ছে না। এসব কীটনাশকের অতিরিক্ত দামও নেন তারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে পোকা দমন করতে না পারলে ব্যাপক লোকসানে পড়তে হবে।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন বলেন- প্রচণ্ড তাপমাত্রা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঢেঁড়শসহ অন্যান্য সবজিতে বিভিন্ন ধরনের পোকা-মাকড় বংশবিস্তার ছড়াচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে আসলে পোকার বংশবিস্তার রোধ হবে। তাছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পোকা দমনে সকল ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডান ও প্রাইম ব্যাংকের ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন নারী আম্পায়ার সাথিরা জাকির। ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি ক্রিকেট অঙ্গণে নতুন এক ইস্যুতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। নারী আম্পায়ারের অধীনে খেলতে চান না ক্রিকেটাররা; এমন উড়ো খবরে দেশের ক্রিকেটে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। মূলত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) গত ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন নারী আম্পায়ার সাথিরা জাকির জেসি। আর এই ম্যাচ শেষে হঠাৎ খবর আসে মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা খেলতে চাননি এই নারী আম্পয়ারের অধীনে।
তবে নারী আম্পায়ার নিয়ে সব বিতর্কের খোলাসা করেছেন জাতীয় দলে দুই ক্রিকেটার মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। নারী আম্পায়ারের অধীনে খেলতে চান না চাওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে মুশফিক বলেন, ‘আমি বা আমাদের কোনো খেলোয়াড় এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলিনি এবং কোনো আপত্তিও জানাইনি। আমি বরং এটা দেখে খুবই আনন্দিত হয়েছি যে একজন নারী আম্পায়ার এত দূর এসেছেন এবং আমাদের দেশ থেকে তিনি আইসিসির প্যানেল আম্পায়ার হয়েছেন। এ জন্য আমি তাকে অভিনন্দনও জানিয়েছি।’
অন্যদিকে এমন অভিযোগ নিয়ে বেশ হতাশ মাহমুদউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘ম্যাচ শেষে আমি তো ওনাকে (সাথিরা জাকির) আরও অভিনন্দন জানালাম! সাধুবাদ জানিয়ে বলেছি, “খুব ভালো আম্পায়ারিং করেছেন।” আমি, মুশফিক, তামিম, আমরা এত বছর ধরে ক্রিকেট খেলছি, সবাই নিশ্চয়ই বুঝবেন, আমরা এ রকম কিছু করার মানুষ নই। তারপরও কী চিন্তা করে এসব বলা হয়, বুঝি না। এটা ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তির জন্যও ক্ষতিকর।’
গত ২৫ এপ্রিল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) মোহামেডান ও প্রাইম ব্যাংকের ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন নারী আম্পায়ার সাথিরা জাকির। এর আগে প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানও একই দাবি করে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে। রোববার (২৮ এপ্রিল) এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে প্রাইম ব্যাংক জানায়, প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব প্রগতিতে বিশ্বাসী এবং সব লিঙ্গ-ধর্ম-বর্ণের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মাঝেমধ্যে ম্যাচ চলাকালে আম্পায়ারদের কিছু ভুল সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে খেলোয়াড়েরা মাঠেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন, যা খেলারই অংশ। প্রকাশিত খবরে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিরুদ্ধে কোনো নির্দিষ্ট আম্পায়ারের অধীনে ম্যাচ খেলতে চায়নি বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন।’
মূলত বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান ইফতেখার আহমেদের একটি বক্তব্য থেকে দুই ক্লাব বা তাদের ক্রিকেটাররা নারী আম্পায়ারের পরিচালনায় খেলতে চান না এমন আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘বিসিবি মহিলা আম্পায়ার নিয়োগ করায় তারা (দুই ক্লাব) অসন্তুষ্ট হয়েছে। তারা (দুই ক্লাব) আমার কাছে অভিযোগ করেনি। তবে সিসিডিএমের কাছে অভিযোগ করেছে।’
তবে আম্পায়ার্স কমিটির প্রধানের এমন বক্তব্যের দায় নিচ্ছে না সিসিডিএম। সিসিডিএম প্রধান মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন চৌধুরী দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে বলেন, ‘সিসিডিএমের কাছে কোনো ক্লাব বা ক্রিকেটার কোনো অভিযোগ করেনি এবং সিসিডিএমও এমন কোনো অভিযোগের কথা আম্পায়ার্স কমিটির কাউকে জানায়নি।’
তাহলে এমন অভিযোগ কোথা থেকে জানলেন আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান? এমন প্রশ্নে ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘মাঠে যারা ছিলেন, তারাই আমাকে এটা জানিয়েছেন। সিসিডিএম থেকেও আমি শুনেছি। তবে কে বলেছে, তার নাম বলা যাবে না। ক্রিকেটারদের দিক থেকে কোনো সমস্যা ছিল না। ম্যাচ শেষে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, তামিমরা জেসিকে (সাথিরা জাকির) অভিনন্দন জানিয়ে বলেছে—ওয়েল ডান।’
দেশের সর্বোচচ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল ৩ টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪৩.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৩ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ মো. জামিনুর জানান, আজ সোমবার বিকেল ৩ টায় এ মওসুমের দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, 'এখন এ জেলায় অতি তাপদাহ চলছে। এ অবস্থা আগামী কয়েকদিন থাকতে পারে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অস্থির হয়ে উঠেছে। দু’দিন পর আবারও এ জেলায় তাপমাত্রার তীব্রতা বেড়ে গেছে। দু’দিনে এ জেলায় ২ থেকে ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেড়েছে। তীব্র রোদ আর গরমে রাস্তায় বের হতে পারছেন না মানুষজন। রোদে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে। এ যেন একেবারে মরুভূমির তাপমাত্রা।
তীব্র রোদের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালকরা কাজ করতে না পেরে অনাহারে দিন পার করছেন। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষজন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন। তবে রোদের এতো উত্তাপ যে মাথা ঘুরে যাচ্ছে। হিট স্ট্রোকে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এদিকে অতি তীব্র তাপদাহে সোমবার প্রাইমারি স্কুল খোলা থাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এ জেলার অভিভাবকরা। যেখানে জাতী সংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ চলতি তাপপ্রবাহে বাংলাদেশের শিশুদের অতি উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রেখেছে। সেখানে স্কুলগুলো চলমান তাপপ্রবাহ পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য সরকারের অনুরোধ জানিয়েছে এ জেলার অভিভাবকরা।