জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। এবার চার ধাপে হবে উপজেলা নির্বাচনের ভোট।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশনে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে বিস্তারিত জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
সচিব বলেন, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট হবে ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপের ভোট হবে ১১ মে, তৃতীয় ধাপের ভোট হবে ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ২৫ মে।
সারাদেশে উপজেলা পরিষদ আছে ৪৯৫টি। সাধারণত একাধিক ধাপে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এবারও ধাপে ধাপে এই নির্বাচন করার চিন্তা করছে ইসি।
আইন অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের মেয়াদ পূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। এখন ৪৫২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপযোগী হয়ে আছে। জুনের মধ্যে এসব উপজেলায় নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া আগামী মার্চের মধ্যে অল্প কিছু বাদে প্রায় সব কটি উপজেলা নির্বাচন উপযোগী হবে।
ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা এবং মার্চে রোজার কথা চিন্তা করে একেবারে ঈদের পরে উপজেলা পরিষদ ভোট করার পরিকল্পনার কথা এর আগে বলেছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
সেক্ষেত্রে রোজার শেষ দিকে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে গত ২৩ জানুয়ারি জানিয়েছিলেন তিনি।
ব্রিটিশ-সুইস ওষুধ নির্মাতা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরী করোনা টিকা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রিটিশ-সুইস ওষুধ নির্মাতা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করেছে যে, তাদের তৈরি কোভিড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কোম্পানিটির এই স্বীকারোক্তির ফলে প্রতিষ্ঠানটিকে বিপুল পরিমাণ জরিমানা গুনতে হতে পারে।
গত ফেব্রুয়ারিতে আদালতে জমা দেওয়া একটি নথিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তাদের তৈরি কোভিড ভ্যাকসিনের কারণে খুব বিরল থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম (টিটিএস) এর ঘটনা ঘটতে পারে। যার ফলে মানুষের রক্তে প্লাটিলেট কমে যায় এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায়। খবর টেলিগ্রাফ।
ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের তৈরি কোভিড-১৯ এর টিকার কারণে গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এমন ডজনখানেক ঘটনার কথা উল্লেখ করে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত বছর অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের করেছিলেন জেমি স্কট নামের এক ব্যক্তি। তিনি ২০২১ সালের এপ্রিলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় ও তা জমাট বেঁধে যায়। যার ফলে তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমে গেছে।
এর আগে স্কটের আইনজীবীর কাছে পাঠানো এক মেইলে অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের টিকার কারণে টিটিএস'র সম্ভাবনা নকচ করে দিয়েছিল তবে হাইকোর্টে জমা দেওয়া নথিতে এর দায় স্বীকার করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ হাইকোর্টে ৫১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেখানে ভুক্তভোগীরা মোট ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ব্রিটিশ-সুইস এই কোম্পানিটির স্বীকারোক্তির ফলে প্রতিষ্ঠানটিকে বিপুল পরিমাণ জরিমানা গুনতে হতে পারে।
রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীকে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও ফাওজিয়া রাশেদীকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন আদালত। খন্দকার মুশতাক প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির দাতা সদস্য ও ফাওজিয়া রাশেদী কলেজটির অধ্যক্ষ। মামলার বাদী হলেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) নির্ধারিত দিনে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় মুশতাক ও রাশেদীর স্থায়ী জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক শওকত আলীর আদালত। পাশাপাশি মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২ জুন দিন ধার্য করা হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ফারুকুর রহমান ভুইয়া সোহাগ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ১৪ মার্চ মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন একই আদালত।
এর আগে গত বছরের ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।
পরবর্তীতে মামলাটি দায়েরে তথ্যগত ভুল হয়েছে উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা।
গত ৩ মার্চ পুলিশের দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে এই নারাজি দাখিল করেন মামলার বাদী ওই শিক্ষার্থীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম। আদালত নারাজির আবেদন মঞ্জুর করে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভিকটিম) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতো এবং ভিকটিমকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে আনতো। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে আসামি ভিকটিমকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতো। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিমকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেয়।
ভিকটিম এরকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে (২নং আসামি) ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। তিনি (অধ্যক্ষ) ব্যবস্থা করতেছি বলে আসামি মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভিকটিমকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
এ বিষয়ে বাদী ২নং আসামির কাছে প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনও সহযোগিতা করেননি বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন। বাদী উপায় না পেয়ে গত ১২ জুন ভিকটিমকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে আসামি মুশতাক তার লোকজন দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি ভিকটিমকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছে এবং যৌন নিপীড়ন করছে।
ঢেঁড়শ গাছের পাতায় সবুজ রঙের ছোট ছোট পোকা। এই পোকা ঢেঁড়শে আক্রমণ করে ফলন নষ্ট করছে। শুধু তাই নয়, আক্রমণের কারণে ঢেঁড়শ বড় না হয়ে ঢেঁড়শ বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন এমন অজ্ঞাত পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের ঢেঁড়শ চাষি কৃষকরা। ফলে চাষিদের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। এমন পরিস্থিতিতে চাষাবাদের খরচ তোলাই তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢেঁড়শে পোকার আক্রমণে ভুক্তভোগী উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া পূর্বপাড়া গ্রামের ঢেঁড়শ চাষি মো. আব্দুল বাছেদ। তিনি তার প্রায় ২৫ শতাংশ জমিতে গত বছরের মতো এবারও উন্নত জাতের কমল নামে হাইব্রিড ঢেঁড়শ চাষ করেছেন। তার মতে- ফলন ভালো হয়েছে এবং ঢেঁড়শ ধরেছে প্রচুর পরিমাণ। কিন্তু অজ্ঞাত পোকার আক্রমণে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে।
কৃষক আব্দুল বাছেদ বলেন- একদিন পরপর ৬০ থেকে ৬৫ কেজি ঢেঁড়শ তোলা যেতো। কিন্তু পোকার আক্রমণে বর্তমানে ১ মণ ঢেঁড়শ উঠে না। তারমধ্যে ৫ থেকে ৭ কেজি ঢেঁড়শ ফেলে দিতে হচ্ছে। অপরদিকে ঢেঁড়শের গায়ে প্রচুর পরিমাণে দাগ হচ্ছে। এতে করে পাইকারি ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নেন। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেও পোকা দমনে কার্যকর কোনো সুফল পাচ্ছি না।
একই গ্রামের ঢেঁড়শ চাষি রহিম মিয়া মীর বক্স আলী বলেন, বাড়ির আঙিনায় ১০/১২ শতাংশ জমিতে ৩ হাজার ১’শ টাকা কেজি দরে উন্নত জাতের হাইব্রিড ঢেঁড়শের বীজ কিনে চাষ করেছি। গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঢেঁড়শ আসলেও পোকার আক্রমণে ঢেঁড়শগুলো পরিপক্ব হচ্ছে না। বড় হওয়ার আগেই পোকার আক্রমণে ঢেঁড়শ বাঁকা হয়ে যায়। এতে করে অনেক ঢেঁড়শ নষ্ট হয়। এবার খরচের টাকাও উঠবে না।
সরেজমিনে উপজেলার কয়েড়া, নিকরাইল, নলুয়া, সিরাজকান্দি, বরকতপুর, বিলচাপড়া, রুহুলী ও চর নিকলা গ্রামের বিভিন্ন ঢেঁড়শ ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়- তীব্র দাবদাহে ও খরায় ঢেঁড়শ ক্ষেতের মাটি সাদা হয়ে গেছে। সবুজ রঙের পোকাগুলো ঢেঁড়শ ছিদ্র করে ফেলছে। তাছাড়া গাছ থেকে ঢেঁড়শের ফুলসহ ঝড়ে যাচ্ছে অসংখ্য ঢেঁড়শ। এছাড়া বাঁকাও হয়ে যাচ্ছে। এগুলো তুলে ফেলা দিচ্ছেন কৃষকরা।
এদিকে কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা অভিযোগ করে বলেন, কৃষি অফিস থেকে মাঠ পর্যায়ে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাছাড়া হাট-বাজারে সারের দোকানগুলোতে গেলে দোকানিরা পোকা দমনের যে-সব কীটনাশক দেয় সেগুলো দিয়ে পোকা দমন হচ্ছে না। এসব কীটনাশকের অতিরিক্ত দামও নেন তারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে পোকা দমন করতে না পারলে ব্যাপক লোকসানে পড়তে হবে।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন বলেন- প্রচণ্ড তাপমাত্রা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঢেঁড়শসহ অন্যান্য সবজিতে বিভিন্ন ধরনের পোকা-মাকড় বংশবিস্তার ছড়াচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে আসলে পোকার বংশবিস্তার রোধ হবে। তাছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পোকা দমনে সকল ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।