ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের চার দিন পর গত শুক্রবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন আবদুর রউফ তালুকদার। এর আগে তিন ডেপুটি গভর্নর পদত্যাগ করেন। এ অবস্থায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, দেশের এই অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সময়ে কে হচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরবর্তী গভর্নর?
আজ মঙ্গলবার দেশের একটি গণমাধ্যমে নতুন গভর্নরের নাম প্রকাশ পেল।
সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী গভর্নর হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা ডঃ আহসান এইচ মনসুরকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বলে তাদের সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, আজ বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৭ বছর বিলুপ্ত করা হবে বলেও জানা যায়।
তবে, গভর্নর পদে নিয়োগ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে ডঃ আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘তিনি নিয়োগের কথা শুনেছেন কিন্তু এখনও নিয়োগপত্র পাননি।‘
২০০৯ সালের পিলখানা বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বিডিআরের (বর্তমান বিজিবি) ২৭ জন সাবেক সদস্য। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
কারা সূত্র জানায়, বুধবার রাতে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে ২৭ জনের জামিননামা কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। যাবতীয় যাচাই-বাছাই শেষে আজ সকাল থেকে তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।
মুক্তি পাওয়ার পর কারাফটকে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা হলে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাবেক বিডিআর সদস্যরা। দীর্ঘ কারাবাস শেষে মুক্তির স্বাদে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা।
এর আগে গত ৭ মে ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় মোট ৪০ জনকে জামিন দেন। এর মধ্যে ১৩ জন ছিলেন কেরানীগঞ্জ কারাগারে এবং বাকি ২৭ জন ছিলেন কাশিমপুর কারাগারে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি একই মামলায় আরও ১৭৮ জন বিডিআর সদস্য জামিন পেয়ে ২৩ জানুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা ‘কলম বিরতি’ কর্মসূচি। এতে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান বেনাপোল কাস্টমস হাউজে রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকলেও দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার ও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) কলম বিরতি ছিল সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত। তবে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) তা বাড়িয়ে বিকেল ৩টা পর্যন্ত করা হয়েছে। এ সময় কাস্টমস হাউজ খোলা থাকলেও কার্যত কোনো দাফতরিক কাজ হয়নি বলে জানিয়েছেন এক রাজস্ব কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, “অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আমরা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সাথে একাত্ম। আমাদের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন রয়েছে আন্দোলনের প্রতি।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেনাপোল কাস্টমস হাউজে অধিকাংশ টেবিল খালি, অনেক কর্মকর্তা বাইরে সময় কাটাচ্ছেন। কিছু কর্মকর্তা নিজ আসনে থাকলেও কোনো কাজ করছেন না। নতুন করে কোনো পণ্যের আইজিএম (Import General Manifest) ইস্যু করা হচ্ছে না, ফলে নতুন পণ্যের ছাড়করণ বন্ধ রয়েছে। তবে আগের ইস্যুকৃত আইজিএম অনুযায়ী পণ্য ছাড় চলছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, “সকাল ১০টা থেকে হাউজে কোনো ফাইল প্রসেস হয়নি। তবে বিকেল ৩টার পর কাজ শুরুর আশ্বাস পেয়েছি।”
বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইব্রাহিম আহমেদ জানিয়েছেন, “কলম বিরতির প্রভাব যাত্রী পারাপারে পড়েনি। দুই দেশের যাত্রীরা স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছেন।”
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার জানান, “কলম বিরতির মধ্যেও বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। বুধবার ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১৭৪ ট্রাক পণ্য, আর আমদানি হয়েছে ৩০৬ ট্রাক পণ্য। বৃহস্পতিবার সকাল ১২টা পর্যন্ত ২৫টি ট্রাকে পণ্য এসেছে, এবং রপ্তানি হয়েছে ১১টি ট্রাক।”
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’-এর খসড়ায় কর্মকর্তাদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের জন্য পদ সংরক্ষণ না করে অভিজ্ঞতাহীন কর্মকর্তাদের পদায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে, যা রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা, গতিশীলতা ও কার্যকারিতাকে ব্যাহত করবে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
সংগঠনটি আরও জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব বিভাগকে দুটি আলাদা ইউনিটে বিভক্ত করার উদ্যোগের প্রতিবাদেই এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
গ্রামীণফোনের ৪জি ইন্টারনেট সেবায় আকস্মিক বিভ্রাটের ঘটনায় মোবাইল অপারেটরটির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি মিলনায়তনে ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী।
তিনি বলেন, “বুধবার প্রায় ৪০ মিনিট সময় ধরে গ্রামীণফোনের ৪জি ইন্টারনেট সেবায় বিভ্রাট দেখা যায়। এ কারণে গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েন। এ বিষয়ে আমরা গ্রামীণফোনের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছি। আশা করছি, আজকের মধ্যেই তারা আমাদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাঠাবে।”
তবে ঠিক কোন কারিগরি ত্রুটির কারণে এই বিভ্রাট ঘটেছে তাৎক্ষণিকভাবে তা জানায়নি গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। তবে বিটিআরসি বলেছে, বিভ্রাটের উৎস, ব্যাপ্তি ও ভবিষ্যতে প্রতিরোধে করণীয়—এসব বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
বিভ্রাটের সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গ্রামীণফোনের গ্রাহকরা ৪জি ইন্টারনেট সেবা পাননি। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ক ফোরামে অভিযোগ জানান।