রবিবার, ৮ জুন ২০২৫ | ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্রশাসনে এখনও সক্রিয় ভারতে প্রশিক্ষিত ১০ হাজার আমলা!

ফাইল ছবি

শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার পর থেকেই বেরিয়ে আসতে শুরু করে থলের সব বিড়াল। দেশের রাজনীতি এবং প্রশাসনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বড় বড় দানবদের সব অনিয়ম ও কুকীর্তি সকলের সামনে উন্মোচিত হতে শুরু করেছে। তবে এখনও প্রায় সব সেক্টরেই ঘাপটি মেরে বসে রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় ভূমিকা রাখা বেশকিছু আমলা। যারা শেখ হাসিনার শাসনামলে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে নিজেদের নীতি ও দায়িত্বের জায়গা থেকে সরে গিয়ে কাজ করেছেন আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে। এমনই আমলা ও প্রশাসনে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের নিবেদিত কিছু কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং সে সময়ের বৈষম্যের শিকার হওয়া কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে দেশের একটি গণমাধ্যমে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ভারতের প্রশিক্ষণ না থাকলে হাসিনা রেজিমে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে দেয়া হতো না। গত ২০১৪ সাল থেকে প্রশাসনে প্রায় ১০ হাজার সরকারি কর্মকর্তা ভারতে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী দুঃশাসনের সময় পদোন্নতি বঞ্চিত অনেকে একারণে এখনো তাদের প্রাপ্য পদোন্নতি পাননি। বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাকে প্রশাসনের নীতিমালা এবং শাসনকাজের অন্যান্য ক্ষেত্রের সরকারি নীতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিল ভারত।

একারণে প্রশাসনে ভারতপন্থি কর্মকর্তারা মাথাচড়া দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সচিবালয়ের সামনে আনসার বিদ্রোহের ঘটনায় প্রশাসনে ভারতপন্থি ও হাসিনার দোসর সরকারি কিছু কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। ইতোমধ্যে সাবেক ১/১১ সরকারের আমলা এএইচ এম নুরুল ইসলামকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। আবার এই গুপ্তচর কর্মকর্তাকে দুদকের চেয়ারম্যান করার জন্য এক উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জোর সুপারিশ শুরু করছেন। বাংলাদেশের প্রশাসনে ভারত ও হাসিনা সরকারের দোসররা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভিতরে প্রবেশ করে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছেন।

ভারত চেয়েছে বাংলাদেশের সরকার কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিলে তারা ভারত ছাড়া অন্য দেশের হয়ে কাজ করতে পারবে না বলে মনে করেছিলে ভারত। তবে ভারতের এ পরিকল্পনা বাংলাদেশের প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা মনে নিতে পারেনি। সে কারণে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাঝে ক্ষোভ হতাশায় ভুগছিলেন।অন্যদিকে প্রশাসনের ভালো যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদুকে তালিকা দিয়ে হয়রানির জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাদের প্রতিটি ষড়যন্ত্র ছাত্র-জনতা বৈষম্যবিরোধী মোকাবেলা করেছেন।

এছাড়া প্রশাসনের অনেক সরকারি কর্মকর্তা চীন, জাপান, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং আরো প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী। শুধু মাত্র পাকিস্তানে কোনো সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ জনগণ ঘুরতে গেলেও ভারতপন্থি কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে হয়রানি করতেন তা বর্তমানেও আসছে। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে অবারিতভাবে বাংলাদেশে প্রবেশাধিকার দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি আছে। এ আপত্তির কারণে অনেক দেশের সাথে চুক্তিটি সই হয়নি। প্রশাসনের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে বহাল থাকা ভারতপন্থি ও আওয়ামী দোসরদের তালিকা চূড়ান্ত করেছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। এ কাজে সক্রিয়ভাবে সহায়তা দিয়েছে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আরেকটি সংগঠন। যার নাম পলিসি ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ সোসাইটি (পিএমআরএস)। ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

গতকাল রোববার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানো হয়। তারা বলেন, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বাংলাদেশের উপর নজর রাখার নির্দেশনাকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সামরিক উসকানি হিসেবে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। নেতৃবৃন্দ ভারতীয় আধিপত্যবাদী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনর্বাসন কার্যক্রম জোরদার করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিও আহ্বান জানান।

জানতে চাইলে প্রশাসন বিশেষজ্ঞ সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট দেশ উচ্চতর প্রশিক্ষণও পদোন্নতির জন্য শর্ত হতে পারে না। যদি লিখিত বা অলিখিত এ ধরনের আদেশ থাকে তা বাতিল করা জরুরি। আমার মনে হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের মাস পূর্ণ হয়েছে গতকাল। ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই জনপ্রশাসন সংস্কারের পদক্ষেপ নেয় সরকার। এরই অংশ হিসেবে বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক কারণে পদোন্নতি না পাওয়া তিন স্তরের কর্মকর্তাদের (উপসচিব. যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব) পদোন্নতি ও পদায়ন করা হয়। গত ১৩ আগস্ট প্রথম পদোন্নতি পান উপসচিব পদে। দুই দিনের মাথায় ১৫ আগস্ট তাদের অনেকেই যুগ্মসচিব পদোন্নতি পান। এর তিন দিন পর ১৮ আগস্ট তাদের আরেকবার পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত সচিব করা হয়। এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের সচিব এবং বাকিদের মধ্যে কাউকে কাউকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও অধিদপ্তরে শিগগির পদায়ন করা হবে। এছাড়াও গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিসিএস প্রশাসন ৮২ ব্যাচের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো কয়েকজন কর্মকর্তাকে প্রথমে সচিব পরবর্তীতে সিনিয়র সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি)’র পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদ সচিব বাদে সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার।

প্রশাসনে ভারতপন্থি আওয়ামী দোসরদের তালিকা চূড়ান্ত। এবার বেশ শক্তভাবে মাঠে নামতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। চলতি সপ্তাহের মধ্যে চিহ্নিত আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ স্থান থেকে সরানোসহ অবশিষ্ট পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি না দিলে সচিবালয়ে অবস্থান কর্মসূচি দেওয়া হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফোরামের আহ্বায়ক এবিএম আব্দুস ছাত্তার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে জোর দাবি জানিয়ে ১৫ দিন আগে আমরা সচিবালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। সে সময় সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।

খুবই অবাক হওয়ার মতো বিষয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যেসব পদস্থ কর্মকর্তা আওয়ামী রেজিমকে টিকিয়ে রাখতে চূড়ান্তভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, যাদের সার্বিক কর্মকাণ্ড ছিল দলীয় কর্মীর মতো, অথচ তারা এখনো সেখানে গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছেন। যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- অতিরিক্ত সচিব আহসান কিবরিয়া। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন)। এই কর্মকর্তা সব সময় প্রধানমন্ত্রীর আশপাশে থাকতেন। প্রকাশ্যে দলবাজি করতেন। তিনি এখন ভোল পালটে সংস্কারপন্থি হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। সঙ্গে রেখেছেন আরও কয়েকজনকে। আহসান কিবরিয়ার কারণে তাদেরও বদলি করা যাচ্ছে না। এই কর্মকর্তা ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। সে সূত্রে তিনি এখন নতুন করে ক্ষমতাবান হওয়ার চেষ্টা করছেন। বিএনপি যে তালিকা প্রস্তুত করেছে সেখানে তার নাম রয়েছে প্রথমদিকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) আবু হেনা মোস্তফা জামান ও যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক) ফিরোজ উদ্দিন খলিফা। এরা দুজন ছিলেন বিগত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের অতি ঘনিষ্ঠ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিটি বিদেশ সফরের অগ্রভাগে থাকতেন মোস্তফা জামান। ফিরোজ উদ্দিন খলিফা এর আগে ছিলেন সচিবালয় নিরাপত্তা শাখায়।

এভাবে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর ও সংস্থায় ভারতপন্থি ও হাসিনার দোসরদের চিহ্নিত করে তালিকা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া এখন শেষ পর্যায়ে। শুধু নামের তালিকা করেই এ প্রক্রিয়া শেষ করা হচ্ছে না। প্রত্যেকের দুর্নীতির খতিয়ানও বের করা হচ্ছে। কে কীভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন সেটিও উল্লেখ করা হবে। এ সংক্রান্ত তালিকা প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হবে। পৃথকভাবে দেওয়া হবে দুর্নীতি দমন কমিশনে।

এছাড়া সাবেক সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের, সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান, সাবেক সচিব আব্দল মালেক, সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল ও জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধূরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সচিব সালোহ উদ্দীনসহ কয়েকজন সচিব বাংলাদেশের প্রশাসনে ভারতীয় সংস্কৃতি চালু করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছেন। এছাড়া কিছু ভালো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তারা হলেন, ঢাকার সাবেক ডিসি শহিদুল ইসলাম,কাজী নিশাত রসুল,সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী একান্ত সচিব রেজাউল করিমসহ অনেকের বিরুদ্ধে হয়রানি করা হচ্ছে।

জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পরিচালনার ১৫ বছরে যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তাদের সরকার বিরোধী রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে অনেকের পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়। কাউকে কাউকে শাস্তিমূলক হিসেবে ডাম্পিং পোস্টিং এবং বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

এদিকে ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই জনপ্রশাসন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। অতি উৎসাহী হয়ে যেসব কর্মকর্তা যোগ্যদের বঞ্চিত করেছিলেন এমন কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ওএসডি, বাধ্যতামূলক অবসর ও প্রত্যাহার করা হয়। তবে গুটি কয়েক শীর্ষ আমলাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি), বাধ্যতামূলক অবসর কিংবা বিগত সরকারের চুক্তিতে থাকা শীর্ষ কর্তাদের নিয়োগ বাতিল যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন বিগত সরকারের আমলে বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তারা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রশাসন সংস্কারের কাজ করছে। বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি ও পদায়ন করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক নিয়োগের লক্ষ্যে নতুন ফিটলিস্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। সচিব পর্যায়ে রদবদল শুরু হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ বা অতি উৎসাহী হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এমন কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এমনকি তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হবে।

Header Ad
Header Ad

আজ বিশ্ব সমুদ্র দিবস

ছবি: সংগৃহীত

আজ ৮ জুন, বিশ্ব সমুদ্র দিবস। ‘নীল অর্থনীতির’ সম্ভাবনা আর পরিবেশগত সংকটের মাঝপথে দাঁড়িয়ে এবারের দিবসটি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে।

১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ধরিত্রী সম্মেলনে প্রথমবারের মতো দিবসটি পালনের প্রস্তাব আসে। পরে ২০০৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৩তম অধিবেশনে ৮ জুনকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক সমুদ্র দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরপর ২০০৯ সাল থেকে দিবসটি প্রতি বছর পালিত হচ্ছে পরিবেশ সুরক্ষা ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষার বার্তা নিয়ে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র প্রতীকী পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এবার সময় এসেছে সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার।

বাংলাদেশ একটি সমুদ্রসীমাসম্পন্ন দেশ। বঙ্গোপসাগর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে দেশের বিস্তীর্ণ উপকূলীয় অঞ্চল। রয়েছে মাছ, খনিজ, জ্বালানি, পর্যটনসহ নানা খাতে ‘নীল অর্থনীতির’ বিপুল সম্ভাবনা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সমুদ্র সম্পদ ব্যবস্থাপনায় নেই কোনো একক অভিভাবক। আলাদা মন্ত্রণালয় না থাকায় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা যেমন—পরিবেশ মন্ত্রণালয়, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নেভি, কোস্টগার্ড, মেরিন রিসার্চ ইনস্টিটিউট—সবাই নিজেদের মতো করে বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।

সমুদ্রবিজ্ঞানী ও গবেষকরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ‘মেরিন কনজারভেশন অ্যাকশন প্ল্যান’ প্রণয়ন করা দরকার। পাশাপাশি তারা পৃথক ‘সমুদ্র মন্ত্রণালয়’ গঠনের দাবি জানিয়েছেন, যাতে দেশের বিশাল সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনায় একক নেতৃত্ব এবং সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ না নিলে এই সম্ভাবনাময় খাত একদিন দুর্বিষহ সংকটে পড়বে। তাই বিশ্ব সমুদ্র দিবসের বার্তা শুধু উদযাপনে নয়, বাস্তব পরিকল্পনায় প্রতিফলিত হওয়াই সময়ের দাবি।

Header Ad
Header Ad

আজ চলাচল করবে যেসব ট্রেন

ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনে দেশের রেলপথে ফিরছে স্বাভাবিকতা। ঈদের দিন কিছু ট্রেন বন্ধ থাকলেও আজ রবিবার (৮ জুন) দেশের বিভিন্ন রুটে চলবে অধিকাংশ আন্তঃনগর, মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেন। যাত্রীদের সুবিধার্থে পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে প্রায় সব ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পূর্বাঞ্চল রেল জোনে আজ চলবে অন্তত ২০টি আন্তঃনগর ট্রেন। এর মধ্যে রয়েছে- পারাবত, তিস্তা, অগ্নিবীণা, এগারোসিন্ধুর গোধূলী ও প্রভাতী, মহানগর গোধূলী ও প্রভাতী, জয়ন্তিকা, উপবন, তূর্ণা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা, পাহাড়িকা, উদয়ন, বিজয়, উপকূল, হাওর, কক্সবাজার, পর্যটক, সৈকত ও প্রবাল এক্সপ্রেস। পূর্বাঞ্চলের সব মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেনও আজ চালু থাকবে। তবে ২২৪ নম্বর একটি ট্রেন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

পশ্চিমাঞ্চল জোনেও চলবে একাধিক আন্তঃনগর ট্রেন। এর মধ্যে রয়েছে- রূপসা, সাগরদাঁড়ি, নকশিকাঁথা, চিত্রা, সীমান্ত, টুঙ্গিপাড়া, বনলতা, পদ্মা, ধলেশ্বরী, মধুমতি, রাধিকা, লালমনি, রূপান্তরসহ আরও কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন। এই জোনে মেইল, কমিউটার ও মিক্সড ট্রেনগুলোও যথারীতি চলবে।

ঈদের ভ্রমণে যাত্রীচাপ সামাল দিতে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব অতিরিক্ত কোচ ৩ জুন থেকে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং তা চলবে ১৪ জুন পর্যন্ত। এতে প্রতিটি ট্রেনে গড়ে ৫০ থেকে ১১৫টি পর্যন্ত আসন বৃদ্ধি পেয়েছে।

পারাবত, তিস্তা, অগ্নিবীণা, উপবন, জয়ন্তিকা, বিজয়, উপকূল, পাহাড়িকা, মেঘনা, কক্সবাজার, পর্যটক, সৈকত, প্রবাল, রাধিকা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা এক্সপ্রেসে যুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের অতিরিক্ত কোচ। শুধু মেঘনা এক্সপ্রেসেই সংযুক্ত করা হয়েছে প্রায় ৪০০টি নতুন আসন। কক্সবাজার ও পর্যটক এক্সপ্রেসেও যুক্ত হয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন, যা যাত্রীদের স্বস্তি দেবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতেই এ বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যাত্রীচাপ ও নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রেখে ট্রেন চালনা এবং অতিরিক্ত আসনের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

Header Ad
Header Ad

গাজায় ঈদের পরদিন ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৭৫

ছবি: সংগৃহীত

ঈদের আনন্দ ভুলে ভয়াবহ মৃত্যু ও ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন, ৭ জুন শনিবার, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর একাধিক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৫ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। নিহতদের মধ্যে রয়েছে এক পরিবারের ১৬ জন সদস্য, যাদের ৬ জনই শিশু।

গাজা সিটির সাবরা এলাকায় বসবাস করা ওই পরিবারটি রাতের আঁধারে হামলার শিকার হয়। গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসেল জানান, হামলার আগে কোনো ধরনের সতর্কবার্তা বা সাইরেন দেওয়া হয়নি। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অন্তত ৮৫ জন আটকে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “এটি ছিল ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিত গণহত্যা। নিহতদের সবাই বেসামরিক মানুষ, যাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।”

গাজা সিটির বাসিন্দা হামেদ কেহিল বলেন, “অতীতে ঈদের সকালে আমরা আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে মিলিত হতাম। এবারের ঈদে আমরা কফিন কাঁধে নিয়েছি। শিশুরা নতুন পোশাকের বদলে পড়েছে রক্তে ভেজা কাপড়।”

অন্য আরেক বাসিন্দা হাসান আলখোর বলেন, “গত দুই বছরে ইসরায়েল যা করেছে, তার জন্য একদিন নেতানিয়াহুকে সৃষ্টিকর্তার কাছে জবাবদিহি করতে হবে।”

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানায়, তাদের শনিবারের হামলার লক্ষ্য ছিল হামাসের সামরিক শাখার শীর্ষস্থানীয় নেতা আসাদ আবু শারিয়া। তাকে হত্যা করতে গিয়ে অসংখ্য সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারায়।

এর আগের দিন, ঈদের প্রথম দিন ৬ জুনেও, গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে নিহত হয়েছিলেন অন্তত ৪২ জন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল অভিমুখী হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৫৪,৬৭৭ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ১,২৫,৫৩০ জন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

গাজার মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। মার্চ থেকে ইসরায়েল খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণবাহী গাড়িগুলোকেও গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। ফলে যুদ্ধ, ক্ষুধা ও চিকিৎসার অভাবে গাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

হামাস কর্তৃক অপহৃত ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনো প্রায় ৩৫ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ জানিয়েছে, সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মহলের বারবার আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া চুক্তি উপস্থাপন করা হলেও, এখন পর্যন্ত হামাস তা অনুমোদন করেনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আজ বিশ্ব সমুদ্র দিবস
আজ চলাচল করবে যেসব ট্রেন
গাজায় ঈদের পরদিন ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৭৫
ঈদের নামাজে বাধা নিয়ে বিরোধ, সন্ত্রাসী হামলায় বিএনপি কর্মী নিহত
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মারা গেছেন
পাকিস্তান-তুরস্ক-চীনের অদৃশ্য জোটে চাপে ভারত
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নয়: ট্রাম্প
রাজধানীতে কোরবানির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়
ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ ড্রোন ও মিসাইল হামলা
আরাফাতের ময়দানে হজের সময় সন্তানের জন্ম দিলেন টোগোর নারী
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ২৬ জন, মোট মৃত্যু ২৩
রাজধানীতে কোরবানির মাংস কাটতে গিয়ে আহত ৭৭ জন
ঈদ মৌসুমে টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টির পূর্বাভাস, সতর্ক থাকতে বলছে আবহাওয়া অফিস
ঈদের দিন গাজায় ৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত
পাকিস্তানের নেতৃত্ব খুবই শক্তিশালী : ট্রাম্প
ঢাকায় দেড় ঘণ্টায় ২১ মিলিমিটার বৃষ্টি, ঈদের আনন্দে ব্যাঘাত নেই
কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
নগরজুড়ে কোরবানির পশু জবাই, পরিচ্ছন্নতায় প্রস্তুত ২০ হাজারের বেশি কর্মী
ঈদের দিন বন্ধ মেট্রোরেল, কাল থেকে ফের চলবে
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সস্ত্রীক সাক্ষাৎ