নিলামে উঠল এস আলম গ্রুপের বেনামি প্রতিষ্ঠানের ৩১ একর জমি

ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের সাগরিকা বিসিক শিল্প এলাকায় অবস্থিত এস আলম গ্রুপের বেনামি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফুডস (প্রা.) লিমিটেড-এর ৩১ একর জমি এবার নিলামে তুলেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি। সোমবার (১২ মে) ব্যাংকের জুবিলী রোড শাখা স্থানীয় একটি দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩-এর ১২(৩) ধারা অনুযায়ী খেলাপি বিনিয়োগ আদায়ের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাধীন কারখানা ও জমি বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কর্ণফুলী ফুডস গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফাসহ মোট ১ হাজার ৭৮৩ কোটি ২২ লাখ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে। এই ঋণ আদায়ে প্রতিষ্ঠানটির ৩০ একর ৬০ শতক জমি ও কারখানা নিলামে তোলা হয়েছে, যা ৪৩টি আলাদা তপসিলে বিভক্ত। উল্লেখযোগ্য যে, জমির মধ্যে পুকুর, নালা এবং কিছু খাস জমিও রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন পটিয়ার কেলিশহর ইউনিয়নের মো. রহিম উদ্দিন চৌধুরী এবং চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থানাধীন ইসলামিয়া ম্যানসন এলাকার নজরুল ইসলাম। যদিও কর্ণফুলী ফুডসের নামে এই বিনিয়োগ দেওয়া হলেও, ইসলামী ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে এটি আসলে এস আলম গ্রুপের বেনামি প্রতিষ্ঠান। ওই ঋণ অনুমোদনের সময় অনিয়ম ও চাপে স্বাক্ষর না করায় ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা বদলি ও চাকরিচ্যুত হন বলেও জানা গেছে।
এর আগেও এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও জমি নিলামে তোলে ইসলামী ব্যাংক। ২০ এপ্রিল প্রায় ৯,৯৪৮ কোটি টাকার ঋণ আদায়ে তাদের একটি চিনিকল ও ১১ একর জমি নিলামে ওঠে। এরপর ২৭ এপ্রিল স্টিল মিল, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ভোজ্যতেল কারখানাসহ ১১৪৯ শতাংশ জমির বিপরীতে ২,১৮০ কোটি টাকার ঋণ আদায়ে নিলাম ডাকা হয়। একইভাবে, ৮২ কোটি টাকা খেলাপি আদায়ে আরও দুটি কোম্পানির সম্পদও নিলামে তোলে ব্যাংকটি।
এস আলম গ্রুপকে ঘিরে ধারাবাহিক ঋণ বিতরণ, বেনামি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিনিয়োগ গ্রহণ, এবং পরিশোধে ব্যর্থতার অভিযোগে দেশের ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক বলছে, আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এসব ঋণ আদায়ে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে।
