কুষ্টিয়ায় ছাত্রাবাসে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকার একটি ছাত্রাবাসে লুবাব হোসেন (২০) নামে এক পলিটেকনিক শিক্ষার্থী রহস্যজনকভাবে মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত ১২টার দিকে বাঁধন ছাত্রাবাসে এই ঘটনাটি ঘটে। লুবাব দর্পণ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার খন্দকবাড়িয়া গ্রামে। তিনি শফিউল ইসলামের ছেলে।
ঘটনার সময় লুবাব তার সহপাঠী অনিকের সঙ্গে একই রুমে ছিলেন। অনিক জানান, রাত ১১টার দিকে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১২টার দিকে হঠাৎ ঘুমের মধ্যে লুবাবের অস্বাভাবিক চিৎকারে তার ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভাঙার পর লুবাবকে অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি করতে দেখেন তিনি। পরে ভয়ে ছাত্রাবাসের অন্য শিক্ষার্থীদের ডাক দেন। সবাই মিলে লুবাবের মাথায় পানি ঢালে এবং তাকে শান্ত করার চেষ্টা করে।
কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় তারা দ্রুত লুবাবকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসকরা লুবাবকে মৃত ঘোষণা করেন। তার এভাবে মৃত্যুর ঘটনায় ছাত্রাবাসজুড়ে এবং এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) জানান, মৃতদেহটি ‘Cyanosed’ ছিল—যা সাধারণত বিষক্রিয়াজনিত মৃত্যুর ইঙ্গিত দেয়। তিনি বলেন, “কোনো কিছু ওভারডোজ করলেও বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে, এমনকি সেটা মাদক জাতীয় দ্রব্যও হতে পারে।”
এদিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে লুবাবের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং ঘটনাস্থল থেকেও সন্দেহজনক কিছু উদ্ধার হয়নি। তবে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তারা ধারণা করছেন, লুবাব কোনো ধরনের মাদকাসক্ত হতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, “এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি মৃত্যু। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলেই নিশ্চিত করে বলা যাবে, এটি কীভাবে ঘটেছে।”
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে এবং প্রয়োজন হলে ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ ও ছাত্রাবাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
