
শাহদাতের ৭৩ রানের পরও বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ব্যাটিং ব্যর্থতা
২৪ মে ২০২৩, ০৬:২১ পিএম | আপডেট: ৩০ মে ২০২৩, ০৫:০৬ এএম

ব্যাটিং ব্যর্থতা এড়ানোর জন্য শাহদাত হোসেন দিপু চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সঙ্গী হিসেবে তাকে কেউ সঙ্গ দিতে পারেনি। তাই তার ৭৩ রানও বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ইনিংসকে পেটমোটা করতে পারেনি। ২৩৭ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। জবাব দিতে নেমে সফরকারী উইন্ডিজ ‘এ’ দল ৩১ রানের লিড নিয়েছে। দ্বিতীয় দিন শেষে তারা ৬ উইকেটে করেছে ২৬৮ রান।
সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশ ‘এ’ দল ৫ উইকেটে ১৭৫ রান নিয়ে খেলতে নামে। বাকি ৫ উইকেট হারিয়ে তারা ৬২ রান যোগ করে অলআউট হয়ে যায়।
এই ৬২ রানের মাঝে ৪৫ রানই ছিল শাহদাত হোসেন দিপুর। তিনি ২৮ ও নাঈম হাসান ১২ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেন। কিন্তু নাঈম আর ৫ রান করেই আউট হয়ে যান। নাঈম আউট হওয়ার পর ব্যাট করতে আসা ৪ ব্যাটসম্যানের অবদান ছিল মাত্র ৬ রানের। তানভীর ইসলাম ৪ এবং তানজিম হাসান সাকিব ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ ০ রান করে আউট হয়ে যান। এমনকি আগের দিনের রিটায়ার্ড হার্ট ব্যাটসম্যান ওপেনার সাদমান ইসলাম নেমেও দলের ভরাডুবি ঠেকাতে পারেননি। আগের দিনের ১১ রানের সঙ্গে তিনি ৪ রান যোগ করে আউট হন ১৫ রানে।
শাহদাত আউট হন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে। ম্যাক অ্যালিস্টারের বলে শর্ট থার্ডম্যানে আথানাজের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় তার ১২৪ বলে ২ ছক্কা ও ১০ চারে সাজানো ৭৩ রানের ইনিংস। তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন বেশ রাজকীয়ভাবে। ম্যাক অ্যালিস্টারের ওভারে পরপর ২ বলে প্রথমে স্কয়ার ড্রাইভ করে বাউন্ডারি মেরে, পরে আপার কাট করে থার্ড ম্যান দিয়ে ছক্কা মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেন। বল খেলেন ৯৯টি।
দ্বিতীয় দিনের পতন হওয়া ৫ উইকেটের ৩টিই নেন জর্ডান। আগের দিন তিনি নিয়েছিলেন ২ উইকেট। ১৮.৩ ওভার বোলিং করে ৪৫ রান দিয়ে তিনি নেন ৫ উইকেট। প্রথম দিন ২ উইকেট নেওয়া সিনক্লিয়ার দ্বিতীয় দিন আর কোনো উইকেট নিতে পারেনি। আগের দিনের ৩৭ রানের সঙ্গে তিনি আজ ৭ রান দেন। এ ছাড়া ফিলিপ ৬৭ রানে নেন ২ উইকেট। ম্যাক অ্যালিস্টার ৫৮ রানে নেন ১ উইকেট।
ব্যাট করতে নেমে উইন্ডিজ ‘এ’ দলের ব্যাটসম্যানদের প্রথম ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও সেঞ্চুরি না করার আক্ষেপে পুড়তে হচ্ছে। প্রথম ম্যাচে তাদের চার চারজন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে বঞ্চিত হয়েছিলেন। টেগেনারায়ন চন্দরপল ৮৩, কির্ক ম্যাকেঞ্জি ৮৬, অ্যালিক অ্যথানাজে ৮৫, জসুয়া ডি সিলভা ৭৭ রান করে আউট হয়েছিলেন। এই বঞ্চিত হওয়ার তালিকায় ছিলেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সাইফ হাসানও। তিনি আউট হয়েছিলেন ৯৫ রান করে। এবার সেই তালিকায় বাংলাদেশের শাহদাত হোসেন দিপু ৭৩ রান করে আউট হওয়ার পর যোগ হয়েছেন কির্ক ম্যাকেঞ্জিও। তিনি আউট হয়েছেন ৯১ রান করে। সফরকারীদের সংগ্রহে তার অবদানই ছিল মুখ্য।
সফরকারীরা শুরুতেই হারায় টেগেনারায়ান চন্দরপলের উইকেট। ৪ রান করে খালেদের বলে তিনি এলবিডব্লিউর শিকার হন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ম্যাকেঞ্জি ও রেইফার ১১৬ রান যোগ করে দলের অবস্থা আবার পোক্ত করে ফেলেন। ২টি করে চার ও ছক্কা মেরে ৭৮ বলে ৩৭ রান করে রেইফার তানভীর ইসলামের বলে আফিফের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন। এরপর সাইফ হাসান এক ওভারেই জোড়া আঘাত হেনে ম্যাকেঞ্জি (৯১) ও ব্রান্ডন আলেকজান্ডার কিং (০) ফিরিয়ে দিয়ে ম্যাচে আবার স্বাগতিকদের ফিরিয়ে আনেন। ম্যাকেঞ্জিকে লং অনে ক্যাচ ধরেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ব্র্যান্ডনকে নিজের বলে নিজেই অসাধারণ ক্যাচ ধরেন সাইফ।
৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে আবার চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা। পঞ্চম উইকেট জুটিতে আথানাজে ও কার্টি মিলে আবার ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন। সেখানে তারা সফলও হন জুটিতে ৭৯ রান যোগ করে। আথানাজে ৪৫ রান করে নাঈম হাসানের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হলে ভাঙে জুটি। আথানাজে আউট হলেও কার্টি ইনিংসকে টেনে নিয়ে যান। অধিনায়ক ডি সিলভাকে নিয়ে দলকে এনে দেন লিড। জুটিতে রান আসে ৪৮। নাঈমের বলে ফাইন লেগ দিয়ে সুইপ শট খেলে চার মেরে ৯৪ বলে পূর্ণ করেন হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু ৬৮ রানে গিয়ে থেমে যেতে হয় রানআউট হলে। ১১১ বলে ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৬৮ রান করেন তিনি। জসুয়া ৯ ও সিনক্লেয়ার ১ রান নিয়ে তৃতীয় দিন আবার ব্যাট করতে নামবেন দলের লিড বাড়িয়ে নিতে।
বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন সাইফ হাসান। তিনি ৩৭ রানে নেন ২ উইকেট। তানভীর ইসলাম ৪৫, সৈয়দ খালেদ আহমেদ ৪৬ ও নাঈম হাসান ৮০ রানে নেন ১টি করে উইকেট।
এমপি/এসজি