
খেলা
বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টা পদে থাকছেন না সামি, জানালেন কারণ

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ক্রীড়া সাংবাদিক ও উপস্থাপক সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি। মঙ্গলবার (১ জুলাই) নিজের ফেসবুক পোস্টে এই দায়িত্ব পালন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে আবেগঘন বক্তব্য দেন তিনি।
সামি জানান, তিনি নিজের উদ্যোগে নয়, বরং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আহ্বানে উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এটি ছিল সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী পদ। কোনো সম্মানি বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নয়, শুধুমাত্র ক্রিকেটের উন্নয়নে সহযোগিতার উদ্দেশ্যেই এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি।
তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একটি বিশেষ গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে। সামির ভাষায়, “সেদিনই (দায়িত্ব ঘোষণার দিন) থেকে একটা মহল আমার রেপুটেশন খারাপ করার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে। কেন, তা আমি জানি না। আমি তো প্রেসিডেন্টের চাওয়াতেই এসেছিলাম।”
সামি জানান, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেন। অনূর্ধ্ব-১২ ক্রিকেট কার্নিভাল নিয়ে প্রথম বৈঠকে অংশ নিয়ে বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রস্তাব দেন—যেমন পেসার হান্ট প্রতিযোগিতা, প্যারেন্টাল কোচিং গাইডলাইন, শিশুদের জন্য টেস্ট ক্রিকেটভিত্তিক চিত্রাঙ্কন ইত্যাদি। পরবর্তীতে দেশের চারটি বিভাগে ঘুরে গিয়ে মাঠ পর্যায়ের সমস্যা চিহ্নিত করে তা বিসিবির বিভিন্ন বিভাগে জমাও দেন।
তবে মাঠপর্যায়ের কাজের পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। সামি জানান, তার পেশা হচ্ছে কনটেন্ট তৈরি, আর সেটাই বিসিবি জানত। তবুও একটি গোষ্ঠী তার কাজকে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ বলে প্রচার করতে থাকে। অথচ, তিনি নিজ খরচে ক্যামেরাম্যানসহ কনটেন্ট তৈরি করেছেন এবং এর জন্য বিসিবির কোনো অর্থও গ্রহণ করেননি।
এই বিতর্কে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিসিবি সভাপতি নিজেই—এমন মন্তব্য করে সামি বলেন, “একটা সফল কার্যক্রমের দিনশেষে প্রেসিডেন্টের মুখ থেকে হাসি উড়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র আমাকে ঘিরে গড়ে ওঠা একটি কৃত্রিম সংকট তাকে ডিস্ট্র্যাক্ট করছে।”
সামি আক্ষেপ করে লেখেন, “আমি রাজনীতিবিদ নই, বড় ব্যবসায়ী নই, বড় কোনো ব্যাকআপও নেই। ডার্টি পলিটিক্স আমার কাজ না। আমি শুধু কাজটাই করতে পারি—রিসার্চ, হোমওয়ার্ক, ডে রিপোর্ট, মাঠপর্যায়ে ঘুরে ঘুরে সমস্যা চিহ্নিত করা, সমাধানের চেষ্টা করা।”
তিনি বলেন, তার এই কাজের মনোভাবই গত ১০ বছর যমুনা টেলিভিশনে স্থিতিশীল ক্যারিয়ারের পেছনে মূল কারণ। সব টিভি চ্যানেল তাকে স্পোর্টস প্রোগ্রামে রাখে তার হোমওয়ার্ক ও এফোর্টের কারণে।

নিজের সরে দাঁড়ানোর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে সামি দেখান বিসিবি সভাপতির স্বচ্ছ, দেশপ্রেমিক কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি না করাই। তিনি বলেন, “বুলবুল ভাই দেশের ক্রিকেটে বড় পরিবর্তনের সূচনা করেছেন। আমি থাকলে হয়তো উনার পথ আরো কঠিন হয়ে যাবে। আমি বিতর্কের কারণ হতে চাই না।”
ফেসবুক পোস্টের শেষাংশে সামি লেখেন, “একটা বাস্তবতার শিক্ষা আমার স্ত্রী আমাকে বারবার দিতেন—‘বাংলাদেশে শুধু মেধা বা ট্যালেন্ট দিয়েই সব হয় না।’ আজ আবার মনে হলো, Wife is always right।”