শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

তিনমাসে ভিন্ন নাম-ঠিকানায় ১৪৩ রোহিঙ্গার হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট

ছবি: সংগৃহীত

শক্তিশালী একটি প্রতারক চক্র গত তিন মাসে ১৪৩ রোহিঙ্গার হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের ভেতরে থাকা দাগি আসামি ও অপরাধীদেরও অবৈধভাবে ভুয়া জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে আসছিল এই চক্রটি।

দেশের ভেতরে নারীসহ সাধারণ পুরুষদের এনআইডি কার্ড সংগ্রহে সক্রিয় রয়েছে দালাল চক্রের একটি গ্রুপ। এরপর অন্যজনের নামে অবৈধভাবে তৈরি করা হয় এনআইডি কার্ড। বিপুল ডকুমেন্টস ও ডিভাইসসহ গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে রয়েছে, রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ, দালাল ও ২ আনসার সদস্যও।

চক্রটি তিনটি পর্যায়ে কাজ করে রোহিঙ্গা ও দাগি অপরাধীদের তৈরি করে দিচ্ছে ভুয়া পাসপোর্ট। প্রথমে ভূয়া জন্ম সনদ তৈরি। দ্বিতীয় পর্যায়ে জন্ম সদন দিয়ে এনআইডি কার্ড। এরপর তৃতীয় ধাপে ওই এনআইডি কার্ডের মাধ্যমে অবৈধভাবে তৈরি করা হচ্ছে রোহিঙ্গা নাগরিকসহ দাগি আসামিদের পাসপোর্ট।

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষদের অবৈধভাবে জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বানিয়ে দেয়া শক্তিশালী একটি প্রতারক চক্রের ২৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গ্রেপ্তার রোহিঙ্গারা হলেন- উম্মে ছলিমা ওরফে ছমিরা, মরিজান ও রশিদুল। গ্রেপ্তার রোহিঙ্গা দালাল হলেন- আইয়ুব আলী ও মোস্তাকিম। দুই আনসার সদস্য হলেন- জামসেদুল ইসলাম ও মো. রায়হান। গ্রেপ্তার বাঙালি দালাল- রাজু শেখ, শাওন হোসেন ওরফে নিলয়, ফিরোজ হোসেন, মো. তুষার মিয়া। আগারগা, মোহাম্মদপুর, উত্তরাতে কম্পিউটারের দোকান খুলে এ কাজে লিপ্ত গ্রেপ্তার অপর দালালরা হলেন- মো. শাহজাহান শেখ, মো. শরিফুল আলম, জোবায়ের মোল্লা, শিমুল শেখ, আহমেদ হোসেন, মো. মাসুদ আলম, মো. আব্দুল আলিম, মো. মাসুদ রানা, ফজলে রাব্বি শাওন, রজব কুমার দাস দীপ্ত, আল-আমিন, মো. সোহাগ। গ্রেপ্তার আসামিদের হেফাজত থেকে মোট ১৭ টি পাসপোর্ট, ১৩ টি এনআইডি, ৫টি কম্পিউটার, ৩টি প্রিন্টার, ২৪টি মোবাইল ফোন এবং পাসপোর্ট তৈরির সংশ্লিষ্ট শত শত দলিলপত্র জব্দ করা হয়।

ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সাদিয়া সুলতানা সাথি একজন গৃহিণী। তার পাসপোর্ট নেই, বিদেশ যাবার কোনো স্বপ্ন নেই তার। দালাল চক্রটি গৃহিণী সাদিয়া সুলতানাকে টার্গেট করে তার এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে। পরে তার ছবি, ঠিকানা ও এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে কক্সবাজারে থাকা উম্মে ছলিমার নামে রোহিঙ্গা নারীর পাসপোর্ট তৈরি দেয় দালাল চক্র। সাদিয়া সুলতানার মতো সাধারণ নারী ও পুরুষদের এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে গত তিন মাসে ১৪৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করে দেয় এই চক্রের সদস্যরা।

হারুন অর রশীদ বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের একাধিক টিম রাজধানীর আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট সংক্রান্ত ডকুমেন্টস, পাসপোর্ট এবং কম্পিউটারসহ ৩ রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষ, ১০ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেয়া তথ্য সংগৃহীত ডকুমেন্টস বিশ্লেষণ করে ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনে ও রাতে কক্সবাজার, টাঙ্গাইল এবং ঢাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে দুই আনসার সদস্যসহ রোহিঙ্গা ও বাঙালি দালাল চক্রের ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার চক্রটির একটি দল কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি থেকে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের সংগ্রহ করে ঢাকায় নিয়ে আসে। আরেকটি দল এদের জন্য জন্ম সনদ, এনআইডি বানিয়ে দেয়। সর্বশেষে অন্য দলটি ঢাকাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আনসার সদস্যদের মাধ্যমে ব্যাংকে এক্সপ্রেস, সুপার এক্সপ্রেস ধরনের টাকা জমা দেয়া, বায়োমেট্রিক্স করা ও ছবি তুলার ব্যবস্থা করে দেয়।

ছয় ঘণ্টার মধ্যে জন্ম সনদের জন্য তারা ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা নেয়। তিন দিনের মধ্যে এনআইডি করে নেয়ার জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে থাকে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার দালালদের মোবাইলে শত শত পাসপোর্ট করে দেয়ার প্রাসঙ্গিক সফট ডকুমেন্টস, ডেলিভারি স্লিপ পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে গত তিন মাসে রোহিঙ্গাদের জন্য করা ১৪৩ টি পাসপোর্ট ইতোমধ্যে তারা সরবরাহ করেছে। ২০১৯ সাল থেকে চক্রটি রোহিঙ্গাদের, বাংলাদেশী দাগি অপরাধীদেরকে ভিন্ন নাম ও ঠিকানায় হাজার হাজার পাসপোর্ট করে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল জেলার ঠিকানা ব্যবহার করে জন্ম সনদ ও এনআইডি বানিয়ে তার ভিত্তিতে পাসপোর্ট বানিয়ে থাকে।

তিনি বলেন, প্রযুক্তি অনুশীলনে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ডাটা, ডিজিটাল জন্ম সনদ ডাটা, স্মার্ট এনআইডি ডাটা ব্যাংক আছে যেখানে বিভিন্ন বায়োমেট্রিক্স, ছবিসহ নানা তথ্য সংরক্ষিত। এ সকল তথ্য কোনরকম ভেরিফাই না করেই ইচ্ছামতো তৈরি করা কাগজপত্রের ভিত্তিতে পাসপোর্ট অফিসে যে কেউ দালালদের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে, বায়োমেট্রিকস দিতে এবং পাসপোর্টের জন্য ছবি তুলতে পারে। রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের স্মারক পাসপোর্ট তৈরির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে রোহিঙ্গা ডাটা, ডিজিটাল জন্ম সনদ ডাটা এবং স্মার্ট এনআইডি ডাটা ভেরিফাই করলেই রোহিঙ্গাসহ নন-বাংলাদেশিদেরকে শনাক্ত করা সম্ভব।

পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে তো এসবি পুলিশ ভেরিফিকেশনের কাজ করে। তখন কেন ধরা পড়ে না? জানতে চাইলে হারুন বলেন, ধরা পড়বে কি করে? একজনের হাতে জন্ম সনদ, এনআইডি তুলে দেবার পর সে যখন জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট করতে দেবে তখন তো পুলিশ দেখে মোবাইল নাম্বার। সেই নাম্বারে যোগাযোগ করলে সে সব বলে দেয়, কারণ তাকে তো সব শেখানো হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ বর্তমান ঠিকাতে যায়। রোহিঙ্গা নাগরিক স্থায়ী ঠিকানা কক্সবাজার দিলেও বর্তমান ঠিকানা সে ব্যবহার করে।

পাসপোর্টসহ হাসপাতাল ও সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে আনসার সদস্যরা কাজ করছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দালালদের সঙ্গে মিলে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। আপনারা এবার দুই আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তারও করেছেন। তাদের ব্যাপারে তদন্ত করবেন কিনা জানতে চাইলে হারুন বলেন, আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছি। বিষয়টি আমরা আনসারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

পাসপোর্ট জালিয়াতি কিংবা অবৈধভাবে পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কেউ জড়িত থাকার তথ্য আপনারা পেয়েছেন কি-না জানতে চাইলে ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। আমার মনে হয় এভাবে হাজার হাজার পাসপোর্ট রোহিঙ্গারা নিয়ে যাচ্ছে, দাগি আসামিরা নিচ্ছে। অথচ কোনো ভেরিফিকেশন করা হয় না, তাদের ডাটাবেইজে তো দেশি নাগরিক ও রোহিঙ্গাদের সবার বিস্তারিত ডাটা রয়েছে।

দাগি আসামিদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক দাগি আসামিও এভাবে পাসপোর্ট করেছে। তাদের নাম পরিচয় ও আমরা তদন্তের স্বার্থে জানাচ্ছি না। গ্রেপ্তারদের আদালতে সোপর্দ করে আবেদন করা হলে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও যারা যারা জড়িত তাদের নাম পরিচয়ও বেড়িয়ে আসবে।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল থেকে সংগৃহীত গম বাংলাদেশে আমদানি হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করতে যাচ্ছে ইউক্রেন। একই সঙ্গে এই গম আমদানিতে জড়িত বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানাবে দেশটি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের ভারতস্থ রাষ্ট্রদূত ওলেক্সান্ডার পোলিশচুক জানান, বাংলাদেশ সরকারকে বারবার সতর্ক করা হলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। তার ভাষায়, "আমরা একাধিকবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি, কিন্তু কোনো জবাব পাইনি। ফলে এখন বিষয়টি ইইউতে তোলা হবে।"

রাষ্ট্রদূতের দাবি, রাশিয়ার কিছু কোম্পানি ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চল থেকে শস্য সংগ্রহ করে তা রাশিয়ার উৎপাদিত গমের সঙ্গে মিশিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করছে—যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বেআইনি এবং 'অর্থনৈতিক লুটপাটের' শামিল।

রয়টার্সের হাতে থাকা নথিতে বলা হয়, ইউক্রেনের নয়াদিল্লি দূতাবাস এ বছর বাংলাদেশ সরকারের কাছে একাধিক চিঠিতে ১.৫ লাখ টনের বেশি ‘চুরি করা গম’ রপ্তানির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়ার কফকাজ বন্দর থেকে এই গমগুলো আমদানি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল কৃষিভূমি ও ক্রিমিয়া দখল করার পর থেকেই ‘চুরি করা গম’ রপ্তানির অভিযোগ করে আসছে কিয়েভ। ২০২২ সালের পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে। তবে রাশিয়ার দাবি, ওই অঞ্চল এখন তাদের ভূখণ্ড এবং সেখানকার শস্য রপ্তানি বৈধ।

বাংলাদেশ ও রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে রয়টার্সকে কোনো মন্তব্য দেয়নি। তবে বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বাংলাদেশ কখনোই চুরি করা গম আমদানি করে না। রাশিয়ার অধিকৃত কোনো এলাকা থেকে গম আনার প্রশ্নই ওঠে না।”

Header Ad
Header Ad

খিলক্ষেতে মণ্ডপ সরানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ অপসারণ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় একটি দুর্গা মন্দির ধ্বংসের অভিযোগে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

তবে প্রকৃত ঘটনা হলো- গত বছর দুর্গাপূজার সময় পূর্বানুমতি ছাড়াই স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি জমিতে অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ স্থাপন করেছিল। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ শর্তে অনুমতি দেয় যে পূজা উদযাপন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়োজকরা অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে ফেলবেন। তবে দুঃখের বিষয় হলো, ২০২৪ সালের অক্টোবরে পূজা শেষ হওয়ার পর আয়োজকরা পারস্পরিক শর্ত লঙ্ঘন করে অস্থায়ী মণ্ডপটি সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তারা সেখানে একটি ‘মহাকালী’ (কালী মূর্তি) স্থাপন করে।

বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পরেও দুর্ভাগ্যবশত তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে উপেক্ষা করে মণ্ডপটিকে স্থায়ী করার উদ্যোগ নেয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, মণ্ডপের আয়োজকদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ এলাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন রেললাইনের উভয় পাশে অবৈধভাবে নির্মিত শত শত দোকান এবং রাজনৈতিক দলের অফিসসহ সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের জন্য একটি পাবলিক বিজ্ঞপ্তি জারি করে। মূলত বিদ্যমান রেললাইনের পূর্ব দিক থেকে ২০০ ফুট দূরে কেবল বাংলাদেশ রেলওয়ের জমি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘ঢাকা-টঙ্গী তৃতীয় ও চতুর্থ সেকশন ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের আওতায় আরও দুইটি রেল ট্র্যাক নির্মাণ করা হচ্ছে এবং এ প্রকল্পের আওতায় নতুন লাইন সম্পন্ন করার জন্য এ জমির খুব প্রয়োজন ছিল।

বিগত মাসগুলোতে অবৈধ ভূমি দখলকারীদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করা হয়। গত ২৪ ও ২৫ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ে অবশেষে সবাইকে সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয়, যার মধ্যে পূজা আয়োজকদের অস্থায়ীভাবে নির্মিত মণ্ডপটি অপসারণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। অবশেষে ২৬ জুন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে খিলক্ষেত এলাকার রেল ট্র্যাক বরাবর সমস্ত অননুমোদিত স্থাপনা শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ করে। উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলাকালীন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে যথাযথ শ্রদ্ধার সঙ্গে অস্থায়ী মণ্ডপের প্রতিমা নিকটবর্তী বালু নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের জন্য অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণ একটি নিয়মিত এবং আইনসম্মত প্রশাসনিক কার্যক্রম।

যদিও দেশের আইন অনুসারে নির্মিত কোনো ধর্মীয় স্থাপনার সঙ্গে বৈষম্য না করে সমস্ত উপাসনালয়ের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করে। তবুও কোনো পরিস্থিতিতেই সরকারি জমি দখল করে কোনো ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ করা অনুমোদিত নয়। অস্থায়ী মণ্ডপের আয়োজকরা তাদের নিজস্ব অঙ্গীকার লঙ্ঘন করে রেল কর্তৃপক্ষের আস্থা এবং সদিচ্ছাকে স্পষ্টতই কাজে লাগিয়েছেন।

বাংলাদেশ সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে রয়েছে উপাসনালয়ের সুরক্ষা। বাংলাদেশকে তার সমন্বিত ঐতিহ্য বজায় রাখতে কখনও বাধা দেয়নি যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার বিশ্বাস বা বিশ্বাস নির্বিশেষে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উন্মুক্ত সমাজে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে। বাংলাদেশ সবাইকে তথ্য এবং বাস্তবতা উপেক্ষা করে কোনো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

কুমারখালীতে এনসিপির পদ পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, সমালোচনার ঝড়

আসাদুজ্জামান আলী। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আসাদুজ্জামান আলী নামে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। এনসিপির এ পদে একজন প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতার অন্তর্ভুক্তিকে ঘিরে স্থানীয় পর্যায়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক ও সমালোচনা।

গত ২১ জুন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কুমারখালী উপজেলা শাখার ১২ সদস্যের সমন্বয় কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ স্বাক্ষর করেন। এই কমিটিতেই আসাদুজ্জামান আলীকে যুগ্ম সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আসাদুজ্জামান আলী কুমারখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং এক সময় কুমারখালী পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমারখালী শাখার সদস্য সচিবের দায়িত্বও পালন করেন। তবে নানা অভিযোগে তাকে সেখান থেকেও বহিষ্কার করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আলী ছাত্রলীগে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি, মামলা ও ঘুষ বাণিজ্য, সেল্টার বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে। এমনকি তার বাবা আবদুর সামাদ পাখির বিরুদ্ধেও অনিয়ম ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ আছে।

২০২৪ সালের মার্চ মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নীতি বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আলীকে পদচ্যুত করা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে এনসিপির কমিটিতে আলীর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তাদের বক্তব্য, অতীতের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড জানা সত্ত্বেও কীভাবে একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এনসিপির মতো একটি দলে নেতৃত্বের জায়গা পেলেন, তা নিয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জবাবদিহি প্রয়োজন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসাদুজ্জামান আলী খান। তিনি বলেন, “আমি আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে সক্রিয় ছিলাম। সরকার পতনের আন্দোলনে মাঠে ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক।”

তিনি আরও দাবি করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে চাইছে। “আমার বিরুদ্ধে কেউ কোনো অপকর্ম প্রমাণ করতে পারলে আমি কুমারখালী ছেড়ে চলে যাব,” বলেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা চায় ইউক্রেন
খিলক্ষেতে মণ্ডপ সরানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কুমারখালীতে এনসিপির পদ পেলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, সমালোচনার ঝড়
দেশে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১০ জন
১১ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উইন্ডিজ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে
গাজায় হামাসের হামলায় ৩ দিনে ১৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত
বেনাপোল বন্দরে কাগজপত্রবিহীন প্রায় ২ কোটি টাকার নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ
ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১৫৯
ব্যবসায়ীকে দাড়ি ধরে টানা হেঁচড়া-মারধরের ঘটনায় আসামি নাসিম গ্রেপ্তার
অভিমান ভুলে বুকে জড়িয়ে নিলেন রিয়া মনি, হিরো আলমকে নিয়ে ছুটলেন ঢাকায়
এক মিনিট আগেও অফিস ছাড়তে পারবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা
প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে জীবন দিলেন কলেজছাত্রী
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও ৪ দিনের রিমান্ডে
মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেল বাস, নিহত ১
খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল: স্বীকার করলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশি আটক
বন্ধুর বাড়িতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে হিরো আলমের আত্মহত্যার চেষ্টা
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় ভারত প্রস্তুত: রণধীর জয়সওয়ালম  
সুন্দর বিশ্ব তৈরি করতে চায় বাংলাদেশ: ড. ইউনূস
উড্ডয়নের পর ইঞ্জিনে ত্রুটি, ঢাকায় ফিরল বিমানের ফ্লাইট