শনিবার, ৪ মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ঠেকানো যাচ্ছে না ঋণের নামে অর্থপাচার

লাগামহীন হয়ে পড়েছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। শীর্ষ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সুযোগ নিলেও ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ করছে না। এমনকি কেউ কেউ ভুয়া কাগজে নামে-বেনামে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে পাচার করছেন। খেলাপি ঋণ আদায়ে গত ৫০ বছরে প্রায় সোয়া দুই লাখের মতো মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অর্থের পরিমাণ প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়েছে সোয়া দুই লাখ মামলা। আর অর্থ আদায় হয়েছে মাত্র ২০ হাজার কোটি টাকা।

অথচ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন, ‘আর এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না। প্রায় চার বছর চলে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই কমছে না খেলাপির সংখ্যা।‘

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংকিংখাতে দুর্বল নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা টাকা তুলে পাচার করছে। এতে অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলছে। রক্তক্ষরণ আরও হবে। কমে যাবে বিনিয়োগ।

নামে বেনামে ভুয়া কাগজে ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে বিদেশে পাচার করা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক ধরতে পারছে না। সম্প্রতি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রধান মাসুদ বিশ্বাসও বলেছেন, ইনভয়েসিং ও আন্ডার ভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার হচ্ছে। তবে কী পরিমাণ তা বলা যাবে না। গোয়েন্দা সংস্থা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

সূত্র জানায়, ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা তুলে বিদেশে পাচার করলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনে তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাচ্ছে না। ফলে আইনের ফাঁকে তারা টাকা পাচার করার পর ধরা পড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মামলা করার পর তা আদালতে চলে যাচ্ছে। সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেংকারির পর বিসমিল্লাহ গ্রুপ, পিকে হালদারের অর্থ লুটের পর জানাজানি হচ্ছে। কিন্তু তাদের ‍বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি না হওয়ায় ব্যাংকের টাকা লুট করার প্রবণতা ঠেকানো যাচ্ছে না। সম্প্রতি নাবিল গ্রুপ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়েছে। এ নিয়ে দেশে হইচই পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার (২৬ নভেম্বর) মন্ত্রিসভা বৈঠকে খেলাপি ঋণের বিষয়ে বাস্তব চিত্র জানাতে সংশ্লিদের নির্দেশ দেন। এর পরই বাংলাদেশ ব্যাংক নড়েচড়ে বসেছে।

গত ২৭ নভেম্বর দুদকের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘ঋণখেলাপিরা আইনের চেয়ে শক্তিশালী নয়। তাহলে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হচ্ছে। আপনারা ধরছেন না কেন? এক টাকাও খেলাপি বাড়বে না। অর্থমন্ত্রীর সেই বক্তব্য জানার জন্য মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

খেলাপি ঋণের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক জিএম আবুল কালাম আজাদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘ ক্লাসিফাইড (খেলাপি) ঋণ বেড়েছে, এটা সত্য। তবে খেলাপি ঋণ কমানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। কারণ জনগণের আমানত থেকেই ঋণ দেওয়া হয়। খেলাপি ঋণ কমানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্তক আছে, কঠোর পথে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তার গাইড লাইন মোতাবেক কাজ করে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন ও সুপারভিশনে আরও বেশি জোর দিয়েছে।’

হুহু করে বাড়ছে খেলাপি, মামলা করেও আদায় হচ্ছে না। এর কারণ কী জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘বড় বড় খেলাপিরা কয়েক হাজার কোটি টাকা করে তুলে নিচ্ছে। মামলা হলেও তারা ফেরত দিচ্ছে না। কারণ ১ লাখ ৪৫ হাজার মামলায় মাত্র ২০ হাজার কোটি টাকা আদায় হয়েছে অর্থাৎ প্রতি মামলায় ১৪ হাজার ১১৯ টাকা। এটা ছোট ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। কিন্তু রাঘববোয়ালদের হাজার হাজার কোটি টাকার কিছুই হচ্ছে না। মানে যারা বড় খেলাপি তাদের ধরা হচ্ছে না। এটা খুবই ভয়াবহ চিত্র।

তিনি বলেন, তাদের মনে ঢুকে গেছে ব্যাংকের ঋণ নিলে ফেরত না দিলেও চলে। এই সংস্কৃতি খেলাপিদের মধ্যে ঢুকে গেছে। তাই ব্যাংক বাঁচাতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংককে কঠোরভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। তাহলেই খেলাপি ঋণ কমবে। জনগণের আমানত হেফাজতে থাকবে।

এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, খেলাপি ঋণ এমনিতেই ব্যাংক খাতের জন্য সমস্যা। তাই যারা ঋণ পরিশোধ করছে না তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অ্যাকশনে যেতে হবে। এর সঙ্গে কোনো ব্যাংকার, পরিচালক জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে অর্থনীতির ক্ষতি তো হচ্ছে, রক্তক্ষরণ আরও হবে। বিনিয়োগে ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেহেতু রাজনৈতিকভাবে অনেকে ব্যাংকের টাকা তুলে নিচ্ছে, তাই খেলাপিদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে রাজনৈতিকভাবে। কারণ ব্যাংকের টাকা মানে জনগণের আমানত লুণ্ঠন করছে তারা।’

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, করোনার সময় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে তৈরি পোশাকশিল্পসহ অন্যান্য খাতের বড় বড় শীর্ষ ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের সুযোগ দিয়েছে। তারপরও খেলাপি ঋণ কমছে না। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ১৩ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। কিন্তু ব্যাংক মালিক থেকে শুরু করে এক শ্রেণির সুবিধাবাদি ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অনেকে ঋণ ফেরত দিচ্ছে না। ফলে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। এরমধ্যে আদায় অযোগ্য (ব্যাড লোন) ঋণ হচ্ছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা বা প্রায় আট শতাংশ। গত তিন মাসে খেলাপি বেড়েছে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।

প্রতি মামলায় আদায় ১৪ হাজার টাকা!

বিভিন্নভাবে তাগিত দিয়েও অনেকে ঋণ ফেরত দিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অর্থঋণ আদালতে মামলাও করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকের অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে পাঁচ শতাংশ হারে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) রাখতে হয়। নিম্নমান বা সাব-স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা কু-ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক প্রভিশনও রাখতে পারছে না। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রভিশন ঘাটতি হয়েছে ১৩ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা। সাধারণত ঋণের মেয়াদ অতিবাহিত হওয়ার পর মামলা মোকদ্দমা করলেও ৫ বছরে কোনো ঋণ আদায় করতে না পারলে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে এগুলো ব্যাড ঋণ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এই ঋণের বেশির ভাগই আদায় অযোগ্য হয়ে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে (৩০ জুন) দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক খেলাপি ‍আদায়ে মামলা করেছে ২ লাখ ১৪ হাজারের বেশি। এসব মামলায় দাবিকৃত অর্থের পরিমান হচ্ছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ৬ মাস আগে অর্থাৎ ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মামলা ছিলো প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার। এর বিপরীতে দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকার মতো। ছয় মাস পর পর খেলাপি মামলার প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা এখনো প্রকাশ করেনি।

তবে বিভিন্ন সূত্রে মতে, আগামী ডিসেম্বরে মামলা সোয়া ২ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। আর দাবি করা অর্থের পরিমাণ আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে। কারণ মামলা করলেও ঋণ আদায় হচ্ছে না। গত জুন পর্যন্ত নিষ্পত্তি করা ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬২৫টি মামলায় অর্থ আদায়ের দাবির পরিমাণ ছিল প্রায় ৭৭ হাজার কোটি টাকা। তাতে আদায় হয়েছে মাত্র ২০ হাজার ৪২১ কোটি টাকা। অর্থাৎ মামলাপ্রতি ১৪ হাজার ১১৯ টাকা। আর বিচারাধীন মামলা রয়েছে ৬৯ হাজার ৩৬৯টি। তাতে দাবির পরিমাণ ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। এতে অর্থ আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে অর্থঋণ আদালতে মামলা ছিল প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার। দাবি করা অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এ সময় পর্যন্ত নিষ্পত্তি করা মামলা ছিল প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার। দাবি করা অর্থের পরিমাণ ৭০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে আদায় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। আর বিচারাধীন ৬৮ হাজার মামলার মধ্যে দাবি করা অর্থের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। তাতে অর্থ আদায় হয়েছে ৪ হাজার ৬১০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকে আমানত জমা হয়েছে ১৬ লাখ ২৮ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। এই আমানত থেকে ঋণ দেওয়া হয়েছে ১৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা বা মোট আমানতের ৮৩ শতাংশ। এখানে নিয়ম মানা হলেও আদায়ে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র।

সর্বশেষ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে ঋণস্থিতি হচ্ছে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে খেলাপি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা বা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গ্রাহকরা ঠিকভাবে ঋণ পরিশোধ করছে না। ফলে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। ঋণ পরিশোধ না করায় শুধু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষকদের জেল খাটানো হলেও রাঘববোয়ালরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বিতরণ করা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার বেশি বা ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। এই খেলাপি ঋণের ১ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যাড বা আদায় অযোগ্য হয়ে গেছে।

এনএইচবি/এসএন 

 

Header Ad

অতিরিক্ত গরমে স্কুলগামী শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার উপায়

ছবি: সংগৃহীত

প্রতি বছরের তুলনায় এ বছর গরমের মাত্রা অনেক বেশি। গরমের তীব্রতা অসহনীয় করে তুলেছে মানুষের জীবন। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের জন্য এই প্রতিকুল অবস্থা আশঙ্কাজনক। অত্যধিক ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় তরল বেরিয়ে যাওয়ার কারণে নানা ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি হয়। আর এই ঝুঁকির মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে এই কম বয়সী শিক্ষার্থীরাই।

তাই উষ্ণ আবহাওয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রয়োজন যথাযথ পদক্ষেপের। উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া গেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে। তাই চলুন, গরমের তীব্রতা থেকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।

সূর্যালোক এড়িয়ে চলা:

সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অতিবেগুনি রশ্মি সবচেয়ে বেশি তীব্র থাকে। আর দিনের এই সময়টাতেই শিক্ষার্থীরা সাধারণত ক্লাস এবং স্কুল-পরবর্তী খেলাধুলার জন্য ঘরের বাইরে থাকে। তাই এই সময়টাতে শিক্ষার্থীদের বিচরণের জায়গাগুলোতে সর্বাত্মকভাবে ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। গাছ-গাছালি ঘেরা প্রাকৃতিক ছায়া শোভিত স্থান সর্বোত্তম। তবে এর পাশাপাশি ছাউনির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। খেলাধুলার সময় ছাত্রছাত্রীরা যেন উন্মুক্ত জায়গায় চলে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ছাতা ব্যবহার করা:

স্কুলে যাওয়া ও আসা নিয়ে প্রতিদিনই বাচ্চাদের একটি উল্লেখযোগ্য সময় রোদের আলোয় কাটাতে হয়। এই সময়টিতে সূর্যালোক প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরিধান ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ছাতা ব্যবহার করা। খুব নান্দনিক এবং রঙচঙা নয়, এ ক্ষেত্রে খেয়াল দিতে হবে ছাতাটি রোদ থেকে কতটা ছায়া দিতে পারছে তার ওপর। মুষলধারে বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচাতে যেভাবে ছাতা ব্যবহার করা হয়, এক্ষেত্রেও একই কাজ করা উচিত। আর ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের এই অভ্যাস তৈরিতে আদর্শ হতে পারে পিতামাতা ও পরিবারের অন্যান্য প্রাপ্তবয়স্করা।

গরমের জন্য আরামদায়ক পোশাক পরা:

শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়াসহ বিভিন্ন উপলক্ষে ঘরের বাইরে থাকার সময়ে হাল্কা বুনন, হাল্কা ও এক রঙের কাপড় পড়তে হবে। হাতাকাটা শার্ট বা গেঞ্জি এবং হাফ প্যান্ট বা শর্টস এক্ষেত্রে উপযুক্ত মনে হতে পারে। কিন্তু কাপড়ের উপাদান এবং শিক্ষার্থীদের শরীরের কতটা অংশ উন্মুক্ত থাকছে সেদিকে কড়া নজর দেওয়া আবশ্যক। হাতাকাটা বা শর্টসের ক্ষেত্রে কাপড় যদি অনেক মোটা বা ভারী হয়, তাহলে তা আরও গরম করে তুলতে পারে। তাই শরীর যতটা ঢেকে রাখা যায় ততই ভালো।

তোয়ালে আর টিস্যু সঙ্গে দিন:

সন্তানকে যতটা সম্ভব ঘাম থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। ঘাম থেকে দূরে রাখার কাজটি সহজ না। স্কুলে থাকলে গরম ভয়াবহভাবে কাবু করতেই পারে। তাই তোয়ালে বা টিস্যু দিন। আপনার সন্তান স্কুলে গেলে মুখ, হাত ধোবেই। তাই তাদের যেন হাত-মুখ মোছার সুযোগ থাকে তা নিশ্চিত করুন।

বেশি বেশি পানি পান করা:

পানিশূন্যতার মতো গরম আবহাওয়ার ফলে সৃষ্ট নানা ধরনের রোগ বালাই থেকে বাঁচতে পানি পানের কোনও বিকল্প নেই। স্কুল বা বাড়ি যেখানেই থাকুক না কেন, বাচ্চাদের পড়াশোনা ও খেলাধুলার সময় নির্দিষ্ট সময় পরপর পানি বিরতি দিতে হবে। এমনকি তারা তৃষ্ণার্ত না থাকলেও চালিয়ে যেতে হবে এই কার্যক্রম। বেশি বেশি পানি পান শুধু পানিশূন্যতাই প্রতিরোধ করে না, বাচ্চাদের দাঁতের ক্ষয়ের ঝুঁকিও কমাতে পারে।

আমেরিকার জাতীয় একাডেমি মেডিসিন ইনস্টিটিউট অনুসারে, ৯ থেকে ১৩ বছরের ছেলেদের জন্য প্রতিদিন পানি পান করতে হবে ৮ কাপ। আর একই বয়সের মেয়েদের প্রতিদিন ৭ কাপ পানি পান করা উচিত। ১৪ থেকে ১৮ বছরের ছেলেদের বেলায় এই পরিমাণ প্রায় ১১ কাপ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রায় ৮ কাপ।

পানিশূন্যতা রোধকারী ফল ও সবজি খাওয়া:

গ্রীষ্মের খরতাপ থেকে স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সেরা উপায় হচ্ছে সর্বাধিক পানি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। এক্ষেত্রে গ্রীষ্মকালীন ফল তরমুজ একটি উৎকৃষ্ট খাবার কেননা এতে রয়েছে ৯১ শতাংশ পানি। এছাড়া অন্যান্য ফল-ফলাদির মধ্যে রয়েছে আঙ্গুর, আপেল, চেরি, কমলা, এবং আনারস। এগুলো সরাসরি অথবা জুস বানিয়ে কিংবা সালাদ করেও খাওয়া যায়।

তরকারির মধ্যে রয়েছে পালং শাক, টমেটো, শসা, মুলা, ফুলকপি, গাঁজর, পুদিনাপাতা, পেঁয়াজকলি, ঢেঁড়শ এবং লাউ। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই ফল এবং শাকসবজি থাকা মানে যথেষ্ট পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন পাওয়া। এই পুষ্টি উপাদান পানিশূন্যতা রোধের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে।

প্রতিদিন গোসল করা:

স্কুল বা যে কোনও উপলক্ষে বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পরপরই গোসল করা একটি স্বাস্থ্যবিধি। এমনকি এটি একাধিকবার দীর্ঘ সময়ের জন্য বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কেননা যখন গোসলের পানি বাচ্চার ত্বকে ভিজিয়ে দেয়, তখন শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর কার্যকলাপের জন্য নির্ধারিত তাপমাত্রা বজায় থাকে। এই পরিমিত তাপমাত্রাতেই রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে শরীরকে সতেজ করে তোলে।

তবে গোসলের সময় আরামদায়ক তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করা উচিত। খুব গরম বা খুব ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা যাবে না। এভাবে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত গোসলে অভ্যস্ত হলে উত্তাপজনিত অসুস্থতা থেকে মুক্তি পেতে পারে।

নোয়াখালীতে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষ, সেনা সদস্যসহ নিহত ৪

উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ট্রাক ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এক সেনা সদস্যসহ ৪ জন নিহত হয়েছে।

শনিবার (৪ মে) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে লক্ষীপুর-নোয়াখালী সড়কের বেগমগঞ্জের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন- লক্ষীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার লতিফপুর গ্রামের মো. রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া (৬৫), সেনা সদস্য ফজলুল করিম (৫০) ও লক্ষীপুরের আমানিয়া গ্রামের মো. আলাউদ্দিন (৪৫)। এ ছাড়া আরও একজনের পরিচয় জানা যায়নি।

জানা গেছে, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে একটি যাত্রীবাহী সিএনজি লক্ষীপুর থেকে বেগমগঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় বেগমগঞ্জের চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব এলাকায় পৌঁছালে ট্রাক ও যাত্রীবাহী সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় সড়ক থেকে ১৫ ফিট নিচে ট্রাক ও সিএনজি খালে পড়ে যায়। এতে সিএনজি চালকসহ ৪ জন নিহত হয়।

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এখনও উদ্ধার কার্যক্রম চলছে। এখন পর্যন্ত তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একজনের মরদেহ এখনও খালে রয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

‘অ্যাক্টরস হোম’-এর জায়গা বুঝে পেল অভিনয় শিল্পী সংঘ

‘অ্যাক্টরস হোম’-এর জায়গা বুঝে পেল অভিনয় শিল্পী সংঘ। ছবি: সংগৃহীত

অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বেশ কয়েকদিন আগে জানিয়েছিলেন ঢাকার বুকে এক টুকরো জমি পাচ্ছে অভিনয় শিল্পীরা। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া সাড়ে তিন কাঠা জমিতে গড়ে তোলা হবে তাদের স্বপ্নের ভবন ‘অ্যাক্টরস হোম’। সেখানে থাকবে অভিনয় শিল্পীদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আড্ডার জায়গা, চর্চার জায়গা।

অবশেষে শুক্রবার (৩ মে) বরাদ্দকৃত জায়গাটি বুঝে পেয়েছে সংগঠনটি। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন নাসিম নিজেই।

আহসান হাবিব নাসিম তার ফেসবুকে লিখেছেন, শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪, অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ, জেলা প্রশাসন ঢাকা’র কাছ থেকে তাদের জায়গা বুঝে নিয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এরপর এ নেতা লেখেন, আরও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জনাব মো: সাবিরুল ইসলাম এবং ঢাকা জেলা প্রশাসক জনাব আনিসুর রহমান, এসি ল্যান্ড তেজগাঁও জনাব শরিফ মো. হেলাল উদ্দিন সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি।

Caption

 

নাসিম আরও বলেন, এটা অবশ্যই আমাদের জন্য আনন্দের। কেননা দীর্ঘদিন বিষয়টি নিয়ে চেষ্টা চলছিল। অবশেষে জায়গা বুঝে পাওয়াটা অভিনয় শিল্পী সংঘের একটি সফলতা বলে মনে করছি। শিল্পীদের প্রশিক্ষণ, মিটিং, একসঙ্গে সময় কাটানোসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হবে এটি। ওই জায়গা থেকে আজ আমাদের আনন্দের দিন।

এদিকে জমি গ্রহণের খবর দেয়ার সঙ্গে দুটি স্থিরচিত্র প্রকাশ করেছেন নাসিম। সেখানে তার সঙ্গে দেখা গেছে সংঠনটির সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসানকে। আরও ছিলেন অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদসহ বেশ কয়েকজন। বোঝা যাচ্ছে জমি গ্রহণ করার মুহূর্ত ছিল এটি। রাজধানীর আফতাব নগরে দেওয়া হয়েছে জায়গাটি।

সংঠনটির সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘জায়গাটি হোল্ডিং নং: ৩২, রোড: ২, ব্লক: সি, জহুরুল ইসলাম সিটি, আফতাব নগর। গতকাল শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪, অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশ, জেলা প্রশাসন ঢাকা এর কাছ থেকে তাদের জায়গা বুঝে নিয়েছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

সর্বশেষ সংবাদ

অতিরিক্ত গরমে স্কুলগামী শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার উপায়
নোয়াখালীতে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষ, সেনা সদস্যসহ নিহত ৪
‘অ্যাক্টরস হোম’-এর জায়গা বুঝে পেল অভিনয় শিল্পী সংঘ
ঢাকাসহ ৬ বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ভারত
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডাক পেলেন আম্পায়ার সৈকত
ইসরায়েলবিরোধী পোস্ট করলেই গ্রেপ্তার করছে সৌদি
মুন্সীগঞ্জে প্রাইভেটকার খাদে পড়ে একই পরিবারের ৩ জন নিহত
চড়া দামে গ্রাহকরা কিনছে কচ্ছপ গতির ইন্টারনেট
হামাসকে ৭ দিনের সময় দিল ইসরায়েল
বিদেশে পাড়ি জমানো কানাডিয়ানদের সংখ্যা বাড়ছে : গবেষণা
নওগাঁয় ট্রলির চাপায় সড়কে প্রাণ গেল এনজিও কর্মীর
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে দীর্ঘ হচ্ছে বিএনপিতে বহিষ্কারের তালিকা
প্রথমবারের মতো চাঁদে স্যাটেলাইট পাঠাল পাকিস্তান
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে কঠিন শর্ত দিল সৌদি
রাজশাহীতে আগুনে পুড়ল শত বিঘা জমির পান বরজ
জিম্বাবুয়েকে হেসে-খেলে হারাল টাইগাররা
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করল তুরস্ক
বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না: প্রধান বিচারপতি
বৃষ্টি হতে পারে যেসব বিভাগে, যে তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস