শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

জীবন সংগ্রামে সফলতার দেখা পেল দেবহাটার ৫ নারী

জীবন সংগ্রামে সমাজ, পরিবারের নানা বাধাঁ কাটিয়ে সফলতার মুখ দেখেছেন দেবহাটার ৫ নারী। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এসব নারীদের ৫টি ক্যাটাগরিতে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’’ শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় খুঁজে বের করা হয়েছে। এসব নারীদের জীবনে রয়েছে আলাদা আলাদা জীবন কাহিনী। তাদের সেই সংগ্রামের কাহিনী তুলে ধরা হলো।

জীবন চলার পথ মসৃণ নয়, আসে নানান বাঁধা-বিপত্তি। সাহসী মানুষ এসব বাধা অতিক্রম করে আত্মপ্রত্যয়ের উপর ভর করে এগিয়ে যায় এবং সফলতা বয়ে আনে নিজের জীবনে। পাশাপাশি যুক্ত হয় সামাজিক কাজে। অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠে অন্যদের জন্য। এমনই একজন নারী জি. এম স্পর্শ। ১৯৯৩ সালে জেলার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের শ্বেতপুর গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হয়। পরে স্বামীর সহযোগিতায় এইচ.এস.সি পাশ করেন তিনি। পরীক্ষার কয়েক মাস পরেই তিনি প্রথম সন্তানের (কন্যা সন্তান) মা হন। যে কারণে অনেক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তিনি পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেননি।

২০১৯ সালে স্বামী ও পরিবারের সহযোগিতায় জি.এম স্পর্শ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। নির্বাচনে জয়লাভ করার পর তার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে উপজেলা গভর্ন্যান্স ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের ( ইউজিডিপি) সহায়তায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক নারী উন্নয়ন ফোরাম সংক্রান্ত গাইড লাইনের আলোকে তিনি উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরাম গঠন করেন। একই সাথে নারী উন্নয়ন ফোরামকে টেকসই করার লক্ষে উপপরিচালকের কার্যালয়, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সাতক্ষীরা থেকে ফোরামের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

এই নারী উন্নয়ন ফোরামের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত নারী সদস্যদের নিয়ে সমাজে নারীর ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং নেতৃত্বের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিষদে তাদের ভূমিকা আরও জোরালো করা, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কাজ করা এবং নারী নেতৃত্ব বিকাশের উপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ বিষয়ে নারীদের উজ্জীবিত করছেন/পরামর্শ দিচ্ছেন জি.এম স্পর্শ। এ ছাড়াও তার নারী উন্নয়ন ফোরামের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক প্রতি বছর যে বরাদ্দ পেয়ে থাকেন সেটা দিয়ে তিনি দেবহাটা উপজেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়/ মাদ্রাসার কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ, বাল্যবিবাহ, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে উঠান বৈঠক, স্কুলে অবহিতকরণ সভা ও নারী জন প্রতিনিধিদের দক্ষতা বিকাশে ব্যয় করছেন। তা ছাড়াও উক্ত বরাদ্দকৃত টাকা থেকে দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের দুঃস্থ-অসহায় নারী ও শিশুদের চিকিৎসা ও শিক্ষায় ব্যয় করছেন তিনি।

এসবের বাইরেও করোনাকালে নিজস্ব অর্থায়নে দরিদ্র অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া, খাদ্য বিতরণসহ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্রদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা এবং উপজেলা পরিষদের সম্মানীর টাকা দিয়ে দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করাসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে অবদান রেখে চলেছেন তিনি।

অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ফুলজান বিবি। তিনি রত্নেশ্বপুর গ্রামের রায়হান হোসেনের স্ত্রী। প্রায় ২২ বছর পূর্বে তার বিয়ে হয়। জানা গেছে, সেই সময় তার অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে তিনবেলা পেট ভরে খাওয়া হতো না। পরপর তার দুটি সন্তান হয়। কিন্তু শিশুদের খরচ চালোনোর মতো সামর্থ্য ছিল না তাদের।

এক পর্যায়ে খরচ সামলাতে বাড়িতে গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালন করা শুরু করেন ফুলজান বিবি। তাতে যে টাকা আয় হতো তাতেও সংসার চলত না। তখন তিনি সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন। পরে এনজিও থেকে লোন নিয়ে স্বামীকে ডেকোরেটরের ব্যবসা ছোট থেকে বড় আকারে রূপ নিতে শুরু করে। এতে করে তাদের অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। তাদের পূর্বের অবস্থার পরিবর্তন হওয়ায় এখন সমাজের মানুষের কাছে সম্মাননীয় ব্যক্তি হিসাবে সম্মান পায়। বর্তমানে ফুলজান বিবির পরিবার অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন করেছে।

নির্যাতনে বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন জীবন শুরু করেছেন আরিফা পারভিন। তিনি জগন্নাথপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের কন্যা।

জানা গেছে, গত ২ বছর আগে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাড়দ্দহা গ্রামে বিয়ে হয় আরিফার। বিয়ের পর থেকে কিছু দিন স্বামীর সংসারে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো ছিল। কয়েক মাস যাওয়ার পর তার স্বামী বিভিন্ন নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। এমনকি বিয়ে করা স্ত্রীকে সহ্য করতে পারত না। এক সময় কথায় কথায় শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করে তার স্বামী। অনেক সহ্য করার পরেও যখন তার স্বামীর অভ্যাস পরিবর্তন হয়নি তখন শ্বশুর বাড়ির পরিবারের সকলকে নির্যাতনের বিষয়টি জানান তিনি। জানানোর পরেও তারা তার অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটাতে পারিনি।

স্বামীর অভ্যাস পরিবর্তনের চেষ্টা করে যখন ব্যর্থ হন তখন ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির অফিসে অভিযোগ করেন আরিফা। ব্র্যাক অফিসে শালিসের মাধ্যমে মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় তারা। এক পর্যায়ে দেনমোহর ও ভরনপোশন বাবদ মাত্র ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে তালাক দেন স্বামীকে। সেই টাকা দিয়ে পানির ফলের ব্যবসা শুরু করেন আরিফা। সেইসঙ্গে কিছু জমি বন্ধক রেখে ফসলের চাষ শুরু করেন। এসবের পাশিপাশি একটি কারখানার ব্যাগ তৈরির কাজে যোগ দেন তিনি। সেখান থেকে যে টাকা উপার্জন হতো তা দিয়ে নিজের ও পরিবারের আর্থিক খরচ চালাতে সক্ষম হন।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের উপেক্ষা, স্বামীর নির্যাতন, অসহযোগিতা এত কিছু আরিফাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি। নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠা, পরিশ্রম, সততা ও একাগ্রতা তাকে সাফল্যে পৌঁছাতে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। সত্যিকার অর্থে নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করার যে অভিপ্রায় সেটা অর্জন করেছেন তিনি।

সফল জননী নারী পারভিন আক্তার। তিনি মাঝ-পারুলিয়া গ্রামের আতিয়ার রহমানের স্ত্রী।

পারভিন আক্তার জানান, তার স্বামী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বাধীনের পরে তিনি কিছুই করতেন না। স্বামীর তেমন জমি জায়গাও ছিল না। আমার বিয়ের পর আমাদের ৩টি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। স্বামী ও ৩টি সন্তান নিয়ে সংসার খুব ভালো চলছিল না। সব বাধা উপেক্ষা করে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ কোনোভাবে নিজেই চালাতে লাগলাম।

তিনি আরও জানান, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগানোর জন্য বাড়িতে হাঁস-মুরগি ও গাভি পালন শুরু করলাম। পালিত পশু-পাখি থেকে পাওয়া মাংস ও ডিম ছেলে-মেয়েদের চাহিদার পাশাপাশি বিক্রি করে তাদের বই, খাতা, কলম ও পড়া লেখার খরচ যোগাতাম। ছেলে মেয়েরা সবাই ছিল মেধাবী ও পরিশ্রমী । স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাফল্যের সাথে পড়াশোনা করে। বর্তমানে ৩ ছেলে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সবাই সর্বোচ্চ মেধার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়। আমার বড় ছেলে তাহাজাত হোসেন (হিরু) সাউথ ইস্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট, মেঝ ছেলে শাহাদাত হোসেন (বিরু) মেহেরপুর জেলা আনসার কমান্ডার। ছোট ছেলে ইমদাদ হোসেন (মিথ) ঢাকা পলিটেকনিক কলেজের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমার দেখা দেখি অন্য নারীরাও তাদের সন্তানদেরকে বিদ্যালয়মুখী করার জন্য আগ্রহী হচ্ছেন ।

শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী তুতিয়া খাতুন। তিনি বটিয়াঘাটা থানার নারায়নখালী গ্রামে ১৯৬৪ সালে মৃত আবু বকর শেখ ও নুরজাহানা বেগমের কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে আসেন।

তুতিয়া খাতুন তার জীবন সংগ্রাম নিয়ে বলেন, আমার পিতা একজন বিশিষ্ট বস্ত্র ব্যবসায়ী। মাতা ছিলেন একজন গৃহিনী। আমার পিতা তৎকালীন সময়ে ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। আমি ছোট বেলা থেকেই পড়ালেখায় ভালো ফলাফল অর্জন করে চলছিলাম। উপযুক্ত বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। সেই থেকে আমার উপরে এবং শিক্ষা জীবনে চরম বাধা বিপত্তি আসে। অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যে দিয়ে স্বামীর একান্ত প্রচেষ্টায় মেমোরিয়াল সিটি কলেজ খুলনাতে বিজ্ঞান শাখায় ১ম বর্ষে ভর্তি হই। সেখানে থেকে ১৯৮৩ সালে বিজ্ঞান শাখা থেকে ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হই। সেখানেও আমি বিভিন্ন রিসাইটেশনের সাথে জড়িত থাকি এবং পুরুস্কার পেয়েও থাকি। এমন মুহূর্তে আমার একটি পুত্র সন্তান হয়, তাকে নিয়ে আমি বেশ কষ্টেও লেখাপড়া করি। ১৯৮৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.কম সম্মান শ্রেণিতে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভর্তি হই এবং ১৯৮৬ সালে বি.কম সম্মান ব্যবস্থাপনা বিষয়ের উপর ডিগ্রি লাভ করি। সে সময় আমার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। এত কষ্ট সত্ত্বেও আমি ১৯৮৭ সালে এম কম শেষ বর্ষে ভর্তি হই। সেখান থেকে এম কম ব্যবস্থাপনা বিষয়ের উপরে ডিগ্রি লাভ করি। এরপর ১৯৯৩ সালে কলারোয়ার শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রভাষক পদে নিয়োগ হয়।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীর বাড়ি দেবহাটার সখিপুর হওয়ায় প্রতিদিন ৭২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে আমাকে আমার কর্মস্থলে যেতে হতো। সংসারের সব কাজ শেষ করে সময়মতো কর্মস্থলে উপস্থিত হতাম। নির্দিষ্ট কয়েক বছর চাকরির পরে সহকারী অধ্যাপক পদে উপনীত হই। বর্তমানে ওই কলেজে যথেষ্ট সততা ও কর্মদক্ষতার সাথে (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ পদে নিয়োজিত আছি।

তুতিয়া খাতুন বলেন, বর্তমানে আমি স্বচ্ছল ও স্বাচ্ছন্দময়ী একজন নারী। আমি আমার কর্মস্থলে যথেষ্ট সুনামের সাথে নিয়োজিত আছি।

এসআইএইচ

২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত

করোনাভাইরাস শনাক্ত। ছবি: সংগৃহীত

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৬ জনে। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। ফলে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৯৪ জনে অবস্থান করছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ২৯৪ জন। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৮৮টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪৩টি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার চার দশমিক ১২ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ আইসোলেশনে আসেনি এবং আইসোলেশন থেকে কেউ ছাড়পত্র পায়নি। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ৯৬৬ জন এবং আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৭১৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ২৫১ জন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দু-দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি

বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহ। টানা চারদিন ধরে ৪০ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণিকুল। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার সময় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র তাপপ্রবাহে শুকিয়ে গেছে পুকুরের পানি। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হিট ওয়েভ অ্যালার্ট জারি করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। মাইকিং করে বলা হয়, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হতে।

দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের তাপে চরম গরম অনুভূত হচ্ছে। রোদে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে। রোদের তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশ। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও ভ্যান-রিকশা চালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে তাদেরকে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা।

গরম থেকে বাঁচতে পানিতে নেমেছেন শিশু-কিশোররা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আপাতত বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এখনও পর্যন্ত কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না।’

২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।

গাছের ছায়ায় বসে আরাম করছেন ক্লান্ত মানুষজন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের আশু মিয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, প্রচণ্ড গরমে মাঠে জমিতে কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। ভ্যাপসা গরমে বেশিক্ষণ মাঠে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দেওয়ার পরও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে।
কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুজন আলী বলেন, সকালে কাজের জন্য অফিসে আসতে হয়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। সড়ক থেকে গরম উঠে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। বাইরে বেশি সময় অবস্থান করা যাচ্ছে না।

উথলী গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, বারবার পানি পান করেও তৃষ্ণা মেটানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন। পরিবেশের ভারসাম্য বাজায় রাখতে গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। ৪০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে প্রতিদিন।

এদিকে চুয়াডাঙ্গাতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শক্রমে চুয়াডাঙ্গাতে বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট ওয়েভ অ্যালার্ট (তীব্র তাপদাহের সতর্কতা) জারি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের ঈদ পুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তারই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধন করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। এই গণসংযোগ চলবে আগামী ৩ মে পর্যন্ত।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজপথের আন্দোলনে বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। পাড়া-প্রতিবেশী, সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন কেউই আমাদের দাওয়াতের বাইরে থাকবে না। আর সর্ব প্রথম দাওয়াত হবে নিজের নফসের প্রতি। আমাদের কথা ও কাজে যেন অমিল না থাকে। যেটা মানুষকে করতে বলব, সেটা যেন আমি নিজে আগে আমল করি।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি জনশক্তির কথাবার্তা, লেনদেন, সামাজিক কাজকর্ম আল্লাহর দ্বীন বা কোরআন অনুযায়ী হতে হবে। যতই বাঁধা আসুক আমরা ইকামাতে দ্বীনের কাজ চালিয়ে যাব। মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতে হবে। জনকল্যাণমূলক কাজে নিজেদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। তাহলেই আমাদের দাওয়াত কার্যকর হবে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে অনলাইন মাধ্যম জুম, ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভ-এ ঈদপুনর্মিলনী ও গণসংযোগ পক্ষের উদ্বোধনে এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. খলিলুর রহমান মাদানী, বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ।

এসময় সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রমজানের প্রকৃত শিক্ষাকে আমাদের জীবনে কাজে লাগাতে হবে। যারা রমজানে তাকওয়া অর্জনের প্রচেষ্টা চালিয়েছেন মূলত তাদের জন্যই ঈদের আনন্দ। আমীরে জামায়াতের ঘোষণা অনুযায়ী আজ থেকে ১৫ দিনব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ চলবে।

সর্বশেষ সংবাদ

২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের করোনা শনাক্ত
বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি
জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
শহরে কৃষক লীগের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না: ওবায়দুল কাদের
রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে কেনিয়ার সেনাপ্রধানসহ নিহত ১০
পালিয়ে আসা ২৮৫ সেনা সদস্যকে ২২ এপ্রিল ফেরত নেবে মিয়ানমার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
সারাদেশে ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে পড়ল বাস, প্রকৌশলী নিহত
১০ হাজার টাকা চেয়ে না পেয়ে বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক লুৎফুলকে শোকজ করল আওয়ামী লীগ
হামলার পর ইসরায়েলকে যে হুমকি দিল ইরান
আওয়ামী লীগ দেশকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল
স্বচ্ছতার সাথে অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
তীব্র গরমের মধ্যেই ঢাকাসহ তিন বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহত
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন