জাপানের নিজ ভূখণ্ডে প্রথমবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, এশিয়ায় উত্তেজনা

ছবি: সংগৃহীত
প্রথমবারের মতো নিজস্ব ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে আলোড়ন তুলেছে জাপান। আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যেই মঙ্গলবার (২৪ জুন) উত্তরাঞ্চলের হোক্কাইডো দ্বীপে অবস্থিত শিজুনাই অ্যান্টি এয়ার ফায়ারিং রেঞ্জ থেকে পরীক্ষাটি চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পরীক্ষায় ব্যবহৃত হয় জাপানের তৈরি স্বল্প-পাল্লার টাইপ-৮৮ সারফেস-টু-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র। গ্রাউন্ড সেলফ ডিফেন্স ফোর্সের ১ম আর্টিলারি ব্রিগেড হোক্কাইডোর দক্ষিণ উপকূল থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে একটি চালকবিহীন নৌকাকে লক্ষ্য করে এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
পূর্বে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালালেও এবারই প্রথমবার জাপানের নিজস্ব মাটিতে এমন পরীক্ষা হলো। দেশটির সেনাবাহিনী জানায়, আগামী রোববারও আরও একটি পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে জাপান শুধু সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শনই করেনি, বরং তা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগর ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের প্রভাব মোকাবেলায় এটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শান্তিবাদী সংবিধান মেনে চলা জাপান ২০২২ সালে পাঁচ বছরের একটি নতুন নিরাপত্তা কৌশল গ্রহণ করে। এর মাধ্যমে দেশটি আত্মরক্ষার গণ্ডি পেরিয়ে আগ্রাসী প্রতিরক্ষা নীতি গ্রহণ করে। ওই কৌশলেই নিজস্ব প্রযুক্তিতে টমাহকের মতো দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইল কেনা এবং টাইপ-১২ নামের ১,০০০ কিলোমিটার পাল্লার মিসাইল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়।
জাপান এই টাইপ-৮৮ ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও আরও শক্তিশালী অস্ত্র পরীক্ষা ও মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বর্তমানে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের জনবসতিহীন দ্বীপ মিনামিটোরিশিমাতে একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছে। সেখানে চলতি মাসেই চীনের দুটি বিমানবাহী রণতরীকে টহল দিতে দেখা গেছে।
চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট গঠন এবং নিজস্ব সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় জাপানের এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বড় ধরনের কৌশলগত উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
