এক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে: ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত
আগামী সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের পরও কমছে না আগ্রাসনের মাত্রা। আজ (শনিবার, ২৮ তারিখ) সকালে আশ্রয়কেন্দ্র ও ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় থাকাদের লাইনে আক্রমণ চালিয়ে ১০ জনের বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। আর শুক্রবারের (২৭ জুন) হামলায় কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়েছে। এদিকে গাজায় ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রে হামলায় মৃত্যুর নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
ইরান-ইসরাইল সংঘাত বন্ধের পর এবার গাজায় যুদ্ধ থামাতে দৃশ্যপটে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানালেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে গাজায়। হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে কঙ্গো-রুয়ান্ডা শান্তি চুক্তি উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আশ্বাস দেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমার মনে হয় এটি খুব কাছাকাছি। আমি এর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা মনে করি আগামী সপ্তাহের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি করতে যাচ্ছি।’
তবে তার যুদ্ধ বন্ধের আভাসেও, গাজায় কার্যত কোনো প্রভাব পড়েনি। শুক্রবার প্রায় ১০০ নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যাতো করেছেই, শনিবারও গাজা ভূখণ্ডে আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়কেন্দ্র যেমন টার্গেট করা হচ্ছে, হামলা চালানো হচ্ছে ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় থাকা ক্ষুধার্তদেরও। ভোর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি হত্যাকাণ্ডের শিকার বহু গাজাবাসী। তার ওপর ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ওপর ত্রাণকর্মীদের গুলি করার নির্দেশ থাকায় তীব্র হচ্ছে ক্ষোভ।
ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রাণহানির সংখ্যা ৫৬ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেখা দিয়েছে ভয়াবহ মানবিক সংকট। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসও সতর্ক করে বলেছেন, ইসরাইলি আক্রমণে গাজা উপত্যকার বর্তমান যে মানবিক সংকট, তা যেকোনো সময়ের চেয়ে ভয়াবহ। এমনকি গাজায় মার্কিন-সমর্থিত অনিরাপদ সহায়তা কার্যক্রমে হামলার নিন্দাও জানিয়েছেন গুতেরেস।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘ইসরাইলের সামরিক অভিযান ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে। যা যেকোনো সময়ের চেয়েও ভয়াবহ। পরিবারগুলো বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাঁবুতেও বোমা পড়ছে। এমনকি মানুষ কেবল নিজেদের এবং তাদের পরিবারের খাবার জোগাতে গিয়ে মারা যাচ্ছে। খাবারের সন্ধানে যাওয়া মানুষদের মৃত্যু কাম্য নয়।’
শুক্রবার গুতেরেসের বক্তব্যের জবাবে ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরাইলি সেনাবাহিনী কখনও বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করে না। গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন
গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি নিরাপত্তা ও লজিস্টিক কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালনা করে। এটি ২৬ মে গাজায় কার্যক্রম শুরু করে। এখন পর্যন্ত তারা ৪৮ মিলিয়নের বেশি খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছে বলেও দাবি ইসরাইলের।
এদিকে ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইয়েমেন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে দবি করেছে আইডিএফ। এর জেরে দখলকৃত ভূখণ্ডের দক্ষিণাঞ্চলে বীরশেবা, দিমোনা এবং আশেপাশের শহরগুলোতে সতর্কতা সাইরেনও বাজানো হয়েছে।
