মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ | ৬ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

‘এই মুহূর্তে দায়িত্ব নিলে আমি ঠিক করতে পারব’

দেশের চলমান সংকটে বর্তমান সরকারের বিদায় দেখছেন ড. রেজা কিবরিয়া। তার আশা, খুব শিগগির বর্তমান সরকারের পতন ঘটবে। রাষ্ট্রক্ষমতায় নতুন সরকার আসবে। দেশ আবার ঘুরে দাড়াবে। সরকারের পতন হলে কারা দায়িত্ব নেবে? কার নেতৃত্বে সরকার গঠন হবে? বিদেশি কোনো প্রভাব কাজ করছে কি-না? এসব নানা বিষয়ে ঢাকাপ্রকাশ-এর সঙ্গে কথা বলেছেন গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক, সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া। যিনি স্বপ্ন দেখছেন আগামী সরকারের অর্থমন্ত্রী হওয়ার।

তার একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকাপ্রকাশ-এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শাহজাহান মোল্লা। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনারা তো বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। আপনার দল গণঅধিকার পরিষদের নিবন্ধন কি পেয়েছেন? না পেলে নিবন্ধন নেবেন কি না?

ড. রেজা কিবরিয়া: আমরা নিবন্ধন চাইবো। কাজটা প্রায় শেষ। সরকার ইচ্ছা করে একটা বাধা দিয়ে রেখেছে নতুন দলের রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে। এই সরকার চায় না নতুন দলের নিবন্ধন দেওয়া হোক। নিবন্ধন পেতে এতো কাগজপত্র প্রয়োজন যে এটা একজন ক্যারি (বহন) করতে পারবে না, দুই-তিন জন লাগবে এটা নিয়ে যেতে। এতো ভারি হবে কাগজপত্র।

ঢাকাপ্রকাশ: তার মানে আপনার এই নির্বাচন কমিশনকে মেনে নিয়েছেন?

ড. রেজা কিবরিয়া: হ্যাঁ। নিবন্ধন চাইতে তো ওদের কাছেই যেতে হবে। আর কোথায় যাব? নিবন্ধনের জন্য কমিশন ঠিক আছে, কিন্তু তাদের কোনো কাজে আমরা সন্তুষ্ট না এখন পর্যন্ত। দেখি নিবন্ধনের ব্যাপারে তারা যদি ‘সেনসিবল’ হয় ভালো।

ঢাকাপ্রকাশ: নিবন্ধন পেলে ভোটে যাবেন কি না?

ড.রেজা কিবরিয়া: এই সরকারের অধীনে কোনো ভোটে আমরা যাব না। এই সরকার প্রমাণিত ভোট চোর। প্রমাণিত ভোট চোরের কাছে কী বিশ্বাস করব? কেন বিশ্বাস করব? নির্বাচন কমিশন একটা আছে সেটা ঠিক আছে। নির্বাচনে যাব কি না সেটা সময় বলে দেবে।

ঢাকাপ্রকাশ: সরকার তো বলেছে সংবিধানের বাইরে যাবে না। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাবার কোন সুযোগ নেই। তাহলে আপনারা কোন সরকার চাচ্ছেন?

ড. রেজা কিবরিয়া: একটা নিরপেক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে ইনশাল্লাহ। তাদের কথায় জনগণ বিশ্বাস করে? যারা মিথ্যা ভোটের তথ্য জনগণকে দিয়েছে। যারা মিথ্যা অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দেয়- তাদের কথায় কেউ বিশ্বাস করে? করবে না।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি বলছেন ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা তো দেখেছি জনগণের অধিকার কেড়ে নিলে তারা সেটা মেনে নেয় না। জনগণ রাজপথে নেমে আসে গত ৪ বছরে তো সেরকম কিছু দেখিনি।

ড রেজা কিবরিয়া: খুলনাতে যখন ১০৪ শতাংশ ভোট পড়ে তখন সাংবাদিকদেরও একটু সন্দেহ জাগা উচিত। এতো চুরি হয়েছে এতোগুলো আসনে। বিদেশী পর্যবক্ষেকদের আসতে ভিসা দেয়নি। সব কিছু থেকে বোঝা যায় ওদের উদ্দেশ্যেই খারাপ ছিল। ভোট চোরের সরকার জনগণ মেনে নিয়েছে সেটা ভাববেন না। হয়তো মানুষকে খুন করে, গুম করে, রাস্তায় কথা বলার মতো মানুষকে খুন করে তারা কিছু মানুষকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে, কিন্তু সব মানুষ সাহস হারায়নি, আশা হারায়নি। আমাদের দল গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধার করার জন্য যা করার করবে।

ঢাকাপ্রকাশ: মানুষ যদি সাহস না হারায় তাহলে সে রকম আন্দোলন কি হয়েছে?

ড. রেজা কিবরিয়া: সে রকম বড় কিছু হয়নি। আমাদের দল তো মাত্র সক্রিয় হয়েছে কয়েক মাস। আমরা কি করবো সেটা অন্য দলের সঙ্গে তুলনা করবেন না। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে আমাদের দল খুবই শক্তিশালী। ভবিষ্যতে দেখবেন। সব দল করে না বা করতে চায় না, আমরা করে দেখিয়েছি। ভবিষ্যতে প্রমাণ দেখতে পাবেন। জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে, বিদ্যুতের দাম আবার বাড়াবে। তারা জনগণের কথা চিন্তা করে না। কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি।

ঢাকাপ্রকাশ: তাহলে বিএনপি কি জনগণের কথা তুলে ধরতে ব্যর্থ বলে মনে করেন?

ড. রেজা কিবরিয়া: আমরা বিএনপি থেকে অনেক কিছু আশা করি। হয়তো পুরোপুরি আমরা পাইনি, কিন্তু তাদেরও তো অসুবিধা আছে। তাদের নেতা একজন লন্ডনে আর একজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে।

ঢাকাপ্রকাশ: সমালোচনা আছে যাদের নিবন্ধনই নাই। যাদের এখনও ভোট করার অধিকার হয়নি। তারা কিভাবে সরকারের পতন ঘটাবে?

ড. রেজা কিবরিয়া: আমি আশাবাদী। এই ধরনের কথা যারা বলে তারা হতাশ হয়ে বলছে বা সরকারের দালাল লোক এসব কথা বলেন। ঘটনা এবং সময় প্রমাণ করবে আমরা পারব কিনা।

ঢাকাপ্রকাশ: সেই সময়টা কবে?

ড. রেজা কিবরিয়া: খুব বেশি দিন বাকি নেই। এই বছরেই হতে পারে। সময় বলবো না, কিন্তু এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন হবে। হিটলারের পতন হয়েছিল, মুসলিনির পতন হয়েছিল, গাদ্দাফির পতন হয়েছিল, এই সরকারেরও পতন হবে। মনে হবে তারা খুবই শক্তিশালী, কিন্তু তারা এক সময় দেখবে বিপদে পড়ে মানুষের কাছে কিভাবে কৈফিয়ত দিতে হয়; এটা ঘটবে ইনশাল্লাহ। খুব বেশি দেরি নাই। অনেক বছর অপেক্ষা করছি। আর কিছু দিন সবুর করেন।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনারা যে আন্দোলন করছেন, আপনাদের কথা কী সরকারের কাছে পৌছায় বা বাইরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছেন?

ড. রেজা কিবরিয়া: সরকারের কাছে পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না। ওদেরকে আগে থেকে খবর দেওয়ার প্রয়োজন নাই। আমি জনগণের কাছে পৌঁছাতে চাই। আমাদের কেউ হারাতে পারবে না, কারণ আমরা জনগণের অধিকারের কথা বলছি। গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ সরকারকে ভয় করে না। স্বৈরাচারি দেশে জনগণ সরকারকে ভয় পায়। কখন তুলে নিয়ে যায় এই ভয় থাকে। গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ রাস্তায় নামলে সরকার ভয় পায়।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার কাছে কী মনে হয় আপনাদের ডাকে মানুষ রাস্তায় নামবে?

ড. রেজা কিবরিয়া: আমাদের ডাকে আসবে কি না জানিনা। আমরা থাকব মাঠে। জনগণ যেটা করতে রাজি নই, আমরা করতে রাজি আছি। আমরা সেই ঝুঁকি নিতে রাজি আছি। কষ্ট করতে রাজি আছি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাদের আন্দোলন তো শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক।

ড. রেজা কিবরিয়া: কথাটা সঠিক না। ঢাকার বাইরে জনপ্রিয়তা একটু বেশি ঢাকার চেয়ে। তবে ঢাকার রাস্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের আন্দোলন ঢাকা কেন্দ্রিক। তবে আমাদের দলটা খুবই জনপ্রিয় সাধারণ মানুষ কাছে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি বলছেন ঢাকা গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকার সবগুলো আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো প্রস্তুতি আপনাদের আছে?

ড. রেজা কিবরিয়া: ঢাকার ১৮ টি আসনে নাই, কিন্তু অনেকগুলোতে আছে। তবে আমাদের কমিটি সবখানে হয়ে গেছে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনারা যে গণতন্ত্র মঞ্চ করলেন সেটার উদ্দেশ্য কী?

ড. রেজা কিবরিয়া: উদ্দেশ্য আমাদের মধ্যে যে ঐক্য আছে, সেটা বোঝানোর জন্য। জেনারেল এরশাদকে সড়াতে যে বড় ঐক্য হয়েছিল, সে ধরণের ঐক্য করতেই এই মঞ্চ। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই সরকারকে হটানো এবং একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনারা আওয়ামী লীগকে হটাতে চান? তাহলে কি আপনারা আওয়ামী লীগকে সরিয়ে বিএনপিকে নিতে চাচ্ছেন ক্ষমতায়?

ড. রেজা কিবরিয়া: আমরা সে ধরণের কোন পরিকল্পনা করছি না এই মুহূর্তে। জনগণ যদি চায় তাহলে যে কোন দলকে তারা ভোট দেবে। মনে হতে পারে আমরা ছোট দল, কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের দল বেশি ভোট পাবে আওয়ামী লীগের চেয়ে।

ঢাকাপ্রকাশ: বিএনপির চেয়েও আপনারা জনপ্রিয়?

ড. রেজা কিবরিয়া: না, সেটা আমি ভাবছি না। কিন্তু আওয়ামী লীগের চেয়ে তিন-চার গুণ জনপ্রিয় হবো এই মুহূর্তে। এককভাবে যেতে পারলে ভালো, আমরা যদি জোটগত ভাবে যাই সেটা পরে দেখা যাবে। তবে বড় একটা পরিবর্তন দরকার। ৫২ বছর যেভাবে দেশ চলেছে সেভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না। তাদের (বিএনপির) সঙ্গে নিয়ে আমরা সামনে থাকব। তাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করব। বিএনপির স্টাটিজিতে ভুল ছিল, না হলে এখন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হতো না। বিএনপির দুর্বলতার কারণে তারা এখন ক্ষমতায় নাই।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাদের গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বিএনপির মধ্যে যদি ঐক্য হয় আপনাদের ইমাম কে হবেন?

ড. রেজা কিবরিয়া: জনগণের মতামত নিয়ে ইমাম ঠিক হবে। আমরা এক সঙ্গে কাজ করব।

ঢাকাপ্রকাশ: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আপনাদের কথা হয়েছে?

ড. রেজা কিবরিয়া: না, সেরকম না। মির্জা ফখরুল ভাইয়ের সঙ্গে অনেক দিন কথা হয়েছে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাদের সঙ্গে জামায়াত আছে?

ড. রেজা কিবরিয়া: সেটা দেখছি না। খুশি হবো, আওয়ামী লীগ, জামায়াত বিএনপির যদি কেউ আসে।

ঢাকাপ্রকাশ: একটা কথা বাইরে প্রচলিত আছে আপনাদের কেউ নামিয়ে দিয়েছে? আসলে কী?

ড. রেজা কিবরিয়া: বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশীদের হাত আছে কোন সাল থেকে? ১১০০ সাল থেকে, যখন দিল্লীর সুলতানরা এসে দখল করল। বাইরের প্রভাব ১৯৭১ সালেও ছিল, ১৯৭৪ সালেও ছিল। কোন সালে বিদেশী প্রভাব আমাদের উপর পড়েনি। আমরা এখনও জাপান বা আমেরিকার মতো হয়নি যে বাইরের কোন প্রভাব আমাদের উপর পড়বে না। কিন্তু কেউ আমাদের নামিয়েছে এটা হাস্যকর। ওই সব দেশ যদি কাউকে নামায় তাদের শক্তি এবং প্রভাব দিয়ে যে কোন সরকারকে উৎখাত করতে পারে কয়েক দিনে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনারা কারও কাছে যাচ্ছেন পরিবর্তনের জন্য?

ড. রেজা কিবরিয়া: কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বিরোধী দলকে একটা জায়গা দেওয়ার জন্য বলি। আমরা গণতান্ত্রিক দেশের সঙ্গে আলোচনা করি। গণতান্ত্রিক দেশগুলো সাপোর্ট করবে, এটাই স্বাভাবিক। তারা চায় বাংলাদেশের জনগণের অধীনে সরকার থাকবে। কোনো দেশ যদি চায় জনগণের কাছে ক্ষমতা থাকুক এতে দোষের কিছু নেই।

ঢাকাপ্রকাশ: গণঅধিকার পরিষদে সাবেক আমলা এবং অবসরপ্রাপ্ত সামরিক- বেসামরিক অফিসার যোগদান করার কথা শুনেছি, কতটা সত্য?

ড. রেজা কিবরিয়া: হ্যাঁ। এই সংখ্যাটা ক্রমেই বাড়ছে। অনেক আবেদন জমা আছে। আমরা সবাইকে নিইনি। আমরা কিছুটা পর্যবেক্ষণ করে দেখি লোকটা দলে যোগ দেবে কি-না? তার ব্যাকগ্রাউন্ড কি? অনেক মানুষ পাইপ লাইনে আছে। অনেক মানুষ দরখাস্ত দিয়েছে তাদেরকে এখন পরিপূর্ণভাবে দলে যুক্ত করিনি। গ্রামে এবং বিভিন্ন জেলায় অনেক সিনিয়র মানুষ যোগদান করেছে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার কথা অনুযায়ী, সরকার চলে গেলে আপনারা দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত?

ড. রেজা কিবরিয়া: আমরা প্রস্তুত। আমার আত্মবিশ্বাস আছে আমি পারবো। এই মুহূর্তে আমি পারবো। তবে দেড় বছর পর যদি আমাকে বলা হয় আপনি পারবেন কি না, আমার মনে হয় আমি পারব না। তখন বলব আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর কাছে যান, ওরাই ঠিক করবে। এই মুহূর্তে আমি পারব, আরও দেড় মাস, দুই মাস ঠিক আছে ম্যানেজ করতে হবে। কষ্ট হবে, আমার কষ্ট হবে দেশের মানুষের কষ্ট হবে। এজন্য আত্মত্যাগ করতে হবে। আমি পারবো। আমি ৩৫টি দেশে কাজ করেছি। অনেক দেশে এরকম-খারাপ অবস্থায় উপদেষ্টা ছিলাম। বের হওয়ার পথ আমি জানি। এই পরিস্থিতি যেন না হয় তার জন্য আমার কিছু অভিজ্ঞতা আছে, সেগুলো কাজে লাগাব।

ঢাকাপ্রকাশ: নতুন সরকার হলে আপনি কি অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে চান?

ড. রেজা কিবরিয়া: জনগণ তো তাই ভাবে। দেখা যাক। আমিও প্রস্তুত।

দ্বিতীয় পর্বে পড়ুন: আওয়ামী লীগকে কোথাও খুঁজে পাবেন না।

এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad

হাফ ভাড়া না নেওয়ায় ৩০ বাস আটকেছে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে ভিআইপি পরিবহনের বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীরা ৩০টি বাস আটক করেছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী সাবিত, যিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের ছাত্র, অভিযোগ করেছেন যে তিনি বাসে উঠার পর হাফ ভাড়া নিয়ে বাসের হেল্পারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বাস থেকে নামার সময় হেল্পার তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, ফলে তার দুই পা কেটে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিতে হয়।

আহত সাবিত জানান, "আমি আজিমপুর থেকে কলেজে আসার জন্য ভিআইপি বাসে উঠি। নামার সময় হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় তারা আমার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, যার ফলে আমি পা ও হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হই।"

অপরদিকে, আটক বাস চালকরা জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী কোনো ঘটনার কারণে এসব বাস আটক করা হয়েছে। লিটন নামের এক চালক বলেন, "কোন বাসের সঙ্গে ঘটনা ঘটেছে সেটা আমি জানি না। তবে, শুনেছি কলেজের এক ছাত্রকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে হেল্পার। তাই আমাদের বাসগুলো আটক করেছে।"

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "আমরা বিষয়টি জেনেছি এবং নিউমার্কেট থানাকে জানিয়েছি। থানার কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি দেখছে। তবে শিক্ষার্থীদের নিজেদের হাতে বিচার তুলে নেওয়া উচিত নয়।"

বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে স্থানীয় নিউমার্কেট থানার পুলিশ ও কলেজ প্রশাসনের মধ্যস্থতায় আটক বাসগুলো নিয়ে যায় মালিকপক্ষ। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।

Header Ad

ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধের অবসান ঘটেছে, ঘোষণা দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘকাল ধরে চলমান ভারত ও চীনের সীমান্ত সমস্যা অবশেষে মিটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষও ঘটেছে, কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি উন্নতির পথে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভারতের গণমাধ্যম দ্য হিন্দু এবং আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এএফপির রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) সংক্রান্ত এলাকায় 'টহল বন্দোবস্ত' এবং সেনা মোতায়েনের বিষয়ে যে অচলাবস্থা ছিল, তা সমাধান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়ায় অবস্থান করছেন। তাঁর এই সফরের প্রেক্ষিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি বলেন, "গত কয়েক সপ্তাহে ভারত ও চীনের কূটনীতিক এবং সামরিক মধ্যস্থতাকারীরা বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনার ফলস্বরূপ, সীমান্তে বিরোধের বিষয়গুলো সমাধান হয়েছে।"

তিনি আরও জানান, দুই দেশ এখন 'পরবর্তী উদ্যোগ' নিতে শুরু করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও এই চুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, "২০২০ সালের আগে সীমান্তে যে ধরনের টহল কার্যক্রম পরিচালনা করা হত, তা আবারও শুরু হবে।"

যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই চুক্তির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি, তবে জয়শঙ্কর বলেছেন, "২০২০ সালের পরিস্থিতিতে ফিরে গেছি, যার মাধ্যমে আমি বলতে পারি যে চীনের সঙ্গে সীমান্তে বিরোধের অবসান ঘটেছে।"

অতীতে, ভারত সরকার জানিয়েছিল যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি তখনই ফিরে আসবে, যখন চীন তাদের সেনা সরিয়ে নেবে। চীনের সেনা মোতায়েনের জবাবে ভারতও ওই এলাকায় সেনা মোতায়েন করে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্রিকস সম্মেলন শুরুর এক দিন আগে এই ঘোষণায় মোদি ও শি জিনপিংয়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মোদি ও শি'র দেখা হয়েছে ১৪ বার, কিন্তু ২০২২ সালে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘাতের পর মাত্র দুইবার তারা সাক্ষাৎ করেছেন।

এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লি জিয়ান জানিয়েছেন, "ভারত-চীন সীমান্তের বিরোধিতাপূর্ণ বিষয়গুলো সমাধানে দুই দেশ একমত হয়েছে।"

Header Ad

টাকা না পেয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের গেটে তালা দিল গ্রাহকরা

ছবি: সংগৃহীত

টাকা না পাওয়ায় চাঁদপুরের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) শাখায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকাল থেকে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফয়সাল শপিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত ব্যাংকটিতে টাকা উত্তোলনের জন্য গ্রাহকরা জড়ো হন। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লেনদেন বন্ধ রাখলে উত্তেজিত গ্রাহকরা প্রবেশদ্বারে তালা লাগিয়ে দেন।

পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়। চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া উপস্থিত হয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

চাঁদপুর জেলা শাখায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ২২ হাজার গ্রাহক রয়েছে, কিন্তু বর্তমানে ১০০ জন গ্রাহকেরও টাকা দিতে পারছে না ব্যাংক। জেলার অন্যান্য শাখাগুলোর পরিস্থিতিও একই রকম। ব্যাংকের টাকা সংকটের কারণে গ্রাহকরা চাহিদা অনুযায়ী সেবা পাচ্ছেন না, যা তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

সরকার পতনের পর থেকেই ব্যাংকটির লেনদেনে জটিলতা শুরু হয় এবং তা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। বর্তমানে ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে টাকার সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ঠিকমতো সেবা দিতে পারছে না।

অনেক গ্রাহক জানান, দুই সপ্তাহ ধরে টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে এসে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রতিবারই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের পরবর্তী সপ্তাহে আসার পরামর্শ দেন, কিন্তু টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা হয় না। আজকের দিনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাংকের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

ব্যাংকের ম্যানেজার মো. মাহবুব আলম জানান, রোববার ও সোমবার সীমিত আকারে লেনদেন চলছিল, তবে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। আজ সম্পূর্ণ লেনদেন বন্ধ থাকায় গ্রাহকরা তালা মেরেছেন। তিনি আরও জানান, প্রধান কার্যালয় থেকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস পাওয়া গেছে, যা দিয়ে আপাতত গ্রাহকদের ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া সম্ভব হবে।

ওসি মো. বাহার মিয়া বলেন, "ব্যাংকে ভিড় জমেছে এবং গ্রাহকরা তাদের টাকা পাচ্ছেন না, এমন খবর পেয়ে আমরা টহল পার্টি পাঠাই। পরে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে আমি নিজে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে কিছু টাকার ব্যবস্থা করি। আশা করছি, আপাতত গ্রাহকদের শান্ত করা যাবে।"

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হাফ ভাড়া না নেওয়ায় ৩০ বাস আটকেছে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা
ভারত-চীন সীমান্ত বিরোধের অবসান ঘটেছে, ঘোষণা দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
টাকা না পেয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের গেটে তালা দিল গ্রাহকরা
২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম
আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ শিশু মুসা উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলো
বিরামপুরে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের এ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত
১৭ প্রতিষ্ঠানসহ সালমান পরিবারের নথি তলবে ৭০ সংস্থায় চিঠি
আন্ডারপাসের দাবিতে ঢাকা-যমুনা সেতু মহাসড়ক অবরোধ, যানবাহনের দীর্ঘলাইন
নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াইয়ের পথ খুলল
এসআই অব্যাহতির পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ক্ষমা চেয়ে আদালতে ব্যারিস্টার সুমন বললেন, ‘আমি খুব সরি স্যার’
ফেসবুক লাইভে মিথ্যা আতঙ্ক ছড়ালেন সাদিয়া আয়মান
পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন ১৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড
১৬ বছরে ২৪ হাজার কোটি টাকার চাঁদাবাজি করেছেন শাজাহান খান
নারায়ণগঞ্জে আসামির ছুরিকাঘাতে পুলিশ সদস্য আহত
ব্যারিস্টার সুমন ৫ দিনের রিমান্ডে
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরও ১৫৭ বাংলাদেশি
সারদায় পুলিশের ২৫০ ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে গনজমায়েতের ডাক
৩৬৯ দিন পর অবশেষে মাঠে ফিরলেন নেইমার