শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
Dhaka Prokash

‘সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল না’

ববি হাজ্জাজ। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। সম্প্রতি ঢাকাপ্রকাশ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, দল গঠন করলেও রাজনীতি তার পেশা না। পেশায় শিক্ষক ববি আরও অনেক বিষয়ে কথা বলেছেন। বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোনো দল না। তিনি তার বাবাকে (মুসা বিন শমসের) ছাত্রলীগের নেতা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি একজন তরুণ রাজনীতিক। জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) নামে আপনার একটা রাজনৈতিক দলও আছে। রাজনীতিটা আপনি কেমন উপভোগ করেন?

ববি হাজ্জাজ: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। একই সঙ্গে আপনার মাধ্যমে ঢাকাপ্রকাশ এবং ঢাকাপ্রকাশ-এর সকল দর্শক, শ্রোতা ও পাঠকদেরকে সালাম ও শুভেচ্ছা।

আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে গত ১০-১২ বছর ধরে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি। যারাই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন বা রাজনীতি করেন এটা তাদের জীবনের একটা অংশ হিসেবেই করেন। তারা জনগণের কাছে থাকতে চান। মানুষের কাছে থাকতে চান, মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য তারা কাজ করেন এবং একবার যখন মানুষের কাছে পৌঁছান তখন তারা মানুষকে নিয়েই কথা বলেন। মানুষকে নিয়েই তারা কাজ করেন। আসলে রাজনীতি বৃহত্তর ও একটা জীবনের অংশ।

ঢাকাপ্রকাশ: তাহলে রাজনীতি আপনার পেশা না?

ববি হাজ্জাজ: না, রাজনীতি আমার পেশা না। একটা নির্বাচন জিতে আপনি চেয়ারম্যান বলেন, কাউন্সিলর বলেন কিংবা এমপি বলেন, ওই একটা জায়গায় বসার আগ পর্যন্ত রাজনীতি আসলে পেশা হতে পারে বলে আমি মনে করি না।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এ এইচ এম এরশাদের উপদেষ্টা ছিলেন। মানে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। সেখান থেকে বের হয়ে গেলেন কেন?

ববি হাজ্জাজ: প্রথমত মরহুম প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আমাকে অনেক স্নেহ করতেন। উনি দাওয়াত দিয়ে আমাকে পার্টিতে জয়েন্ট করতে বলেন। উনার বিশেষ উপদেষ্টা বানান। দলের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়কও বানান এবং স্পোকস্ পার্সনও বানান। কিন্তু মূল বিষয় ছিল উনার বিশেষ উপদেষ্টা।

২০১৫ সালের মাঝামাঝির দিকে একটা সময় আসে যেখানে দলীয় কিছু কারণে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমার একটা দূরত্ব তৈরি হয়। এই দূরত্ব একবার তৈরি হওয়ার পর আর আসলে জাতীয় পার্টিতে আমি ফিরে যাইনি। আমি জাতীয় পার্টি ছেড়ে দিয়েছি, এ কথাটা আসলে ভুল।

ঢাকাপ্রকাশ: হঠাৎ কেন নতুন রাজনৈতিক দল করার ইচ্ছা জাগল আপনার মতো একজন শিক্ষকের?

ববি হাজ্জাজ: ২০১৫ সালে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমার একটা দূরত্ব তৈরি হওয়ার পর থেকে আমি…তখনও আমি জাতীয় পার্টির হয়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কাজ করছিলাম। কাজ করতে করতে কিছু উপলব্ধি হলো। আমি যে জিনিষগুলো বিশ্বাস করি, জাতীয় পার্টি ভালো না খারাপ সেটা বিষয় না। আমি বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রের জন্য, দেশের জন্য, দেশের জনগণের জন্য কাজ করা। সেই কাজগুলো জাতীয় পার্টির মাধ্যমে করা অত্যন্ত মুশকিল হতো। আমি যে জিনিষগুলো সঠিক বলে মনে করি সেগুলো নিয়ে কাজ করার প্রত্যাশা থেকেই জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন গঠন করা।

ঢাকাপ্রকাশ: দেশে তো অসংখ্য রাজনৈতিক দল আছে। এতো দলের ভিড়ে আরেকটি রাজনৈতিক দলের কি খুব প্রয়োজন ছিল?

ববি হাজ্জাজ: আলবত প্রয়োজন ছিল। প্রয়োজন ছিল বলেই আমরা শুরু করি। অনেক রাজনৈতিক দল আছে নিশ্চয়ই। নিবন্ধিত অনেক রাজনৈতিক দল আছে নিশ্চয়ই। কিন্তু যেই বিশ্বাসে আমরা বিশ্বাসী সেই বিশ্বাসে অন্যকোনো দল না থাকার কারণে আমরা এনডিএম গঠন করি।

ঢাকাপ্রকাশ: দল নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

ববি হাজ্জাজ: দেখেন রাজনৈতিক দল আমরা সৃষ্টি করি জনণকে রিপ্রেজেন্ট করার জন্য। আর জনগণকে রিপ্রেজেন্ট একমাত্র ইলেকট্রেট পজিশনে গেলেই হয়। সো, দল নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হল সব পর্যায়ে অর্থাৎ স্থানীয় নির্বাচনে, জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে জনগণকে রিপ্রেজেন্ট করা।

ঢাকাপ্রকাশ: সামনে তো নির্বাচন আসছে। নির্বাচনে আপনার দলের প্রার্থী দেওয়ার মতো অবস্থা কি আছে কোথাও?

ববি হাজ্জাজ: ২০১৯ সালে আমরা নিবন্ধন পাই সিংহ প্রতীক নিয়ে। সামনে যে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে, ২০২৪ সালের নির্বাচন যদি সঠিকভাবে হয়, একসেপ্টবল একটা নির্বাচন দিতে সরকার সক্ষম হয় তাহলে ২০২৪ সালের নির্বাচনে আলবত এনডিএম বড় ভাবে প্রার্থী দেবে এবং নির্বাচন করবে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি বলছেন নির্বাচন যদি সঠিক হয়, আপনার মনে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন আছে কিনা?

ববি হাজ্জাজ: দেখেন আমি এক মুহূর্তের জন্য ধরছি না যে নির্বাচন সঠিক, স্বচ্ছ ও সুন্দর হবে। ২০১৪ তে হয়নি, ১৮তে হয়নি। এটা হবেই না। তারপরও ২০২৪-এ এসে যদি সরকার একটা আশাবাদের জায়গা তৈরি করতে পারে, যেখানে একটা মিনিমাম জায়গা তৈরি হবে তাহলে আমরা নির্বাচনে যাব। মিনিমাম একটা জায়গা তৈরি করা, বেসিক একটা জয়গা তৈরি করা। যেখানে সবার একটা আস্থা আসে যে, এটলিস্ট একটা মিনিমাম স্বচ্ছতা থাকবে নির্বাচনে। ফুল স্বচ্ছতা না, আমার বিশ্বাস ফুল স্বচ্ছতা আসবে না। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমাদের বসা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও কিছু বিষয়ে তাদের অপারগতার কথা জানিয়েছেন যে, অনেক জিনিসই তাদের ক্ষমতার বাইরে। তাদের ক্ষমতার ভেতরে থাকলে যে তারা করতেন আমি সেটাও বলছি না।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি কয়েকদিন আগে ফেনীতে একটি সমাবেশে বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আওয়ামী লীগকে উড়িয়ে দিলেন…

ববি হাজ্জাজ: আমি আওয়ামী লীগকে উড়িয়ে দেইনি। আওয়ামী লীগ এদেশের একটা প্রাচীন রাজনৈতিক দল। কিন্তু সেই দলের সঙ্গে আজকের আওয়ামী লীগকে আমি রাজনৈতিক দল হিসেবে ধরি না। কারণ ক্ষমতায় যারা আছেন তারা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আওয়ামী লীগ এদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। এটা আমি বিশ্বাস করি। তবে যতদিন সরকারে আছে ততোদিন আওয়ামী লীগ জনসম্পৃক্ত না এবং কোনো রাজনৈতিক দল না। দ্বিতীয়ত, আমরা মনে করি আমরা শুধু সত্য বলছি। সত্যটা যদি কারো বিরুদ্ধে যায়, তাতে আমার করার কিছু নেই।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার বাবা তো একজন ব্যবসায়ী এবং জনশক্তি রপ্তানির পাশাপাশি অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে স্বীকৃত। এ নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। আপনার রাজনীতির ক্ষেত্রে তার কোনো প্রভাব পড়ে কি না?

ববি হাজ্জাজ: প্রথমত আপনাকে বলে রাখি, এই জনশক্তি রপ্তানি, এই সেক্টরটার জন্ম দিয়েছে আমার বাবা। আজকের বাংলাদেশের অর্থনীতির যে অবস্থা তার উপর বড় কোনো ইন্ড্রাস্টিয়াল ইম্পেক্ট যদি থেকে থাকে…বাংলাদেশের উন্নয়নের মাপকাঠি, উন্নত দেশ, এতো হাইরাইজ জিডিপি, আজকে যে ডলার ক্রাইসিস তৈরি হল… তখন কিন্তু এই ফরেন রেমিটেন্সের কারণেই আমরা বলতে পারছি ডলার ভ্যালু একটা সামঞ্জস্যে আসছে। এই জনশক্তি রপ্তানির কারণে, এই ইন্ড্রাস্টির কারণে। আর এই ইন্ড্রাস্টির জন্মদাতা আমার বাবা।

দ্বিতীয়ত, অস্ত্রের ব্যবসা নিয়ে অনেকভাবে কথা বলা যায়। রাস্তাঘাটে যারা অস্ত্র নিয়ে বা অবৈধ আর্মস নিয়ে হেলমেট বাহিনী দৌড়াদৌড়ি করছে, এটা যারা বিক্রি করছে এটাও অস্ত্রের ব্যবসা। আবার বিএই সিস্টেমস এ যারা অস্ত্র বিক্রি করছে সেটাও অস্ত্রের ব্যবসা। আমার বাবা বড় বড় ফাইটার জেট, ট্যাংক, ওয়্যার শিপ, ফ্রিগেট… একটা দেশ যখন আরেকটা দেশে বিক্রি করত তখন উনার মাধ্যমে বিক্রি করছে। বহু বছর আমার বাবা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আমার বাবা কখনই বিতর্কিত কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাকে নিয়ে কেন বিতর্ক সেটা আমার বোধগম্য নয়। আর আমার রাজনীতিতে সেটা কোনো প্রভাব ফেলেনি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার পিতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করা, পাকবাহিনীকে সহায়তা করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। মামলাও হয়েছে। কিন্তু আপনাদের পরিবারের সঙ্গে সরকারি দলের একজন প্রভাবশালী নেতার পরিবারের আত্মীয়তার কারণে সেই মামলাটি আগায়নি। যার ফলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া আগায়নি। যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি আপনি কীভাবে খণ্ডাবেন…।

ববি হাজ্জাজ: প্রথমত প্রশ্নটা একটা অবাঞ্ছিত প্রশ্ন। যেহেতু আপনি জিজ্ঞেস করে ফেলেছেন সেকারণে উত্তর দেই। যেকোনো বড় মানুষের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের আরোপ আনা যায়। কখনো উনার নামে কোনো মামলা হয়ে কিছু প্রমাণিত হয়নি এবং বড় কথা কোনো মামলা নেয়ওনি। এই কমপ্লেইন আইসিটি ট্রাইব্যুনাল থেকে শুরু করে দুদক সব জায়গায় গিয়েছে। কিন্তু কোথাও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লগের মরহুম নেতা আব্দুর রাজ্জাক সাহেব যার ছেলেও এখন সংসদে আছেন, আব্দুর রাজ্জাক সাহেব পর্যন্ত বক্তব্য দিয়েছেন যে, আমার বাবা কখনো… এবং আমার বাবা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন এবং আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের আন্ডারেই উনি ছিলেন। মানে আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন সিনিয়র নেতা, আর আমার বাবা ছিলেন জুনিয়র নেতা। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা সেই এলাকায় বক্তব্য দিয়েছেন যে, উনি কখনো যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এমনকি কোনো মামলায় তার বিরুদ্ধে কোনো আইসিটি এভিডেন্স বের করতে পারেননি।

আর আপনি যদি বলেন যে, সরকারি দলের সঙ্গে সম্পর্কের…সরকারি দলের সঙ্গে যদি আমার এতোই দহরম-মহরম সম্পর্ক থাকে তাহলে আমার রাজনীতিতে এতো নাজেহাল কেন হতে হয়। এতোই যদি দহরম মহরম থাকে তাহলে দেখান গত ২০ বছরে আমার পরিবার… গত ৩০ বছরে আমাদের পারিবারিক যে ব্যবসা তার একটা কন্ট্রাক্ট সরকারের সঙ্গে করেছে। সরকারের সঙ্গে এতো দহরম মহরম থাকে তাহলে সরকারের কাছ থেকে না আমি একটা টাকা বানাতে পারছি …এই সরকারের আমলে দুদকে হয়রানি হয়, এই সরকারের আমলে রেন্ডম মামলা করে…যখন এদেশের অর্থনীতি যাদের উপর দাঁড়িয়ে তাদের নাজেহাল করে…তখন এই দেশের সরকারের সঙ্গে কতোখানি সম্পর্ক আমার, এখানে কি প্রতীয়মান হয় না।

আরএ/

Header Ad

আবু সাঈদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

আবু সাঈদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছবি: সংগৃহীত

কোটা আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বাবা-মায়ের হাতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার চেক তুলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল।

এ সময় নিহত আবু সাঈদের বৃদ্ধ বাবা মকবুল হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে আরেকদিন আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসে। সেই সময় ভিসি স্যার আমার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। আমাদের খোঁজখবর নিয়েছেন। আমাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমি স্যারকে বলেছিলাম আমাদের পরিবারের একজনকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হয়। ভিসি স্যার আশ্বস্ত করেছেন। প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ না কেউ খোঁজ রেখেছেন।

এ ছাড়া পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই সহায়তা করছেন বলেও জানায় আবু সাঈদের পরিবার।

মকবুল হোসেন আরও বলেন, আমার কলিজার টুকরা ছিল আবু সাঈদ। তার প্রাইভেট পড়ানোর (টিউশনের) জমানো টাকায় আমার সংসার চলতো। সন্তান হারিয়েছি, এ শোকের কোনো সান্ত্বনা নেই। বাবা হয়ে সবচেয়ে ভারী কাজ হলো সন্তানের লাশ কাঁধে নেওয়া।

এখন শুধু সবার কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চান বৃদ্ধ এ বাবা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, ভিসি মহোদয়ের নির্দেশে আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব সময় যোগাযোগ রাখছে। ভিসি স্যার নিজেও সাঈদের পরিবারের খোঁজ রাখছেন, পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে আজকে সাড়ে সাত লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্ক মোড়ে কোটা সংস্কারে দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মিছিলের সম্মুখে থেকে বুক পেতে দেওয়া আবু সাঈদ নিহত হন। এ ঘটনার পর আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে গোটা জেলাজুড়ে। নিহত আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

সহিংসতার অভিযোগে ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেপ্তার ২৩৫৭

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ঢাকাসহ সারা দেশে সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে ২০৯টি। নাশকতা ও সহিংসতার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, সহিংসতা নাশকতার ঘটনায় গোয়েন্দা তথ্য ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ২০৯টি মামলায় ২৩৫৭ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সারাদেশে সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে চলছে সাঁড়াশি অভিযান। অভিযানে ঢাকায় ৬৩ ও ঢাকার বাইরে ২০৩ জনসহ মোট ২৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

এদিকে আজ নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের আড়ালে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত অনেকবার গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা বা দেশকে অকার্যকর করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু পুলিশের কারণে তারা বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য তারা এবার পুলিশকেই টার্গেট করেছে।

যারা পুলিশকে হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, স্বপ্নের মেট্রোরেলসহ সরকারি স্থাপনায় নাশকতা চালিয়েছে। যারা এসবের নেতৃত্ব দিয়েছে, অর্থ আদান-প্রদান করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তারা যেখানেই থাকুক না কেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাইরে বাকি ৯৫ শতাংশ নিয়ে আদালতে বোঝাপড়া করব’

বক্তব্য রাখছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক বলেছেন, সরকার মুক্তিযোদ্ধা কোটা শতকরা পাঁচ ভাগ রেখেছে। এটি মুক্তিযোদ্ধারা মেনে নিয়েছেন। কিন্তু পরিষ্কার হওয়া দরকার, বাকি পদে কাদের নেওয়া হবে। আমরা বাকি ৯৫ শতাংশ কোটা নিয়ে আদালতের সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়ায় বোঝাপড়া করব।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে নরসিংদীর পাঁচদোনায় সম্প্রতি দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন পরিদর্শন ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনাসভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এই পাঁচদোনা মোড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। স্মৃতিধন্য এই স্থানে নির্মাণ করা হয় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। দুঃখের বিষয়, সেই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সেই হামলা চালানো হয়েছে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী ও বিএনপির ক্যাডাররা মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের সেই গর্বের ধন আজ পরাজিত শক্তির কাছে আক্রান্ত হচ্ছে।

এসময় তিনি রাজাকারদের তালিকা প্রস্তুত করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, কোটার বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মতামত গ্রহণের জন্যও আদালতকে অনুরোধ জানানো হবে। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে সেটিও আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান করা হবে।

তিনি বলেন, যারা দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে, তারা কখনো ছাত্র হতে পারে না। বিএনপি, জামায়াত ও রাজাকারের দল এ নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। তাদের কার্যকলাপে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে যারা আঘাত করেছে, তারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি বিএনপি, জামায়াত, শিবির ও ছাত্রদলের ক্যাডার।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান খান, নরসিংদী সদর আসনের সংসদ সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরো, পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক চেয়ারম্যান হেলাল মোর্শেদ প্রমুখ।

সর্বশেষ সংবাদ

আবু সাঈদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
সহিংসতার অভিযোগে ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেপ্তার ২৩৫৭
‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাইরে বাকি ৯৫ শতাংশ নিয়ে আদালতে বোঝাপড়া করব’
কোটা আন্দোলনে নিহত রুদ্রের নামে শাবিপ্রবির প্রধান ফটকের নামকরণ
সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা-রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
এক সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ৬ কোটি টাকা লোকসান
পাকিস্তানের ইসলামাবাদ-পাঞ্জাবে ১৪৪ ধারা জারি
রিমান্ড শেষে কারাগারে নুরুল হক নুর
ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই সরকারের: মির্জা ফখরুল
নরসিংদী কারাগার থেকে লুট হওয়া ৪৫ অস্ত্র উদ্ধার
বাংলাদেশকে ১০ উইকেটে হারিয়ে নারী এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারত
মোবাইল ইন্টারনেট কবে চালু হবে, জানাল বিটিআরসি
পুলিশকে দুর্বল করতেই পরিকল্পিতভাবে হামলা-ধ্বংসযজ্ঞ: ডিবি হারুন
মৃত্যুর দিনক্ষণ গোপন রাখা হয়েছে যে কারণে
অলিম্পিক উদ্বোধনের আগেই প্যারিসে উচ্চগতির রেল নেটওয়ার্কে ভয়াবহ হামলা
তারেক রহমানের নির্দেশেই রাষ্ট্রের ওপর হামলা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
শিক্ষার্থীদের হত্যা করে সরকারের ওপর দায় চাপানো হয়েছে: ওবায়দুল কাদের
‘বাংলাদেশে ছাত্র-ছাত্রীদের রক্ত ঝরছে’, মমতাকে কড়া বার্তা দিল্লির
বাজারে সরবরাহ বাড়লেও সবজির দামে এখনো অস্বস্তি