বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ | ২৮ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

এডিটর’স টক

‘সরকারপ্রধান যদি চান তাহলে সবকিছু সম্ভব’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) এসেছিলেন ঢাকাপ্রকাশ-এ। ‘এডিটর’স টক’-এ ঢাকাপ্রকাশ-এর প্রধান সম্পাদক মোস্তফা কামালের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে। সেখানে তিনি জাতীয় পার্টির বর্তমান অবস্থা, কাউন্সিল, পার্টির সংসদীয় দলের নেতা রওশন এরশাদ ইস্যু, জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের প্রধান হুইপকে দলের সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, ইভিএম, বেকারত্ব, দুর্নীতি, অর্থপাচার, মন্দা, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্যসহ নানান বিষয়ে কথা বলেছেন। তার সেই কথোপকথনের চুম্বক অংশ ঢাকাপ্রকাশ-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি যদি আপনার এবং জাতীয় পার্টির অবস্থাটা আমাদের পাঠক দর্শকদের বলতেন।

জিএম কাদের: আমার ধারণা জাতীয় পার্টি খুব ভালো অবস্থানে আছে। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে একটা নতুন চোখে দেখছে। মোটমুটি যেটা আগে একেবারেই...আমাদের নেতা হোসেনই মোহাম্মদ এরশাদ সাহেবের সময়ে যেভাবে জাতীয় পার্টি সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ এবং ভক্তি-ভালোবাসা ছিল, এটা মাঝখানে একটু ভাটা পড়েছিল। এখন আবার এটি উঠতির দিকে। আমরা খুবই আশাবাদী জাতীয় পার্টি শুধু তার পুরনো গৌরবই ফিরে পাবে না, সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। আমরা দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করি এবং আমরা দেশের জনগণের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।

ঢাকাপ্রকাশ: জাতীয় পার্টি নিয়ে জনগণের মধ্যে নানান কৌতুহল। আপনার সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়েও নানান কথা হচ্ছে। একদিকে জাতীয় পার্টি সরকারের সঙ্গে আছে। আবার বিরোধী দলেও আছে। তো এভাবে আসলে সরকারের ভিতরে থেকে কতটা সরকার বিরোধী হওয়া সম্ভব?

জিএম কাদের: না, আমরা সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই নেই। এই কথাটা কেন মানুষের মধ্যে ঢুকে গেছে সেটা আমি কিছুটা আঁচ করতে পারি। আমাদের কিছু কিছু বক্তব্য সংসদে সংসদ নেতার মাধ্যমে যেটা সংসদ সদস্যরা দিয়েছে সেটা খুব অল্প-মুষ্ঠিমেয় কয়েকজনের বক্তব্য। এটার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এই ভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে সত্যিকার অর্থে আমরা কোনো মহাজোট করে নির্বাচন করিনি। আমরা ১৪ দলের সঙ্গে একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং করেছিলাম। আমরা কিছু সিটে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিলাম। আর কিছু সিটে আওয়ামী লীগ আমাদের সমর্থন দিয়েছিল।

ঢাকাপ্রকাশ: সম্প্রতি আপনার দল থেকে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন আপনাকে বিরোধী দলীয় নেতা করার জন্য। এটা কীভাবে...

জিএম কাদের: এটায় আমি পড়ে আসছি। আমরা যখন সংসদে বিরোধী দল হয়েছি তখন থেকে আমরা বিরোধী দল হিসেবে কথা বলেছি। সরকারের যেখানে যেখানে সমালোচনা করা দরকার, সংশোধন করা দরকার, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি, আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। সংসদের বাইরেও আমরা বিভিন্ন প্রোগ্রাম করেছি। মানববন্ধন করেছি, সমাবেশ করেছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিক্ষোভ মিছিল করেছি। তবে আমাদের মধ্যে একটা বিষয় ছিল, দীর্ঘ দিন আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম, আওয়ামী লীগের সঙ্গে অনেক হৃদ্যতা ছিল। সুখে-দুঃখে আমরা তাদের পাশে ছিলাম। মহাজোটের মন্ত্রীও ছিলাম। কাজেই পারস্পারিক একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তো ছিলই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে যে একটা সম্পর্ক, একটা হিংসাত্মক এবং সহিংসতাপূর্ণ সম্পর্ক, আমাদের মধ্যে এরকম সহিংস কোনো সম্পর্ক ছিল না।

এখন আসি স্পিকারকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে। আমাদের দলের ভেতরের কিছু মানুষ যাদেরকে আমরা জয়গা মতো অবস্থান দিতে পারিনি বা যারা অনেক আগে দল ছেড়ে চলে গেছেন বা বিভিন্ন কারণে দলের সঙ্গে নেই দীর্ঘদিন। তারা হঠাৎ করে...আমার শ্রদ্ধেয় ভাবীকে (রওশন এরশাদ)…। কিন্তু হঠাৎ দেখলাম উনি জাতীয় পার্টির সম্মেলন করার জন্য একটা চিঠি পাঠিয়েছেন। যেটা আমরা তিন বছর পর পর করি। যেটা আমরা করেছি। যেটাতে আমাকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত আমাদের মেয়াদ আছে। কিন্তু হঠাৎ করেই ২৬ নভেম্বর সম্মেলন কল করে চিঠি দিয়েছেন। এরপর পরই পার্টির পক্ষ থেকে উনাকে একটা সময় বেঁধে দেওয়া হয় তার সম্মেলনের প্রস্তাব প্রত্যাহার করার জন্য। না হলে আমরা ধরে নেব যে আপনি এটার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন এবং আপনার বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ, তিনি সংসদের একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আছেন।

এই অবস্থায় দলের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আসলে দলের এমপিরা বসে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, উনাকে বিরোধী দলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া দলের জন্য মঙ্গলজনক। আমি বলেছি সবাই মিলে যেটা সিদ্ধান্ত নেবেন আমি সেটাতে এতমত হব। সবাই শতভাগ এগ্রি করল যে উনাকে সসম্মানে এই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত। আমাকে বলল, নেক্সট ম্যান হিসেবে আপনি দায়িত্ব নেন। ওইভাবে একটা রেজুলেশন হলো এবং সেটা স্পিকারকে দেওয়া হলো।

ঢাকাপ্রকাশ: কিছুদিন আগে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে দল থেকে বাদ দিয়েছিলেন। এটার বিশেষ কোনো কারণ আছে কি?

জিএম কাদের: বিশেষ কারণ তো বটেই। খুবই ইন্টারেস্টি...। সে কিন্তু বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ হিসেবে নিজেই মুজিবুর রহমান চুন্নুসহ সবাইকে নিয়েই চিঠিটা দিয়েছে। কিন্তু দুই তিন দিন পর সে বলতে শুরু করে, এটা দেওয়া ঠিক হয়নি। আমরা সবাই রাজি ছিলাম না। অনেকে রাজি ছিল না। তখন সবাই বলল, হঠাৎ করে একটা লোক এরকম উল্টো কথা বলল। উনার মতো একটা লোককে এরকম একটা পজিশনে রাখা একটা সমস্যা। তখন সবার পরামর্শে সিদ্ধান্ত হল উনাকে দলের সব পদপদবি থেকে নিস্কৃতি দেওয়াটাই হবে আমাদের জন্য ভালো। সেটাই করা হয়েছে।

ঢাকাপ্রকাশ: বলছিলেন রংপুরে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন। এটা কি আপনার সাম্প্রতিক বিভিন্ন বক্তব্য, বিভিন্ন ইস্যু ধরে সরকারের সমালোচনা করা এটা জন্য হয়েছে?

জিএম কাদের: আমার ধারণা মানুষ আসলে সরকারের অনেক কাজকেই পছন্দ করছে না। কিন্তু যেকোনো কারণেই হোক একটা ভীতির পরিবেশ আছে দেশে। অনেকে কথাগুলো বলতে চাচ্ছেন না বা বলতে পারেন না। আমি সেই কথাগুলো বলছি।

ঢাকাপ্রকাশ: এই যে আপনি কথাগুলো বলছেন এই জন্য কি কোথাও থেকে আপনাকে কোনো ধরনের হুমকি...

জিএম কাদের:  না, এখন পর্যন্ত সে রকম কোনো ভয়ভীতি বা বাধার সৃষ্টি করা হয়নি।

ঢাকাপ্রকাশ: তাহলে কি আমরা এটা বলতে পারি যে রওশন এরশাদের নেতৃত্ব আলাদা কোনো জাতীয় পার্টি হচ্ছে না?

জিএম কাদের: না। জাতীয় পার্টি হওয়ার কোনো স্কুপ নেই। অন্য কোনো দল হওয়ারও কোনো স্কুপ নেই আমার মনে হয়।

ঢাকাপ্রকাশ: জাতীয় পার্টি কি আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিচ্ছে?

জিএম কাদের: হ্যাঁ, আমরা ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। দেখেন সামনের দিকে রাজনীতিটা বেশ অনিশ্চিত হয়ে আছে। সামনের দিকে একটা সুষ্টু নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটা দাবি আছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়েছে। স্বাভাবিক নির্বাচন হচ্ছে না। নির্বাচনে প্রশাসন সরকারের পক্ষে কাজ করছে। এটা একদম সত্য কথা। কিন্তু আমরা নির্বাচন বর্জন করিনি। আমরা সব নির্বাচনে যাচ্ছি। দেখতে চাচ্ছি যে সরকার শেষ পর্যন্ত কী করে। এখন যেটা হয়েছে যে, নির্বাচন ভালো হয়নি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার কি মনে হয় যে, সরকারি দলকে জেতানোর জন্য গোটা মাঠপ্রশাসনকে ওইভাবেই সাজানো হয়েছে বা আপনার সংশয়টা কেন?

জিএম কাদের: এটা খুব একটা ন্যাচারাল ব্যাপার হয়ে গেছে। আমরা করছি কি, আমাদের সমস্ত ক্ষমতা সরকারি দলের প্রধানের হাতে ন্যস্ত করেছি। রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষমতা, সকল বিভাগ,স্তম্ভ, যেটাকে আমি বলি, নির্বাহী বিভাগের প্রধান তো উনি বটেই, পার্লামেন্টেরও প্রধান এবং বিচার বিভাগেরও বেশির ভাগ জিনিস উনার প্রভাবের বাইরে নয়। অধস্তন আদালতের শতভাগ উনার দ্বারাই চলে, উনার মন্ত্রী দ্বারা চলে। তাদের পদোন্নতি, পদায়ন সবই উনার দ্বার চলে। সংবাধানের ১১৬ ধারায় এটা চলে। সংবিধানের ১০৯ ধারায় বলা আছে, এটা হাইকোর্টের আওতায় থাকবে।

উচ্চ আদালতেও রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেন। কিন্তু সবই করতে হয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে। দেখেন আমাদের এখানে সংসদীয় গণতন্ত্রের কথা বলা হয়। আসলে এটা কোনো গণতন্ত্র নয়। এটা আসলে একজনের শাসনব্যবস্থা। কারণ, সব ক্ষমতা ৭০ ধারা অনুযায়ি প্রধানমন্ত্রীর হাতে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ, ইলেকশন কমিশন সবই কিন্তু কন্ট্রোল একজনের হাতে। সেক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করা খুবই কঠিন। যদি উনি কিংবা উনার দল নির্বাচন করে। উনি যদি নির্বাচন না করেন তাহলে সেটা ভিন্ন কথা।

ঢাকাপ্রকাশ: নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে?

জিএম কাদের: নির্বাচনকালীন সরকার তো পরের কথা। যদি সরকার চায় তাহলে আমরা পার্টির ফোরামে বসে সিদ্ধান্ত নেব। একটা ফর্মুলা দেব। সরকার না চাইলে তো এগুলো অর্থহীন হয়ে যাবে। সরকার যদি না চায় তাহলে বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। তখন খুবই কঠিন হয়ে যাবে ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশন করা। কারণ, সকল ক্ষমতা একটা দলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সেভাবে নেই। যদিও আমাদের সংবিধানে আছে নির্বাচনের সময় সমস্ত নির্বাহী ক্ষমতা ইলেকশন কমিশনের হাতে থাকবে। কিন্তু তার কথা যদি কেউ না শুনে তাহলে কী হবে? আসলে আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা সত্যিকার অর্থেই একটা ভঙ্গুর ব্যবস্থা। বর্তমানে যে ব্যবস্থা আছে তাতে সরকার দলীয় প্রার্থীকে ফেল করানো প্রায় অসম্ভব।

ঢাকাপ্রকাশ: ইভিএম নিয়ে একটা জটিলা দেখা যাচ্ছে। সরকারের দিক থেকেও চাচ্ছে ইভিএম। নির্বাচন কমিশন থেকেও বলা হচ্ছে অন্তত অর্ধেক আসনে ইভিএম-এ নির্বাচন করতে। নিশ্চয়ই সবাই একটা ভালো নির্বাচন চায়। তাহলে সমাধানটা কি?

জিএম কাদের: সমাধান খুবই কঠিন। সবাই চাইলে লাভ হবে না। এটা সরকারকে চাইতে হবে, সরকার প্রধানকে চাইতে হবে। উনি যদি চান তাহলে সবকিছু সম্ভব।

ঢাকাপ্রকাশ: বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভুলগুলো আপনি জানেন। সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি বিশেষ কোনো পরিকল্পনা করতে পারে কি না যে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যাবে। এই হচ্ছে আমাদের পরিকল্পনা…

জিএম কাদের: আমি মনে করি, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আসা দরকার। একটা বেসিক পরিবর্তন দরকার। আমি সব সময় এগুলো বলছি। একইভাবে সবকিছুতে নিরপেক্ষতা আনা উচিত। নির্বাচন ফেয়ার হবে, বিজনেস ফেয়ার হবে, অ্যাপয়ন্টমেন্ট ফেয়ার হবে। প্রতিটি মানুষ যেন ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা মনে করে। মনে করে যেন ন্যায়বিচার পাচ্ছে। ধরেন একজন যদি ১০ হাজার টাকা বেতন পায়, আরেকজন যদি দশ গুণ বেশি পায় তাহলে তো ন্যায় বিচার হলো না। আমাদের কথা সর্বক্ষেত্রে ন্যায় বিচারভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। চাকরির ক্ষেত্রে মেধা, সততাকে দাম দিতে হবে। শুধু এই সরকারের আমলে নয়, এর আগেও দেখেছি আমরা। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালনের বদলে শিষ্টের দমন এখন আমাদের সমাজের রীতি হয়ে গেছে।

ঢাকাপ্রকাশ: এখান থেকে বের হওয়ার উপায় কী?

জিএম কাদের: আমরা যদি দুর্নীতিটাকে বন্ধ করতে পারি তাহলে এগুলো কিন্তু অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যাবে। সরকার যদি দুর্নীতি বিরোধী একটা অবস্থান নিতে পারে যে, দুর্নীতি করলে তার এমন শাস্তি হবে, যে শাস্তি মানুষ দেখে। দুর্নীতিটা যদি আমাদের সমাজ থেকে চলে যায় তাহলে দুবৃত্তায়নও চলে যাবে। তখন সাধারণভাবেই মানুষ সৎ হওয়ার চেষ্টা করবে। আর সৎ হলে সৎ মানুষের কদর বাড়বে।

ঢাকাপ্রকাশ: এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় সংকট কী বলে আপনি মনে করেন?

জিএম কাদের: দেশের সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে বেকারত্ব আর দুর্নীতি। মানুষের আয় প্রতিদিন কমে যাচ্ছে, দরিদ্রের সংখ্যা বাড়ছে। যদিও ফিগারে অনেক কিছু বলা হয়। আমি সেটা বলছি না। আমি ন্যাচারালভাবে দেখেছি। বেকারত্বটা দিনকে দিন বাড়ছে। এটা একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেভাবে অ্যাড্রেস করা হচ্ছে না। মহাজোট সরকার আসার সময় বলেছিল প্রতি ঘরে ঘরে একটা করে চাকরি দেওয়া হবে। এখন যেটা হচ্ছে প্রতি ঘরে ঘরে একটা করে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। বিদ্যুতের কারণে করখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বেকারের সংখ্যা বাড়ছে।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি তো বিদ্যুতের কথা বলছেন। বিদ্যুৎ তো আমাদের এক সময় উদ্বৃত্ত থাকত…

জিএম কাদের: কথা হলো আমাদের দেশে বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি তৈরি করা হয়েছে ২০ হাজার মেগাওয়াটের মতো। আমাদের দরকার হলো ১৪ হাজার মেগাওয়াটের মতো। কিন্তু কোনোদিন যে আমাদের দেশ লোডশেডিং ছাড়া ছিল সেরকম একটা দিনও হয়নি। বিভিন্নভাবে বিদ্যুতের প্রোডাকশন করা হয়েছে অনেক বেশি। কিন্তু সেভাবে বিদ্যুৎ লাইনসহ সার্বিক ম্যানেজমেন্ট হয়নি।

ঢাকাপ্রকাশ: এই যে অনেক প্রকল্পে নানা বিশৃঙ্খলা। এটা কি অজ্ঞতা নাকি দুর্নীতির কারণে হয়েছে। আপনি কি মনে করেন?

জিএম কাদের: দেখেন আমার কাছে তো কোনো সাক্ষী প্রমাণ নেই। তবে যে সময়টায় মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেই সময়টায় গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি নামে একটা প্রতিষ্ঠান আছে, তারা কিন্তু খবর দিচ্ছে আমাদের দেশ থেকে প্রচুর টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। সেখানে আমাদের দেশি টাকায় সুইস ব্যাংকে চার লাখ কোটি টাকা থাকার কথা গ্লোবাল ইন্টিগ্রিটি ডিক্লেয়ার করেছে।

ঢাকাপ্রকাশ: সবাই বলছে আগামী বছরটা আমাদের জন্য তথা সারাবিশ্বের জন্য খারাপ সময়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সবাইকে মিতব্যয়ী হতে। আপনার কাছে কোনো আশার বাণী আছে কি?

জিএম কাদের: বিষয়টা হলো কি, সারা পৃথিবীতেই মন্দা হচ্ছে। সামনের দিকে মন্দা আরও বাড়বে। সারা পৃথিবী কিন্তু ওইটার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেকোনোভাবেই হোক তারা বিভিন্ন প্রোগ্রাম নিচ্ছেন। যেমন প্রধানমন্ত্রী মিতব্যয়ী হতে বলেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন সেটার সঙ্গে একমত। কিন্তু বাস্তবে আমি এটার কোনো প্রতিফলন এখনো দেখিনি। আমার চোখে পড়েনি যে সরকার খুব বেশি মিতব্যয়ী হচ্ছে। দরিদ্র মানুষেরা বড় বেশি কষ্টে আছে। দৃব্যমূল্যের যে চাপ সেটার চাপ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের উপর দিয়ে। এটা সার্বিকভাবে একটা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে এবং বিশৃঙ্খলার কারণ হতে পারে। সেই কারণে আমি মনে করি, এসব বিষয়ে একটু দৃষ্টি দেওয়া উচিত।

ঢাকাপ্রকাশ: দীর্ঘ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

জিএম কাদের: আপনাকে এবং ঢাকাপ্রকাশ-কে ধন্যবাদ।


এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad

পুরুষ না নারী, কে বেশি ঘুমায়?

ছবি: সংগৃহীত

ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি শারীরিক বৃত্তীয় ক্রিয়া। সুস্থতার জন্য মানুষের প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি কমায় ভালো মানের ঘুম। কিন্তু জানেন কি পুরুষ না নারী- কে বেশি ঘুমায়? গবেষণায় মিলেছে অবাক করা সেই তথ্য।

নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি ঘুমান, এমনই প্রচলিত ধারণা রয়েছে। যদিও এই তথ্যকে সত্য বলে বিশ্বাস করেন না সকলে। অনেকের মতে, এটি সম্পূর্ণই গুজব। কিন্তু সত্যি কি পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশি ঘুমের প্রয়োজন হয়? গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নারীদের প্রতিদিন কমপক্ষে সাত থেকে ৯ ঘণ্টা ভালো ঘুম হওয়া জরুরি। আসলে বিভিন্ন বয়সে নারীদের শরীরে বিভিন্ন রকম পরিবর্তন হয়। তাই সেই পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকার জন্যই প্রয়োজন ঘুম।

একইসঙ্গে পুরুষদের তুলনায় নারীদের দৈনন্দিন জীবনে বেশি চাপ এবং উদ্বেগ থাকে। সবকিছুর সঙ্গে মোকাবেলা করে সুস্থ জীবনযাপনের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। তাই পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশি ঘুমের প্রয়োজন বলেই গবেষণায় বলা হয়েছে। শুধু ঘুমই নয়, ভালো মানের ঘুমও জরুরি।

প্রাথমিক কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জৈবিক গঠন অনুসারে পুরুষ এবং নারীদের ঘুমের প্রয়োজনীয়তার সামান্য পরিবর্তন থাকতে পারে। এছাড়া ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ঘুম অনেক বেশি সজাগ। তুলনায় ছেলেদের মধ্যে গভীর ঘুমের প্রবণতা আছে। মেয়েদের ঘুম খুব পাতলা হয়। ফলে সময় পেলেও বিভিন্ন কারণে ভেঙে যায়। অনেক মহিলারা যেহেতু ঘর এবং বাইরে দু'দিকে সামলাতে হয়, ফলে মানসিক চাপ সবসময়ে কাজ করে। নিশ্চিন্তে ঘুমানোর সুযোগ কম থাকে।

উল্লেখ্য, প্রাপ্তবয়স্কদের সাধারণত প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন হয়। যদিও বয়সের সাথে মানুষের ঘুমের চাহিদা কিছুটা কমতে পারে। তা সত্ত্বেও বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদেরও প্রতি রাতে প্রায় অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা উচিত।

Header Ad

ভারতের কাছে পাকিস্তানে না যাওয়ার লিখিত ব্যাখ্যা চায় পিসিবি

ছবি: সংগৃহীত

আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজন করবে পাকিস্তান। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে দল পাঠাবে না ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। দু’দিন আগেই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন জয় শাহরা। প্রতিযোগিতার আয়োজন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে আইসিসি। এতে খুশি নন পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্মকর্তারা। তারা বিসিসিআইয়ের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চান।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। স্টেডিয়াম সংস্কার করেছে তারা। ক’দিন আগে ১০০ দিনের গণনা শুরু করেছে। এমন সময় ৮ দলের টুর্নামেন্টটি অনিশ্চিতার মধ্যে পড়ে গেছে। সম্ভাব্য হাইব্রিড পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে। তবে পাকিস্তান এখনো দেশে সম্পূর্ণ টুর্নমেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্তে অনড়।

বিষয়টি নিয়ে পিসিবির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘হাইব্রিড মডেলের কোন চিন্তাই করা হচ্ছে না।’ এর আগে ২০২৩ সালে পিসিবির আয়োজনে হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ হয়েছে। ওই টুর্নামেন্টে ভারতের ম্যাচগুলো অন্যত্র হয়েছিল এবং বাকি ম্যাচ হয়েছিল পাকিস্তানে। তবে ওই বছরই বিশ্বকাপ খেলতে ভারত সফর করেছে পাকিস্তান দল। শর্ত ছিল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে ভারতীয় ক্রিকেট দলও পাকিস্তানে যাবে। কিন্তু কথার খেলাপ হওয়ায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে পিসিবি ও পাকিস্তান সরকার।

বিসিসিআইয়ের বক্তব্য জানার পর আইসিসি কর্তারা ভারতের ম্যাচগুলোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থার পরিকল্পনা শুরু করেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। অবশ্য, এ ব্যাপারে সরকারি ঘোষণা হয়নি। তারা আপাতত যুযুধান দু’দেশের বোর্ড কর্তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় ক্রিকেট সিরিজ বন্ধ এক দশকের বেশি সময়। ২০০৭-০৮ মরসুমে শেষবার ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল দু’দেশ। ২০১২ সালে শেষবার ভারতের মাটিতে এক দিনের এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। তার পর থেকে বহুদলীয় প্রতিযোগিতা ছাড়া ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ হয় না। গত বছর এশিয়া কাপের জন্য বিসিসিআই রোহিতদের পাকিস্তানে না পাঠালেও এক দিনের বিশ্বকাপের সময় বাবর আজমদের ভারতে পাঠিয়েছিল পিসিবি।

Header Ad

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রোজি কবির মারা গেছেন

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রোজি কবির মারা গেছেন। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং সাবেক সংসদ সদস্য বেগম রোজি কবির (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) মারা গেছেন। বুধবার (১৩ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরে লিভারজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি।

বেগম রোজি কবির দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলী। মরদেহ ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হবে এবং সেখানে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার সময় এখনও নির্ধারিত হয়নি।

তিনি ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৮ম জাতীয় সংসদে মহিলা আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর হালিশহরের একটি প্রখ্যাত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বড় ভাই, সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও পরিকল্পনামন্ত্রী ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদ। তার হাত ধরেই বেগম রোজি কবির রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণ করেন।

বেগম রোজি কবির বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সফরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চট্টগ্রাম নগর কমিটির সভাপতি, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি, এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার মৃত্যুতে আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া পড়েছে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পুরুষ না নারী, কে বেশি ঘুমায়?
ভারতের কাছে পাকিস্তানে না যাওয়ার লিখিত ব্যাখ্যা চায় পিসিবি
খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রোজি কবির মারা গেছেন
তৌহিদ আফ্রিদির বিয়ের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল
ভারতে অনুপ্রবেশের সময় শার্শা সীমান্তে ৩ বাংলাদেশী নারী আটক
খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় নিয়ে মুখ খুললেন বরুণ
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনে নতুন নেতৃত্বে তারেক রহমান, ২৩ সদস্যের কমিটি গঠন
‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগে ছেয়ে গেছে ফেসবুক- কেন এত সমর্থন?
মিষ্টি পান চাষে জহুরুলের বাজিমাত, অল্পদিনেই সংসারে ফিরেছে দারুণ স্বচ্ছলতা
ঝুহাইয়ে প্রাইভেটকারের চাপায় ৩৫ জনের মৃত্যু, আহত ৪৩
বশির উদ্দিন ও ফারুকীকে সরাতে আইনি নোটিশ
ঢালাও মামলা আমাদের বিব্রত করে : আইন উপদেষ্টা
বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে : হাসনাত আব্দুল্লাহ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা সাধারণ শিক্ষার্থীদের
টাকার জন্য মাকে হত্যা, লাশ ডিপ ফ্রিজে রেখেছিল ছেলে
মাদক ও বাল্য বিবাহকে না বলে শপথ নিলো ৬শ শিক্ষার্থী
ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে সাকিব আল হাসান
‘যুদ্ধ শেষ হয়নি’, আবারও লাল ফেসবুক ওয়াল
সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লার সহযোগী বেনু গ্রেপ্তার
পরিবর্তনে খাপ খাইয়ে না চললে আ’লীগের মতো ছিটকে পড়তে হবে : মঈন খান