রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা

মোহিনী মা বাবার একমাত্র সন্তান। মোহিনীর বাবা মোহসীন আহমেদ স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। বংশানুক্রমে তারা অভিজাত। তাঁর অর্থবিত্ত আর আভিজাত্যের কাছে নব্য ধনীরা একেবারেই নস্যি। যদিও নব্য ধনীদের হম্বিতম্বি দেখলে মনে হয় মোহসীন সাহেবরা বুঝি ক্ষুদে ব্যবসায়ী। তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েও কখনো টাকার গরম কখনো দেখাননি। খুবই সততার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছেন। প্রায় বছরই সেরা ট্যাক্সদাতার পদক পান। মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করেন। নিজ এলাকায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন। আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে জড়িত রেখেছেন। মোহিনীর মা মনোয়ারা বেগমও সাধারণ মানুষকে সাহায্য করেন। বিপদ-আপদে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান। হৃদয়বান কিংবা আদর্শ মানুষ হিসেবে যদি কেউ পুরস্কার দেয়া হতো তাহলে মোহসীন আহমেদ পেতেন। অবশ্য সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি এবং মনোয়ারা বেগম অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।

ছোটবেলা থেকেই মোহিনী দেখে এসেছেন মা বাবার মানবিক কাজগুলি। তার মা বাবা তার কাছে আদর্শ। তিনি নিজেও ওই রকম মানবিক হতে চেয়েছেন। মানবিকতা ছাড়া কোনো মানুষই প্রকৃত মানুষ হয় না। মানুষ মানেই তো মানবিক। এ কথা তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন।

এরকম পরিবার শুধু ঢাকা শহর নয়, পুরো দেশেই হয়তো হাতে গোনা। এই পরিবারে জন্ম নিয়ে মোহিনী নিজেকে ধন্য মনে করেন। মোহিনী কেন, যে কোনো মানুষই ধন্য মনে করতে বাধ্য। মোহিনীর মা বাবার মানবিকতার যেমন তুলনা হয় না; তারও সেরকমই। সেই মানবিকতার কারণেই হয়তো মোহিনী আরেফিনের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন। তা না হলে জেনেশুনে এরকম একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তানকে ভালোবাসবে কেন? শুধুই কি সামান্য উপকারের জন্য? সেই উপকারের বিনিময়ে তিনি তাকে টাকা দিতে পারতেন। কিংবা কোনো দামি উপহার! তার জন্য নিজেকেই সঁপে দিতে হবে কেন?

মোহিনী অসম্ভব এক আবেগী মেয়ে। একজন কৃতজ্ঞ মানুষও। সামান্য উপকারও তাকে কেউ করলে তা তিনি ভোলেন না। তিনি সব সময় তা মনে রাখেন। তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করেন। মোহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একবার খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। টানা এক মাস তিনি ক্লাসে যেতে পারেননি। সে সময় নোট দিয়ে মোহিনীকে সহায়তা করেন আরেফিন। আরেফিনের সহযোগিতার কারণেই পরীক্ষায় তিনি ভালো ফল করেন। সেই সহায়তার কথা ভুলতে পারেননি মোহিনী।

মোহিনী যখন আরেফিনকে বলেছিলেন, তুমি যে উপকার করলে তার কোনো বিনিময় মূল্য নেই। তারপরও আমি তোমাকে কিছু উপহার দিতে চাই। তুমি আমার কাছে কি চাও? তুমি যা চাইবে আমি সম্ভব হলে তাই দেবো। মন থেকে বলবে।

আরেফিন বলেছিলেন, তুমি অভয় দিলে বলতে পারি। যদিও চাওয়াটা অনেক বড়। বলতে পারো, আমি দুঃসাহস দেখাচ্ছি। তারপরও আমি বলতে চাই।

মোহিনী আরেফিনকে অভয় দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তুমি নির্ভয়েই বলো আরেফিন। আমি কিছু মনে করব না।

আরেফিন তার ভয়, লজ্জা সবকিছুকে দূরে ঠেলে বুকে সাহস নিয়ে বলেছিলেন, আমি তোমাকেই চাই। আর কিছুই আমি চাই না। শুধু তোমাকে।

মোহিনী খুব ভালো করেই জানতেন, আরেফিনের পরিবারে সে-ই একমাত্র শিক্ষিত। তার ভাইবোনরা কেউ হাইস্কুলের গণ্ডিতেও পা রাখতে পারেনি। দরিদ্র পরিবার বলে তার মা বাবা অন্য ভাইবোনদের পড়াতে পারেনি। ওই পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব কল্পনাতীত ব্যাপার। মোহিনী কখনোই ওর মা বাবাকে বলতে পারবেন না। তার মা বাবা কিছুতেই মানবেন না। তাদেরকে আরেফিনের পরিবার সম্পর্কে বললে তারা ভীষণ কষ্ট পাবেন। এই কষ্ট কখনোই তাদের মন থেকে যাবে না।

মোহিনী তার মা বাবাকে অসম্ভব পছন্দ করেন। তাদের কথার বাইরে কখনোই তিনি যাননি। কোনো কিছুই করেননি। মা বাবা তার অন্তপ্রাণ। সেই মা বাবাকে আরেফিনের পরিবারে কথা গোপন রেখেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। তারপরও যখন তারা আরেফনের পরিবার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলেন তখন মোহিনী বলেছিলেন, আমি কি পরিবারকে বিয়ে করব; নাকি আরেফিনকে? পরিবার দেখার দরকার নেই। তোমরা আরেফিনকে দেখ।

এক রকম মা বাবার অমতেই মোহিনী আরেফিনকে বিয়ে করেন। মোহিনীর মা বাবা এতে ভীষণ কষ্ট পান। সেই কষ্ট সহ্য করেও মেয়ের ভালোলাগার বিষয়টি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তারা বলেন, মেয়ের ভালো লাগা মন্দ লাগা তার অভিরুচির ব্যাপার। সেখানে তো আমরা জোর খাটাতে পারি না! তারা জোর খাটানওনি। মেয়ে যাতে ভালো থাকে সেদিকটায় তারা নজর দিয়েছেন। মেয়েকে গাড়ি এবং ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন।

মোহিনী অবশ্য নিজের যোগ্যতা দিয়েই সু ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছেন। সেখান থেকে তিনি সামান্যই বেতন নিতেন। বলা চলে মাসিক সম্মানী। নেহায়েত প্রয়োজন ছাড়া তাও নিতেন না। মোহিনীর সম্মানীর বেতনের টাকা দিয়ে গাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে। মোহিনীর বাবা জোর করে কিনিয়েছে; এই যা! বিষয়টি আরেফিন খুব ভালো করেই জানে। এটা জানার পর আরেফিন কেন যে কোনো ছেলেই মোহিনীকে মাথায় করে রাখবে। কিন্তু আরেফিন মাথায় করে রাখা তো দূরের কথা; তিনি তাকে রীতিমতো অবহেলা করছেন। এতো কিছুর পরও আরেফিন কেন অবহেলা করবেন? কেন তিনি নিজেকে গুটিয়ে নেবেন? তাকে যদি কখনো অসম্মান করা হতো তাহলেও তিনি বলতে পারতেন!

মোহিনী আরেফিনের আচার আচরণে সত্যিই বিস্মিত। যে মানুষটিকে তিনি এতো ভালোবাসা দিয়েছেন; সে মানুষের এমন আচরণ সহ্য করার মতো নয়।

তাছাড়া আরেফিনের পারিবারিক দুরবস্থার কথা মোহিনী জানার পর তাকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। প্রয়োজনে আরো সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু আরেফিনের বাবা তার ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাননি। কেন পাঠাননি তা নিয়ে অবশ্য মোহিনী আরেফিনের সঙ্গে দুচার কথা বলেছেন। মোহিনী কথা, আমি টাকা দিয়েছি তো তোমার ভাইবোন যাতে স্কুলে যায়; লেখাপড়াটা অব্যাহত রাখে সেজন্য। তাদের টাকা পয়সা আরো লাগলে বলতে পারতেন!

আরেফিন এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। মোহিনীও এর এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করেননি। অথচ আরেফিন হঠাৎ করেই পাল্টে গেলেন। তার আচার আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেলো। তিনি মোহিনীর সঙ্গে এমন আচরণ শুরু করলেন যা মোহিনী মানতে পারেন না। যদিও প্রথম দিকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। আরেফিনকেও বুঝিয়েছেন, মোহিনীর কানটা পছন্দ আর কোনটা পছন্দ নয়। ওকে আসলে সভ্যতা ভব্যতা শেখানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আরেফিন গোবরে পদ্মফুলের মতোই। পরিবারের একমাত্র ‘গুণধর’ পুত্র। পরিবার থেকে যা শিক্ষা পাওয়ার কথা, তা তো পায়নি। তাই তিনি স্ত্রীর মর্যাদা দিতে জানেন না। এটাই মোহিনী তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন। আরেফিন তা মোটেই কানে তোলেননি।

মোহিনীর এক কথা, আরেফিন যদি তাকে সত্যি সত্যিই ভালোবাসে তাহলে তো তার ত্রুটিগুলি শোধরানোর কথা। আরেফিন তার বদ অভ্যাসগুলো কেন পাল্টাতে পারছেন না। তিনি কি চেষ্টাই করছেন না! নিশ্চয়ই। চেষ্টা করলে না পারার কি আছে? মানুষের চেষ্টার অসাধ্য কি কিছু আছে?

মোহিনী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি সরাসরি আরেফিনের সঙ্গে কথা বলবেন। তার জন্য সংসার করতে ভালো না লাগে তাহলে তিনি খোলাখুলি বলতে পারেন। অশান্তির সংসার শুধু শুধু টেনে নেয়ার মানে হয় না। কেন, কার জন্য?

মোহিনী ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত প্রায় বারটা। আজও আরেফিন বাসায় ফেরেননি। তার মোবাইলে ফোন দিয়েছেন কয়েকবার। ফোনটা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তার মানে পুরনো অভ্যাস। তিনি বাসায় ফিরতে দেরি করলেই ফোন বন্ধ রাখেন। একটা ফোন দিয়ে জানাতেও তো পারেন যে, তার দেরি হবে। না, তাও জানাবেন না। স্ত্রীকে উদ্বিগ্ন রাখতে তিনি মজা পান।

মোহিনী মনে মনে ভাবেন, না না! আমি দিনের পর দিন এটা সহ্য করব না। ও আজ ফিরুক। তারপর ওর সঙ্গে বোঝাপড়া হবে। আজ ওর একদিন, কি আমার একদিন!

মোহিনী শোবার ঘর থেকে বারান্দায় যান। বাইরের দিকে উঁকি দিতেই বর্জপাতের শব্দে তিনি লাফিয়ে ওঠেন। এমন শব্দ যেন কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার অবস্থা হয়। এরমধ্যে বিদ্যুতও চলে যায়। মোহিনী ভীষণ ভয় পেয়ে যান। তিনি ভয়ে ভয়ে অন্ধকার ঘরে ঢোকেন। আবারও আকাশ ভেঙেপড়া বর্জপাতের শব্দে তিনি দুই কানে হাত দিয়ে বসে পড়েন। ভয়, শঙ্কা আর অস্থিরতা তাকে পেয়ে বসে।

বাইরে থেকে বাতাসের সঙ্গে ধুলোবালি ঢুকতে থাকে। অন্ধকারে মোহিনী কী করবেন কিছুই বুঝতে পারেন না। তিনি এদিক সেদিক ছোটাছুটি করেন। তার চোখেও ধুলোবালির কণা ঢুকে পড়ে। তিনি ওড়না দিয়ে মুছতে মুছতে বলেন, ও মাই গড! এসব কী শুরু হলো! এ তো দেখছি মহাবিপদ! চার্জার লাইট কোথায় রেখেছি তাও তো মনে নেই। হায় আল্লাহ! কি করবো আমি এখন? আল্লাহ, তুমি রহমত করো!

অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর চার্জার লাইটটি পেয়ে মোহিনী ভীষণ খুশি। তিনি লাইট জ্বলিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, যাক বাবা, আলোটা তো পাওয়া গেলো! আগে জানালাগুলো বন্ধ করি। হঠাৎ এতো ঝড়! চৈত্র মাসে কালবৈশাখী!

মোহিনী জানালা বন্ধ করতে না করতেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তুমুল ঝড়ের সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। যেন আকাশ ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টির ছাট আছড়ে পড়ছে জানালায়। জানালা দিয়ে সেই পানি চুইয়ে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিছানা ভিজে একাকার হয়ে গেছে। মোহিনী অনেক কষ্টে জাজিম তুলে দিয়েছেন। ততক্ষণে তোশক ভিজে চুপচুপে হয়ে গেছে।

কিছুক্ষণ পরপর ভয়ঙ্কর শব্দে বর্জপাত হচ্ছে। মোহিনী বর্জপাতের শব্দে চমকে চমকে উঠছেন। ভয়ে তার বুক কাঁপছে। এতো ভয় আগে কখনো পাননি তিনি। এ সময় আরেফিন বাইরে। তার ভীষণ বিরক্ত লাগছে। আবার খারাপও লাগছে। কোথায় আছেন আরেফিন তা নিয়ে দুশ্চিন্তাও হচ্ছে তার।

মোহিনী ওর মাকে ফোন দেয়ার জন্য টেলিফোন হাতে নেন। বাসার ল্যান্ডফোনটিও ডেড হয়ে আছে। তিনি এবার মোবাইল হাতে নিয়ে তার মাকে ফোন দেন। তার কাছে পরিস্থিতি জানতে চান।
মোহিনীর মা আনোয়ারা বেগম উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন, মা তুই কেমন আছিস মা! প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ চলে গেছে দেড় ঘণ্টা আগে। কি যে অবস্থা!

আছি, ভালো আছি মা। আমার কেন জানি ভয় লাগছে। খুব ভয় লাগছে।
কেন মা?

মা মেয়ে কথা বলার সময়ও প্রচন্ড শব্দে বর্জপাত হচ্ছিল। আতঙ্কে তাদের কথা বলাই যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আনোয়ারা বেগম আরেফিনের কথা জানতে চাইতেই মোহিনী তার কথা এড়িয়ে যায়। সে তার বাবার কথা জানতে চায়।

আনোয়ারা বেগম মোবাইল ফোনটি মোহসীন আহমেদের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, এই ধরো, মোহিনী কথা বলবে। ওর নাকি ভয় লাগছে।

মোহসীন আহমেদ ফোন ধরেই বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বললেন, কি রে মা! ভয় লাগছে তোর? আরেফিন নেই?

মোহিনী ওর বাবার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে উল্টো তার কাছেই জানতে চাইলেন, বাবা, তোমরা কেমন আছো সেটা বলো?

আমরা ভালো আছি মা। শোন, দরজা-জানালা সব ভালো করে বন্ধ করে দে। ঝড়টা কিন্তু ভয়ঙ্কর!

হ্যাঁ বাবা। বন্ধ করেছি। তোমাদের ওই দিকে বৃষ্টি হচ্ছে?

হুম। বৃষ্টি হচ্ছে মানে! এতো বৃষ্টি আমি খুব শিঘ্র দেখিনি।

আমাদের এখানে বিদ্যুৎও নেই। কী যে অবস্থা! ডিনার করেছিস?

না বাবা।

যা অবস্থা দেখছি, এই ঝড় সহসা থামবে না। খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়।

এরমধ্যে ঘুম আসবে? আমার খুব অস্থির লাগছে। বুকটার মধ্যে কেমন ধরফর করছে। কিছুই ভালো লাগছে না।

আরেফিন বাসায় নেই?

বাবা, আমি এখন রাখছি। পরে কথা বলছি।

তড়িঘড়ি করে ফোন রেখে দেন মোহিনী। তিনি আরেফিনের জন্য চিন্তা করেন। তিনি এই ঝড়বাদলের মধ্যে কোথায় আছে তা নিয়ে ভাবেন। আবারও আরেফিনের মোবাইলে ফোন দিয়ে দেখেন। ফোন বন্ধ পেয়ে বিরক্তির সঙ্গে বলেন, কেন ও ফোন বন্ধ রেখেছে? এটা কোনো কথা হলো!

মোহিনী উদ্বেগ আর আতঙ্ক নিয়ে রান্না ঘরে যান। একটা প্লেটে ভাত, মাছ ও মুরগীর ঝোল নিয়ে নিজের ঘরে যান। খাবার টেবিলে বসে কোনো মতে খাবারটা শেষ করেন। তারপর তিনি নিজের ঘরে এসে বিছানার এক পাশে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকেন। নানা দুর্ভাবনা তার মনকে আচ্ছন্ন করে। এক পর্যায়ে তিনি ঘুমের ঘোরে তলিয়ে যান।

 

চলবে....

 

আরও পড়ুন:

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

 

Header Ad
Header Ad

ড. ইউনূসের জন্মদিনে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা

তারেক রহমান ও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৮৫তম জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীতে প্রধান উপদেষ্টার অফিসে বিএনপির চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফুল ও কেক পৌঁছে দেন।

প্রধান উপদেষ্টার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল ফেরদৌস হাসান সেলিম ফুলের তোড়া ও শুভেচ্ছা সামগ্রী গ্রহণ করেন।

ফুলেল শুভেচ্ছা পেয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তার সুস্বাস্থ্য ও সফলতা কামনা করেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। তার এই অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।

Header Ad
Header Ad

পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চলছে: সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে প্রস্তাবিত পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের দাবিকে ‘নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীতে জিয়াউর রহমান স্মরণে আয়োজিত এক স্মারক প্রকাশনা ও আর্কাইভ উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, “যারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট—তারা নির্বাচন বিলম্ব কিংবা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচাল করতে চায়। পিআর পদ্ধতি বাংলাদেশের বাস্তবতায় প্রয়োগযোগ্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “সংস্কার মানে বাইবেল নয়, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কারের মূল প্রবক্তা বিএনপি নিজেই। আমরা এরইমধ্যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব জাতির সামনে উপস্থাপন করেছি। তাই জাতীয় ঐক্যের নামে একপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গি চাপিয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।”

সালাহউদ্দিন আহমদ জোর দিয়ে বলেন, “কেউ যদি মনে করেন সবাইকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মত মেনে নিতেই হবে, তাহলে ঐকমত্য কখনোই সম্ভব নয়। একতরফা মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে জাতীয় বাস্তবতাকে বুঝতে হবে।”

বিএনপি এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত নির্দিষ্ট দিন-তারিখ ঘোষণা না করায় নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

“সরকার যদি সত্যিই নির্বাচন চায়, তাহলে তাদের উচিত দ্রুত সময়সূচি ঘোষণা করা। বর্তমানে স্থানীয় নির্বাচনের মতো আয়োজন উপযুক্ত নয়; জাতীয় নির্বাচনই এখন দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামি দলগুলোর পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতির দাবি জোরালো হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তাদের মহাসমাবেশে এ পদ্ধতি চালুর দাবি তোলে। বিএনপি এই পদ্ধতির বিরোধিতা করে বলছে, এটি বাস্তবসম্মত নয় এবং এতে নির্বাচনের স্বাভাবিক গতিপথ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ইস্যুতে দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যা আগামী নির্বাচনের আগে একটি বড় রাজনৈতিক বিতর্কে রূপ নিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি: চরমোনাই পীর

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম । ছবি: সংগৃহীত

ইসলামপন্থীদের ঐক্যের প্রতি গণমানুষের প্রবল প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, “যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে জোটবদ্ধ ইসলামি দলই হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। ইনশাআল্লাহ, রাষ্ট্রক্ষমতা আমাদের হাতেই আসবে।”

শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

চরমোনাই পীর বলেন, “আমরা স্বাধীনতার পর ৫৪ বছরে বহু রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় দেখেছি, কিন্তু ইসলামি দল আজও রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে পারেনি। এর বড় কারণ—আমরা বারবার নেতৃত্ব ও নীতির বাছাইয়ে ভুল করেছি। এবার আর সে ভুল নয়, এবার আমরা ঐক্যবদ্ধ হবো।”

তিনি জানান, শুধু ইসলামি দলগুলো নয়, বরং দেশপ্রেমিক আরও কিছু রাজনৈতিক শক্তিকে একত্রে নিয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেই ঐক্যই হতে পারে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার সেতুবন্ধ।

চরমোনাই পীর বলেন, “আমি বহু আগেই বলে আসছি—ইসলামপন্থী ভোট এক বাক্সে আনতে হবে। আমরা যদি কার্যকর ঐক্য গড়ে তুলতে পারি, তাহলে জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রাখবে এবং ইসলামি শক্তিই হবে এই দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব।”

তিনি নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “আগামী নির্বাচনে ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি’ চালু করতে হবে। যে দল যত ভোট পাবে, তারা তত আসনে প্রতিনিধিত্ব পাবে। এটা এখন জনদাবি—বহু রাজনৈতিক দল এই দাবিতে একমত।”

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “বিএনপির উচিত পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের চিন্তা করা। এতে করে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠা পাবে।”

এ সময় তিনি ইসলামী আন্দোলনের সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোর প্রতি দলটির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “সংস্কার প্রশ্নে আমরা আপসহীন। দেরি করা মানেই ২০২৪-এর গণ-আন্দোলনের সঙ্গে বেইমানি। আমরা বিশ্বাস করি, ৭২-এর সংবিধান জনআকাঙ্ক্ষার প্রতি বধির ছিল, তাই সেটিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন অপরিহার্য।”

তিনি আরও বলেন, “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সবসময় শান্তিপূর্ণ উপায়ে জনমত গঠনে বিশ্বাসী। তবে জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে দেশজুড়ে নতুন গণজাগরণ শুরু হবে।”

মহাসমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি ও ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে এই বক্তব্য নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের বার্তা দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে ইসলামপন্থীদের সক্রিয় ও সংগঠিত ভূমিকাই যে এখন আলোচনার কেন্দ্রে, সেটাই যেন প্রতিফলিত হলো এই বক্তব্যে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ড. ইউনূসের জন্মদিনে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা
পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চলছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি: চরমোনাই পীর
খামেনির প্রাণ বাঁচালাম, ধন্যবাদটুকুও দিলো না: ট্রাম্প
পুরস্কার না নিয়ে মনু মিয়ার জানাজায় অভিনেতা খায়রুল বাসার
মা হারালেন ব্যান্ড তারকা তানজির তুহিন
ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে বিএনপি: আমীর খসরু
ফিলিস্তিনের মতো সাইপ্রাসও দখলে নিচ্ছে ইসরায়েল!
কালও চলবে এনবিআরের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’
‘এনবিআরের প্রশাসনিক আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই’
সিইসির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক নিয়ে যা বললেন প্রেস সচিব
নওগাঁয় ছাত্রদলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নব গঠিত কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত
করোনায় আরও দুইজনের মৃত্যু,  শনাক্ত ৭
এক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে: ট্রাম্প
ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে ১৬ দফা ঘোষণা
নতুন রক্তের গ্রুপের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা
গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা
সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২
কূটনৈতিক অস্ত্র পানি নিয়ে ভারতের কঠোর অবস্থান, শঙ্কায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান