সোমবার, ৬ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা

ঝড়ের আগেই আরেফিন তার বন্ধুর গাড়িতে করে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুটা পথ এগোবার পরই শুরু হয় উন্মাতাল ঝড়। ধুলোবালি আর শিলা-বৃষ্টির প্রতাপে সওগাত গাড়ি চালাতে পারছিলেন না। মুহূর্তের মধ্যে সবকিছু একেবারে অন্ধকার হয়ে গেলো। গাড়ির লাইট জ্বালিয়ে ডিপার দিয়ে কোনো মতে একটা বাড়ির সামনের শেটে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখলেন। অনেকক্ষণ সেখানেই অবস্থান করেন। সেখানেও গাড়ি রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। গাছের ডালপালা ভেঙে গাড়ি ওপর পড়ার উপক্রম হলো। কী আর করা। তখন বাধ্য হয়েই তাদের বাসার উদ্দেশে রওয়ানা দিতে হলো। সওগাত আস্তে আস্তে গাড়ি টানতে শুরু করলেন।

সওগাত আলী খুব সাবধানী মানুষ। গলা পর্যন্ত মদ গিললেও গাড়ির স্টিয়ারিং ধরার পর যেন স্বাভাবিক হয়ে যান তিনি। পথ চলতে তার কোনো অসুবিধা হয় না। গাড়ি চালাতে চালাতে তিনি ঠিকই আরেফিনের বাসার কাছ পর্যন্ত চলে গেলেন। রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে বললেন, আরেফিন ওই তো তোর বাড়ির গেট। এখন যেতে পারবি না?

আরেফিন গাড় নেড়ে সায় দেন। তার কথা বিশ্বাস করে তিনি রাস্তার পাশে তাকে নামিয়ে দেন। আরেফিন গাড়ি থেকে নামার পর বার বার তাকে সতর্ক করেন। খুব সাবধানে যা। দেখিস আবার কোথাও পড়ে যাস না যেন!

আরেফিন টলতে টলতে সামনের দিকে আগান। সওগাত গাড়ি নিয়ে নিজের বাসার উদ্দেশে চলে যান। আরেফিন বেশ কিছুক্ষণ বাড়ির গেট ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। ঘূর্ণিঝড়ের মতোই তার মাথা ঘুরছেন। তিনি আর একা হাঁটতে পারছেন না। বাতাসের বেগের সঙ্গে বেড়েছে মদের তেজ। এমন তেজ আগে কখনো টের পাননি আরেফিন।

গেটে মানুষের উপস্থিতি টের পায় দারোয়ান সুরুজ মিয়া। তিনি উঁকি দিয়ে দেখেন। চোর-ডাকাত নাকি বাসার কেউ তা বোঝার চেষ্টা করে। মনে মনে তিনি ভাবেন, বাসার কে হতে পারে? ইদানিং নিয়মিতভাবে দেরিতে বাসায় ফেরেন আরেফিন সাব। উনি কি না কে জানে!

সরুজ মিয়া সাতপাঁচ ভেবে ঝড় উপেক্ষা করে গেটের দিকে এগিয়ে যায়। আরেফিনকে সে বিস্ময়ের সঙ্গে বলে, স্যার আপনে! এই জরের মইধ্যে কই আছিলেন?

আরেফিন কোনো কথা বলেন না। তিনি সুরুজ মিয়ার কাঁধে হাত দিয়ে গেটের ভেতরে পা বাড়ান। টলতে টলতে লিফট পর্যন্ত গিয়ে বলেন, সুরুজ মিয়া, তোমার আসার দরকার নাই। এখন আমি যেতে পারব।

কথা বলতে গিয়ে বার বার জড়িয়ে যাচ্ছিল। তিনি চেষ্টা করেও ঠিকঠাকভাবে কথাগুলো বলতে পারেননি। সুরুজ মিয়া স্পষ্ট বুঝতে পারে, আরেফিনের টাল অবস্থা।

সুরুজ মিয়া বলল, স্যার যাইতে পারবেন তো!

তুমি চিন্তা কোরো না সুরুজ মিয়া। আমি পারব।

সুরুজ মিয়া আর সামনে আগায়নি। কিন্তু আরেফিনের অবস্থা দেখে সে বেশ উদ্বিগ্ন। সে লিফটের সামনে পায়চারি করে আর ভাবে, স্যারের এমন অবস্থা কেন হইল? স্যারকে তো কোনো দিন মদ খাইতে দেখি নাই! কোনো সমস্যা হইছে নাকি কে জানে। আমার কি উপরে গিয়া দেখা উচিত স্যার যাইতে পারল কি না! না থাক।

সুরুজ মিয়া লিফটের সুইসে চাপ দিল। সে দেখল, লিফট খালি এসেছে। এতেই সে নিশ্চিত হলো আরেফিন ঠিকঠাক মতোই পৌঁছেছে। সুরুজ মিয়া নিজের শোবার ঘরে যায়। বিছানা ঠিকঠাক করে। মনে মনে বলে, ঝড় থামার তো কোনো লক্ষণ দেহি না। এর মইধ্যে ঘুমামু কি কইরা? বিস্টিও নামছে এক্কেরে আকাশ ভাইঙ্গা। কহন থামব কেডা জানে!

সুরুজ মিয়ার চোখে রাজ্যের ঘুম নেমে আসে। হাই তুলতে তুলতে সে ঘুমাতে যায়। টানা বৃষ্টি আর থেমে থেমে বিদ্যুৎ চমকানির শব্দে তার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। ছোট্ট বিছানায় শুয়ে সে কেবল এপাশ ওপাশ করে। কিছুতেই সে চোখের পাতা এক করতে পারে না।

যে মানুষটির চিন্তায় সুরুজ মিয়ার ঘুম হারাম সে মানুষটির দিনদুনিয়ার কোনো খবর নেই। সে বাসার সামনে এসে আছড়ে পড়ে। দরজায় যে কলিং বেল চাপবে সেটাও আর হয়ে ওঠে না। ঘুম নাকি মদের নেশায় চুড় হয়ে থাকা তা বোঝার উপায় নেই। জ্ঞান হারালে যে অবস্থা হয় মানুষের; আরেফিনের সে রকম অবস্থা! কিছুক্ষণ পর গোঙানির শব্দ পাওয়া যায়। বাইরে প্রচণ্ড ঝড়। তাই আরেফিনের গোঙানির শব্দও কারো কানে যায় না। তিনি পড়ে আছেন মরার মতো। যেন একটা মরা লাশ বাসার সামনে পড়ে আছে।

বনানীর নীল ময়ুরীর ফ্ল্যাট বাড়িতে সবচেয়ে ভদ্র এবং অমায়িক হিসেবে পরিচিত মোহিনীদের পরিবার। সেই পরিবারের কর্তা আজ বাড়ির দরজার ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে। তাকে দেখার কেউ নেই। ধরার কেউ নেই। রাস্তার টোকাইয়ের মতো, ছিন্নমূল মানুষের মতো অবস্থা হয়েছে তার। যেখানে রাত সেখানে কাত।

মানুষ কেন এভাবে নিজেকেই নিজে নিঃশেষ করে দেয়! কেন সে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারে না! কেন সে নিজের অবস্থান বোঝে না! কেন সে ভুল পথে পা বাড়ায়! কেন সে ঈর্ষার আগুনে পোড়ে! কেন সে একটা কাজ করার আগে দশবার ভাবে না? এসব প্রশ্ন প্রশ্নই থেকে যায় আরেফিনের কাছে। তিনি মোহিনীকে বুঝতে ভুল করছেন। তিনি যে তার কাছে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসাটুকু চেয়েছিলেন, তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। উল্টো যে মোহিনীকে অবহেলা অবজ্ঞা করেছেন। অথচ মোহিনী কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েও আরেফিনকে ফেলে দেননি। তাকে আগলে রাখার প্রানান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

কথায় আছে না, কপালে না থাকলে পাওয়া জিনিসও হারিয়ে যায়। মোহিনী আরেফিনের জন্য এক হিরের টুকরো ছিল। তাকে একটুখানি যত্ন করলেই আরেফিনের জীবন পাল্টে যেত। তিনি সেটা চিনতে পারেননি। নিজের ভুলে তিনি যে শুধু নিজেকেই নিঃশেষ করছেন তা নয়, তিনি মোহিনীর জীবনকেও দুর্বিসহ করে তুলছেন।

আরেফিন কি শেষ পর্যন্ত তার ভুল শুধরে আবার নতুনভাবে শুরু করতে পারবেন? নাকি এটাই তার জীবনের শেষ পরিণতি? কি হবে তা কেউ জানে না। আরেফিনও না।

চলবে...

এসএ/

আরও পড়ুন

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

Header Ad

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দেশে গাছ কাটা অব্যাহত থাকায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। আগামীকাল সোমবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রোববার (৫ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।

আবেদনে পাঁচটি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এগুলো হল-

১. গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকা শহরে গাছ কাটার অনুমতি দেবেন।

২. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৩. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবে, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৪. কমিটি গঠন হওয়ার আগে পর্যন্ত সকল বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

৫. গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা-২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না-সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনকারীরা হলেন-অ্যাডভোকেট ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, পরিবেশ বিভাগ মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শককে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‌‘সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতিকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এ কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর ৩টি উপজেলার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল। অপরদিকে, তিনটি উপজেলায় ৩৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন: কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও বেগমগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিম। শাহাদাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, হলফনামায় মামলা সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ না করে তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের হলফনামায় চারটি মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিলে ঘোষিত হয়। মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুর হোসেন মাসুদ ও মো. মনির হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আগামী ৬মে থেকে ৮মে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার সুযোগ পাবেন। আগামী ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর উপজেলা, বেগমগঞ্জ উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে এখন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক বলেছেন, ‘সরকার বলেছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে, তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’

আজ রবিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক আরও বলেন, এখন দেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। এর মধ্যে দুটি সমস্যা গুরুতর। একটি হলো বিদ্যুৎ, আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা।

জাপা মহাসচিব বলেন, এখন গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমার এলাকায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে। তাহলে সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
এ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করলে চুন্নু বলেন, লোডশেডিং হয় না গ্রামে? চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে, আমার এলাকায় একটা দিন থাকতে, লোডশেডিং হয় কি না তা দেখার জন্য।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন আরেক জায়গায়। ভাড়ায় যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আছে, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরও বসে আছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার পরও ভাড়া বাবদ তাদের ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

চুন্নু বলেন, এর আগে সংসদে বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, তিনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন দুই-চার দিনের মধ্যে। দেখে আসবেন কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

তিনি বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৫ জন মারা গেছেন ঈদের আগে ও পরে। প্রতিদিন এখন ১৪ জন মারা যান। বছরে পাঁচ হাজারের মতো লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এটি সরকারের সংস্থার হিসাব। ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন মারা যান। সেই ট্রাকের চালকের ভারি যানবাহন চালানোর কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২২ এপ্রিল যে বাসের ধাক্কায় একজন শিক্ষার্থী মারা যান, সেটির ফিটনেসই ছিল না। ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি। এ গাড়ি তো দুর্ঘটনা ঘটাবেই। সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয় পুরোনো, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে। সড়ক পরিবহনমন্ত্রী, আপনি একটু শক্ত হোন। এসব গাড়ি-অটো যদি রাস্তায় চলাচল না করে, তাহলে এভাবে মানুষ মারা যাবে না। দয়া করে আপনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিন।

সর্বশেষ সংবাদ

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর
আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি
৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ
দেশে ফেরা হলো না প্রবাসীর, বিমানে ওঠার আগে মৃত্যু
বজ্রপাত থেকে বাঁচার ‘কৌশল’ জানাল আবহাওয়া অফিস
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল জনতা
সত্য বলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের
সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
উপজেলা নির্বাচন বর্জনে রিজভীর লিফলেট বিতরণ
টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু
জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব
১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
গাজায় দেড় লাখের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী পানিশূন্যতায় ভুগছেন