শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ৯০৭ কোটি টাকার কারসাজি !

ছবি: সংগৃহীত

ভবঘুরেদের জন্য সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র বাড়াতে ভবন নির্মাণের নামে ৯০৭ কোটি টাকার প্রকল্প নিতে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে। জানা যায়, জনবলের অভাবে ভবঘুরেদের জন্য সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে যথাযথ সেবা দিতে না পারলেও ভবন নির্মাণে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। খবর প্রথম আলোর ।

মন্ত্রনালয়ের নজর এড়াতে ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রের নতুন ভবন নির্মাণে ৯০৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজকে ৮১টি ভাগে ভাগ করে অনুমোদন করাতে ‘তদবির’ করছে দপ্তরটি। যাতে এই প্রকল্পের কেনাকাটায় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন না লাগে। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ’ শীর্ষক নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্মাণ ও পূর্ত কাজে ১০০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে যেকোনো কেনাকাটার প্রস্তাব সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করতে হবে। এই কমিটির সভাপতি অর্থমন্ত্রী। এতে মোট ১৩ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী থাকেন। সচিব থাকেন ৯ জন।

সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তারা বলছে, সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, অনিয়ম রোধ করা, স্বজনপ্রীতি ঠেকানোসহ নজরদারি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করাই সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাজ। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র বলছে, মন্ত্রিসভা কমিটিকে এড়াতেই প্রকল্পটির কেনাকাটার ৮১টি প্যাকেজ করা হয়েছে।

সরকারি ক্রয়বিধির (পিপিআর) ১৭ নম্বর ধারায় বলা আছে, ‘ক্রয়কারী উহার ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় কোনো নির্দিষ্ট ক্রয় পদ্ধতি বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা পরিহারের উদ্দেশে সাধারণত একটি প্রকল্প বা কর্মসূচির কোনো অংশ নিম্নতর মূল্যমানের একাধিক প্যাকেজে বিভক্ত করিবে না।’

অবশ্য ভৌগোলিক অবস্থা বিবেচনায় বাস্তবায়নের সুবিধার জন্য একাধিক প্যাকেজ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে ক্রয়বিধিতে। তবে সরকারি ক্রয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাঁচটি এলাকার ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য ৮১টি প্যাকেজ করা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।

সমাজসেবার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ঘেঁটে দেখা যায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পে ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে কাজের ধরন প্রায় এক হলেও সেসব কাজ ছোট ছোট ৮১টি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। কোনোটি ১০ কোটি, কোনোটি ২০ কোটি টাকার প্যাকেজ। সর্বোচ্চ একটি প্যাকেজে ধরা হয়েছে প্রায় ৫৮ কোটি টাকা।

নথিপত্র বলছে, ৭৪টি প্যাকেজ ‘ক্রয় অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে প্রকল্প পরিচালককে রাখা হয়েছে। ছয়টি হোস্টেল ভবন নির্মাণসহ বাকি সাতটি প্যাকেজ অনুমোদনকারী হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে রাখা হয়েছে।

নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, গাজীপুরের কাশিমপুরে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের আসবাব কিনতে প্রায় তিন কোটি টাকা ও পুবাইলের জন্য প্রায় সাড়ে চার কোটি, ময়মনসিংহের জন্য তিন কোটি, নারায়ণগঞ্জের জন্য প্রায় চার কোটি, মিরপুরের জন্য দুই কোটি এবং মানিকগঞ্জের জন্য দুই কোটি টাকা আলাদা করে ব্যয় ধরা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণপূর্ত অধিদপ্তরের একজন নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, চাইলে আসবাব কেনার কাজ একসঙ্গে করা যেত।

একইভাবে বিছানাপত্র, ক্রীড়াসামগ্রী, যন্ত্রপাতি, বিদ্যুতের উপকেন্দ্র (সাবস্টেশন) নির্মাণ, লিফট, অস্থায়ী ছাউনি নির্মাণ ও একাডেমিক ব্লক স্থাপনে আলাদা করে প্যাকেজ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পে ছোট ছোট প্যাকেজে কাজ করার কৌশল বিষয়ে জানতে চাইলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল বলেন, বিষয়টি তিনি খোঁজ নেবেন। এ ধরনের কিছু হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেবেন।

সমাজসেবার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে কাজ করাতেই নির্মাণকাজ গণপূর্ত অধিদপ্তরকে না দিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তর ছোট ছোট ভাগে আগেও প্রকল্প নিয়েছে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের নামে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিকে (একনেক) এড়িয়ে নেওয়া এসব প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গত বছরের আগস্টে ছয়টি প্রকল্পে সংবাদ মাধ্যম প্রথম আলোর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম হয়েছে। আর কাজ পেয়েছে সরকারের প্রভাবশালীদের ‘খাতিরের’ ব্যক্তিদের সংস্থা। ওই সব প্রকল্প তখন ‘খাতিরের প্রকল্প’ নামে পরিচিতি পায়।

এদিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, আশ্রয়কেন্দ্রে নতুন ভবন করা দরকার। তবে প্রকল্প নিতে হবে স্বচ্ছভাবে।

সাধারণত সরকারি ভবন নির্মাণের মতো পূর্তকাজ করে থাকে গণপূর্ত অধিদপ্তর। তাদের সে বিষয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু সমাজসেবা ভবন নির্মাণ করাতে চাইছে তৃতীয় পক্ষ, অর্থাৎ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে। তারা কেন গণপূর্তকে বাদ দিয়ে ভবন নির্মাণের প্রকল্প নিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

সমাজসেবার প্রকল্পটি এখন পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। কমিশন সূত্র বলছে, তদবির থাকলেও কমিশনের কোনো কোনো কর্মকর্তা এভাবে প্রকল্পটির অনুমোদন দিতে অনীহা দেখাচ্ছেন।

সরকারি কেনাকাটার প্রস্তাব মূল্যায়নকারী সংস্থা সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) সাবেক মহাপরিচালক ফজলুল করীম বলেন, একই ধরনের কাজে আলাদা আলাদা প্যাকেজ করার অর্থ এখানে কোনো দুরভিসন্ধি আছে। পছন্দের কাউকে কাজ পাইয়ে দিতে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনা থেকে সরে আসা উচিত।

৯০৭ কোটি টাকার প্রকল্প

ভবঘুরে ও ভিক্ষায় নিয়োজিত মানুষদের সরকারি তত্ত্বাবধানে রেখে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য উপায়ে সমাজে পুনর্বাসিত করার চেষ্টাটি পুরোনো। এ জন্য ১৯৪৩ সালে করা হয় ভবঘুরে আইন। নতুন করে ২০১১ সালে সরকার ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন করে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীন গাজীপুরে দুটি এবং নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও রাজধানীর মিরপুরে একটি করে দেশে মোট ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে চারটি নির্মাণ করা হয় ১৯৭৭ সালে। দুটি আরও আগে, ১৯৬১ সালে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ভবঘুরে, ছিন্নমূল মানুষ ও ভিক্ষুকদের আশ্রয় দেওয়া হয়। তবে ভবনগুলো জরাজীর্ণ।

এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ভবন নির্মাণে ‘বিদ্যমান ছয়টি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে প্রথম পাঠানো হয় গত বছরের জুনে। তার পর থেকে প্রকল্পটি নিয়ে প্রক্রিয়াগত কাজ চলছে।

সেবা নেই আশ্রয়কেন্দ্রে

সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে ১ হাজার ৯০০টি আসন রয়েছে। এসব কেন্দ্রে আছেন ৯০৯ নিবাসী। মানে হলো, এখন যত আসন আছে, সেখানেই লোক থাকে না। পাশাপাশি জনবলের সংকট প্রকট।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল বলেন, জনবলের সংকটের বিষয়টি তিনি জানেন। সেই কারণে নতুন প্রকল্প নেওয়ার পাশাপাশি জনবল নিয়োগের ওপর জোর দিচ্ছেন তাঁরা। তিনি আরও বলেন, মনে রাখতে হবে রাজস্ব খাতে জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়াটা বেশ দীর্ঘ। ৪৫৮ জনবল নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা আছে, ভবঘুরে ব্যক্তিদের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা প্রদান, ভরণপোষণ, শিক্ষা, বৃত্তিমূলক ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান, শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানবিক উৎকর্ষ সাধন, কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে মানসিকতার সংশোধন ও উন্নয়ন; স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, সমাজে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা—এসব তাদের লক্ষ্য।

এসব কাজ কেমন চলছে, তা জানতে ৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুর-১ নম্বরে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, একটি ভবনের নিচতলায় চার বছরের একটি শিশুকে আশ্রয়কেন্দ্রের নিবাসী আরেক শিশু (৯) দুপুরের খাবার খাওয়াচ্ছে। যদিও শিশু দুটির মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। একটি শিশু বাক্‌প্রতিবন্ধী। তার পরিচর্যায় কোনো পরিচর্যাকর্মী দেখা গেল না।

জানা গেল, ৩ ফেব্রুয়ারি মা-বাবার সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে চার বছরের শিশুটি রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে হারিয়ে যায়। পুলিশ খোঁজাখুঁজি করে অভিভাবককে না পেয়ে তাকে মিরপুরে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুটিকে আজিমপুরে ছোটমণি নিবাসে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

৫ ফেব্রুয়ারি আশ্রয়কেন্দ্রের তৃতীয় তলায় গিয়ে দেখা গেল, সেখানে বিভিন্ন বয়সী প্রায় ৩০ জন একসঙ্গে খাবার খাচ্ছেন। সেখানে কোনো পরিচর্যাকর্মী নেই। একজনের শরীরে মারধরের চিহ্ন দেখা গেল। তাঁকে চিকিৎসক দেখানো হয়নি। সেখানে ভবঘুরেদের দেখাশোনায় ১০টি প্রহরীর পদ থাকলেও কোনো প্রহরী কর্মরত নেই। একজন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেটি খালি। প্রশিক্ষণ, কাউন্সেলিং—এসব দূরের কথা।

মিরপুরের আশ্রয়কেন্দ্রটিতে আসন আছে ২০০টি। নিবাসী রয়েছেন ৫৬ জন। কেন্দ্রের তথ্যমতে, ওই কেন্দ্রে অনুমোদিত পদ ৩০টি। এখন কর্মরত আছেন ১২ জন। তাই তাঁরা সেবা দিতে পারছেন না।

মিরপুর সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক, পরিচর্যাকারী না থাকায় নিবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়। ১০ জন পরিচর্যাকারী চাওয়া হয়েছে। এখনো পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, শুধু মিরপুর নয়, সব সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রেই বেশির ভাগ পদ শূন্য।

‘ভাগ-বাঁটোয়ারার নকশা’

দেশের কিছু কিছু সরকারি সংস্থার তৈরি করা ভবন নির্মাণের পর ফেলে রাখা হয়েছে। কারণ, সেগুলো জনবল ও অন্যান্য কারণে ব্যবহার হচ্ছে না। যেমন মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের প্রশিক্ষণের জন্য গত ছয় বছরে দেশের ১৪ জেলায় ১৫টি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) ভবন নির্মাণ করেছে সরকার। কিন্তু প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রশিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় ভবনগুলো খালি পড়ে আছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভবন করলে কর্মকর্তারা লাভবান হন। পণ্য ও উপকরণ কেনাকাটায় নানা ধরনের কমিশন বাণিজ্য হয়। ঠিকাদারের ব্যবসা হয়। সে কারণে ভবন নির্মাণেই আগ্রহ বেশি। সমাজসেবা ভবন নির্মাণের আগ্রহই শুধু দেখাচ্ছে না, প্রকল্প নিচ্ছে কৌশল করে।

সমাজসেবার নতুন প্রকল্পটির বিষয়ে জানিয়ে মতামত জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটা স্পষ্ট যে প্রভাবশালী ব্যক্তি পারস্পরিক যোগসাজশ করে ভাগ-বাঁটোয়ারার নকশা করছে। দুর্নীতিপরায়ণরা নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছেন। তিনি বলেন, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতির কথা বলছে। কর্তৃপক্ষকে সমাজসেবার প্রকল্পটি নিয়ে খতিয়ে দেখতে হবে।

 

সংবাদ সূত্র: প্রথম আলো

 

Header Ad
Header Ad

প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান

ছবি: সংগৃহীত

‘প্রত্যেকটা জেলায় শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন হাসপাতাল আছে তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সিনেমা হল থাকা দরকার। সুস্থ বিনোদন থাকলে মানুষ নেশা, হানাহানি ও মব জাস্টিস থেকে দূরে থাকবে। আমাদের যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থান দরকার তেমনি বিনোদনের জন্য সিনেমা হল দরকার।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘উৎসব’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী শেষে কথাগুলো বলছিলেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।

‘উৎসব’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান। চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। শুটিংয়ের বহুদিন পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর চরিত্রের মধ্যে থেকে এখনো বের হতে পারেননি বলেন জানালেন এই অভিনেতা।

 

ছবি: সংগৃহীত

জাহিদ হাসান বলেন, ‘এখনো আমি এই চরিত্রটার মধ্যে ডুবে আছি। সিনেমার আমার চরিত্রের নাম জাহাঙ্গীর। আসলে আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে জাহাঙ্গীর লুকিয়ে আছে। কারণ, আমাদের প্রত্যেকটি মানুষের মাঝে হিরোইজম আছে, ভিলেন আছে। আছে উপলব্ধি করার ক্ষমতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের সেই রিয়েলাইজেশনের সময়টা আছে। কখন মৃত্যু হয় আমরা জানি না। এই রিয়েলাইজ যদি আমাদের মধ্যে থাকে তাহলে আজ আমরা যারা জাহাঙ্গীরের মত আছি, কাল আমরা ভালো হয়ে যাবো।’

ঈদের সিনেমা মানেই এখন যেন অ্যাকশন অথবা থ্রিলার। গত কয়েক বছরে ঈদে বাজিমাত করা সিনেমাগুলোর দিকে তাকালে এমনটাই মনে হতে পারে। সেসব থেকে বেরিয়ে হাস্যরস পরিবার এবং সম্পর্কের গল্পে এবার ঈদে বাজিমাত করেছে ‘উৎসব’। এই সফলতার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করলেন প্রত্যেক শিল্পীর সততাকে।

জাহিদ হাসানের কথায়, ‘প্রডাক্টশন বয় থেকে শুরু করে এই সিনেমার সঙ্গে আমরা যারা যুক্ত ছিলাম তারা প্রত্যেকেই অনেক সৎ ছিলাম। অভিনয় নিয়ে কোনো অসৎ অবস্থার মধ্যে আমরা যাইনি। এটাই মনে হয় আমাদের সফলতার বড় বিষয়। এই সিনেমার প্রত্যেকটি দৃশ্যের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে।’

করোনা মহামারির পর অভিনয়ে খুব একটা দেখা যায়নি জাহিদ হাসানকে। নির্মাতাদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে খুব একটা কথা হয়নি তার। কারোনার পর ‘উৎসব’-ই তার প্রথম সিনেমা। তার ভাষ্য, ‘করোনার পর খুব একটা অভিনয় করা হয়নি। আমাকে অভিনয়ে নেওয়া বা না নেওয়াটা নির্মাতাদের দায়িত্ব। বলতে গেলে গত কয়েকবছর সেভাবে সুযোগও আসেনি। ‘উৎসব’ সিনেমার মধ্যে সেই সুযোগটা এলো। অভিনয় করলাম। দর্শক প্রতিক্রিয়া দেখে বুঝেছি অন্তত ফেল করিনি।’

 

ছবি: সংগৃহীত

সিনেমার হলের সংখ্যা কম হওয়ায় দেশের সিনেমা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন জাহিদ হাসান। সেইসঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি।

জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। আমার বোন ফোন করে বললেন এখানে তো সিনেমা হলে নেই। তাই আমরা সিনেমা দেখতে পারছি না। এই কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। এটা সত্য সিরাজগঞ্জের মত দেশের অনেক বড় শহরে সিনেমা হল নেই। জেলা প্রশাসকসহ দায়িত্বশীল পর্যায়ে যারা আছে তাদের সবাইকে অনুরোধ করবো তারা যেন প্রত্যেকটি জেলায় সিনেমা হলের ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তার বাস্তবায়ন করেন।’

তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’ সিনেমায়ি জাহিদ হাসান ছাড়াও অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, তারিক আনাম খান, আজাদ আবুল কালাম, ইন্তেখাব দিনার, সুনেরাহ বিনতে কামাল, সৌম্য জ্যোতি, সাদিয়া আয়মান।

 

Header Ad
Header Ad

দেশে ফিরতে ইরান থেকে পাকিস্তান পৌঁছেছেন ২৮ বাংলাদেশি

ছবি: সংগৃহীত

উদ্ভূত যুদ্ধ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ইরানে বসবাসরত প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের প্রথম দলটি (২৮ জন) সড়কপথে ইরান থেকে পাকিস্তানের উদ্দেশে রওনা করে দেশটির সীমান্তে পৌঁছেছে। পাকিস্তান সরকারের সহযোগিতায় তারা সীমান্ত থেকে শিগগিরই করাচি পৌঁছাবেন। সেখান থেকে বিমানে করে বাংলাদেশ ফিরে আসবেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, ইরানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক অন্য বাংলাদেশিদের ফেরত আসার বিষয়ে তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। দূতাবাস ইরানে অবস্থিত বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে।

উল্লেখ্য, এই যুদ্ধ পরিস্থিতির শুরুতেই দূতাবাসের সঙ্গে বাংলাদেশের নাগরিকদের যোগাযোগের সুবিধার্থে দূতাবাস দুটি হটলাইন নম্বর চালু করে। হটলাইন নাম্বারগুলোর হোয়াটসঅ্যাপে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারবেন।

বাংলাদেশ দূতাবাস, তেহরানের হটলাইন নম্বর: +৯৮৯৯০৮৫৭৭৭৩৬৮, +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঢাকাস্থ কার্যালয়ের হটলাইন নম্বর: +৮৮০১৭১২০১২৮৪৭

Header Ad
Header Ad

যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ

যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

যদিও সাক্ষাৎটি ‘সৌজন্য’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এর আগে, ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।

ওই বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, যদি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়, তাহলে ২০২৬ সালের পবিত্র রমজানের আগের সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। তবে সে লক্ষ্যে বিচার ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

এদিকে, আগাম নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে স্থানীয় সরকার, বিশেষ করে সিটি করপোরেশনগুলোর নির্বাচন চায় কয়েকটি রাজনৈতিক দল। এই প্রেক্ষাপটেই সিইসির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকে নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য আলোচনার সূচনা হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে।

যদিও বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি, তবুও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগাম ভোটের সম্ভাবনা ঘিরে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান
দেশে ফিরতে ইরান থেকে পাকিস্তান পৌঁছেছেন ২৮ বাংলাদেশি
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ
খুলনায় বিএনপির নেতার বাড়ি ভাঙচুর, এসআই সুকান্ত চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার
বিশেষ সুবিধা: ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের কার কত বেতন বাড়ছে
হানিয়া আমিরের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয়, ভারতে দিলজিৎকে নিষিদ্ধের দাবি
আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও পতন হবে: কাদের সিদ্দিকী
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গড়ছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৯৭৭ স্থাপনার নাম পরিবর্তন
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে ‘পাবলিক’ রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল
প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি
বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত
এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের
২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করে স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নীরবতা ভেঙে খামেনি বললেন, ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে (ভিডিও)
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব
রংপুরে দেশীয় অস্ত্র ও অবৈধ মাদকসহ ২ যুবক গ্রেফতার
৪৩ দিন পর নগর ভবনে এলেন ডিএসসিসি প্রশাসক, পেলেন অভ্যর্থনা
ভেঙেই গেল জনপ্রিয় মার্কিন গায়িকা কেটি পেরির সংসার!