রবিবার, ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

এমপি ফজলে করিমের ২৪ বছরের গুম-খুনের রাজত্ব

এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের খুব পরিচিত এবং আলোচিত নাম ফারাজ করিম চৌধুরী। যিনি মানবতার ফেরিওয়ালা নামেও পরিচিত। চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলায় জনসেবামূলক কাজে তাকে দেখা যেত। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লিগ সরকার পতনের পর বেরিয়ে আসলো ফারাজ করিমের পরিবারের অন্ধকার দিক। তার বাবা এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ছিলেন এলাকার ত্রাস। দুই যুগ ধরে সেখানে ঘটেছে একের পর এক গা শিউরে ওঠার মতো ভয়ংকর অপরাধ।

ফারাজ করিম চৌধুরী এবং তার বাবা এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলা যেন একটি ভয়ংকর জনপদের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। হাজার হাজার মানুষকে নির্মম অত্যাচার, নিপীড়ন, গুম-খুন, হামলা-মামলা, জমি দখল, ধর্ষণ, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, যৌন নিপীড়নসহ এমন কোনো ঘৃণ্য কাজ নেই, যা হয়নি এই উপজেলায়। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, বিএনপি-জামায়াতসহ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক কর্মী, মুনিরিয়া যুব তাবলিগ কমিটির ভক্ত থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও নির্যাতিত হয়েছেন। হত্যা ও গুমের শিকার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। ভাঙচুর করা হয়েছে বাড়িঘর, মসজিদ, মন্দির, মাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

এতোকিছু ঘটে যাওয়ার পরেও প্রতিবাদ দূরের কথা, মুখ খুলতেও সাহস পায়নি কেউ। কারণ, সব অপরাধের মূল হোতা ছিলেন ওই এলাকার সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। দীর্ঘ ২৪ বছর রাউজানে ত্রাসের রাজত্ব চলেছে তার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছে রাউজানের নির্যাতিত মানুষ। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়ানক সব অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য।

গুম, খুন ও নির্যাতনের অভিযোগে এখন পর্যন্ত রাউজান ও চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা হয়েছে। চট্টগ্রাম-৬ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য ভারতে পালাতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার আখাউড়া সীমান্তে বিজিবির কাছে ধরা পড়েছেন।

সীমান্তে বিজিবির কাছে ধরা পড়েন এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ফজলে করিম চৌধুরী ২০১৯ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত রাজাকার তালিকায় থাকা একেএম ফজলুল কবির চৌধুরীর সন্তান। এরপর ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাচাতো ভাই বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ৭ হাজার ৩২৯ ভোটে হারিয়ে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের এমপি নির্বাচিত হন ফজলে করিম চৌধুরী। ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন তিনি।

জানা যায়, ফজলে করিম চৌধুরী ওরফে জুইন্যা এতটাই দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ছিলেন যে তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল রাউজানবাসী। তিনি উপজেলাজুড়ে কায়েম করেছিলেন একনায়কতন্ত্র।তার কথার বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না প্রশাসনেরও। উন্নয়ন কাজের টেন্ডার থেকে শুরু করে সরকারি নিয়োগসহ সবকিছুই হতো তার নির্দেশে। তাকে ম্যানেজ করা ছাড়া জনপ্রতিনিধি হওয়ার উপায় ছিল না কারও। নির্বাচিত হয়েও এমপির রোষানলে পড়ে পৌরসভার অফিসে যেতে পারেননি সাবেক মেয়র দেবাশীষ পালিত।

বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে সাবেক এমপি ফজলে করিমের বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুকে ফজলে করিমের নির্দেশে হত্যা করা হয়।

রাউজানের কাগতিয়া, গহিরা, সুলতানপুর, মোহাম্মদপুর, কতদলপুর, গশ্চি নয়াহাট, পাহাড়তলী, পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে জানা গেছে, বিএনপির নেতাকর্মী ও মুনিরিয়া যুব তাবলিগ কমিটির বিভিন্ন ইউপিতে অবস্থিত অফিসগুলো ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছিল গত কয়েক বছর আগে। মুনিরিয়া তাবলিগের বেশ কয়েকজন সদস্য বলেন, তাদের সংগঠনটি একটি অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন। কিন্তু ফজলে করিম তাদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি মনে করতেন। এ কারণে এমপি মুনিরিয়া তাবলিগ কমিটি ধ্বংসের পাঁয়তারা করেন।

জানা গেছে, রাউজান উপজেলার সব ইটভাটা থেকে প্রতি বছর ফজলে করিম চৌধুরীকে ২ লাখ টাকা করে দিতে হতো। এ ছাড়া উপজেলার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজের কাজের টেন্ডার পাওয়ার পর ঠিকাদারদের বাধ্যতামূলকভাবে এমপিকে ২০ শতাংশ কমিশন দিতে হয়েছে।

অন্যের জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছেন বাগানবাড়ি: রাউজানের সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর রয়েছে ২০ একর ভূমির ওপর বাগানবাড়ি। এই বাগানবাড়ির পাশে ২ একর জায়গায় নতুন করে গড়া পেট্রোল পাম্পের দ্বিতল ভবন দখলে নিয়েছিলেন তিনি। দখল পাকাপোক্ত করতে গড়তে চান মাদ্রাসা। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর স্থানীয় লোকজন এই পেট্রোল পাম্প এলাকায় রাউজান ওলামা কল্যাণ সমিতি নামে একটি সংগঠনের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে।

বাগানবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বখতিয়ার উদ্দিন ফকির গণমাধ্যমে বলেন, ‘জায়গা-জমি দখল, অস্ত্রের মুখে জমি রেজিস্টারি, ঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজতবাস করানোর হোতা ছিলেন সাবেক এই সাংসদ। তিনি আমার প্রায় তিন একর জায়গা জোরপূর্বক দখল করে বাগানবাড়ি সম্প্রসারণ করেছেন। বিনামূল্যে জায়গা রেজিস্টারি না দেওয়ায় আমার ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়। আমি পার্শ্ববর্তী উপজেলায় পালিয়ে বাঁচতে পারলেও তার মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে পারিনি। পরে পুলিশ দিয়ে হাটহাজারী উপজেলার নজুমিয়া হাট থেকে আটক করে আমাকে অস্ত্র দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে সে। সরকার পতন হলে দীর্ঘ একযুগ পর বাড়িতে আসি আমি।’

মতের অমিল হলেই ছাড়তে হতো এলাকা: সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর নির্যাতন নিপীড়নে গত ১৫ বছরে এলাকা ছাড়া হয়েছেন কয়েক হাজার বিএনপি নেতাকর্মী। তরীকতভিত্তিক সংগঠন মুনিরিয়া যুব তবলীগ কমিটিরও শতাধিক কর্মীকে এলাকাছাড়া করেছেন তিনি। বাদ যাননি নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ পালিত, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ডা. শেখ শফিউল আজম, নাজিম উদ্দীন তালুকদার, ইয়াছিন মাহমুদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন খান, সাধন মুহুরী, চন্দন দে, শান্তি পদ বৈদ্যসহ অসংখ্য নেতাকর্মী ছিলেন এলাকাছাড়া। এদের মধ্যে দেবাশীষ পালিত নির্বাচিত হওয়ার পরও পাঁচ বছর পৌর মেয়রের চেয়ারে বসতে পারেননি। সাবেক এই এমপির রোষানলের শিকার হয়ে হামলা মামলায় জেল হাজতে যেতে হয়েছে বিএনপির সাবের সুলতান কাজল, রেজাউল রহিম আজম, রাসেল খান, মোহাম্মদ রিপন, জানে আলম, নুরুল ইসলাম মেম্বার সহ অনেক নেতাকর্মীকে।

উন্নয়ন কাজে এমপির চাঁদাবাজি: গত ১৫ বছরে রাউজানে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এসব উন্নয়ন কাজের জন্য ফজলে করিম চৌধুরীকে ২০ শতাংশ হারে কমিশন দিতে হয়েছে ঠিকাদারদের। এসব উন্নয়ন কাজ বন্টন করতেন এমপির মনোনীত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাবেক বিএনপি নেতা শাহাজান ইকবাল। নিয়ম অনুসারে পত্রিকায় উন্নয়ন কাজের দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি আহবান করলেও কোন ঠিকাদার উম্মুক্ত টেন্ডারে অংশ নিতে পারতো না। নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা ঠিকাদারি ব্যবসা করতে চাইলেও নিদিষ্ট ব্যক্তিকে ছাড়া কাজ করতে দেওয়া হতোনা। সেই কারণে সাধারণ নেতাকর্মীরা সাথে নেতার দুরুত্ব বাড়তে থাকে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় সরকার বিভাগ, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দপ্তর হতে প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে কমিশন বাণিজ্য হয়ছিল প্রায় ৫ শত কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম-রাঙামাটি চার লেন সড়ক। ছবি: সংগৃহীত

কমিশন বাণিজ্য চলা এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম- রাঙামাটি সড়কের হাটহাজারী হতে রাবার বাগান পর্যন্ত চার লেন সড়ক, হালদা নদীর বেড়িবাঁধ, হাফেজ বজলুল রহমান সড়ক, শহিদ জাফর সড়ক, অদুদিয়া সড়ক, ইছাপুর সড়ক, হলদিয়া ভিলেজ রোড়, হালদা ব্রিজ, উপজেলা পরিষদ ভবণ, শেখ কামাল কমপ্লেক্সে, ১৪ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে, চারটি চারতলা বিশিষ্ট কলেজ ভবন, শিল্প নগর, ট্রমা সেন্টার, দুইটি পিংক সিটি, ২৬ মেগা ওয়ার্ড বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পলিটেকনিকেল স্কুল, দুইটি থানা ভবণ অন্যতম।

Header Ad
Header Ad

লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর, নেহালসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর (ইনসটে নেহাল আহমেদ ওরফে জিহাদ)। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জে যাত্রীবাহী এমভি ক্যাপ্টেন লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে পেটানোর ঘটনায় আলোচিত ঘটনায় এবার আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। মুক্তারপুর নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিলন হোসেন রোববার (১১ মে) সকালে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে মুন্সীগঞ্জ শহরের বাসিন্দা নেহাল আহমেদ ওরফে জিহাদকে। তার সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর জিহাদকে আটক করে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং রোববারই তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মামলায় যৌন নিপীড়ন, বেআইনি অনুপ্রবেশ, লঞ্চে ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মামলা হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায়।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, “ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে আমরা অভিযুক্ত জিহাদকে শনিবার আটক করি। আমরা ভুক্তভোগী দুই তরুণীকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছিলাম, কিন্তু তারা আসেননি। একইভাবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষকেও অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল, সাড়া মেলেনি। পরে মুক্তারপুর নৌ পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।”

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পোশাক পরা এক তরুণী লঞ্চের সামনের অংশে দাঁড়িয়ে আছেন, আর জিহাদ নামের এক যুবক তাকে বেল্ট দিয়ে বর্বরভাবে মারধর করছেন। আশপাশে থাকা ৫০-৬০ জন বিভিন্ন বয়সী পুরুষ সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে উল্লাস করছেন ও স্লোগান দিচ্ছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় লঞ্চে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল, তা জনমনে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

Header Ad
Header Ad

ভারতে ব্লক পিনাকী, ইলিয়াস, কনক ও জুলকারনাইনের ইউটিউব চ্যানেল

সাংবাদিক ড. কনক সরওয়ার, সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের, ব্লগার ও লেখক পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট, লেখক ও ব্লগার পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার এবং জুলকারনাইন সায়েরের ইউটিউব চ্যানেল। ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশটির নাগরিকরা এখন থেকে এসব ইউটিউব চ্যানেলে আর প্রবেশ করতে পারবেন না।

শনিবার (১০ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিনাকী ভট্টাচার্য। তিনি লেখেন, “আমার, ইলিয়াসের এবং কনকের ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করে দেওয়া হয়েছে ভারতে। ভারতমাতা তার শত্রুদেরকে চিনে।” একই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি ইঙ্গিত দেন যে, বাংলাদেশে কারা তাদের বিরোধিতা করছে, তা এখন সহজেই বোঝা যাচ্ছে।

এদিকে, জুলকারনাইন সায়ের তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “আমার অপরাধটা কিরে ভাই? কবে ইউটিউব চ‍্যানেল একটা খুলছিলাম, তেমন কিছুই পোস্ট করি না, ওইটাও ভরত মাতা তাগো দেশে ব্যান কইরা দিলো।”

এই ঘটনার একদিন আগে, শুক্রবার (৯ মে) ভারতের অনুরোধে ইউটিউব থেকে বাংলাদেশের চারটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলও ব্লক করে দেওয়া হয়। চ্যানেলগুলো হলো—যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন ও মোহনা টিভি। ভারত থেকে বিবিসির এক প্রতিবেদক নিশ্চিত করেছেন, এই চ্যানেলগুলো ইউটিউবে আর দেখা যাচ্ছে না। এসব চ্যানেল চালাতে গিয়ে ভারতীয় ইউজারদের সামনে ভেসে উঠছে একটি বার্তা—“সরকারি নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার কারণে এই কনটেন্ট এই দেশে (ভারতে) পাওয়া যাচ্ছে না।”

ভারতের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় সরকার যদি মনে করে, কোনো অনলাইন কনটেন্ট জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব কিংবা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি, তাহলে তা ব্লক করার আদেশ দেওয়ার পূর্ণ অধিকার রাখে। ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) জানিয়েছিল, ভারতে তাদের ৮ হাজার অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে সরকারি নির্দেশনায়। এসব পদক্ষেপকে ঘিরে ভারতের গণমাধ্যম ও ডিজিটাল স্বাধীনতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

চীন-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতায় আফগানিস্তান, ভারতীয় প্রভাব নিয়ে উদ্বেগে নয়াদিল্লি

ছবি: সংগৃহীত

চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে অংশ নেন আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি, চীনের বিশেষ দূত ইউ জিয়াওয়ং এবং পাকিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদিক।

বৈঠকে আঞ্চলিক পুনর্বিন্যাস এবং চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) প্রকল্পটি আফগানিস্তানে সম্প্রসারণের বিষয়ে একমত হয়েছে তিন দেশ। সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই প্রকল্প কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হলে আফগানিস্তানে ভারতীয় প্রভাব কেবল কূটনৈতিক মিশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কৌশলগত দিক থেকে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি।

২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে ঘটে যাওয়া এক ঘটনায় পাকিস্তানের অবস্থানকে নীরবে সমর্থন করেছে তালেবান, এমন দাবিও করেছে সূত্রটি। এতে বোঝা যাচ্ছে, ভারতীয় অবস্থান থেকে তালেবান নেতৃত্ব ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি করছে এবং চীন-পাকিস্তান জোটের দিকে আরও ঝুঁকে পড়ছে।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আফগান তালেবান শিগগিরই কাবুলে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ষষ্ঠ দফা আলোচনার আয়োজন করবে। তালেবানের নেতৃত্বে এটিই হবে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের এই ধরনের আলোচনা, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন বার্তা দেবে।

তিন পক্ষ দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় পশ্চিমা প্রভাব উপেক্ষা করে আফগানিস্তানের সঙ্গে গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা চালিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। বিশেষ করে চীন আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাতকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক সংযোগ এবং সড়কপথে যোগাযোগ আরও মজবুত করবে।

চলমান ত্রিপক্ষীয় আলোচনার অংশ হিসেবে, পাকিস্তানের বিশেষ দূত চীনা প্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে আফগান বাণিজ্যমন্ত্রী আজিজির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে মিলিত হন। আলোচনাগুলোকে গঠনমূলক আখ্যা দিয়ে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন বিশেষ দূতগণ।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মে মাসে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ধারাবাহিকতাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য ছিল আফগানিস্তানে সিপিইসি সম্প্রসারণ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।

এই নতুন কৌশলগত মেরুকরণ ভারতসহ অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তির জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আফগানিস্তানে চীন-পাকিস্তান জোটের এই সক্রিয়তা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

লঞ্চে দুই তরুণীকে বেল্ট দিয়ে মারধর, নেহালসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ভারতে ব্লক পিনাকী, ইলিয়াস, কনক ও জুলকারনাইনের ইউটিউব চ্যানেল
চীন-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতায় আফগানিস্তান, ভারতীয় প্রভাব নিয়ে উদ্বেগে নয়াদিল্লি
এলডিসি থেকে উত্তরণে দ্রুত-সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: কবে শুরু হচ্ছে আইপিএল
‘আওয়ামী লীগ পালিয়েছে’ বলায় বিএনপির ৪ কর্মীকে কুপিয়ে জখম
রাজনৈতিক দলের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ
ভারতে যাওয়ার সময় দর্শনা চেকপোস্টে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
সরকার শেখ হাসিনার পথেই হাঁটছে: রিজভী
লা লিগার মোড় ঘুরাতে আজ এল ক্লাসিকোতে মুখোমুখি বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ
দুই পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে ভাইয়ের বাসায় খালেদা জিয়া
যুদ্ধবিরতির ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ভারত-পাকিস্তানকে ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব
মেসির দুর্দান্ত গোলেও রক্ষা হয়নি, মিনেসোটার কাছে বিধ্বস্ত ইন্টার মায়ামি
‘এই মোটু’ বলে কটাক্ষ, রেগে গিয়ে গুলি
গেজেটের পরই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত: সিইসি
আবারও শাহবাগ অবরোধ
বিশ্ব মা দিবস আজ
আইনের মাধ্যমে আ.লীগ নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া ইতিবাচক মনে করে বিএনপি
ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই
জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে