প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতেই আগামী বছরের জুনের মধ্যে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে যে সংস্কার কার্যক্রম চলমান রয়েছে, তা এগিয়ে নিতে সময়মতো নির্বাচন অত্যাবশ্যক।
বুধবার (২৮ মে) জাপানের রাজধানী টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে এক বৈঠকে তিনি এ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। সেখানে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো আসো।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে—সংস্কার, অপরাধীদের বিচার এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আগের সরকার দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করে দিয়েছে এবং প্রশাসনের ভিত্তি নড়িয়ে দিয়েছে। তরুণ প্রজন্ম এই অবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। তারা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে এবং সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই তিনি অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, এই সরকার ইতোমধ্যে ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বৈঠকে আসো ও তার সফরসঙ্গী জাপানি সংসদ সদস্যরা বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে প্রস্তাবিত ‘অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি’ (ইপিএ) দুই দেশের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করবে এবং বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তারা জানান, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্য রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গত ১০ মাসে জাপান আমাদের প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দিয়েছে। আমি এই সফরে বিশেষভাবে জাপান সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানাতে এসেছি।”
এ সময় তিনি জাপানি নেতাদের চলমান সংস্কার কার্যক্রম সরেজমিনে দেখতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গারা বিশ্বের অন্য কোনো শরণার্থী গোষ্ঠীর মতো নয়। তারা নিজের দেশে ফিরতে চায়, অন্য কোথাও নয়। এই সংকট সমাধানে জাপানের আরও সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ।