ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে চারটি অগ্রাধিকার কার্যক্রমে সরকার: বিডা প্রধান

বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে চারটি অগ্রাধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। রাজধানীর বিনিয়োগ ভবনে বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “উচ্চ-প্রভাবসম্পন্ন বিনিয়োগ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, ওয়ান-স্টপ সার্ভিসের সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়ন, বিনিয়োগকারীদের সমস্যার দ্রুত সমাধান এবং বড় বিনিয়োগের একটি শক্তিশালী পাইপলাইন তৈরি—এই চারটি অগ্রাধিকারকে সামনে রেখে বিডা ও বেজা কাজ করছে।”
চৌধুরী আশিক আরও বলেন, “সরকার বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন হলেও, আমরা বিনিয়োগের গতি ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশে যারা বিনিয়োগ করছেন বা করতে চাচ্ছেন, তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা এবং বিনিয়োগ সুরক্ষা দিতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে।”
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫ প্রসঙ্গে বিডা প্রধান বলেন, এ সামিটের মাধ্যমে সরকার বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা ও উন্নয়ন কৌশল আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। ৭ থেকে ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চার দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ৫০টি দেশের ৪১৫ জন বিদেশি প্রতিনিধি অংশ নেন।
তিনি বলেন, “এই সম্মেলনে আমরা আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন সহযোগী ও অংশীজনদের কাছ থেকে অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। অনেকেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি, প্রযুক্তি, অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা ও উৎপাদন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।”
সামিট থেকে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩,১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে, এবং আরও অনেক প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
বিডা প্রধান আরও জানান, “সামিট-পরবর্তী সময়ে আমরা অংশগ্রহণকারীদের একটি বিস্তৃত ডেটাবেজ তৈরি করেছি। তাদের বিনিয়োগ চক্র অনুযায়ী ব্যক্তিগত সহায়তা প্রদান করছি এবং প্রতিটি ধাপে পাশে থাকার চেষ্টা করছি।” তিনি বলেন, সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখা সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার।
বিনিয়োগকারীদের নীতিগত পরামর্শ প্রসঙ্গে চৌধুরী আশিক বলেন, “আমাদের কাছে বিনিয়োগকারীরা শুধু ব্যবসায়িক অংশীদার নন, বরং দেশের উন্নয়নের সহযাত্রী। তাই তাদের মতামত আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি।”
তিনি আরও জানান, সামিটে অংশগ্রহণকারীদের মতামত সতর্কভাবে নথিভুক্ত করা হয়েছে, যা সরকারের অগ্রাধিকারে থাকা খাতগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ—যেমন নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও সবুজ প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল অর্থনীতি, টেকসই টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্প, স্বাস্থ্য ও ওষুধ খাত, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও খাদ্য মূল্য শৃঙ্খলা।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের কথায় স্পষ্ট, সরকার বিনিয়োগে গতি আনতে এবং বৈশ্বিক ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের আস্থা ধরে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলেই প্রত্যাশা বিশ্লেষকদের।
