চার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যর্থ হলে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পড়বে বাংলাদেশ: আলী রীয়াজ

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে টেকসই গণতন্ত্রের পথে বড় ধরনের চারটি চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
সোমবার (২৩ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘The State Reforms and Election Discourse in Transitional Democracies: From Mass Uprising to Election and State Building’– এ প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
চারটি বড় চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন:
১. শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন,
২. রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত সংস্কার,
৩. দায়মুক্তির সংস্কৃতি দূরীকরণ, এবং
৪. আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির সঙ্গে কার্যকর খাপ খাওয়ানো—
এই চারটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ আবারও রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিমজ্জিত হতে পারে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে টেকসই ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য শুধু একটি অস্থায়ী সরকারের প্রত্যাশা যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন সব রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত উদ্যোগ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।”
অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, “আমরা এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, যেখানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে— ভবিষ্যৎ গণতন্ত্রের দিকে এগোবে, নাকি অতীতের স্বৈরাচারের ছায়ায় ফিরবে। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার অনেক দেশ রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে থমকে গেছে। বাংলাদেশ যেন সেই পথে না যায়।”
নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যেসব দেশ শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার পালাবদলে সফল হয়েছে, তারা শুধু সরকার বদলায়নি— বরং গণতন্ত্রে ফিরতেও সমান গুরুত্ব দিয়েছে। নির্বাচনকে যদি বিশ্বাসযোগ্য করতে না পারি, তাহলে রাজনৈতিক বিরোধ কখনোই নির্মূল হবে না।”
রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও অনেকাংশে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার রেশ বহন করে চলেছে। যদি সাংবিধানিক ও আইনগত সংস্কার না করা হয়, তাহলে গণতন্ত্রের কাঠামো দাঁড়াবে না। এমন কাঠামো তৈরি করতে হবে, যা ভবিষ্যতে ক্ষমতার অপব্যবহার রুখে দেবে।”
