শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০
Dhaka Prokash

প্রথম ভালোবাসা ও মনের অনুভূতি

কৈশোরকাল মানুষের জীবনের একটা শ্রেষ্ঠ সময়। কারণ সেইসময়ের স্মৃতিগুলো কখনো ভুলা যায়না। কৈশোরের সোনালী দিনের স্মৃতিগুলো স্মরণ করে, একজন মানুষ তার জীবনের বাকি সময়টুকু অতিবাহিত করে সুখে কিংবা দুঃখ অন্তরে রোপণ করে। কৈশোরের সেই সোনালী দিনের স্মৃতিগুলোর মাঝে একটি স্মৃতি জর্জরিত সেটি হচ্ছে প্রথম প্রেম বা ভালোবাসা যা কেউই ভুলতে পারেনা। (বিশেষ করে ছেলেরা)

ভালোবাসা মানেই সমর্পণ ভালোবাসা মানেই বিসর্জন। ভালোবাসা মানে শুধু দেহের বা রুপের আকর্ষণ নয়, ভালোবাসা মানে সম্মান,শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও ভরসা। একজন সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষ খুঁজে পাওয়া অনেক কঠিন ব্যাপার। আমি এই কথা বললাম কারণ আমাদের বর্তমানের ভালোবাসা মানে শুধুই যে দেহের লালসা আর কিছু নয়। কিন্ত তাবলে যে সত্যিকারের ভালোবাসা তৈরি হয়না এই কথা আমি বলবনা কারণ আমার প্রেমের ঘটনা শুনে আপনারা এমনিতেই বুঝতে পারবেন যে সত্যি কারের অর্থে ভালোবাসা কাকে বলে।

সময়টা ঠিক ২০১৬ সাল আমি নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়াশোনায় বেশ ভালো, এককথায় স্কলার ছিলাম। গত কয়েক দিন আগে অষ্টম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় আমি আমাদের জেলার মধ্যে ১ম স্থান অর্জন করেছি। কিন্ত হঠাৎ আমার বাবার অপসারণের কারণে আমাদের ও তার সঙ্গে যেতে হলো। আমার ফলাফল ভালো হবার কারণে সহজেই ভালো স্কুলে ভর্তি হলাম। আমার ফলাফল যেহেতু ভালো সেই হিসেবে আমি নতুন স্কুলে প্রথম স্থান অর্জন করি। ঠিক আমার পরে যার স্থান সেও খুব মেধাবী তার চেহারা মনমুগ্ধময় আমার জন্যে যে তার প্রথম স্থান অর্জন  করা হলোনা তাহ একটু
রাগ করেছে আমার ওপর, ওর চেহারাটা দেখেই বুঝলাম। আমাদের প্রতিদিন নিয়মিত শ্রেণী কার্য পরিচালনা করা হতো। তাই আমরা আমাদের পঠ্য বইতেই বেশি মনোযোগ দিতাম। আমার ওকে অনেক ভালো লাগতো কিন্তু ওকে বলবার সাহস আমার ছিলনা।

আমার পড়াশোনা খুব ভালোভাবেই চলছিল কিন্ত আমার অংকে কিছু সমস্যা দেখা দিল তাই আব্বু নিজের এক বন্ধুর বাসায় অংকের টিউশন ঠিক করলেন। আমিও সেই টিউশনে প্রতিদিন যেতে লাগলাম কিছুদিনের মধ্যেই আমার অংকের সমস্যা আর দেখা দিল না এবং সকল অংকের সমাধান সহজে এবং দ্রুত করায় আমি খানে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করলাম এবং গর্বের পাত্র হয়ে গেলাম। আমার সবচেয়ে ভালো লাগলো যখন টিউশনে আসল মিম যাকে আমি নিজের মনের ভেতর জায়গা দিয়ে ফেলেছি। আমার প্রশংসা শয়ন করে ওর রাগ আরো বেড়ে গেল। আমি একদিন ওর কাছে থেকে একটা কলম চাই ও আমাকে কলমটা তো দিলোইনা বরং অপমান করে বলল 'তুমি আমার শত্রু, তুমি এখানে থেকে যাও তোমাকে আমার সহ্য হচ্ছে না” আমার মনে হলো যাকে আমি মনে মনে পছন্দ
করি ও কেমনে আমার সাথে এইভাবে কথা বলতে পারে। আমার অনেক কষ্ট হয়েছিল সেদিন। পরবর্তী দিনে আমি আর ওর সাথে কথা বলার চেষ্টা করিনা। আমার বন্ধুর নাম আহসান সে আমার প্রকৃত বন্ধু ওর সাথে আমি আমার পছন্দের কথা ভাগাভাগি করেছিলাম তাই ও আমার অপমানের কথা শুনে মিমকে গিয়ে বলল, তুমি যাকে অপমান করেছ সে তোমাকে ভালোবাসে তাই তোমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছিলো কিন্তু তুমি ওকে অপমান করেছ। আর ও কখনো তোমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করবেনা, ওর পক্ষ হয়ে আমি তোমাকে স্যরি বলতে এসেছি। আহসানের কথা শুনে ও মনে মনে কষ্ট পেলো। পরেরদিন স্কুলে প্রথম সে আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে কিন্ত আমি ওর সাথে কথা বললাম না চলে গেলাম বাসায়। একটু পরে টিউশনে গেলাম এখানে মিম আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্ত আমি ওকে উপেক্ষা করছি এক সময় মিম ও বিরক্ত হয়ে আর কথা বললো না। আমি মনে করলাম ও হয়তো নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে তাই কথা বলার চেষ্টা করছে। পরবর্তী সময়ে আমি আমার স্কুল লাইব্রেরীতে বসে বই পড়ছি হঠাৎ মাহি (মিমের বান্ধবী) এসে বললো যে মিমের  এক অটোরিকশা এসে মেরে দিয়েছে, আমার পায়ের তলার মাটি সরে গেল এই খবরটি শুনবার পরে দৌড়ে গেলাম হাসপাতালে গিয়ে দেখি ওর বাম পায়ে ও কোমরের দিকে ব্যান্ডিস লাগানো। মিম পুরো দুদিন অজ্ঞান ছিলো আমিও এই দুদিন ওর কাছেই ছিলাম।

তাই আচ্ছা এই নাও আই লাভ ইউ ভেরি ভেরি মাচ বলে দিলাম। মিম অসুস্থ অবস্থায় মনে হয় লজ্জা পেয়েছে। অতঃপর কিছু দিন পর ও সুস্থ হয়ে গেল এবং আমি ওকে নিয়ে প্রথম বার বেড়াতে বের হলাম ওকে আমি রমনা পার্কে নিয়ে গেলাম এবং অনেক সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটালাম। অবশেষে সন্ধ্যা ৬ টায় ওকে বাড়িতে রেখে যাওয়ার সময় মিম আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো - 'তুমি আমার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়েগেছো।' আর আমিও ওকে বললাম যে আমি তোমার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়েছি কিন্ত তুমি যে আমার জীবন হয়ে গেছো। এই কথা শুনে আমরা
দুজনেই দুজনের সামলাতে না পেরে প্রথম আমরা চুম্বন করি আর এইভাবেই ৪ বছরের সম্পর্ক এখনো আমরা টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছি। ওকে বাড়িতে রেখে আমিও আমার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। (আমার নাম হচ্ছে ইসমাহল আপনাদের বলাই হয়নি)। এইভাবেই, আমার প্রথম ভালোবাসা আমার মনে জাগ্রত হয়ে আছে এবং আমার অন্তরে সুগন্ধির ন্যায় ছড়িয়ে আছে।

আমার জীবনের প্রথম প্রেম এইটা আমার কাছে এক অনন্য অনুভূতির সৃষ্টি করেছিল। আমাদের তথা মিম ও ইসমাইলের ভালোবাসা আস্তে আস্তে এক অনন্য রুপ ধারণ করে। আমরা একে ওপরের সাথে কথা বলার জন্য সবসম্য চেষ্টা করি। কন্ত আমাদের সামনে যে বোর্ড পরীক্ষা এটাও আমাদের মনে ছিল এবং আমরা ভালোবাসার সাথে সাথে পড়াশোনা করে খুব ভালো ফলাফল অর্জন করি। তাই আমার জীবনের এই মুহূর্তটা উপভোগ করে আমি ভালোবাসার এক নতুন রুপ দিতে চাই তা হলো-

মনে কষ্ট বুকে ব্যথা,
চোখের জল ফেলতে মানা
হাজার কষ্ট চেপেও হাসা,
তাকেই বলে সত্যিকারের ভালোবাসা।

ভালোবাসার গল্পে আমার সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল আমার বন্ধু আহসান শুধু আমার ক্ষেত্রেই নয় আমাদের দেশে ভালোবাসা অর্জনের পেছনে একটা বন্ধুর অবদান অবশ্যই থাকবে আবার একটা সুন্দর ও মনোরম ভালোবাসার সম্পর্ক বিচ্ছেদের পেছনেও একজন বন্ধুরই হাত থাকে তাহলে আমাদের উচিত একজন প্রকৃত বন্ধু খুঁজে বের করা যে আপনাকে সহযোগিতা করব, আপনার দুর্বলতার ফয়দা নিবে না। তাই আমার কাছে মনে হয় যে দ্বিধাহীন ভালোবাসা মূল্যহীন কারণ দ্বিধা না থাকলে ভালোবাসা কখনোই সার্থকতা লাভ করতে পারে না। অবশেষে আমি এইটা বলছি যে ভালোবাসা সহজেই কেউ পেয়ে যায় তাহলে এই ভালোবাসা তার কাছে সস্তা এবং মূল্যহীন।

কাছে আসাই শুধু ভালোবাসা না ভালোবাসা মানে দূরে থেকেও মে সবসময় কাছে থাকবে এবং সর্বদা মনে জাগ্রত থাকবে এইভাবে আমরা ভালোবাসব এবং ভালোবাসার আসল অর্থ জানার চেষ্টা করব আর সবচেয়ে বড় কথা কাউকে ভালোবাসতে সাহায্য করব আমার বন্ধু আহসানের মতো তাহলে এই পৃথিবী ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে।

 

ডিএসএস/ 

আজকের সেহরির শেষ সময় (ঢাকা)

0

ঘণ্টা

0

মিনিট

0

সেকেন্ড

ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫

চক্রের পাঁচজন গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত

দুবাইয়ে বসে ‘জেট রোবোটিক’ নামে একটি অ্যাপস ও নিজস্ব এজেন্টের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী রেমিট্যান্স পাঠানোর দায়িত্ব নিতেন কুমিল্লার শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। ২০২০ সাল থেকে তিনি দুবাইয়ে থাকেন। গত তিন থেকে সাড়ে তিন মাসে জেট রোবোটিক অ্যাপসের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার সমমূল্যের রেমিট্যান্স ব্লক করেছেন মামুন।

তবে তিনি ঠিকই চাহিদা অনুযায়ী গন্তব্যে টাকা পাঠিয়েছেন। এজন্য ব্যবহার করা হয়েছে চট্টগ্রামের মোবাইল ব্যাংকিং ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটসকে। প্রতিষ্ঠানটির ৪৮টি মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট সিমে আগে থেকেই সমপরিমাণ বা বেশি অনলাইনে টাকা সংগ্রহ করে রাখা হয়। এরপর সংগ্রহ করা টাকা এজেন্ট সিম থেকে অ্যাপের ব্যবহার করে প্রবাসীদের আত্মীয়দের নম্বরে অর্থ পাঠিয়ে দিয়ে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্রটি বলে দাবি করেছে সিআইডি।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হুন্ডির কাজে ব্যবহৃত মুঠোফোন, সিমকার্ড ল্যাপটপ ও ২৮ লাখ ৫১ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার করা হয় এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি বলছে, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রায় এক মাস ধরে অনুসন্ধান করে এই চক্রের সন্ধান পায়। এই চক্রের কারণে রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল দেশ। অনেকের অবৈধ উপার্জনের টাকা এই চক্রের মাধ্যমে বৈধ হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মালিবাগে নিজ কার্যালয়ে সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নাসির আহমেদ (৬২), ফজলে রাব্বি সুমন (৩২), মো. কামরুজ্জামান (৩৩), খায়রুল ইসলাম (৩৪) ও জহির উদ্দিন (৩৭)। তাদের মধ্যে নাসির ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের মালিক। ফজলে রাব্বি ও মো. কামরুজ্জামান ডিস্ট্রিবিউশন হাউজে কাজ করেন। আর পরের দুজন দুবাই থেকে শহিদুলের পাঠানো প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজনের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দিতেন।

সিআইডির প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, এই চক্র দুই ভাগে হুন্ডির কাজ পরিচালনা করে। দুবাইয়ে থাকা চক্রের সদস্যরা প্রবাসীদের কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রা সংগ্রহ করেন। আর দেশে থাকা চক্রের সদস্যরা ওই প্রবাসীর দেশে থাকা আত্মীয়স্বজনদের এমএফএস অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। এতে প্রবাসীদের মাধ্যমে যে রেমিট্যান্স আসত, সেটা ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের কালোটাকার মালিকেরা এই চক্রের মাধ্যমে তাদের অবৈধ উপার্জন বৈধ করছেন। আর এই পুরো কাজটি পরিচালিত হতো জেট রোবোটিকস অ্যাপের মাধ্যমে।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান আরও বলেন, চক্রের সঙ্গে এমএফএস কোম্পানির চট্টগ্রামের তাসনিমা অ্যাসোসিয়েট নামের একটি ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের লোকজন জড়িত। তাদের কাছ থেকে কম লেনদেন হয় এমন এমএফএস এজেন্ট অ্যাকাউন্ট সংগ্রহ করতেন চক্রের সদস্যরা। বিনিময়ে ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের লোকজন হুন্ডির লাভের টাকার একটি ভাগ পেতেন।

সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া। ছবি: সংগৃহীত 

 

মোহাম্মদ আলী বলেন, এই চক্রের মূলহোতা শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দুবাই বসবাস করেন। মালয়েশিয়ান একটি সফটওয়্যার কোম্পানির মাধ্যমে অ্যাপটি তৈরি করে দুবাই বসে শহিদুল হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ করতেন। এই অ্যাপের সঙ্গে একটি এমএফএস কোম্পানির ৪১টি অ্যাকাউন্ট নম্বরের সংযোগ ছিল। গত তিন মাসে ওই ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের প্রায় ১৫০টি এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে চক্রটি।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, একটি ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের অধীন প্রায় ১ হাজার ১০০ এজেন্ট থাকে। যেসব এজেন্ট অ্যাকাউন্টে লেনদেন কম হয়, সেই সব অ্যাকাউন্ট হুন্ডির কাজে ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে এমএফএস কোম্পানির নজরদারির ঘাটতি রয়েছে।

নতুন নতুন অ্যাপসের মাধ্যমে কৌশলে এ ধরনের ডিজিটাল হুন্ডি কার্যক্রম চলতে পারে উল্লেখ করে সিআইডি প্রধান বলেন, এ ধরনের কার্যক্রমরোধে সিআইডিসহ সব দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানকে ইন্টেলিজেন্স, মনিটরিং আরও বাড়াতে হবে।

তিন মাস ধরে অস্বাভাবিক লেনদেন, রেমিট্যান্স ব্লক হলো অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক টের পেল না? তাদের তো একটা শক্তিশালী মনিটরিং সেল আছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা কি-না জানতে চাইলে সিআইডিপ্রধান বলেন, ব্যর্থতা বলবো না, সার্ভিলেন্স সিস্টেমকে কতটা পেট্রলিং করছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের পেট্রলিংয়ে এটা ধরতে পেরেছি। এর দায়িত্ব শুধু সিআইডি’র নয়, ডিবি, র‌্যাব, বাংলাদেশ ব্যাংকেরও।

হুন্ডি তো আগেও হতো, এটাকে ডিজিটাল হুন্ডি বলছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ সিস্টেম আসলেই ডিজিটাল হুন্ডি। আগে ফোন করে বলে দিতো অমুকের টাকা অমুককে দিয়ে দাও। এটা ম্যানুয়াল সিস্টেমে। কিন্তু এখন এসবের দরকার নেই। ফোন বা লোকাল এজেন্ট অথবা ডিস্টিবিশন হাউজ দরকার পড়ে না। অ্যাপস যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দেবে সেভাবে নম্বরে নম্বরে টাকা চলে যায়।

দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক

ছবি: সংগৃহীত

অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন, হাইজিন, বায়ু ও সীসা দূষণ বছরে বাংলাদেশে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি অকালমৃত্যুর কারণ। এসব পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে ঘরে ও বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮ দশমিক ৩২ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘দ্য বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রনমেন্ট অ্যানালাইসিস (সিইএ)’ নামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণ, অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন ও হাইজিন এবং সিসা দূষণ বছরে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের অকালমৃত্যুর কারণ। এর ফলে বছরে ৫.২ বিলিয়ন দিন অসুস্থতায় অতিবাহিত হয়। এসব পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭.৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ঘরের এবং বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮.৩২ শতাংশের সমপরিমাণ।

এতে আরও বলা হয়েছে, পরিবেশদূষণ শিশুদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। সিসা বিষক্রিয়া শিশুদের মস্তিকের বিকাশে অপরিবর্তনীয় ক্ষতি করছে। এর ফলে বছরে প্রাক্কলিত আইকিউ ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০ মিলিয়ন পয়েন্ট। গৃহস্থালিতে কঠিন জ্বালানির মাধ্যমে রান্না বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস এবং তা নারী ও শিশুদের বেশি ক্ষতি করছে। শিল্পের বর্জ্য এবং অনিয়ন্ত্রিত প্লাষ্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্য এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা অপরিশোধিত ময়লাযুক্ত পানির কারণে বাংলাদেশের নদীগুলোর পানির গুণগত মানের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সময়মতো এবং জরুরি হস্তক্ষেপ, উন্নত পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) এবং সিসা দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রতি বছর ১ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি অকালমৃত্যু ঠেকাতে পারে। সবুজ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ, রান্নায় সবুজ জ্বালানি ব্যবহার এবং শিল্প-কারখানা থেকে দূষণ রোধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বায়ুদূষণ কমাতে পারে।

এছাড়া পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার জন্য সুশাসন জোরদার ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে এই রিপোর্টে পরিবেশগত অগ্রাধিকারসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে, বিভিন্ন পদক্ষেপের মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ, পরিবেশ নীতি পদ্ধতিগুলোর বৈচিত্র্যকরণ ও জোরদারকরণ, সাংগঠনিক কাঠামো এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা জোরদারকরণ এবং সবুজ অর্থায়নের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ এর পরিবেশকে রক্ষা করতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ এবং ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের জন্য পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবিলা একই সঙ্গে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার। আমরা পৃথিবীর নানা দেশে দেখেছি যে, পরিবেশের ক্ষতি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলে তা টেকসই হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির গতিপথ টেকসই রাখতে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নতি করতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই পরিবেশকে উপেক্ষা করতে পারবে না। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে পরিবেশের ক্ষয় রোধ এবং জলবায়ু সহিষ্ণুতা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং এই রিপোর্টের সহ-প্রণেতা আনা লুইসা গোমেজ লিমা বলেন, সময়মতো এবং সঠিক নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিবেশ দূষণের ধারা পাল্টে ফেলতে পারে। পরিবেশ সুরক্ষা জোরদারে পদক্ষেপ এবং রান্নায় সবুজ জ্বালানির জন্য বিনিয়োগ ও অন্যান্য প্রণোদনা, সবুজ অর্থায়ন বাড়ানো, কার্যকর কার্বন মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং সচেতনতা বাড়ানো দূষণ কমাতে পারে এবং এর ফলে সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে পারে।

বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ

নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত

যোহরের নামাজ চলাকালীন বরিশালে জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদে এসি বিস্ফোরণ হয়েছে। বরিশাল নগরীর ব্যস্ততম সড়ক চকবাজার এলাকার জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদের দ্বিতীয় তলায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে দ্রুত আগুন আনে তারা। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মুসল্লিদের দাবি, এসি বিস্ফোরণ মধ্য দিয়ে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বিস্ফোরণের কথা নিশ্চিত না করলেও এসি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লিরা জানিয়েছেন, বেলা দেড়টার দিকে মুসলিরা জোহরের নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আর তখন মসজিদের দোতলার একটি এসি চালুর জন্য মুয়াজ্জিন বৈদ্যুতিক সুইচ চালু করতেই স্পার্ক করে। পরে তিনি সেটি তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন। এরপর সবাই নামাজে দাঁড়ালে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকট শব্দ হয়। পরে পাশের ইমামের কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হলে দেখা যায় সেখানে এসির কাছাকাছি আগুন জ্বলছে। তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস ও থানায় বিষয়টি জানানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, হতাহতের ঘটনা ছাড়াই স্থানীয়দের সহযোগিতায় মুসলিরা নিরাপদে মসজিদ থেকে নামিয়ে আনা হয় এবং বরিশাল সদর ফায়ার স্টেশনের চারটি ইউনিট অল্প সময়ের চেষ্টায় আগুন নেভানো হয়। আগুনে ইমাম সাহেবের রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে কিছু বই ও আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে গেছে।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বরিশাল সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রবিউল আল আমিন জানান, মুসল্লিদের তথ্যানুযায়ী একটি এসি থেকে বিকট শব্দ হওয়ার পরপরই আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, তবে এসি থেকেই আগুনের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস পাশে থাকায় ব্যস্ততম এই ব্যবসায়িক এলাকাটিতে বড় ধরনের বিপদ ঘটেনি, অল্পতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।

রাস্তা সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে কিছুটা বেগ পেতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, চকবাজারের সব রাস্তাগুলো সব সময় চালু রাখা উচিত, কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে সেগুলো অপসারণের জন্য আমরা মসজিদ ও ব্যবসায়িক কমিটিকে অনুরোধ জানিয়েছি।

স্থানীয়রা বলছেন, চকবাজারের রাস্তা সরু হওয়ায় এখানে সব সময় যানজট লেগে থাকে, আর যেটুকু জায়গা খালি থাকে তা পার্কিং নয়তো হকরদের দখলে থাকে। এমনকি গোটা চকবাজারের ফুটপাতও দখলে রয়েছে বিভিন্ন পণ্যের পসরায়।

সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি) নাফিছুর রহমান জানান, ফায়ার সার্ভিস তাৎক্ষণিক সারা দেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, এমনকি নামাজের সময় হওয়ায় মুসল্লিরা মসজিদের ভেতরে থাকলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫
দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক
বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ
নওগাঁয় পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
গুলি করে মারা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপটিকে
দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক কারাগারে
বাংলাদেশ থেকে আম-কাঁঠাল-আলু নিতে চায় চীন
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় চার ইউনিটে প্রথম হলেন যারা
বাংলাদেশে আসছেন সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম
চট্টগ্রামে ফিশিং বোটে আগুন, দগ্ধ ৪
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ৪ ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯ শতাংশই ফেল
ভারত থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার!
৮ বছর পর বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা
‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলব, এটুক অন্যায় করবোই’
প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে শরফুদ্দৌলা
পাঁচ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর
কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা ওয়াংচুক
শিগগিরই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানো হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ