মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সুতাং নদীর পাড়ে

কিছুদিন ধরেই একটা ব্যাপার মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছিল। তা হলো নদী। এই জীবনে কত নদী যে দেখেছি। কত নদীর জল ছুঁয়ে দেখেছি। নৌকায়, লঞ্চে, ইস্টিমারে কত রাত্রিদিন নদীতে ভেসেছি। আবার অনেক নদী আছে আজও দেখা হয় নাই। নামও জানি না। আজ কয়েকদিন ধরে মন বলছিল কোথাও গিয়ে একটু নদী দেখে আসি।
কিন্তু কোথায় যাব? কোন্ নদীর কূলে গিয়ে দেখব জল? কোনোই সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না।
কাউকে কিছু না বলে একদিন ভোরবেলা বিমানবন্দর স্টেশনে চলে যাই। একটি ট্রেন তখন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পাই। কাউন্টারে টিকিট মাস্টারকে বলি - এই ট্টেনটি কোথায় যাবে?
- এটি পারাবত এক্সপ্রেস। সিলেট যাবে।
- আমাকে এই ট্রেনের একটি টিকেট দেন।
- কোন্ ক্লাসের টিকেট দিব?
- শোভন ক্লাসের।
সিলেট পর্যন্তই টিকেট কাটলাম। ভাবলাম, ট্রেনে যেতে যেতে নদী খুঁজব। যে নদীটা দেখতে ভালো লাগবে সেই নদীর কাছাকাছি কোনও একটি স্টেশনে নেমে পড়ব।
ট্রেন চলছে। আন্তঃনগর ট্রেন। খুব দ্রুত চলছে। জানালার কাছে সিট। খুব ভালো লাগছে। মাঠ ঘাট খালি প্রান্তর পেরিয়ে ট্রেনটি ছুটে চলেছে। মনে পড়ছিল সেই কবে ইন্টার ক্লাসে রবার্ট লুইস স্টীভেনশনের একটি কবিতা পড়েছিলাম -
'Faster than fairies, faster than witches, Bridges and houses, hedges and ditches; And charging along like troops in a battle, All through the meadows the horses and cattle...'
কিছুক্ষণ পরেই দেখি - ট্রেনটি বিকট শব্দ করে একটি ব্রিজ ক্রস করছে। নীচে চেয়ে দেখি নদী। নদীটির নাম শীতলক্ষ্যা। এই নদী এর আগে অনেক দেখেছি নারায়নগঞ্জের নিতাইগঞ্জে। নদীটা ভালো লাগলো। কিন্তু মন টানলো না তেমন। আর ট্রেনটা ছিল দ্রুতগামী। ঘোড়াশাল ফ্লাগ স্টেশনে ট্রেনটি থামল না।
হঠাৎ মনে পড়ল আমার এক ফেসবুক বান্ধবীর কথা। কাকতালীয় ভাবে ওর নাম ছিল 'নদী'। পুরো নাম নদী ইসলাম। এখানে পলাশে ওদের বাড়ি। সে এখন আয়ারল্যান্ডে ডাবলিন শহরে থাকে। ও ইনবক্সে আমাকে বলেছিল- ওদের বাড়ির কাছে নাকি 'হাঁড়িধোয়া' নামে একটি নদী আছে। নদীটা নাকি দেখতে খুব সুন্দর! আঁকাবাঁকা সর্পীল। ও এও বলেছিল যদি পারো কোনও একদিন গিয়ে এই নদীটা দেখে এসো। ট্টেনটা এখানে যদি থামতো তাহলে নাহয় নেমে এই হাঁড়িধোয়া নদীটাই দেখে যেতাম।
ট্রেনটি একসময় ভৈরব জংশন পার হয়ে আরও একটি সেতু অতিক্রম করছিল। ট্রেন থেকে নীচে চেয়ে দেখি, এ যে মেঘনা। এই নদীও দেখেছি এর আগে অনেক বার। ট্রেনটি ছুটছে দ্রুত গতিতে আখাউড়ার দিকে। এখানে কাছাকাছি কোনও স্টেশনে থামবে না। তাই এখানে আর নামা হলো না। তাছাড়া নামতামও না এখানে। কারণ আমি খুঁজছি স্বচ্ছতোয়া ছোট কোনও নদী।
ট্রেনটি একসময় আখাউড়া গিয়ে পৌঁছে। ট্রেন থেকে প্লাটফরমে নামি। একটি চা'র দোকানে বসে চা খাই। একবার ভাবছিলাম, এই ট্রেনটি ছেড়ে দিয়ে অন্য আর একটি ট্রেনে নাহয় চট্টগ্রামের দিকে যাব। কিন্তু তা আর হলো না। ট্রেন ছাড়ার সাইরেন বেজে উঠে। আমি দৌড়ে গিয়ে ট্টেনে উঠে পড়ি।
ট্রেনটি শায়েস্তাগঞ্জ জংশন পৌঁছার আগে কোথাও কোনও স্টেশনে আর থামল না। এরই মাঝে ছোট বড় দু-তিনটে নদী দেখলাম। ভালোও লেগেছিল। কিন্তু নেমে আর দেখা হয়নি।
শায়েস্তাগঞ্জ জংশনেও ট্রেন থেকে একটু নামলাম। ইতস্ততভাবে ঘোরাঘুরি করছিলাম প্লাটফর্মের উপর দিয়ে। একটা টং দোকানে বসে চা খেলাম। সিগারেটও খাই। মনে পড়ছিল অনেক বছর আগের কথা।

আশির দশকের হেমন্তকাল। সেবার আমরা কয়েকজন তরুণ কর্মকর্তা একটাি অফিসের কাজে এসেছিলাম হবিগঞ্জ ও চুনারুঘাট। আমাদের সাথে দুটো মেয়েও ছিল। মনে পড়ছিল এই স্টেশনের কাছে কোথাও একটি হোটেলে আমরা লাঞ্চ করেছিলাম। আরও মনে পড়ছিল অনেক কথা। একটি নদীর কথা। অনেক স্মৃতি ধেয়ে আসছিল অস্পষ্ট করে অনেক পিছনের পুরনো জীবন থেকে।

আরও একটি সিগারেট ধরাই। ইতোমধ্যে ট্রেন ছাড়ার সাইরেন বাজতে থাকে। আমি নির্বিকার চেয়ে থাকি ট্রেনটার দিকে। ট্রেনটি ছেড়ে চলে গেল। আমি বসেই রইলাম চা' র দোকানের সামনে বেঞ্চের উপরে।
তখন দ্বিপ্রহর হয়ে গেছে। চা'র দোকান থেকে উঠে আস্তে আস্তে হেঁটে স্টেশনের বাইরে আসি। সেই খাবার হোটেলটি খুঁজতে থাকি। কত বছর আগের কথা। নামও মনে নেই হোটেলটির।

শেষ পর্যন্ত হোটেলটি খুঁজে পেলাম। তখন ছিল টিনের চালার হোটেল। এখন সেটি পাকা। দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম হোটেলটিতে।
হোটেল থেকে বেরিয়ে স্থানীয় একজন লোককে জিজ্ঞাসা করি, আচ্ছা, সুতাং যাব কীভাবে? আমি নিজেই বললাম, আগে তো ট্রেনে যাওয়া যেত।
লোকটি বলল - ঐ সেকশনে এখন আর ট্রেন চলে না। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগেই। আপনি লোকাল বাসে অথবা অটোতে করে সুতাং বাজার যেতে পারবেন।

আমি বাসে না উঠে একটি খোলা অটোতে করে চলে যাই সুতাং রেল স্টেশনে। কেমন অপরিচিত লাগছিল স্টেশনটি। পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। কোনও কর্ম চাঞ্চল্য নেই। টিকিট ঘরটি আছে। স্টেশন মাস্টারের ঘরটিও আছে । কিন্তু কোনও কর্মচারী নেই। ছোট্ট একটি স্টেশন। শুধুমাত্র লোকাল ট্রেন এখানে থামত।

সেবার অফিস ট্যুরের সময় আমার আর নমিতার উপর দায়িত্ব পড়েছিল সুতাং নদীর পাড়ে খাসিয়া পুঞ্জিতে গিয়ে কয়েকটি পরিবারের সাথে আর্থ সামাজিকের উপর কিছু তথ্য জেনে নেওয়া। আমি আর নমিতা চুনারুঘাট থেকে একটি লোকাল ট্রেনে করে এসে নেমেছিলাম এই সুতাং স্টেশনে।

এই সুতাং স্টেশনের অদূরেই সুতাং নদী। কেমন যেন প্রকৃতিকালও মিলে গেল আজকেও। সেবার ছিল হেমন্ত সময়। আজকেও হেমন্ত। ঝকমকে রোদ চারদিকে ঝিকমিক করছে । কিন্তু মনটা প্রফুল্ল লাগছে না। সেবার আমার সাথে ছিল নমিতা ৷ এবার কেউ নেই। কী উচ্ছ্বল ছলছল ছিল মেয়েটা। জাহাঙ্গীর নগর ইউনিভার্সিটি থেকে সদ্য ভূগোলে স্নাতকোত্তর করে এসেছিল । লম্বা লম্বা চুল ছিল ওর। চুলের গোছা ছড়িয়ে পড়ত কটিদেশের উপরে। আমি ওকে বলতাম - এই যে কাজল কালোকেশী মেয়ে! কখনই চুল বাঁধবে না তুমি! নদী যেমন বুক উজার করে জল কলকলিয়ে চলে তেমনি তোমার চুল ছড়িয়ে দেবে আদিগন্ত তোমার পিঠের উপরে।

আমরা সেদিন হাঁটছিলাম সুতাং নদীর পাড় ধরে।
কোথাও পাহাড়ি পথ, কোথাও আঁকাবাঁকা সমতল। আবার কোথাও উঁচু-নিচু পথ। সব পথের ধুলোয় লুটিয়ে থাকে পাহাড়ি লাল মাটি ও ঝকঝকে বালি। যেতে যেতে সবুজ প্রকৃতির মাঝে দেখা মেলে দূরের পাহাড়। নদীটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ের থেকে উৎপত্তি হয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

পথে চলতে চলতে পড়ছিল টিলা। পথের দুপাশে কত নাম না জানা জংলী ফুল ফুটে আছে। বিচিত্র সব সুবাসে বাতাস ভরে আছে। সুতাং এর স্বচ্ছ জল ছোঁয়ার জন্য নমিতা আকুল হয়। পাড়ে থেকে জলের কাছে যেতে ও ভয় পাচ্ছিল। নমিতা আমাকে কুসুমে কোমলে ডাকে - রঞ্জন, তুমি আমার হাতটি ধরো।

কি পাগল মেয়ে যে নমিতা! আমার একটি হাত ওর পাঁজরে জড়িয়ে নিয়ে জলের কাছে চলে যায়। ও বলছিল - এত টলটলে জল, এত স্বচ্ছ রূপ ! এত পবিত্র! আমার সাথে তুমিও এই জল স্পর্শ করো। আমাকে তুমি অশেষ করো। দাও জগৎ দাও। দাও তোমার মঙ্গল ছোঁয়া। তুমি নিয়ে নাও আমার ধনদৌলত, সকল ঐশ্বর্য। সেই কত যুগের আগে তোমাকে দেখেছিলাম। সেই কতকাল ধরে এমনই ক্ষণ আমি চেয়েছিলাম। এমনই একটি নদীর কাছে তোমার মতো কাউকে আমার সমস্ত কিছু দান করতে ইচ্ছে জাগত। আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এসেছে আমার জীবনে। তুমি ফিরিয়ে দিও না
কী বিমুগ্ধ জীবন পায় মানুষ! হিরণ্য আখরে দাগ কেটে রয় তা জীবনের পরতে পরতে।
নদী থেকে চলে আসি ঝর্ণার ঝিরিপথের বাঁকে। এযে রবি ঠাকুরের নির্ঝরের স্বপ্ন ভঙ্গের গান এখানেও। কেমন ভয়ংকর নির্জনতা চারদিকে! নমিতার বুক ধকধক করছিল। ও বলছিল - এ তুমি কোথায় নিয়ে এলে! এ যে স্বর্গ এখানে নেমে এসেছে! সবকিছু স্বপ্ন নয় তো!
তখন ছিল অপরাহ্ন সময়। সুতাং নদীর জল ছিল স্থির। ডাহুক উড়ছিল। পানকৌড়িরা বসেছিল শিয়ালপোতা গাছের ঝাড়ে। তখনও রৌদ্র করছিল ঝিলমিল। নমিতা ওর বুকের পাঁজর থেকে আমার হাত সরে এনে আমার বুকের ভিতর ওর বুক সমর্পণ করে। আবারও বিহ্ববলতা! দীর্ঘ আলিঙ্গন যেন শেষ হতে চায়নি সেদিনের সুতাং নদীর পাড়ে মনুষ্যহীন নির্জন সেই অপরাহ্ন বেলায়।
আজ এত বছর পরে সুতাং নদীর কূল ধরে যখন হাঁটছিলাম তখন চারদিক থেকে কী এক নস্টালজিক বেদনা এসে মনকে আচ্ছন্ন করছিল। সুতাং নদীতে জল বয়ে চলেছে আগের মতোই কিন্তু কেমন যেন বিষাদ হয়ে আছে সে জল। পায়ে পায়ে চলছিলাম ধীরে। কিন্তু পা চলছিল না। পথ চলতে ব্যথা করছিল দু'পায়ে।
আরও কিছু দূর চলে যাই সেই টিলাটার কাছে। টিলার গায়ে লতাগুল্মে ভরে আছে। শুধু পাশের ঝর্ণার জল আজ আর ঝরে পড়ছে না ৷ সব আজ শব্দহীন। ভাবছিলাম আর এগুবো না সামনের দিকে। মনও চাইছিল না এগুতে । ফিরে চলে আসতে থাকি পরিত্যক্ত সুতাং স্টেশনের দিকে।
পথ দিয়ে ফিরছিলাম আর ভাবছিলাম সেই তরঙ্গায়িত যৌবন সময়ের কথা। কতজনকেই তো ভালো লেগেছিল। নমিতা ছিল তাদেরই একজন। মনে হতো মেয়ে তুমি আমার কিছু একটা হও। স্বপ্নও দেখতাম ওকে নিয়ে। এ রকম কত স্বপ্ন যে ভেঙ্গে গেছে সেই সময়ে। সেই ভাঙ্গা গড়ার সময়কাল কখন যে শেষ হয়ে গেছে তাও বুঝতে পারিনি। আমার গত জীবনকাল ধরে নমিতার মুখচ্ছবি যে মনে ভেসে উঠেনি তা নয়। এই সুতাং নদীর পাড়ে ওর বুকের সেই উষ্ণতা আজও আমাকে বিচলিত করে। কখনও কখনও নিজেকে খুব খালি খালি লাগে। ওর মায়াময় মুখখানি সুতাং নদীর জলের মতো হৃদয়ের ক্যানভাসে এখনও অস্পষ্ট জলছবি হয়ে আছে। সৌম্য বাতাসে কান পাতলে তার পায়ের ধ্বনি বাজে। সেই কবে নমিতা আমার হতে চেয়েছিল এক হৈমন্তিকা দিনে। ঝরা পাতাচিহ্ন ফেলে সে আর পুনরায় ফিরে আসবে না কোনোদিন। অথচ বনফুলের বিজরিত গন্ধ বাতাসে আকুল হবে এই সুতাং নদীর পাড়ে শতসহস্র বছর কাল।
কত যে ভ্রম আজও হয়!
সুতাং স্টেশনে গিয়ে টিকেট ঘরের দিকে এগিয়ে যাই। মাস্টার মশাইকে বলি - আমাদের ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশনের দুটো টিকেট দেন। কেউ কোনও উত্তর দিচ্ছে না। টিকেট ঘরটি যে তালাবন্ধ! ভিতরে কেউ নেই। পাশে চেয়ে দেখি - নমিতাও নেই।

 

ডিএসএস/ 
 

চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজ আদায়

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপদাহ, সাথে কড়া রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গাসহ এ অঞ্চলের জনজীবন। তীব্র এই গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের টাউন ফুটবল মাঠে সকাল সাড়ে ১০টায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায় করেছেন এলাকাবাসী। চুয়াডাঙ্গা জেলা সম্মিলিত উলামা কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে এ নামাজ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

ইস্তিস্কার নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা নুরুদ্দীন। নামাজ শেষে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে চলা তীব্র দাবদাহ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া হয়।

নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা সম্মিলিত উলামা কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা বশির আহমেদ।

ছুটিতে বাড়ি গিয়ে হিটস্ট্রোকে পুলিশ সদস্যের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর বাউফলে হিটস্ট্রোকে মোহাম্মদ শাহ-আলম (৫০) নামের একজন পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তিনি পুলিশের ঢাকা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত ছিলেন।

জানা গেছে, গত শনিবার (২০ এপ্রিল) তিনি ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বাউফলে আসেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ অবস্থায় তাকে বাউফল হাসপাতালে নেয়া হলে সেখান থেকে তাকে বরিশালে পাঠানো হয়৷ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

নিহতের মেয়ে শিমু আক্তার জানান, তিনি হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন বলে তাদের জানিয়েছেন ডাক্তার।

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা জানান, তিনি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশালে পাঠানো হয় বলেও জানান তিনি।

ভারতের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে ‘পদ্মশ্রী’ নিলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা

ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে ‘পদ্মশ্রী’ পদক নিচ্ছেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা । ছবি: সংগৃহীত

ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পদক গ্রহণ করলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন তিনি।

এদিকে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানায়, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু অধ্যাপক (ড.) রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে শিল্পকলায় পদ্মশ্রী পদক প্রদান করেছেন। তিনি বাংলাদেশের একজন দক্ষ পেশাদার সংগীতশিল্পী। রবীন্দ্রসংগীতের একজন নিবেদিত অনুশীলনকারী। তিনি মহাত্মা গান্ধীর ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে ‘বৈষ্ণব জান তো’ গেয়েছিলেন।

ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা হচ্ছে ভারতরত্ন। তারপরই রয়েছে পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী। নানা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য প্রদান করা হয়ে থাকে পুরস্কারগুলো।

এ বছর দেশটির সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১৩২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে পদ্ম সম্মাননার জন্য মনোনীত করেছে। এদের মধ্যে পাঁচজন পদ্মবিভূষণ, ১৭ জন পদ্মভূষণ আর ১১০ জন পদ্মশ্রী সম্মাননা পেয়েছেন।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এবারের পদ্ম পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করে।

প্রসঙ্গত, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা রবীন্দ্রসংগীত ছাড়াও ধ্রুপদী, টপ্পা ও কীর্তন গানের ওপর শিক্ষা লাভ করেছেন। প্রাথমিক অবস্থায় রেজওয়ানা বন্যা ‘ছায়ানট’ ও পরে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতেও পড়াশোনা করেছেন। তিনি ‘সুরের ধারা’ নামের একটি সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেন।

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠে এ পর্যন্ত বহু অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ‘স্বপ্নের আবেশে’, ‘সকাল সাঁঝে’, ‘ভোরের আকাশে’, ‘লাগুক হাওয়া’, ‘আপন পানে চাহি’, ‘প্রাণ খোলা গান’, ‘এলাম নতুন দেশে’, ‘মাটির ডাক’, ‘গেঁথেছিনু অঞ্জলি’, ‘মোর দরদিয়া’, ‘শ্রাবণ তুমি’ ও ‘ছিন্নপত্র’ ইত্যাদি।

সংগীতে অসামান্য অবদান রাখায় ২০১৬ সালে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ লাভ করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। এ ছাড়া তিনি ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদক, সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, আনন্দ সংগীত পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন। এর আগে ভারতে বঙ্গভূষণ সহ বেশ কিছু পদক পেয়েছেন তিনি।

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
ছুটিতে বাড়ি গিয়ে হিটস্ট্রোকে পুলিশ সদস্যের মৃত্যু
ভারতের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে ‘পদ্মশ্রী’ নিলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে ১০ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই
চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল হতে পারে মঙ্গলবার
বুড়িচং সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত
বোরকা পরে বালিকা মাদরাসায় ফাহিম, ধরা পড়ে খেলেন গণপিটুনি
তাইওয়ানে কয়েক ঘন্টায় ৮০ বার ভূমিকম্প অনুভূত
এবার ইরাকে মার্কিন বাহিনীকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা
ঢাকায় পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ
ঢাকাসহ ৪ অঞ্চলে ধেয়ে আসছে ঝড়
যত বাড়ল ট্রেনের ভাড়া !
কাতারের আমিরের সাথে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক আজ
‘বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারিত্ব’ গঠন করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
নওগাঁয় গলায় কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস পেলেন বনি আমিন ও সবুজ মাহমুদ সহ ১৫ সাংবাদিক
রাজধানীতে হিট স্ট্রোকে রিকশা চালকের মৃত্যু
আধুনিক ও টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য কাজ করছে সরকার: ভূমিমন্ত্রী
সমাবেশ স্থগিত করেছে বিএনপি
হিট স্ট্রোক হলে করণীয় কী?