শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সেদিন যখন বিলুপ্ত হয়েছিলাম

ওয়্যার স্ট্রিট, ২৩/১, ওয়ারী, ঢাকা। ঢাউস করিডরযুক্ত পুরোনো বাড়িটার সব কটা দরজা ও জানালা ছিল খড়খড়ি দেওয়া। খড়খড়ি দেওয়া জানালাগুলোকে বলা হতো ল্যুভর উইন্ডো। বিরাট বিরাট ওইসব জানালা ছাদ থেকে মেঝে পর্যন্ত নেমে এসেছে। সিঁড়ি ঘরের অনেকটা অংশজুড়ে বিস্তৃত দু-তিনটে দরজা। ল্যুভর উইন্ডোগুলোর ওপর আমরা নতুন করে গ্লাস বসিয়ে নিয়েছিলাম, পর্দাও টেনে দিয়েছিলাম। উত্তর ঢাকার গলিপথ থেকে মূল সড়কে এলেই আমাদের পুরোনো বাড়ির চুনকাম করা টালির ভেন্টিলেটার সবার চোখে পড়ত। তাছাড়া মোটা ও পুরু ওয়াল, কড়ি বর্গা দেওয়া ছাদ।

মন কেমন করা গন্ধ বাড়িময়! ছাদে এখন আর খুব একটা যাই না তেমন। বাড়ির অপজিটে ইলেকট্রিসিটির ট্রান্সমিশন স্টেশন এবং রাথিয়াদের ফ্ল্যাট। গাইনি স্পেশালিস্ট সে। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে বিসিএস-এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিভিন্ন প্রাইভেট হসপিটালে প্র্যাকটিসও করে রাথিয়া। ওদের ফ্ল্যাটের সাথেই আরও দুটো কটেজ পাশাপাশি। সিঁড়ির রেলিংয়ে দু-হাত রেখে রাথিয়াদের ফ্ল্যাটের দিকে ঝুঁকে বিকেলের আকাশটাকে দেখছি। কখনো কালো, কখনো মুমূর্ষু সূর্যের আভা ঈষৎ মেঘাচ্ছন্ন, কখনো বা রঙহীন ভেজা মেঘ আকাশকে আঘাত করছে জোরসে। সেদিনের বৃষ্টিতে দরজা জানালার খড়খড়িগুলো ভিজে রঙহীন হয়ে গিয়েছিল। আমার শরীরের টি-শার্টটাও বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। কিন্তু বৃষ্টি তো বাইরে, আমার টি-শার্ট কীভাবে ভিজল? তাহলে কি ভেন্টিলেটারের ফাঁক দিয়ে বৃষ্টি ছিটকে এসেছে? কী জানি, হতে পারে। আজ সারাটা দিন বৃষ্টি ঝরছে। যাকে বলে থেমে থেমে বর্ষণ! বাড়ির কম্পাউন্ডে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। সুলগ্না ভার্সিটি থেকে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই বাসায় ফিরল। মা বলল- কী দরকার ছিল এভাবে আসার? দেখিস, আজ তোর ঠান্ডা লাগবেই। সুলগ্না বলল- এত চিন্তা কেন করছ মা? কিচ্ছু হবে না। নিজের বেডরুমের দিকে চলে গেল সুলগ্না। মনে হয় ভেজা কাপড়চোপড়গুলো চেঞ্জ করবে সে! আমি তখনো সিঁড়ির রেলিং ধরেই দাঁড়িয়ে আছি। কী করব, ভাবছি। ভেজা টি-শার্ট গায়ে একটু শীত শীত করছে আমার। রুমে এলাম। টি-শার্টটা চেঞ্জ করে ওয়াড্রব থেকে আরেকটা টি-শার্ট বের করে গায়ে দিলাম। জানালাগুলোর কাচে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির জল দেখা যাচ্ছিল। পর্দাগুলোও ভেজা। ড্রয়ার থেকে পুরোনো অ্যালবাম বের করলাম।

এমন স্যাঁতসেঁতে দিনে পুরোনো সবকিছুকেই কেন জানি ভীষণ মনে পড়ে। আজ এতদিন পর অ্যালবামটার পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে আনমনা হয়ে যেতে থাকলাম। ভার্সিটিতে পড়ার সময় কলা ভবন, অপাজেয় বাংলা, মধুর ক্যান্টিন, টিএসসিতে কত পোজের ছবি যে তুলতাম আমরা বন্ধুরা মিলে! মনে পড়ছে আজ কত কথা, কত রকম স্মৃতি! জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতের সময়গুলোতে যারা পাশে থাকে, তারাও একদিন দূরে সরে যায়। অ্যালবামটা বন্ধ করলাম। বাইরে তখনো বৃষ্টির শনশন শব্দ। আজ কি তবে বৃষ্টিরা ভালোবেসে বেসে ঝরতেই থাকবে? সুলগ্না আমার রুমে এল। বলল- কী করছিস ভাইয়া? কই, কিছু না তো! কিছু বলবি? আজ আপু ফোন করেছিল! নেহার? জি। ওর প্রেগন্যান্সির কী কান্ডিশন এখন? দু-এক দিনের মধ্যেই নাকি ওর ডেলিভেরি ডেট! হসপিটালে অ্যাডমিট করাতে হবে। আমি বললাম- তো? এতে এত টেন্সড হওয়ার কী আছে? সুলগ্নার চোখে-মুখে আমি দ্বিধা টের পেলাম। সেই দ্বিধা কিসের, বুঝতে পারিনি। সিজারিয়ান অপারেশন তো এখন একটা ফ্যাশন। তাহলে সুলগ্নার নিঃশ্বাস নিশ্চুপতা ফুটে উঠল কেন? ওর অস্তিত্বে আমি আগুন দেখছি, দুঃশ্চিন্তার আগুন।

পেডিকেয়ার নিউবর্ন বেবি হসপিটাল, বাড়ি-৫৫, সড়ক-০১, সেক্টর-০৯, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০। গতকাল ডেলিভেরি পেইন উঠলে নেহারকে ওখানেই অ্যাডমিট করিয়েছে রাহেল। অ্যাজ অ্যা হাজব্যান্ড রাহেল ইজ কেয়ারিং ফর নেহার। হসপিটালের কেবিনগুলো গ্রিসলি রেসপ্লেনডেন্ট অ্যান্ড ট্রান্সপ্যারেন্ট। টু সিং ইনভায়ার্নমেন্ট অব দ্য হসপিটাল উই উড বি ইমপ্রেজেস। আমরা তখন নেহারের জন্য বুকড কেবিনে বসে আছি। পাশের কেবিনের নিচের দিকে তিন-চারটে রক্তমাখা ত্যানা স্তূপ করে রাখা। সম্ভবত একটু আগেই সিজার করা হয়েছে। রক্ত-পুঁজ দেখলে আমার গা গুলিয়ে ওঠার অভ্যাসটা অনেক পুরোনো। এখনো তার ব্যতিক্রম হলো না। গা গুলিয়ে উঠল। অনেকেরই বোধ হয় এরকম হয়! কিন্তু কী করব? এটুকু তো মেনে নিতেই হবে। গাইনি স্পেশালিস্ট রাথিয়া নেহারের সিজারিয়ান অপারেশন করছে। রাহেল তখনো ক্লিনিকে আসেনি। আসেনি, ঠিক তা নয়! আমরা এখানে আসার পর সে বাসায় গেছে ফ্রেশ হওয়ার জন্য। কদিন থেকেই অনেক ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে ওকে। আমি কেবিন ছেড়ে বাইরে এলাম। গভীরভাবে তাকিয়ে আছি কোথায়, জানি না। মনে হলো আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলছি দূর অজানায়। নেহারের জন্য মনটা অস্থির হয়ে উঠছে খুব। সেদিন সুলগ্নাকে সাহস দিলেও আমিও যে মনে মনে ভেঙে পড়িনি, তা কিন্তু নয়! আমাদের ওয়্যার স্ট্রিটের বাড়িতে বিয়ের পর নেহার খুব একটা যেত না। রাহেলও ব্যস্ত থাকত ওর অফিস কিংবা ফ্যামিলি নিয়ে। অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ ছিল ওদের। সুলগ্নার মতো নেহারের সাথেও আমার বন্ডিংটা ছিল ফ্রেন্ডলি। আমি এখন সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত। দরজার ওপাশের কেবিনে তখনো কোনো সাড়া শব্দ নেই। কান খাঁড়া করে বাইরে দাঁড়িয়ে আছি একা। মা আমার কাছে এল। কী বিষণœ মা’র চেহারাখানি! বলল- তুই এখানে অনন্য? জি! কেন, কী হয়েছে মা? না, কিছু হয়নি। মাও যে ভালো নেই, সে কথা তো আমার অজানা নয়। হতবাক হয়ে দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছি। দৃঢ়চেতা মনটা আমার আজ কেন ভেঙে ভেঙে পড়ছে বারবার?

সুইস উলের কামিজ, ইটালিয়ান সিল্কের স্কার্ফ আর রঙদার সালোয়ারের ওপর ডাক্তারি অ্যাপ্রন পরে অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে এল রাথিয়া। অপারেশন সাকসেসফুল। মা-শিশু দুজনেই অনেক ভালো আছে। রাথিয়া আমাকে বলল- দেয়ার ইজ নো প্রবলেম। অল আর সাকসেসফুল মিস্টার অনন্য। আমি কী বলব, ভেবে পাচ্ছি না। রাথিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি। সে তাকানোয় হয়তো বা টেকসই ভালোবাসা ছিল! আমার বুকের ঠিক মাঝখানটায় রিস্টওয়াচের মতো টিকটিক করছে হৃৎপিন্ডটা। কিছু কি বলব রাথিয়াকে? রাথিয়ার দৃষ্টিও যে আমাকে অবলোকন করছিল- ওর ওই চাহনির দাগটানা ইতিহাস আমার সিক্স সেন্সকে নাড়া দিয়ে গিয়েছিল তখনই। ওর তাকানোয় আমি আমার জন্য পুনর্জন্মের ইতিকথা খুঁজে পেয়েছিলাম

হালকা-পাতলা গড়ন, মানানসই উচ্চতা, শ্যামবরণ গায়ের রঙ রাথিয়ার। ওর মায়াবী ঠোঁটের ওপর ছোট্ট একটা তিল, বড় বড় দুটো চোখ আমাকে বরাবরই ভীষণ টানে। রাথিয়া ওর চেম্বারে চলে গেল। আমি নেহারের পাশে গিয়ে বসলাম। নেহার ঘুমাচ্ছে। সেন্স ফেরেনি তখনো। নেহারের মুখের ওপর ঝুঁকে পড়লাম। এ কী, ওর মুখটা কেন জানি টোপা টোপা! প্রেগন্যান্সির সময় এরকম একটু-আধটু তো হয়ই। আমি রাথিয়ার চেম্বারের দিকে এগিয়ে গেলাম টাইম স্পেন্ড করার জন্য। কিন্তু দরজার পর্দা টেনে ভেতরে দেখলাম রাথিয়া ওর চেম্বারে নেই। সে কি তাহলে চলে গেছে? ওর পিএ বলল- রাথিয়া ম্যাডাম তো এখনি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। অন্য হসপিটালে আরেকটা সিজারিয়ান অপারেশন আছে। কিছু বলতে হবে তাঁকে? আমি বললাম- না! স্বভাবতই আমি থমকে গেলাম। নিজের অজান্তেই রাথিয়াকে ঘিরে ভালোলাগাগুলো লাট খেতে থাকে বুকের ভেতর। আমি কি তাহলে টারশিয়েরি যুগের বিলুপ্ত কোনো প্রেমিকের ক্ষয়প্রাপ্ত ফসিল?

 শিবগঞ্জ, বগুড়া

ডিএসএস/ 

Header Ad

মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশনে আটকানোর গুজব না ছড়ানোর আহ্বান আজহারীর

ফাইল ছবি

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরেছিলেন জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। সপ্তাহখানিক কাটিয়ে গতকাল শুক্রবার (১১ অক্টোবর) আবারও মালয়েশিয়ায় চলে যান । তবে মালয়েশিয়ার পুলিশ তাকে ইমিগ্রেশনে আটকে দেওয়ার খবর জানা যায়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দেশটির স্থানীয় সময় রাত ২টার পর তার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়।

এবার ইমিগ্রেশনে আটকে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে নিজেই মুখ খুলেছেন মাওলানা আজহারী। এ ঘটনায় গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি জানান, ‘মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশন পয়েন্টে ভেরিফিকেশনে একটু সময় নিয়েছিল। আমি ঠিক আছি। অযথা গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন’।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন মিজানুর রহমান আজহারী। তবে কয়েকদিনের মাথায় শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ফের দেশ ছেড়ে মালয়েশিয়া চলে যান তিনি।

আজহারীকে বহনকারী বিমান মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কুয়ালালামপুরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর তাকে বিমানবন্দরের ওয়েটিং রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা অবস্থান করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে আজহারীর বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ এখনও দেশটির ইমিগ্রেশন সার্ভারে রয়ে গেছে। এ কারণে তাকে আটকে দেয় পুলিশ।

এর আগে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্ট দিয়ে দেশ ছাড়ার ঘোষণা দেন জনপ্রিয় এই ইসলামি বক্তা।

ফেসবুকে তিনি লেখেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সংক্ষিপ্ত সফরে দেশে এসেছিলাম। বেশিরভাগ সময় পরিবারের সাথেই কাটিয়েছি। এরই মাঝে বিভিন্ন ঘরানার আলিম-ওলামা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে একটি ক্লোজ মিট-আপ প্রোগ্রাম করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, সত্যিই সে-দিনটি বেশ উপভোগ্য ছিল। তবে শর্ট নোটিশে প্রোগ্রামটি আয়োজনের কারণে অনেক প্রিয় ভাই আসতে পারেননি। আবার কিছুটা তাড়াহুড়ো করে দাওয়াত দেয়ার কারণে, বেখেয়ালবশত অনেকে বাদ পড়েছেন। আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। পরবর্তীতে সবার সাথে সাক্ষাতের প্রত্যাশা রইলো।

আজহারী আরও লেখেন, আজ মালয়েশিয়া চলে যাচ্ছি। মাস খানেক পর আবারও দেশে ফিরবো ইনশাআল্লাহ। তখন আইনশৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা, প্রটোকল, লোকেশন সিলেকশন, শ্রোতা ধারণ ক্ষমতা, অর্গানাইজিং ক্যাপাসিটিসহ সবকিছু অনুকূল হলে, দেশজুড়ে বিভাগীয় পর্যায়ে হয়ত কয়েকটি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে পারি। তবে, সব কিছুই নির্ভর করবে উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতির ওপর।

Header Ad

নদী ও সাগরে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু

ছবি: সংগৃহীত

মা ইলিশ রক্ষা করতে দেশের সাগর ও নদীগুলোতে মাছ শিকারের ক্ষেত্রে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার।

আজ (শনিবার, ১২ অক্টোবর) দিনগত রাত ১২টার পর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সাগর ও নদীগুলোতে জারি থাকবে এ নিষেধাজ্ঞা। এ সময়ে সাগর ও নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার, মজুত ও পরিবহন দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে।

বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা করে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে সামনে রেখে এই ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখার পাশাপাশি মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানও বাস্তবায়ন করা হবে। ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইতোমধ্যে নৌকাসহ মাছ ধরার সরঞ্জামাদী তীরে ওঠাচ্ছেন উপকূলের জেলেরা।

আইন অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রি করলে দায়ী ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাসহ উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

প্রতি বছর এই সময়ে মা ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ছুটে আসে। আগামী ২২ দিন চাঁদপুরের মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে লক্ষীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় কোনো জেলে নদীতে নামতে পারবেন না। ইতোমধ্যে পদ্মা-মেঘনা পাড়ের জেলেরা জাল-নৌকা তীরে উঠিয়ে নিচ্ছেন।

এদিকে কর্মহীন এ মৌসুম নিয়ে বরাবরের মতোই দুশ্চিন্তা ভর করেছে উপকূলবর্তী জেলেদের মাথায়। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে পরিবার-পরিজনের ভরন-পোষন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

সূত্রমতে, অর্ধ লক্ষাধিক জেলে রয়েছেন চাঁদপুরে। এর মধ্যে ৪৩ হাজার জেলে নিবন্ধনকৃত। শুধু নিবন্ধনকৃত জেলেরাই সরকারি সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল পেয়ে থাকেন কর্মহীন এ মৌসুমে। তাই সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি আর্থিক সহায়তার দাবি এখানকার জেলেদের।

চাঁদপুরের মেঘনা পাড়ের বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, কিছু কিছু জেলে আইন মানছে না। ২২ দিন মাছ ধরতে পারবো না কিন্তু পরিবার নিয়ে কিভাবে দিন কাটে সে খবর কেউ রাখে না। আমাদের যে চাল দেয়, সেটি দিয়ে কিছুই হয় না। চালের সঙ্গে আনুষঙ্গিক জিনিস লাগে। সে খরচ কীভাবে পাবো? ধারদেনা ও কিস্তির টাকা দিয়ে আমাদের চলতে হয়। ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারি না। অভাবে পরে অনেক জেলে বাধ্য হয়েই নদীতে নামে।

চাঁদপুরের নদীকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু কাউছার দিদার বলেন, এবার ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। বিগত বছরের ন্যায় এবারও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে আশা করেন তিনি।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, এ বছর ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে পালিত হবে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে কোনো জেলে নদীতে নামলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু জেলে নয়, কোনো সাধারণ ক্রেতার হাতে ইলিশ পাওয়া গেলে, তাকেও আইনের আওয়তায় আনা হবে। জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশের পাশাপাশি এবার সেনাবাহিনীও মাঠে থাকবে।

Header Ad

গণহত্যার বিচার শুরু হলে অনেক দ্বিধা-প্রশ্ন দূর হবে : আসিফ নজরুল

ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার প্রচুর আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যখন জুলাই–আগস্ট মাসের পৈশাচিক গণহত্যার বিচার অচিরেই শুরু করব, তখন দেখবেন, আমাদের অনেক দ্বিধা, অনেক প্রশ্ন দূর হয়ে যাবে।’

আজ শুক্রবার বিকালে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের শ্রী শ্রী মহাপ্রভুর আখড়া পূজামণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) গঠিত হয়ে যাবে। এর কাজ কিন্তু ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আমাদের প্রসিকিউশন টিম গঠিত হয়েছে প্রায় এক মাস হয়ে গেছে। আমাদের ইনভেস্টিগেশন টিম গঠিত হয়েছে দুই সপ্তাহ হয়ে গেছে।’

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‌‌‘আপনারা নিজেদের সংখ্যালঘু হিসেবে ভাববেন না। আপনারা নিজেদের দেশের নাগরিক হিসেবে মনে করবেন। মুসলিম ধর্মের মানুষ যেমন বাংলাদেশের মালিক তেমনি আপনারাও দেশের মালিক। আপনারা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সমান অধিকার, সমান প্রত্যাশা, সমান দৃঢ়তা ও সমান আত্মবিশ্বাস নিয়ে বসবাস করবেন। আপনারা কোনো রাজনৈতিক দলের ফাঁদে পা দিবেন না। আপনাদের নিয়ে অনেক দল নানা ধরনের খেলা করছে। এ বিষয়ে সজাগ থাকবেন।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক-ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা এবং সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসা এক জিনিস নয়। দুটো ভিন্ন জিনিস। রাজনৈতিক বা প্রতিহিংসাবশত ব্যক্তিগত হামলাকে সাম্প্রদায়িক হামলা ভাববেন না। আর যদিও বিচ্ছিন্নভাবে সাম্প্রদায়িক কোনো ঘটনা ঘটে তবে সেখানে বিভাজন না হয়ে সহনশীল ভূমিকা পালন করবেন এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না।’

‘সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু নয়। মুসলিম, হিন্দু বা বৈদ্ধ-খ্রিস্টান কারো নয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি সবার। রাষ্ট্রে সকলেই সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সিরাজগঞ্জে নিহতের স্মরণ ও তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ গঠনে আপনারাও ভূমিকা রাখবেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুধু মুসলিম নয়, সকল ধর্মের মানুষই অংশগ্রহণ করেছেন। নতুন বাংলাদেশে ধর্ম পালনের অধিকার সকল ধর্মের মানুষের সমান।’

সনাতন ধর্মের নেতা সত্য নারায়ন সারদারের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. তোফাজ্জল হোসেন, পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু, পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট কল্যাণ সাহা, পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইন্দ্রজিত সাহা, থানা বিএনপির সভাপতি ও পূজা উদযাপন কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমর কৃষ্ণ দাস এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইয়াসিন আরাফাত ইশান প্রমুখ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশনে আটকানোর গুজব না ছড়ানোর আহ্বান আজহারীর
নদী ও সাগরে মাছ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু
গণহত্যার বিচার শুরু হলে অনেক দ্বিধা-প্রশ্ন দূর হবে : আসিফ নজরুল
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার
চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে যুবককে হত্যা
পূজায় সব ধরনের নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে : সেনাপ্রধান
চুয়াডাঙ্গায় অতিরিক্ত মদ্পানে হরিজন সম্প্রদায়ের একজনের মৃত্যু
টাঙ্গাইলে ব্যবসায়ী মুসলিম হত্যাকাণ্ড: প্রধান আসামির বাবা মর্তুজ আলী গ্রেফতার
সংবিধান বাংলাদেশের দেয়ালে দেয়ালে লেখা হয়েছে: তথ্য উপদেষ্টা
ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ঘোষণা শিগগিরই : উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
মারধর করে ভিক্ষা করতে বাধ্য করতো সন্তানরা, কষ্টে বাবা-মায়ের পানির ট্যাঙ্কে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা
বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
ককপিটে পাইলটের অকাল মৃত্যু: জরুরি অবতরণের ঘটনা
মিয়ানমার দূতাবাসে জেলে হত্যার কড়া প্রতিবাদ বাংলাদেশের
মালয়েশিয়া ফিরে গেলেন মিজানুর রহমান আজহারি, ফেসবুকে যা জানালেন
শান্তিতে নোবেল পেল জাপানি সংস্থা 'নিহন হিডানকিও'
পূজা উদযাপন পরিষদের এক কর্মকর্তার আমন্ত্রণে গান করেছিলেন শিল্পীরা: পুলিশ
ভারতে হিযবুত তাহ্‌রীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা
এক প্রজ্ঞাপনেই ১৭ বছরে করা ৪ লাখ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে: মির্জা আব্বাস
পূজামণ্ডপে ইসলামী গান: মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার দুজন