সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ | ১৬ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

আমাদের ডিভোর্স হয়নি, হিরো আলম অভিমান করেছিল: রিয়ামনি

হিরো আলম ও রিয়ামনি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় হঠাৎ আত্মহত্যার চেষ্টা, হাসপাতাল ভর্তি, আর তাতে ছুটে যাওয়া স্ত্রী রিয়ামনির। সব মিলিয়ে আবারো আলোচনার কেন্দ্রে উঠেছে হিরো আলম ও রিয়ামনির সম্পর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন ছড়িয়ে পড়ে ‘ডিভোর্স হয়েছে’ এমন তথ্য, তখনই রিয়ামনি জানিয়ে দিলেন—“আমাদের ডিভোর্স হয়নি, হিরো আলম অভিমানে এসব বলেছিলেন।”

সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রিয়ামনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমি বারবার বলেছি, আমাদের মাঝে তৃতীয় একজন ঢুকে পড়েছিল। সেখান থেকেই যত জটিলতা। এখন ধীরে ধীরে হিরো আলম ঠিক হচ্ছেন। শিগগিরই তিনি মিডিয়ার সামনে আসবেন, তখন সব পরিষ্কার হবে।”

এদিকে হিরো আলমের অতীত অভিযোগ ছিল রিয়ামনিকে ঘিরেই। বাবার মৃত্যুর সময় পাশে না থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি সংসার না করার ঘোষণা দেন। তখন রিয়ামনি বিষয়টিকে ব্যক্তিগত ক্ষোভ বলে মন্তব্য করেছিলেন। বলেন, “উনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তাই এমন কথা বলছেন।”

তবে এরপর রিয়ামনি পারিবারিক আদালতে ১২ লাখ টাকার দেনমোহর ও ভরণ-পোষণের দাবি করে একটি মামলা করেন। তার ভাষায়, “আমি এখনো কোনো তালাকনামা হাতে পাইনি। আইনি দিক থেকে এখনো আমি তার স্ত্রী। সে আমার খোঁজখবরও নেয় না। তাই দেনমোহর ও ভরণ-পোষণের জন্য আদালতে মামলা করেছি।”

অন্যদিকে, হিরো আলম গত ২১ জুন স্ত্রী রিয়ামনির বিরুদ্ধে ঢাকার হাতিরঝিল থানায় পরকীয়ার অভিযোগ এনে মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, রিয়ামনিকে ভাড়াবাড়িতে অপর একজন পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন তিনি। পরবর্তীতে তাকে মারধর করা হয় এবং তার গলার সোনার চেইন চুরি হয় বলে উল্লেখ করেন হিরো আলম।

এতসব নাটকীয় ঘটনার মাঝেই ২৮ জুন সকালে বগুড়ার এক বন্ধুর বাড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় হিরো আলমকে। প্রাথমিকভাবে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলেও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ছুটে যান রিয়ামনি। হাসপাতালের সঙ্গেই আবার নতুন করে আলোচনায় আসে তাদের সম্পর্ক।

অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—যদি সত্যিই তালাক হয়ে থাকে, তাহলে রিয়ামনি কেন নিজেকে হিরো আলমের স্ত্রী হিসেবে দাবি করছেন? রিয়ামনির জবাব পরিষ্কার, “কোনো কাগজপত্র ছাড়াই তালাকের ঘোষণা দিয়ে মিডিয়ায় বলে বেড়ানো হচ্ছে। আমি এখনো আইনত তার স্ত্রী। আর আমি এখনো ওর প্রতি দায়িত্বশীল।”

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)

টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ওয়াকফকৃত (নির্ধারিত) জায়গায় মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী। সোমবার (৩০) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২০১৮ সালে নাগরপুরে মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাবনা আসে। নিয়ম অনুযায়ী কমপক্ষে ৪০ শতাংশ জায়গা ইসলামি ফাউন্ডেশনের নামে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়ার বিধান রয়েছে। সে অনুযায়ী নাগরপুর ৫ নং ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ তাদের জমি ইসলামি ফাউন্ডেশনের নামে ওয়াক্ফ করে দেয়। এরপর সংসদ নির্বাচনে আহসানুল ইসলাম টিটু এমপি নির্বাচিত হলে মসজিদটি অন্যত্র নির্মাণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু শর্ত অনুযায়ী জায়গায় পাওয়া না গেলে তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।

সম্প্রতি স্থানীয় কতিপয় বিএনপি নেতা নাগরপুর নাগরপুর সরকারি কলেজ চত্বরে মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ভিত্তিফলক উন্মোচন করার জন্য টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসককে গত ২৬ জুন বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসক শরিফা হক তিনি ভিত্তিফলক উন্মোচন করেননি।

এদিকে, বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকরের সৃষ্টি হয়েছে। মডেল মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গায় স্বত্বেও এভাবে কলেজ চত্বরে মসজিদ নির্মাণের বিষয়টি নাগরপুরের সাধারণ মানুষ মেনে নিচ্ছে না।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- প্রস্তাবিত মডেল মসজিদ কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য তাজউদ্দীন, শিক্ষক মিজানুর রহমান মিজান, শিক্ষক আজিজুর রহমান, কলেজের শিক্ষার্থী শাহাদত হোসেন প্রমুখ।

Header Ad
Header Ad

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কো রুবিও। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুইজনের মধ্যে ১৫ মিনিটের কথোপকথন হয়েছে, যেটি ছিল উষ্ণ, সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গঠনমূলক। যা দুই দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতিফলন।

তাদের মধ্যে ঠিক কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে মার্কিন শুল্ক পুনর্বিবেচনা চেয়ে এ বছরের ৭ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চিঠিতে ৩ মাসের জন্য ৩৭ শতাংশ শুল্ক প্রস্তাব স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

চিঠিতে বাংলাদেশ কী কী করতে চায় তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এ নোবেল জয়ী।

চিঠিতে ড. ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা আগামী প্রান্তিকের মধ্যে আমাদের পরিকল্পনা অনুসারে কাজ শেষ করব। এসব কর্মকাণ্ডের বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শক সভার জন্য দয়া করে প্রয়োজনীয় সময় দেবেন। তাই আমি আপনাকে অনুরোধ করতে চাই যে বাংলাদেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করুন। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, আপনি আমাদের অনুরোধ রাখবেন।’

চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য এজেন্ডায় বাংলাদেশ পুরোপুরি সহায়তা করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুরো বিষয়টি দেখভাল করছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। আমাদের প্রধান কর্মপন্থা হলো তুলা, গম, ভুট্টা, সয়াবিনসহ যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য আমদানি বৃদ্ধি করা। যা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের আয় ও জীবনযাত্রায় ভূমিকা রাখবে। যুক্তরাষ্ট্রের তুলার বাজারের প্রবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশে বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করছি, যা পুরোপুরি শুল্কমুক্ত সুবিধা।’

চিঠির ভাষ্য অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশই যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর সবচেয়ে কম হারে শুল্ক আরোপ করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য ও স্ক্র্যাপের ওপর শূন্য শুল্ক অব্যাহত রাখা হবে। গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর, চিকিৎসা সামগ্রীর মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমানো নিয়ে কাজ হচ্ছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি পণ্যের নন-ট্যারিফ বাধা দূর করা হচ্ছে। শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সহজ করতে পণ্যের মান পরীক্ষা, লেবেলিং, সনদ ইত্যাদির বিষয়ে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের স্টারলিংকের বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানান প্রধান উপদেষ্টা। এমন উদ্যোগ বেসামরিক বিমান চলাচল, সামরিক খাতসহ অগ্রসর প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন যুগের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা

গাফফার আলী আকাশ। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার জয়রামপুরে ট্রেন থেকে পড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারীর মৃত্যুর ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে। নিহতের পরিবারের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যা। এ ব্যাপারে নিহত আকাশের পিতা জিন্নাত আলী বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

গত ১৯ মে কপোতাক্ষ ট্রেনযোগে চুয়াডাঙ্গা থেকে বাড়ি ফেরার পথে জয়রামপুর আখ সেন্টারের নিকট রেল লাইনের পাশে পড়েছিল গাফফার আলী আকাশ (২৬) নামে এক যুবকের মরদেহ। এলাকাবাসীর ধারণা ট্রেন থেকে ছিটকে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। আকাশ জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের জিন্নাত আলীর একমাত্র ছেলে। চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। পরদিন চুয়াডাঙ্গার সকল আঞ্চলিক পত্রিকাসহ কিছু জাতীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ প্রচার করা হয়।

আকাশের মৃত্যুর কয়েকদিন পর মৃত্যুর ঘটনার নতুন মোড় নিয়েছে। পাওয়া গেছে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য। পরিবারের দাবি, একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে নিছক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী থেকে খুলনাগামী আন্তঃনগর কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের 'ঙ' বগিতে দায়িত্বে থাকা টিটিইসহ রেলওয়ে পুলিশ ও এটেনডেন্টরা আকাশকে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিহত আকাশের পিতা জিন্নাত আলী বাদি হয়ে গত ২১ মে ওই ট্রেনের 'ঙ' বগিতে দায়িত্বে থাকা ২ জন রেলওয়ে পুলিশ, ১ জন টিটিই এবং ২ জন এটেনডেন্টকে আসামি করে চুয়াডাঙ্গা আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামীরা হলেন- ট্রেনের 'ঙ' বগিতে দায়িত্বে থাকা টিটিই লালন চক্রবর্তী (৪২), রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক পারভেজ (৩৬), কনস্টেবল কাদের (৪০), অ্যাটেনডেন্ট মিলন (৩৭) ও সোহাগ মিয়া (৩৬)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গাফফার আলী আকাশ অফিস শেষে প্রতিদিনের মতো কপোতাক্ষ ট্রেনযোগে চুয়াডাঙ্গা থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। ঘটনার দিন কপোতাক্ষ ট্রেনের 'ঙ' বগিতে দায়িত্বে থাকা টিটিই, রেলওয়ে পুলিশ ও এটেনডেন্টরা টিকিট না কেটে উঠা যাত্রীদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করছিলেন এবং তাদের কাছে অবৈধভাবে অনেক টাকা দাবি করছিলেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় রেলওয়ে পুলিশসহ অন্যরা আকাশকে টেনে-হিঁচড়ে দরজার কাছে নিয়ে যায় এবং জয়রামপুর রেল স্টেশনের নিকট দরজা থেকে তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এ মামলায় ৪ জন প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রী স্বাক্ষীও প্রদান করেছেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কপোতাক্ষ ট্রেনের একই বগিতে থাকা একাধিক যাত্রীর কাছ থেকে তথ্য পেয়ে আকাশ হত্যার সঠিক বিচার পাওয়ার জন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।পরিবারের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষদর্শী এক যাত্রীর সাথে কথোপকথনের কল রেকর্ড হাতে পাওয়া গেছে।

রেকর্ডে রাজশাহী থেকে ওঠা ওই ট্রেনের এক যাত্রী বলেছেন, আমরা ওই ট্রেনের 'ঙ' বগিতে ৭১ নং সিটে বসে ছিলাম। এক পর্যায়ে দেখতে পাই লাল গেঞ্জি পরিহিত একটা ছেলেকে (আকাশ) বগিতে দায়িত্ব থাকা কয়েকজন লোক টেনে হেঁচড়ে দরজার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দরজার কাছে নিয়ে যাওয়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ওই ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে বাইরে ফেলে দেয়। আমি জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি ছেলেটার মাথা নিচের দিক দিয়ে পড়ে যাচ্ছে। সেখানে দুইজন পুলিশ উপস্থিত ছিল। তাদের সামনেই এই ঘটনা ঘটে।

কল রেকর্ডে আরও শোনা যায়, তারা দর্শনা হল্ট স্টেশনে নামার পর ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা কাদের নামের এক পুলিশের কাছে জানতে চায়, ছেলেটার অপরাধ কি ছিল? পুলিশ কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যায়। দুর্ঘটনার দিন আকাশ তার ৯ মাসের ছেলে শিশুর জন্য জুস কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। আকাশের নিথর দেহের পাশে পড়ে ছিল জুসের প্যাকেট। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান আকাশ অত্যন্ত নম্র, ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। তার অকাল মৃত্যুরহস্য উদ্‌ঘাটন করে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন এলাকাবাসী। উথুলী রেলস্টেশনে কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে মানববন্ধন করেছে শত শত মানুষ।

নিহত আকাশের বাবা-মা একমাত্র সন্তানকে এভাবে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। সরেজমিন আকাশের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তাদের সাথে। আকাশের মা তাহমিনা খাতুন বিউটি বলেন, ‘আর কথা বলতে পারছি না বাবা, কি হয়ে গেল। আমার আকাশকে ওরা এভাবে মরে ফেলল। আল্লাহ তুমি ওদের বিচার করো।’

আকাশের স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার রাফি বলেন, ‘আমার ১১ মাসের শিশু সন্তান নিয়ে আমি এখন কি করবো। আমার স্বামী ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জন করা মানুষ। সে একটু প্রতিবাদী ছিল। এজন্য তাকে এভাবে জীবন দিতে হলো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চায় সরকারের কাছে।’

বাবা জিন্নাত আলী বলেন, যখন জানতে পারলাম আমার ছেলেকে ওরা ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা করেছে। তখন মামলা করেছি। জিআরপি পুলিশ মোবাইল করে আমাকে এবং আমার জামাইকে হুমকি দিচ্ছে মামলা করলাম কেন।

সেনেরহুদা গ্রামের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মহিউদ্দীন বলেন, আকাশ খুব ভাল ছেলে ছিল। তাকে এভাবে হত্যা করা হলো। রক্ষকই যদি ভক্ষক হয় তাহলে ট্রেনের যাত্রীদের নিরাপত্তা কোথায়।

উথুলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ট্রেনের টিটিই, এটেনটেনডেন্ট’র অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে চলন্ত ট্রেনের বগির মধ্য থেকে ধরে এনে দরজা দিয়ে বাইরে ফেলে দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অথচ সে একজন সরকারি কর্মজীবী ছিল। তার পরিচয় পেয়েও তাকে তোয়াক্কা করা হয়নি। খবর পেয়ে আমিসহ এলাকার কয়েকজন ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে রেল লাইনের পাশে পড়ে ছিল নিথর মরদেহ। মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। মরদেহ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা জিআরপি আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। প্রাথমিকভাবে আমাদের জানানো হয়, ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে আকাশে মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ গ্রামে এনে দাফন করি। পরদিন ট্রেনের যাত্রীরা নৃশংসতার সত্যটি আমাদেরকে জানায়। এরপর মামলা করা হয়েছে। আশা করি বর্তমান সরকারের কাছে ন্যায় বিচার পাবো।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কনক কুমার দাস বলেন, ‘মামলাটি প্রথমে ডিবির কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেন আদালত। এরপর বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে পিবিআইকে দ্বায়িত্ব দেন বিজ্ঞ আদালত। মামলাটি বর্তমানে ঝিনাইদহ পিবিআই তদন্ত করছে। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: মির্জা ফখরুল
বিপিএলে নোয়াখালীর অভিষেক, আসছে ‘নোয়াখালী রয়্যালস’
হোটেল থেকে সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্তে যা জানা গেল
আমাদের ডিভোর্স হয়নি, হিরো আলম অভিমান করেছিল: রিয়ামনি
সরকারি উদ্যোগেও কমেনি ইলিশের দাম, খালি হাতেই ফিরছেন ক্রেতারা
মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, বন্ধ থাকবে সব লেনদেন
বিরামপুরে ১৭০তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালন
এনবিআরের কমপ্লিট শাটডাউন প্রত্যাহার, বেনাপোল কাস্টমসে কার্যক্রম শুরু
কুবি শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রক্টরিয়াল বডির জরুরি নির্দেশনা
ঢাকাস্থ ধুনটের সুধীজন কল্যাণ ফোরামের ঈদ পুনর্মিলনী ও নির্বাচন
৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল আজ প্রকাশ