ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আলোচনাই চলছে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, তার প্রশাসন তেহরানের জন্য কোনো ধরনের সহযোগিতাও করছে না।

সোমবার (৩০ জুন) এক সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “আমি ইরানের সঙ্গে কোনো কথা বলছি না। আমরা তাদের কিছুই দিচ্ছি না।”

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। তবে তার এই বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বলছে, এ ধরনের হামলার কোনো স্বীকৃত প্রমাণ এখনো মেলেনি।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে খবর বের হয়, ট্রাম্প প্রশাসন বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির আওতায় ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা ভাবছে। তবে এই খবরকে “ভুয়া সংবাদ” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প।

ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “ভুয়া ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস কুনসকে বলুন, আমি ইরানকে কিছু দিচ্ছি না। ওবামা প্রশাসন যেভাবে তাদের পারমাণবিক চুক্তির মাধ্যমে বিলিয়ন ডলার দিয়েছিল, আমি তেমন কিছু করিনি। এমনকি আমি তাদের সঙ্গে কথা বলাও বন্ধ করেছি।”

উল্লেখ্য, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগ উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন এ বিষয়ে সরাসরি কিছু স্বীকার করেনি, তবে এই প্রথমবারের মতো তিনি নিজ মুখেই দাবি করলেন, “তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে।”

সরকারি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার কাছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র থাকার ঘটনা ও তা বিমানবন্দরে ধরা পড়া নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অনেকে বলছেন তিনি একে-৪৭ এর লাইসেন্স পেয়েছেন। এটা একে-৪৭ নয়, এটা তারই একটি অস্ত্র। তার একটি পিস্তলের খালি ম্যাগাজিন ছিল, যা ভুলে সঙ্গে থেকে গেছে। এটা একদমই ভুলবশত হয়েছে।”

তিনি আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, “অনেক সময় আমরা যেমন চশমা নিতে চাই, কিন্তু ভুল করে মোবাইল নিয়ে বের হয়ে যাই—এটাও তেমনই একটা ভুল। যদি তিনি আগে থেকে জানতেন, তাহলে কোনোভাবেই এটা সঙ্গে নিতেন না।”

তবে এ ঘটনায় সবচেয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি হয়েছে বয়সজনিত নিয়ম ভঙ্গ করে অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়ে। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে স্পষ্ট বলা আছে, অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে হলে বয়স হতে হবে কমপক্ষে ৩০ বছর। অথচ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বয়স এখনও ৩০ হয়নি।

এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমি যেহেতু ওই আইনটা নিজে পড়িনি বা দেখিনি, সেহেতু এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।”

এছাড়া বিষয়টি নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে সাধারণ মানুষ। উপদেষ্টা আসিফের কাছে থাকা অস্ত্রবাহী ব্যাগটি দুই দফা স্ক্যানিংয়ের পরও ধরা পড়েনি, তৃতীয় দফায় গিয়ে সেটি শনাক্ত করা হয়।

এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমি আগেও বলেছি, ধরুন আমার ভাই যদি একজন নেতা হন, তিনি বিমানবন্দরে ঢুকলে অন্যদের থেকে একটু বেশি সুবিধা পান। এই ‘প্রিভিলেজ’ যেন আর না হয়—এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইনের ক্ষেত্রে সবাই সমান হওয়া উচিত।”

অপরদিকে, দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে সোমবারের মিটিংয়ে বিশেষ আলোচনা হয় বলে জানান তিনি। ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে কীভাবে নিরাপত্তা জোরদার করা যায়, তা নিয়েই আলোচনার মূল ফোকাস ছিল বলে জানান তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন “এই সময়কালে দেশজুড়ে অনেক অনুষ্ঠান হবে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের হুমকি বা অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা নেই।”

নির্বাচিত নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‌“আমাদের সাম্প্রতিক চীন সফরে দেশটির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অর্থনীতি, তিস্তা প্রকল্প, রোহিঙ্গা সংকট ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।”

মির্জা ফখরুল জানান, তিস্তা প্রকল্পে চীন ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব এলে ভবিষ্যতে সেটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বিএনপি।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের ভূমিকা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “চীন আন্তরিকভাবে মিয়ানমারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যাতে সংকটের সমাধান হয়। আমরা তাদের এ উদ্যোগকে সম্মান ও স্বীকৃতি জানিয়েছি এবং এর আরও দৃশ্যমান ফলাফল দেখতে চেয়েছি।”

চীন সফরে অর্থনৈতিক বিষয়ে চীনের সহায়তা চেয়ে বিএনপি প্রতিনিধি দল কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান ফখরুল। তার ভাষায়, “আমরা ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো, বিভিন্ন ফি পুনর্বিবেচনা এবং অনুদানের সম্ভাব্যতা নিয়েও কথা বলেছি। তারা বিষয়গুলো সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।”

এ সফরে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও জনগণকেন্দ্রিক সহযোগিতার উপর গুরুত্ব দিয়ে বিএনপি একটি ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে গত ২২ জুন ৯ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৭ জুন দেশে ফেরে প্রতিনিধিদলটি। চীন সফরকালে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের কয়েকজন সদস্য।