মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

২৩৪ কোটি টাকার গাইড বাঁধে ধস, ভাঙনের আশঙ্কায় হাজারো পরিবার

টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর সোয়া কিলোমিটার দক্ষিণে কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের বেলটিয়া ও হাটবাড়ী আলীপুর অংশে ৪টি লটে ভাগ করে ওই গাইড বাঁধ নির্মাণ করেছিল ৪টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেই গাইড বাঁধের পাশে যমুনা নদীতে বড় বড় ড্রেজার বসিয়ে বালু লোড-আনলোড, উত্তোলন ও বিক্রির উদ্যোগ নেওয়ায় বাঁধ ভেঙে সরকারের কোটি কোটি টাকার প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় শত শত পরিবারের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

২০২১ সালে ওই স্থানের ৬-৭টি বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে যায়। ২০২২ সালের বর্ষায় গাইড বাঁধের মাঝখানে ২-৩ জায়গায় ডেবে যায়। আবার ভাঙন আতঙ্কে এলাকাবাসী বালু উত্তোলন ও বাল্কহেড থেকে খালাস বন্ধে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

বাপাউবো সূত্রে জানা যায়, বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার (নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ-বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম) প্রকল্পের আওতায় বঙ্গবন্ধু সেতুর ভাটিতে নিউ ধলেশ্বরী নদীর মুখে (অফটেক) খনন ও ১৫৩০ মিটার গাইড বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। আর এই বাঁধটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয় ২৩৪ কোটি ২৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।

স্থানীয়রা জানায়, গাইড বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় বেলটিয়া এলাকার নদীভাঙা মানুষ ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছে। দুই বছর আগে বেলটিয়ার অংশে ভাঙনের ফলে বিশালাকার পুকুর তৈরি হয়। ওই স্থানে প্রথমে জিও ব্যাগ ও সিমেণ্টের তৈরি ব্লক ফেলে ভাঙন রোধ করা হয়। পরে ভাঙনের ফলে কর্তৃপক্ষ প্রণীত নকশা পরিবর্তন করে চন্দ্রা কারে গাইড বাঁধ নির্মাণ করতে বাধ্য হয়।

এ ছাড়াও বর্ষা মৌসুমে যমুনা ক্ষেপে গেলে ওই স্থান দিয়ে পৃথক নদীমুখ বের করে নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে বেলটিয়া ও কুর্শাবেনু গ্রামের ২ হাজার পরিবার ভাঙনের শিকার হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ওই চন্দ্রাকার বাঁধের স্থানে বড় বড় ৫টি ড্রেজার মেশিন স্থাপন করায় নদী ভাঙনের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

জানা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড় গোলচত্বর পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এলাকা চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোমেন লিমিটেড। ওই প্রকল্পের সড়ক প্রশস্তকরণে বালু-মাটি সরবরাহ করতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল সাব-ঠিকাদারী নিয়েছেন। তাদের মধ্যে গোহালিয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দ নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

অংশীদারদের মধ্যে রয়েছেন-গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জহুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম(মেম্বার), বালু ব্যবসায়ী মাসুদ রানা, ৮ নম্বর (বেলটিয়া) ইউপি সদস্য মো. শাজাহান আলী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার, সাবেক ইউপি সদস্য সুলতান ফকির প্রমুখ। তারা যমুনা নদীর বাম তীরের বেলটিয়া অংশে বড় বড় ৫টি ড্রেজার ও ৩টি বাল্কহেড(বলগেট) এনে পাইপের ৪টি সারি প্রস্তুত করেছেন। আরও একটি প্রস্তুতের পর্যায়ে রয়েছে। ৩টি বাল্কহেডের মধ্যে একটিতে যমুনাগর্ভে ড্রেজার বসানোর জন্য স্টিলের পাইপ আনা হয়েছে। অন্যটি থেকে বালু খালাস করা হচ্ছে এবং অপরটি তীরে ভেড়ানো রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অংশীদার জানান, গোহালিয়াবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সিরাজগঞ্জের তাপস ঠিকাদারের নেওয়া বালুঘাটে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে অংশীদার হন তারা (উক্ত অংশীদাররা)। সেখান থেকে বাল্কহেডের মাধ্যমে বালু এনে বেলটিয়ায় খালাস করা হচ্ছে। ওই বালু আব্দুল মোনেম লিমিটেডের কাছে বিক্রি করার কথা রয়েছে।

এদিকে আলীপুর গ্রামের প্রবাসী হাতেম আলী জানান, যমুনায় তাদের বাড়ি দুই দফায় ভেঙে গেছে। নিউ ধলেশ্বরী নদীর মুখ বাঁধাই করায় তিনি ও তার দুই ভাই মফিজ উদ্দিন ও হাফেজ উদ্দিন যমুনার বেলটিয়া অংশে পৈত্রিক জমিতে নতুন বাড়ি করেছেন। তিনি দুই মেয়ে-এক ছেলে ও ভাইদের নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন।

তিনি জানান, নদীর মুখে বাঁধ নির্মাণ করায় এ অঞ্চলের মানুষ বসবাসের নির্ভরতা খুঁজে পেয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে সরকার বাঁধ নির্মাণ করে উপকার করেছে।

চরহামজানী গ্রামের শিক্ষক আব্দুল বাছেদ ও তার ভাই আব্দুল মালেক বেলটিয়ায় এসে বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তারা জানান, নিউ ধলেশ্বরীর মুখে (অফটেক) বাঁধ নির্মাণ না হলে বেলটিয়ায় এসে বাড়ি করার কল্পনাও করা যেত না। বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় তারা বাড়ি তৈরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারছেন।

তারা আরও জানান, যমুনা ক্ষেপে গিয়ে গত বছর বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ায় তারা এমনিতেই শঙ্কিত। এর মধ্যে ড্রেজার বসালে বাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আরও বেড়ে যাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যমুনা নদীর বাম তীরে বেলটিয়া অংশে প্রকল্পের ১ নম্বর লটে ৪৫০ মিটার বাঁধ নির্মাণ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঢাকাস্থ এসএস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এবং ২ নম্বর লটে ১৭৮ মিটার টার্নিংসহ ৩২৮ মিটার বাঁধ নির্মাণ করে ঢাকাস্থ এআরকেএল ও কিউএইচএমসিএল জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি।

প্রকল্পের ১ নম্বর লটের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার গৌতম দাস ও ২ নম্বর লটের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার রুবায়েতুল ইসলাম তন্ময়সহ নদী শাসন সংশ্লিষ্ট প্রায় আধা ডজন প্রকৌশলী জানান, প্রমত্ত্বা যমুনার পেট চিরে জন্ম হওয়া নিউ ধলেশ্বরীর অফটেক বাঁধাই একটি যুগান্তকারী সাফল্য। এই সাফল্যের কৃতিত্ব বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের(বাপাউবো) সঙ্গে সঙ্গে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় জনসাধারণেরও। গাইড বাঁধের ফলে যমুনার মূলস্রোত বাম তীর ঘেষে বইছে।

তাৎক্ষণিক সামান্য লাভের জন্য ড্রেজার বসিয়ে যমুনা থেকে বালু উত্তোলন বা বাঁধের উপর চর পড়ার আগেই বালু-মাটি লোড-আনলোড করা বাঁধের জন্য হুমকি। বর্ষায় প্রমত্ত্বা যমুনা ক্ষেপে গেলে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব। বাঁধ ভেঙে গেলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বাড়িঘর ও ফসলি জমিসহ সরকারের ২৩৪ কোটি টাকা নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। এজন্য আগেই সতর্ক হওয়া জরুরি বলে তারা মতপ্রকাশ করেন।

এ প্রসঙ্গে গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাজাহান আলী জানান, বেলটিয়ায় তার বাড়ি হওয়ায় তাকে বালু সরবরাহে কিঞ্চিৎ অংশীদার রাখা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের বালুমহাল থেকে বালু কিনে এনে মহাসড়কের মাটি ভরাট কাজে দেওয়ার কথা রয়েছে। যমুনা ক্ষেপে গেলে এমনিতেই ভাঙবে। যমুনার ভাঙন ঠেকানো সত্যিই দূরূহ বিষয়। গত বছর ড্রেজার বসানো বা বালু খালাসের কোনো বিষয় ছিল না তবুও গাইড বাঁধ ধসে গর্ত হয়েছিল। পরে তা মেরামত করা হয়েছিল।

তিনি আরও জানান, গাইড বাঁধ সম্পূর্ণ বালুর উপর নির্মাণ করা হয়েছে। কোনো কারণে বাঁধের নিচে গর্ত হয়ে পানি ঢুকলে পুরো বাঁধ ধ্বসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার জানান, বেলটিয়া ও কুর্শাবেনু এলাকায় তাদের অনেক জমি-জমা আছে। জমির উপর দিয়ে পাইপ নিতে হয়। তাই তাকে কিঞ্চিৎ অংশের ভাগিদার রাখা হয়েছে। বাঁধের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজকে তিনি সমর্থন করবেন না।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে বালু এনে যমুনার বেলটিয়া অংশে আনলোড করা বা যমুনা থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে তাকে কেউ জানায়নি। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হবে- এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেন তিনি।

অন্যদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও বালু ব্যবসায়ীদের নেতা আব্দুল হাই আকন্দ জানান, তারা সিরাজগঞ্জের ঘাট থেকে বালু কিনে বাল্কহেডের মাধ্যমে এনে বেলটিয়ায় খালাস করছেন। ড্রেজার বসিয়ে যমুনার চর থেকে বালু আনার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তারা যাই করুক না কেন বাসেক ও স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেই করবেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন জানান, যমুনায় ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের কোনো তথ্য তার কাছে নেই। নিউ ধলেশ্বরী নদীতে ড্রেজার বসানোয় পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মহাসড়ক প্রশস্তকরণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পাউবো’র উত্তোলিত বালু (ড্রেজড ম্যাটার) কিনেছে। মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের কাজ বিশাল। তারা কোথা থেকে, কীভাবে মাটি-বালু এনে মহাসড়ক প্রশস্ত করবে-এটা উপর মহলের বিষয় তাই তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারেন না বলে জানান তিনি।

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার (পিএম) মো. আব্দুল আওয়াল জানান, মহাসড়ক প্রশস্তকরণে মাটি ভরাটের জন্য তারা টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে পাউবো কর্তৃক নিউ ধলেশ্বরীর উত্তোলিত বালু (ড্রেজড ম্যাটার) দরপত্রের মাধ্যমে কিনেছেন। এ ছাড়াও যমুনার চর থেকে বালু কেটে আনার নিমিত্তে তাদের অনুমতি রয়েছে। তবে তা বঙ্গবন্ধু সেতুর উজান ও ভাটির (কেপিআই) অঞ্চল থেকে আনা হবে কি-না তা তিনি বলতে পারেননি।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, গাইড বাঁধ ও এর আশপাশে ড্রেজিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পাউবোর কোনো ড্রেজারও ওই এলাকায় নেই। কেউ ড্রেজার বসানোর চেষ্টা বা বাঁধের ক্ষতি করার চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের আওতায় বঙ্গবন্ধু সেতুর সোয়া কিলোমিটার দক্ষিণে ২৩৪ কোটি ২৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকায় ১৫৩০ মিটার গাইড বাঁধ (অফটেক বাঁধাই) নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ বাঁধের সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে।

এ ছাড়াও যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতুর উজানে ৬ কিলোমিটার ও ভাটিতে ৬ কিলোমিটার এলাকা বাসেকের বলে জানান পাউবোর এই প্রকৌশলী। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, নির্দিষ্ট ১২ কিলোমিটার নদী বাসেকের বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিস দেখভাল করবে।

বাসেকের বঙ্গবন্ধু সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর উজানে ৬ ও ভাটিতে ৬ এই ১২ কিলোমিটার এলাকা কেপিআই হিসেবে চিহ্নিত। এই এলাকার মধ্যে ড্রেজার বসানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ ড্রেজার বসানো বা বালু উত্তোলনের চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। লোড-আনলোড করার বিষয়টি তার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ তার সাথে কোনো আলোচনা করেনি। মহাসড়কে বালু দেওয়ার জন্য লোড-আনলোড করে থাকলে বিষয়টি পাউবো বা স্থানীয় প্রশাসন দেখবে। তাছাড়া গাইড বাঁধের ক্ষতি হবে-এমন কাজ কাউকেই করতে দেওয়া হবে না।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার জানান, কোন কারণেই গাইড বাঁধের ক্ষতি এবং মানুষের জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি করা যাবে না। যমুনায় ড্রেজার বাসানো ও লোড-আনলোডের বিষয়টি তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে বাঁধের বিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।

এসআইএইচ

Header Ad
Header Ad

স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "জুলাই শুধু একটি মাস নয়, এটি গণজাগরণ, ঐক্য ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতীক। চলুন, সবাই মিলে এই জুলাইকে পরিণত করি গণজাগরণ এবং জাতীয় ঐক্যের মাসে।"

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মাসব্যাপী ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ স্মরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনে।

ড. ইউনূস আরো বলেন, স্বৈরাচার পতনের জন্য যেন ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়—এই লক্ষ্যেই কাজ চলছে। তিনি শক্ত কণ্ঠে বলেন, "আগামী দিনে কেউ যদি স্বৈরাচার হবার চেষ্টা করে, তাহলে জনগণ যেন সঙ্গে সঙ্গে তাদের পতন ঘটায়। কারণ যখন জনগণ রাস্তায় নামে, তখন কোনো শক্তিই তা থামাতে পারে না।"

তিনি জানান, আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছি যে, পথ যতই কঠিন হোক না কেন, জনগণের ঐক্য এবং গণজাগরণই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়। জুলাই আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল—ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার রুখে দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। বর্তমান সরকারও সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে আর কখনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

ড. ইউনূস স্মরণ করিয়ে দেন, ১৬ বছর আগে একটি ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। "আমরা তাৎক্ষণিকভাবে টার্গেট পূরণ করেছিলাম, কিন্তু মূল লক্ষ্য ছিল একটি নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি নির্মাণ। আমাদের প্রত্যাশা, প্রতি বছর এই মাসটিকে স্মরণ করা হোক এবং স্বৈরাচারের ছায়া পড়লেই তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হোক।"

তিনি জুলাই আন্দোলনের সকল শহীদ ও অংশগ্রহণকারীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, "মাসব্যাপী এই কর্মসূচি কেবল স্মৃতিচারণ নয়, এটি একটি নতুন শপথ—গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি জনগণকে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়িত্ববোধ জাগানো এবং মুক্তির জন্য ত্যাগের স্মৃতি অমলিন রাখা।"

ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, "গত বছরের জুলাইয়ে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই ঐক্য পুনরায় গড়ে তোলার সময় এসেছে। শিক্ষার্থীদের সাহসিক আন্দোলন আমাদের পথ দেখিয়েছে। চলুন এই জুলাইকে গণতন্ত্র রক্ষার নতুন প্রত্যয়ের মাস হিসেবে গড়ে তুলি।"

Header Ad
Header Ad

ক্লাব বিশ্বকাপে ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আল হিলাল

ছবি: সংগৃহীত

ক্লাব বিশ্বকাপে এবার সবচেয়ে নাটকীয় ও রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিল সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল। সাত গোলের টান টান উত্তেজনার লড়াইয়ে ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটিকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কেটেছে দলটি। মার্কোস লিওনার্দোর অতিরিক্ত সময়ের ১১২তম মিনিটে করা জয়সূচক গোলই সৌদি ক্লাবটিকে এনে দিয়েছে এই ঐতিহাসিক জয়।

ম্যাচের শুরুতে অবশ্য এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। প্রথমার্ধে বার্নার্ডো সিলভার গোলে ১-০ ব্যবধানে লিড নেয় তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে নাটকীয়ভাবে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। আল হিলালের হয়ে মার্কোস লিওনার্দো ও ম্যালকম এবং সিটির পক্ষে এরলিং হালান্ডের গোলে ম্যাচ ২-২ সমতায় পৌঁছায়। এতে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের ৯৪তম মিনিটে হেডার থেকে গোল করে আল হিলালকে আবারও এগিয়ে দেন কালিদু কুলিবালি। কিন্তু ১০৪ মিনিটে ফিল ফোডেন গোল করে আবারও সিটিকে সমতায় ফেরান। তবে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন সেই মার্কোস লিওনার্দোই, যিনি ১১২ মিনিটে রিবাউন্ড থেকে গোল করে ৪-৩ ব্যবধানে আল হিলালকে এনে দেন অবিশ্বাস্য এক জয়।

ম্যাচ শেষে হতাশ সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা বলেন, “আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছিলাম, কিন্তু আজকের রাতটি ছিল আল হিলালের।” অন্যদিকে ম্যাচসেরা লিওনার্দো বলেন, “এটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত।”

এই জয়ের ফলে আল হিলাল এখন কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের। ক্লাব বিশ্বকাপে সৌদি আরবের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের এমন সাফল্য দেশটির ফুটবলের জন্য একটি নতুন ইতিহাস রচনা করেছে।

Header Ad
Header Ad

যে বিশেষ গুণেই তাপসের হৃদয়ে জায়গা করে নেন বুবলী!

তাপস, বুবলী। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্রে নিজের অভিনয় দক্ষতা ও বৈচিত্র্যময় উপস্থিতি দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী। ‘দেয়ালের দেশ’, ‘প্রহেলিকা’র মতো গল্পনির্ভর সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, তিনি কেবল বাণিজ্যিক ধারার নায়িকাই নন, বরং একজন পরিপূর্ণ অভিনয়শিল্পী। পাশাপাশি মডেলিংয়েও রয়েছে তার সরব উপস্থিতি।

তবে সিনেমার বাইরেও এক সময় আলোচনায় আসে বুবলীর ব্যক্তিজীবন। গুঞ্জন ওঠে—গানবাংলা টিভির প্রধান নির্বাহী ও সংগীতব্যক্তিত্ব কৌশিক হোসেন তাপসের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়েছেন বুবলী। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব ও আলোচনা ছড়ায়।

সম্প্রতি উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়ের একটি সাক্ষাৎকারে তাপসকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়, বুবলীর সঙ্গে প্রেমে জড়ানোর কারণ কী? উত্তরে তাপস বলেন, “প্রেমটাকে অস্বীকার না করে বরং কাজের প্রতি প্রেম বলা ভালো হবে। বুবলী একজন মেধাবী অভিনেত্রী, তার মধ্যে একটি ‘ম্যাজিক’ আছে, যা প্রথম দেখাতেই মুগ্ধ করে। ভবিষ্যতেও তাকে নিয়ে কাজ করতে আমি আগ্রহী ও আনন্দিত থাকবো।”

তবে এই প্রেমের গুঞ্জনকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন বুবলী। এক সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্টভাবে জানান, “গানবাংলায় আমন্ত্রণ পাওয়ার পরই নানা ধরনের প্রপাগান্ডা ছড়ানো শুরু হয়। আমার কাজ বা সিনেমা আলোচনায় এলেই এসব নোংরামি শুরু হয়। আমি আমার কাজ আর পরিবার নিয়েই ব্যস্ত থাকি। তাপস ভাই ও মুন্নি ভাবির সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই স্বাভাবিক, সৌজন্যপূর্ণ এবং পেশাদার। আমাকে কোথাও বাজে আড্ডায় পাওয়া যাবে না।”

 

বুবলী, তাপস। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বুবলী ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নতুন সিনেমা ও মডেলিং নিয়ে। অন্যদিকে, কিছুদিন ধরে গানবাংলা টিভির সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।

এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়, দুই পক্ষই তাদের সম্পর্ককে কাজ ও পারস্পরিক সম্মানের জায়গায় রাখতেই সচেষ্ট। গুঞ্জনের বাইরে তারা একে অন্যের প্রতি পেশাদার শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির কথাই জানিয়েছেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ক্লাব বিশ্বকাপে ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আল হিলাল
যে বিশেষ গুণেই তাপসের হৃদয়ে জায়গা করে নেন বুবলী!
আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস
বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টা পদে থাকছেন না সামি, জানালেন কারণ
বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: মির্জা ফখরুল