চাকুরি ফেরত পেতে পুলিশের চাকুরিচ্যুত এসআইদের আর্তনাদ

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
রাজশাহীর বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত ৪০তম ব্যাচের ৩২১ জন সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) হঠাৎ করেই চাকরি হারিয়ে চরম হতাশা ও অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। দীর্ঘ এক বছরের চেষ্টার পর প্রশিক্ষণের শেষ ধাপে এসে এই সিদ্ধান্ত তাদের জীবনে যেন বজ্রাঘাতের মতো নেমে এসেছে।
২০২৩ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যে প্রক্রিয়ার সূচনা হয়েছিল, তাতে বহু ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়ে রাজশাহীর বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন তারা। কিন্তু প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার মাত্র ১৩ দিন আগে এক ঘোষণার মাধ্যমে ৩২১ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
চাকরিচ্যুতদের অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না এনে বা উপযুক্ত শুনানি ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অনুপস্থিতি বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে; তবে অনেকে একই পরিস্থিতিতেও প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, অথচ এই ৩২১ জনকে বাদ দেওয়া হয়।
এক চাকরিচ্যুত এসআই বলেন, “আমরা কেউই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করিনি। নিয়মিত প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছি। হঠাৎ এমন একটি আদেশ আমাদের জীবন ধ্বংস করে দিল।”
তারা আরও জানান, নিয়োগের প্রস্তুতির জন্য অনেকেই পরিবার থেকে ধার করে, বাড়ি-জমি বিক্রি করে প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় ব্যয় মেটান। এই সিদ্ধান্ত তাদের পরিবারকে চরম অর্থনৈতিক ও মানসিক বিপর্যয়ে ফেলেছে।
চাকরিচ্যুত এসআইরা এখন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছেন, “আপনিই আমাদের শেষ ভরসা। আমাদের জীবন, পরিবার, স্বপ্ন সব কিছু ধ্বংসের মুখে। আমরা সুবিচার চাই।”
তারা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় এনে প্রকৃত মেধাবীদের চাকরি পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন।
অনেকেই বলছেন, এটি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ইতিহাসে নজিরবিহীন ও কলঙ্কজনক ঘটনা। এমন অস্বচ্ছ ও অমানবিক সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে পুলিশের ভাবমূর্তি ও জনআস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
