চেম্বার থেকে নারী চিকিৎসককে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে মারধর

নারী চিকিৎসককে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে মারধর। ছবি: সংগৃহীত
কুষ্টিয়ায় শারমিন সুলতানা নামের এক নারী চিকিৎসককে তার চেম্বার থেকে টেনেহিঁচড়ে সড়কে এনে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ এনে একদল নারী ওই চিকিৎসককে মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে শহরের লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। চিকিৎসক ডা: শারমিন সুলতানার স্বামীও কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের একজন চিকিৎসক।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে ওই নারী চিকিৎসককে উদ্ধার করতে এসে তার স্বামীও হামলাকারীদের মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই চিকিৎসক দম্পতিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
ঘটনার ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, গাইনি চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে বেধড়ক মারধর করছে একদল নারী। এসময় হামলাকারীদের বলতে শোনা যায়, টাকা নিয়েছিস টাকা ফেরত দে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অর্জন দাস আগরওয়ালা সড়কে লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখেন চিকিৎসক শারমিন সুলতানা। দুপুরে চেম্বারে আসার পর আগে থেকে সেখানে অবস্থান করা একদল নারী তার ওপর হামলা করেন। ৬-৭ জন নারী এতে অংশ নেন। এ সময় চেম্বার থেকে টেনেহিঁচড়ে সড়কের ওপর নিয়ে আসেন তারা।
নারীদের কয়েকজন অভিযোগ করে, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে বিদেশে লোক পাঠানো ও চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের মাধ্যমে টাকা নেন ওই চিকিৎসক। পরে চাকরি দিতে পারেননি ওই চিকিৎসক। আবার টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। এ কারণে তাকে ধরতে এসেছেন তারা।
লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কয়েকজন কর্মচারী জানান, তারা ঠেকানোর চেষ্টা করলে ওই নারীরা হামলা চালান। স্থানীয়রা ইন্ধন দিয়ে নারীদের দিয়ে হামলা চালিয়েছেন। চিকিৎসককে মারধর করা হয়েছে। তাদের যদি কোনও অভিযোগ থাকে পুলিশকে জানাতে পারতেন।
এদিকে হামলার সময় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে কুষ্টিয়া মডেল থানা থেকে পুলিশের একটি দল এসে চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে চিকিৎসকরা ভিড় করেন।
শারমিন সুলতানার স্বামী কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মাসুদ রানা বলেন, ‘আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে সেগুলোর কোনও ভিত্তি নেই। তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। আমার স্ত্রী কোনোদিন মেহেরপুরে যায়নি। ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আমার স্ত্রীকে রোগী দেখার জন্য কল করে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই ওসব নারী বসেছিল। এরপর তারা হামলা করে। আমি খবর শুনে সেখানে গেলে আমার ওপরও হামলার চেষ্টা চালানো হয়। আমি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, নারী চিকিৎসককে মারধর করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থল থেকে নারী চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। যেসব অভিযোগে তার ওপর হামলা হয়েছে তার স্বপক্ষে কোনো কাগজপত্র আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাতে চিকিৎসকদের একটি দল থানায় যায়। তারা নারী চিকিৎসকের ওপর হামলার নিন্দা জানান। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
