
জ্বালানি সংকট সমাধানে সরকারের কূটনীতি জোরদার
৩১ অক্টোবর ২০২২, ০৩:১০ পিএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৪৮ এএম

বর্তমানে সারাবিশ্ব এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। দেশের বিদ্যমান সংকট মোকাবিলায় জ্বালানি কূটনীতি জোরদার করেছে সরকার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ছাড়াও ব্রুনাই, চীন, রাশিয়া, ভারত, নেপাল, ভূটান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করছে বাংলাদেশ।
এ বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময়ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। ভারত বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে রাজি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
ইতিমধ্যে নেপাল ৪০-৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত। যদিও নেপালে বাংলাদেশেরই বিদ্যুৎ রপ্তানি করার কথা ছিল।
গত ১৬ অক্টোবর ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ ঢাকা সফর করেন। সুলতানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে দীর্ঘ মেয়াদী জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়টি নিয়ে দুই দেশ ঐক্যমতে পৌছছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
এ লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছে। বাংলাদেশের জ্বালানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে একটি স্থিতিশীল ও আঞ্চলিক জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে ব্রুনেই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য রপ্তানির বিষয়ে রাজি হয়েছে।
সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আলদুহাইলান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে জ্বালানি সহযোগিতা চান।
কাতারের শ্রমমন্ত্রী ড. আলী বিন সাঈদ বিন স্মাইখ আল মারি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এলএনজি খাতে কাতারের সহযোগিতা চান। কাতারের মন্ত্রী এ সময় জানান, জ্বালানি ও চিকিৎসা খাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায় কাতার।
এদিকে, ইউরোপের দেশ ফিনল্যান্ড বাংলাদেশকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহযোগিতা করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ বিষয়ে সম্প্রতি আগ্রহের কথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিনল্যান্ডের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত রিভা কোউকু রন্ডে।
রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়টি নিয়েও ভাবছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর এ বিষয়ে কিছু অগ্রগতিও হয়েছে। ইতিমধ্যে রাশিয়ার তেলের নমুনাও বাংলাদেশে এসেছে।
সম্প্রতি জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং জানান, জ্বালানি সঙ্কট সমাধানে বাংলাদেশ চীনের সহযোগিতা চেয়েছে। যদি বাংলাদেশ তেমন কোনো জরুরি অবস্থায় পড়ে, চীন বসে থাকবে না। অবশ্যই বাংলাদেশকে সহযোগিতা দেবে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলির সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের ফোনালাপ হয় গত ১০ অক্টোবর। এ সময় দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী অন্য আলোচনার পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিকে জ্বালানি সংকট নিয়েও কথা বলেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গেও বিভিন্ন সময় জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইইউ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইইউ ঋণ দিতে চায় বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জ্বালানি কূটনীতি জে্ারদার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার চেষ্টা করছে। আমরা আগেভাগেই পদক্ষেপ নিচ্ছি, যাতে কোনো ঝামেলায় না পড়ি।’
জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বর্তমান সংকট তো বেশ চরম আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় চেষ্টা করে দেখতে তো সমস্যা নাই। যেহেতু বিদ্যুৎ-জ্বালানির সঙ্গে জীবনযাপনের সবকিছুই নির্ভরশীল। তাই এক্ষেত্রে তো চেষ্টা করতেই হবে।
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সবচেয়ে ভালো ফল সম্ভবত দেখা যাচ্ছে ব্রুনাইয়ের সঙ্গে আলোচনায়। আরও ভালো কিছু হবে বলেই আশা করি। তবে জ্বালানি কূটনীতি জোরদার করলেও টাকা দিয়েই তো কিনতে হবে। এবং সেই টাকা তো বাংলাদেশি টাকা দিলে হবে না। ডলার দিয়ে কিনতে হবে। কিন্তু এখন তো ডলারের সংকট।’
এম. হুমায়ুন কবির আরও বলেন, ‘তারপরও বর্তমানে যে জ্বালানি কূটনীতি জোরদার করা হয়েছে সেটিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখি। আগে হয়তো এক বছর মেয়াদি পরিকল্পনা করতে হতো এখন হয়তো তিন মাস মেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। চেষ্টা করতে তো দোষ নাই।’
অবশ্য জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ’এখন জরুরি ভিত্তিতে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে জোর দিতে হবে। অনেক আগেই এমনটা করা উচিত ছিল। তাহলে আজ এত খারাপ অবস্থা হতো না।’
আরইউ/এমএমএ/

তদন্তের প্রয়োজনে ড. ইউনুসকে ডাকা হয়েছে, আসা না আসা তার ব্যাপার :দুদক চেয়ারম্যান
০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩৫ পিএম | আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০২:৩৯ এএম

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করেছেন তাই ডেকেছেন। ড. মুহাম্মদ ইউনুস দুদকে আসবেন কি না, এটা তার ব্যাপার।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান।
অর্থপাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোবেলজয়ী ড. ইউনূসসহ ১৩ জনকে দুদকে তলব করা হয়েছে। আগামী ৪ ও ৫ অক্টোবর দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ চলবে।
এদিন বিকেলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি কমিশনের কাজ নয়। মামলা হবে কি, হবে না এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে, এখন তদন্ত কর্মকর্তা ঠিক করবেন কাকে ডাকবেন তিনি। যাকে প্রয়োজন মনে করবেন তাকে ডাকবেন। তার নিজস্ব বিষয় এটা।
তিনি আরও বলেন, তলবের বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর জানতে পেরেছি আমি। তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করেছেন, তাই ডেকেছেন। তিনি আসলে ভালো, আর না আসলে সেটা তার ব্যাপার।
এছাড়া ড. ইউনূসকে হয়রানি করা হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কেন হয়রানি করা হবে তাকে। শ্রমিকদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগের ভিত্তিতে কারখানা পরিদপ্তর থেকে তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে তদন্ত করেছে দুদক এবং মামলা হয়েছে। আপনারা এটাকে কেন হয়রানি বলছেন?
এর আগে ২০২২ সালের ২৩ জুলাই নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে দুদকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। অভিযোগে বলা হয়, ১৯৯৬ সাল থেকে গ্রামীণ টেলিকমের বেশিরভাগ লেনদেনই সন্দেহজনক। শুধু তাই নয়, আইএলওতে দেয়া শ্রমিকদের অর্থপাচারের অভিযোগেরও তদন্ত চায় সংস্থাটি।

আমেরিকার সঙ্গে আওয়ামী লীগের আপস হয়ে গেছে :ওবায়দুল কাদের
০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:৪৯ পিএম | আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০২:৩৯ এএম

আমেরিকার সঙ্গে আওয়ামী লীগের আপস হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দিল্লি কিংবা আমেরিকারসহ সবার সঙ্গে আওয়ামী লীগের বন্ধুত্ব রয়েছে, কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই।
মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নিষেধাজ্ঞা কিংবা ভিসা নীতির পরোয়া করে না, বিএনপি যতই ষড়যন্ত্র করুক বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন হবেই হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনও চিন্তা নেই, এটা সঠিক সময় অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি কোনো কারণে ফাউল করলে লাল কার্ড। তারা আন্দোলনের হেরে গেছে, নির্বাচনেও হেরে যাবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়া ছাড়া ইলেকশনে না যাওয়ার হুমকি বিএনপি আর কত দেবে? বিএনপি খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন করবে না, এ কথা একেবারেই মিথ্যা। তাদের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার জন্য একটি আন্দোলনও করতে পারলেন না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আবারও ক্ষমতায় গেলে দেশের সম্পদ চুরি, লুটপাট, ষড়যন্ত্র সন্ত্রাস করবে। গণতন্ত্রকেও গিলে খাবে। আবারও এই দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানাবে। তাদের নেতা কাপুরুষের মতো লন্ডনে পালিয়ে বেড়াচ্ছে কেন, সাহস থাকলে ঢাকায় আসুক।
দেশের জনগণকে শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ছাড়া জনপ্রিয়, বিশ্বস্ত এবং সাহসী নেতা আর নেই। জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনার রাতের ঘুম হারাম।

অবৈধ সরকারকে বিদায় করেই ঘরে ফিরব: বিএনপির আমির খসরু
০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:৪৬ পিএম | আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০২:৩২ এএম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, অবৈধ সরকারকে বিদায় করেই তার পর আমরা ঘরে ফিরব।
মঙ্গলবার সকালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় ২ ঘণ্টাব্যাপী রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌদুরী।
তিনি বলেন, মানবতার মা বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। তাকে চিকিৎসা করা খুবই জরুরি কিন্তু সরকার নানান রকম দোহাই দিয়ে কালক্ষেপণ করছে।
তিনি বলেন, একটি অবৈধ সরকার ক্ষমতা টেকানোর জন্যে একের পর এক অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে। তাদের ভয়, বেগম খালেদা জিয়া যদি দেশের বাইরে যান, তবে তাদের ক্ষমতাচ্যুত হতে হবে, তবে তারেক রহমান দেশে চলে আসবেন।
বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রধান বক্তা বেগম সেলিমা রহমান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও ফরিদপুর বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও ফরিদপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক শাহাজাদা মিয়া,বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং একদফা আদায়ের লক্ষ্যে ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।