ইউরোপা লিগের শেষ আটে বার্সেলোনা
তুরস্কের সমর্থকদের উগ্রতার জন্য কুখ্যাতি আছে বেশ৷ তার ঝাঁজটা টের পাচ্ছিল বার্সেলোনা। সেই গ্যালাতাসারাইয়ের পাড়ায় পা রাখতেই কোচ জাভি হার্নান্দেজের দলকে উত্যক্ত করা শুরু হয়েছিল সমর্থকদের। ম্যাচে তো আরও বেশি। এরপর এক গোলে পিছিয়েও পড়েছিল দলটি। তবে শেষমেশ তুর্কিদের সব চোখরাঙানি সামলে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছে বার্সেলোনা। ২-১ গোলের জয় নিয়ে চলে গেছে ইউরোপা লিগের শেষ আটে।
দুদিন পরই এল ক্লাসিকো, ধারণা করা হচ্ছিল কোচ জাভি বুঝি সে ম্যাচটাকে বাড়তি প্রাধান্য দিয়ে বেশ কয়েকজনকে বিশ্রাম দেবেন আজ। তবে ম্যাচের স্কোয়াড দিতেই সে ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো৷ এক রোনাল্ড আরাউহো বাদে জাভির প্রথম পছন্দের বাকি সবাই ছিলেন একাদশে।
তবে মাঠে প্রতিপক্ষ সমর্থকরা বার্সার জন্য পরিস্থিতিটা কঠিনই করে তুলছিলেন৷ নিজ দলের স্লোগান, আর প্রতিপক্ষের জন্য দুয়োতে কান পাতা দায় ছিল নেফ স্তাদিয়ুমুতে। শুরুটায় তাই বার্সাও কিছুটা হকচকিয়ে গিয়েছিল হয়তো। শুরুর দিকে দারুণভাবে তা কাজে লাগায় গ্যালাতাসারাই। প্রতি-আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে বার্সাকে৷
২৮ মিনিটে গোলটা যে পেল দলটা, তাতে বার্সার মনোযোগের অভাব ছিল বৈকি। কর্নার ঠেকাতে বক্সে রক্ষণের জটলা বাঁধালেও তাতে বিশাল এক ফাঁকা জায়গা রেখে দিয়েছিল দলটি। তার সুযোগ নিয়েই গোল করে বার্সাকে পিছিয়ে দেন মারকাও।
তবে সেই গোল হজম করেই যেন সম্বিত ফিরে পায় বার্সা৷ মাঝমাঠ থেকে খেলা গুছিয়ে ওপরে ওঠার কৌশলের প্রয়োগ দেখান সার্জিও বুসকেটস-পেদ্রি গনজালেসরা। তাতে সুযোগও আসতে থাকে বেশ। ৩৭ মিনিটে তেমন একটা সুযোগই কাজে লাগায় বার্সা। ফেররান তরেসের বাড়ানো বলে পেদ্রি দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে যে গোলটা করেন, তা যেন লিওনেল মেসির স্মৃতিই ফিরিয়ে এনেছিল বার্সার জার্সিতে। ১-১ সমতা আনা বার্সা বিরতিতে যেতে পারতো এগিয়ে গিয়েই, অন্তিম সময়ে পিয়েরে এমেরিক অবামেয়াংয়ের হেডার গিয়ে প্রতিহত হয় ক্রসবারে।
তবে অবামেয়াংয়ের সেই গোলের আফসোস ঘুচেছে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই। বিরতি শেষে মাঠে নামার একটু পরই কাঙ্ক্ষিত জয়সূচক গোলের দেখা পেয়ে যায় বার্সেলোনা।
জর্দি আলবার ক্রস ঠেকায় গ্যালাতাসারাই রক্ষণ। এরপর বুসকেটসের নিচু শট ঠেকান গ্যালাতাসারাই গোলরক্ষক, বার্সার 'ঘরের ছেলে' ইনাকি পেনা। অবামেয়াংয়ের ফিরতি হেডার গিয়ে লাগে ক্রসবারে, সেখান থেকে হেড করে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং বলটা আবার দেন অবামেয়াংয়ের কাছে, টানা দুই ব্যর্থতার পর ফাঁকা জালেই গোলের দেখা পান তিনি৷ বার্সা এগিয়ে যায় ২-১ গোলে।
এরপর বার্সা বল পায়ে রেখে ম্যাচের গতি কমিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। তাতে গ্যালাতাসারাইও খুচরো কিছু সুযোগ ছাড়া আর কিছু পায়নি। শেষতক ২-১ ব্যবধানেই ম্যাচ শেষ করে কাতালান দলটি, তাতেই ইউরোপা লিগের শেষ আট নিশ্চিত করে ফেলে জাভি হার্নান্দেজের শিষ্যরা।
টিটি/
