সোমবার, ৬ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ভোজ্যতেল ও চিনিতে নৈরাজ্য, সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন খুচরা বিক্রেতারা

চিনির দাম কমানো হয়েছে জানুয়ারিতে। কিন্তু সেই দামে মে মাসেও চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ মে। তার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই বর্ধিত দামে তেল বিক্রি করা হচ্ছে। উভয় ক্ষেত্রেই মিল মালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন খুচরা বিক্রেতারা।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে সরকার নির্ধারিত কম দামে চিনিই পাচ্ছেন না তারা। মিল মালিকদের কাছ থেকে বেশি দামে কেনার কারণে বিক্রিও করতে হবে বেশি দামে। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করলে সরকারি সংস্থার জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়।

অন্যদিকে, সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১২টাকা বাড়ানো হলে বোতলের গায়ে আগের দাম উল্লেখ থাকার পরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ মিলারদের সিন্ডিকেটের কারনে আগের সয়াবিনও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার মিল মালিকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলেই দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেট, টাউনহলসহ বিভিন্ন বাজারে গেলে এমনই ক্ষোভের চিত্র পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহার সঙ্গে ঢাকাপ্রকাশ-এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সবশুনে কোনো জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেন।

চিনির দাম তিন টাকা কমিয়ে ১০৪ টাকা কেজি ঘোষণা দিলেও সেই নির্ধারিত দামতো দূরের কথা, কিছু বেশি দামেও কোথায় পাওয়া যায় না। অভিযোগ উঠেছে, বেশি দামের আশায় মিলমালিকরা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করায় এই অবস্থা। তবে কোনো কোনো ডিলার ও পাইকাররা মিল থেকে বেশি দামে কিনে তা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। এ জন্য ভোক্তাদের অনেক বেশি দাম গুনতে হচ্ছে, ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি পর্যন্ত।

অপরদিকে, সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা ঘোষণার পর থেকেই বাজারে দাম বাড়তে শুরু করেছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নতুন রেটের তেল না আসলেও বাড়তি দামেই ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে।

এবার রমজানের আগে থেকেই চিনি নিয়ে চলছে ছিনিমিনি। সরকার গত ৮ এপ্রিল থেকে পরিশোধিত চিনির কেজিতে ৩ টাকা কমিয়ে করেছে ১০৪ টাকা। আর প্যাকেট চিনির দাম ৩ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৯ টাকা। কিন্তু সেই দামে তো দূরের কথা রমজান মাস শেষ হলেও প্রায় দোকানে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোথাও পাওয়া গেলেও ভোক্তাদের বেশি দাম গুনতে হচ্ছে। মিল থেকেই বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। এ জন্য খুচরা ব্যবসায়ীও ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছে।

সর্বশেষ, গত ১ জানুয়ারি চিনির দাম বাড়িয়ে খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০৭ টাকা কেজি এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিলো ১১২ টাকা কেজি। এরপর দ্রব্যমূল্য ও বাজার পর্যালোচনা করে টাস্কফোর্স সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, পরিশোধিত খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৪ টাকা কেজি। প্রতি কেজিতে দাম কমানো হয়েছে তিন টাকা।

কিন্তু সরেজমিনে বাজারে দেখা গেছে উল্টোচিত্র। কারওয়ান বাজাররের মেসার্স রতন স্টোরের মালিক রতন ঢাকাপ্রকাশ-কে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কি মুখে শুধু শুনব দাম কমেছে? আর বেশি দামে কিনতে হবে? তাও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। সরকার চিনির কেজিতে তিন টাকা কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পর আমরা পাচ্ছি না কেন। সিটিগ্রুপ, মেঘনা, দেশবন্ধুসহ কয়েকটি চিনি কলের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে গেছে। ১৭ কোটি মানুষকেও জিম্মি করে রাখছে। তারা যা ইচ্ছা তাই করছে।

রতন স্টোরের সত্ত্বাধিকারী আরও বলেন, রমজান মাসে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিটিং করে বললেন, চিনির দাম কমানো হয়েছে। যার যতো লাগবে পাবেন। কিন্তু আমরা চাহিদা মতো তো দূরের কথা ঈদ শেষেও সামান্যতম চিনি পাচ্ছি না। আবার কোনো ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছে পেলেও অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এভাবে কি ব্যবসা হয়? কেউ টাকা লুট করবে সরকার চুপ করে থাকবে। আর আমরা বেশি দামে কিনে বিক্রি করলে গালি শুনতে হয়। জরিমানা দিতে হয়। মিল মালিকদের ধরতে হবে। না হলে ভোক্তাদের পকেট কাটা বন্ধ হবে না। আমিও ভোক্তা। আবার বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। কিন্তু আয় তো আর বাড়েনি। বরং বিক্রি কমে গেছে।

তেলের দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে এই খুচরা ব্যবসায়ী আরও বলেন, মিলমালিকরা চিনির দাম কমানোর ঘোষণা দিলেও কমেনি। বরং বেড়েই যাচ্ছে। আবার তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিলে নতুন রেটের তেল মিল থেকে বাজারে আসেনি। কিন্তু কয়েকটি মিল সিন্ডিকেট করে বেশি দামে বিক্রি করছে। এ জন্য পাইকারি ও ডিলাররাও আমাদের কাছে বেশি দাম নিচ্ছে।

আগে ৫ লিটারের এমআরপি ছিলো ৯০৪ টাকা উল্লেখ করে রতন বলেন, তখন তা কিনতাম ৮৭০ টাকা। সেই তেল কিনতে হচ্ছে ৯০৬ টাকা। মাত্র ৪ টাকা লাভ করে ৯১০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু মিল থেকে যে বাড়তি দাম নিচ্ছে সরকার কি করছে? আবার ভোক্তা অধিদপ্তর এসে আমাদের ধরে। বেশি দাম নেওয়ায় জরিমানা করে। কিন্তু যারা সিন্ডিকেট করে বেশি টাকা আদায় করছে তাদের কিছু হয় না কেন?

তাদের বিরুদ্ধে তো সরকার মামলা করেছে। এমন তথ্যের প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, তাহলে তারা আসল দামে মাল দিচ্ছে না কেন?

আন্তর্জাতিক বাজারের অজুহাতে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গত ৪ মে প্রতি লিটারে ১২ টাকা দাম বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা, ৫ লিটার ৯৬০ টাকা ও খোলা তেল ১৩৫ টাকা লিটার করেছে। সরকারও তা মেনে নিয়েছে। কিন্তু দুই দিন না যেতেই মজুত ফুরিয়ে যাওয়ার অজুহাতে বাজারে দাম বেড়ে গেছে।

একই বাজারের লক্ষীপুর স্টোরের ফরিদ বলেন, চিনি আছে ১৫০ টাকা কেজি। এতো বেশি বলা মাত্র তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমগো বলে লাভ কি? গোড়াতে ধরলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তারাই বেশি দাম নিচ্ছে। আমরা গালি খাচ্ছি।

কারওয়ান বাজাররের ইউসুফ জেনারেল স্টোরের মো. ইউসুফও ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বেশি দামে চিনি কিনে জরিমানা খেতে চাই না। তবে তেলের ব্যাপারে বলেন, আছে। তবে লাভের ধান টিয়ায় খাচ্ছে। মানে আগে ৫ লিটার ৮৭০ টাকায় কিনে ৮৮০ থেকে ৮৯০ টাকা বিক্রি করতাম। এখন গায়ের রেটেই কিনতে হচ্ছে। সেই রেটেই আবার বিক্রি করা হচ্ছে। কারণ বেশি নিলে জরিমানা খেতে হয়।
শুধু এই ব্যবসায়ীই নন, কারওয়ান বাজারের সততা ট্রেডার্স, সালমান ট্রেডার্স, আ. গনি স্টোরসহ অন্যান্য খুচরা ব্যবসায়ীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধু শুনছি চিনির দাম কমেছে কিন্তু পাচ্ছি তো না। কোথাও পাওয়া গেলেও তা ১৩০ টাকা। মেঘনা গ্রুপের ডিলার জামান ট্রেডার্সের মালিক জামান বলেন, না পারি কইতে না পারি সইতে। মিল থেকেই বেশি দামে চিনি কিনতে হচ্ছে। তাও আবার সহজে পাওয়া যায় না।

মোহাম্মদপুর টাউনহলের মনির জেনারেল স্টোরের আনোয়ার হোসেন ও একতা জেনারেল স্টোরের সুমনও জানালেন একই তথ্য। তারা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, চিনি নেই। সহজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পাওয়া গেলেও দাম বেশি। যতোই দিন যাচ্ছে দাম বাড়ছেই। কি হয়েছে যে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এভাবে চলতে পারে না। ব্যবসা করব কিভাবে। তেল দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গেই আগের দাম লেখা তেলই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।

এদিকে কৃষিমার্কেটের সিটি এন্টারপ্রাইজের আবু তাহের ও বিক্রমপুরের জসিমও বলেন, চিনি তো নেই। দেশে হচ্ছে কি? সরকার বলছে চিনি দাম কমিয়েছি। কিন্তু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। মিলে যে চিনি উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো যাচ্ছে কোথায়? তেলের ব্যাপারে জানতে চাইলে একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নতুন রেটের তেল আসেনি। তারপরও আগের কম দামের তেল হাওয়া। কৃষিমার্কেটে পাওয়ায় যায় না।

চিনি ও তেলের ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভোক্তাদের মধ্যেও চরমভাবে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। টাউনহলে জুয়েল নামে এক বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের বেতন বাড়েনি। কিন্তু এ দোকান সে দোকান ঘুরে বেশি দামেই চিনি কিনতে হচ্ছে। এভাবে সিন্ডিকেট করে রাঘব-বোয়ালরা টাকা লুট করছে, পকেট কাটছে সরকারের দেখা উচিত।

শুধু এই ভোক্তা নয় প্রায় বাজারের ভোক্তাদের একই অভিযোগ, গত বছর তেল লুকিয়ে বেশি দামে বিক্রি করা হয়েছে। এবার চিনি নিয়ে চলছে ছিনিমিনি। দুই দিন থেকে আবার শুরু হয়েছে তেল নিয়ে খেলা। বাড়তি দামের রেট না আসলেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রমজান মাসে ব্যবসায়ীদের বলেছিলাম যার যতো চিনি লাগবে চাইলে মিল থেকে দেওয়া হবে। কিন্তু এভাবে দাম বাড়লেও কোনো ব্যবসায়ী অভিযোগ করেনি।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, মিডিয়াতে তো প্রায় দিন খবর হচ্ছে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তা দেখেন না?- এমন জবাবে এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আজও ঢাকার বাইরে আছি।

এর চেয়ে বেশি কিছু জানতে চাইলে মহাপরিচালক বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরমার্শ দিয়ে বলেন, উনি এর ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। মিলমালিকদের ধরা হচ্ছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা প্রায় খাতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করে বাড়তি দামের ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাচ্ছি। তাদের মতামত নিয়ে সরকারের কাছে দামের ব্যাপারে সুপারিশ করছি। কর্পোরেটদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। প্রতিযোগিতা কমিশন সেটা করেছে। কাজেই কর্পোরেটদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না সেটা বলা যাবে না।

শুধু বড় বড় বাজারে নয়, রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলির ছোট দোকানেও দেখা গেছে বেশি দাম ছাড়া পাওয়া যাচ্ছে না চিনি। আবার আগের কম রেটের তেল বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

আরইউ/এএস

Header Ad

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দেশে গাছ কাটা অব্যাহত থাকায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। আগামীকাল সোমবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রোববার (৫ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।

আবেদনে পাঁচটি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এগুলো হল-

১. গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকা শহরে গাছ কাটার অনুমতি দেবেন।

২. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৩. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবে, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৪. কমিটি গঠন হওয়ার আগে পর্যন্ত সকল বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

৫. গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা-২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না-সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনকারীরা হলেন-অ্যাডভোকেট ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, পরিবেশ বিভাগ মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শককে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‌‘সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতিকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এ কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর ৩টি উপজেলার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল। অপরদিকে, তিনটি উপজেলায় ৩৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন: কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও বেগমগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিম। শাহাদাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, হলফনামায় মামলা সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ না করে তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের হলফনামায় চারটি মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিলে ঘোষিত হয়। মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুর হোসেন মাসুদ ও মো. মনির হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আগামী ৬মে থেকে ৮মে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার সুযোগ পাবেন। আগামী ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর উপজেলা, বেগমগঞ্জ উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে এখন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক বলেছেন, ‘সরকার বলেছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে, তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’

আজ রবিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক আরও বলেন, এখন দেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। এর মধ্যে দুটি সমস্যা গুরুতর। একটি হলো বিদ্যুৎ, আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা।

জাপা মহাসচিব বলেন, এখন গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমার এলাকায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে। তাহলে সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
এ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করলে চুন্নু বলেন, লোডশেডিং হয় না গ্রামে? চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে, আমার এলাকায় একটা দিন থাকতে, লোডশেডিং হয় কি না তা দেখার জন্য।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন আরেক জায়গায়। ভাড়ায় যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আছে, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরও বসে আছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার পরও ভাড়া বাবদ তাদের ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

চুন্নু বলেন, এর আগে সংসদে বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, তিনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন দুই-চার দিনের মধ্যে। দেখে আসবেন কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

তিনি বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৫ জন মারা গেছেন ঈদের আগে ও পরে। প্রতিদিন এখন ১৪ জন মারা যান। বছরে পাঁচ হাজারের মতো লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এটি সরকারের সংস্থার হিসাব। ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন মারা যান। সেই ট্রাকের চালকের ভারি যানবাহন চালানোর কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২২ এপ্রিল যে বাসের ধাক্কায় একজন শিক্ষার্থী মারা যান, সেটির ফিটনেসই ছিল না। ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি। এ গাড়ি তো দুর্ঘটনা ঘটাবেই। সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয় পুরোনো, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে। সড়ক পরিবহনমন্ত্রী, আপনি একটু শক্ত হোন। এসব গাড়ি-অটো যদি রাস্তায় চলাচল না করে, তাহলে এভাবে মানুষ মারা যাবে না। দয়া করে আপনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিন।

সর্বশেষ সংবাদ

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর
আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি
৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ
দেশে ফেরা হলো না প্রবাসীর, বিমানে ওঠার আগে মৃত্যু
বজ্রপাত থেকে বাঁচার ‘কৌশল’ জানাল আবহাওয়া অফিস
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল জনতা
সত্য বলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের
সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
উপজেলা নির্বাচন বর্জনে রিজভীর লিফলেট বিতরণ
টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু
জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব
১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
গাজায় দেড় লাখের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী পানিশূন্যতায় ভুগছেন