আমেরিকা এবং ইসরায়েল মুসলিম দেশগুলির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে তৎপর: ইরান

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ছবি: সংগৃহীত
আঞ্চলিক ঐক্য বিনষ্টে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনালাপের সময় তিনি বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে ওয়াশিংটন ও তেল আবিব সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
মঙ্গলবারের এই ফোনালাপে পেজেশকিয়ান বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি—যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী সরকার মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ফাটল ধরিয়ে আঞ্চলিক ঐক্য নস্যাৎ করতে চায়, যেখানে ইরান বরাবরই শান্তি ও সহযোগিতার বার্তা দিয়ে আসছে।"
তিনি ফিলিস্তিনের অধিকার, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বিদেশি হস্তক্ষেপমুক্ত একটি মধ্যপ্রাচ্য গঠনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এ অভিন্ন স্বার্থে মুসলিম দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রয়োজন, যাতে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ ব্যর্থ হয়।
১২ দিনের ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর এই আলোচনায় বসেন দুই দেশের শীর্ষ নেতা। ফোনালাপে পেজেশকিয়ান দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন, ইরান যেকোনো কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় তার শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি এবং বৈধ প্রতিরক্ষা উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়ার অধিকার থেকে একচুলও সরে আসবে না।
ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা বন্ধুপ্রতিম মুসলিম দেশগুলোর সহযোগিতা ও সমর্থনকে স্বাগত জানাই।” জবাবে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, “রিয়াদ শুরু থেকেই ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সকল আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ানোর কোনো প্রচেষ্টাকেই সমর্থন করে না।”
তিনি আরও জানান, ইসরায়েলকে চাপে রাখতে এবং তাদের আগ্রাসন বন্ধ করতে সৌদি আরব একাধিক দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক পরামর্শ চালিয়ে যাচ্ছে।
সৌদি যুবরাজ স্পষ্ট করে বলেন, “মুসলিম দেশগুলোর মাটি ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আক্রমণের জন্য লঞ্চপ্যাড হিসেবে ব্যবহার হবে না। একইভাবে আমেরিকান সামরিক ঘাঁটিগুলোকে কোনো আক্রমণাত্মক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।”
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, মার্কিন বোমারু বিমানের হামলায় ইরানের তিনটি শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলা হয়। “আমরা সেই প্রতিক্রিয়ার যৌক্তিকতা বুঝি,” বলেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
এ ফোনালাপকে বিশ্লেষকরা মুসলিম বিশ্বের দুই প্রধান শক্তির মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখছেন, যা অঞ্চলজুড়ে শান্তি ও সহযোগিতার ভিত্তি রচনায় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: প্রেস টিভি
