যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ও রোমহর্ষক ঘটনা। প্রেমিকের ফোনে অন্য নারীর মেসেজ দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ২৩ বছর বয়সী ম্যাডিসন রুকার্ট তাঁর প্রেমিককে ঘুমন্ত অবস্থায় গুলি করে হত্যা করেন। আদালত তাঁকে ৩৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন, যা দুই দফায় কার্যকর হবে—২৫ বছর হত্যার দায়ে এবং ১০ বছর সশস্ত্র অপরাধের জন্য।
ঘটনাটি ঘটেছে ২০২২ সালের ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে। প্রেমিক জোনাথন মিলারের (২৪) ফোনে অন্য নারীদের মেসেজ দেখে হত্যার পরিকল্পনা করেন ম্যাডিসন। আদালতের নথি অনুযায়ী, মিলার যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন মাথায় গুলি করে তাঁকে হত্যা করেন রুকার্ট। হত্যার পর তিনি গাড়ি চালিয়ে ডালাস কাউন্টিতে যান এবং রাত কাটান জঙ্গলে। পরে এক অপরিচিত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ডাকার অনুরোধ করেন এবং আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর গাড়িতে একটি হ্যান্ডগান পাওয়া যায়।
জোনাথনের মা অ্যামি কপ ছেলের মৃত্যুর খবরে চরমভাবে হতবাক হন। তিনি জানান, তাঁর ছেলে প্রেমিকার সঙ্গে প্রতারণা করেননি এবং ফোনে পাওয়া মেসেজগুলো যৌনতাপূর্ণ ছিল বলেও তাঁর মনে হয়নি। “সে (মিলার) আমাদের ছেলে, সে ম্যাডিসনের সঙ্গে খুব সুখী ছিল। আমরা তাঁকে পছন্দ করতাম,”—বলেন কপ।
ম্যাডিসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাঁকে দীর্ঘমেয়াদি সাজা দেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘পিপলস ম্যাগাজিন’-এর তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় আমেরিকান সমাজে সম্পর্ক ও সহনশীলতার বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে প্রেমিককে হত্যার দায়ে এক নারী দোষী সাব্যস্ত হন। ফেব্রুয়ারিতে অ্যাশলে হোয়াইট নামের ওই নারী প্রেমিকের এক মন্তব্যে অপমানিত বোধ করে তাঁকে হত্যা করেন। প্রেমিক তাঁর চাকরি পাওয়া নিয়ে মজা করেছিলেন, যা সহ্য করতে না পেরে সে এমন ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নেয়।
এই ধরনের ঘটনা সমাজে সহিংস সম্পর্কের পরিণতি এবং মানসিক ভারসাম্য রক্ষার গুরুত্বের বিষয়টি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, সম্পর্কের টানাপোড়েন বা সন্দেহের বিষয়ে আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা সমাজের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।