ভারতে আতঙ্কে কাশ্মীরিরা: বাড়ছে হয়রানি, মারধর ও ধরপাকড়

ছবি: সংগৃহীত
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বর্তমানে ভয়াবহ সময় পার করছেন কাশ্মীরিরা। পাহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক এক হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে কাশ্মীরিদের ওপর চড়াও হয়েছে হিন্দু ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো। হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপালেও, এর জেরেই কাশ্মীরি সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে অব্যাহত হয়রানি, লাঞ্ছনা ও সহিংসতা।
মুসৌরিতে পশমিনা শাল বিক্রেতা শাবির আহমেদ দার ও তার সহকর্মীকে প্রকাশ্যে মারধর ও অপমান করা হয়। তাদের স্টল ভাঙচুর করা হয় এবং শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। দারের ভাষায়, “আমার হাজার হাজার ডলার মূল্যের মালপত্র পড়ে রয়েছে, কিন্তু আমরা এতটাই ভীত, ফিরে যেতে সাহস পাচ্ছি না।”
হামলাকারীদের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। অনেক কাশ্মীরি ব্যবসায়ী, যারা বহু বছর ধরে সেখানে ব্যবসা করছেন, এখন নিরাপত্তাহীনতায় এলাকা ছাড়ছেন।
অন্যদিকে, কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে। পাঞ্জাবের এক কাশ্মীরি ছাত্রী উম্মত শাবির জানান, “আমার সহপাঠীকে কেবল কাশ্মীরি হওয়ায় ট্যাক্সি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের বেরিয়ে আসতেই হলো।”
কাশ্মীরে ফের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে, পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ, সেনা মোতায়েন এবং সন্দেহভাজনদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতো কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহ নিরপরাধ মানুষদের ক্ষতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা সরকারকে সতর্ক করে বলছেন, সন্ত্রাসী ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে পার্থক্য করতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীরিদের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। “উত্তেজনা বাড়লেই আমরা প্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হই”—বিবিসিকে বলেন এক কাশ্মীরি শিক্ষার্থী।
