এবার পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত

ছবি: সংগৃহীত
পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর চরম উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত নিল ভারত। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় জানিয়েছে, পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি চলতি শুক্রবার থেকেই সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ভারতের প্রধান গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও জননীতির স্বার্থে’ এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা আদেশে বলা হয়, পাকিস্তানে উৎপাদিত বা সেখান থেকে রপ্তানিকৃত কোনো পণ্য আর ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে পারবে না, এবং যদি কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম প্রযোজ্য হয়, তাহলে তা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে বিবেচিত হবে।
এই নিষেধাজ্ঞা জারির পেছনে মূল কারণ ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর চালানো সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে নিহত হয় ২৬ জন। ভারত দাবি করছে, হামলার পেছনে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। ইসলামাবাদ অবশ্য এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে, দাবি করছে ভারত এখনো কোনও প্রমাণ হাজির করতে পারেনি।
হামলার পরপরই ভারত ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেয়, যা ছিল দুই দেশের মধ্যে একমাত্র কার্যকর বাণিজ্য পথ। এর আগেও ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল ভারত। তখন থেকেই পাকিস্তান থেকে আমদানি ক্রমেই হ্রাস পায় এবং শেষ হিসাব অনুযায়ী তা ছিল ভারতের মোট আমদানির মাত্র ০.০০০১ শতাংশ।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ইতোমধ্যেই চরম উত্তেজনাকর অবস্থায় রয়েছে। ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে এবং আকাশসীমায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। জবাবে পাকিস্তানও ভারতের কূটনীতিক বহিষ্কার, শিমলা চুক্তি বাতিলের হুমকি ও সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সীমান্তে পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালিয়েছে এবং ইসলামাবাদ দাবি করছে, ভারতের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সামরিক হামলার বিষয়ে তাদের কাছে ‘নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ রয়েছে।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে টানা বৈঠক করেছেন এবং সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন—এমন সংবাদও সামনে এসেছে।
